নির্ধারিত তারিখেই বাফুফের নির্বাচন

স্পোর্টস রিপোর্টার

০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ এএম

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মতিঝিলের কার্যালয়ে আসেন না। বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন গত ৫ আগস্টের পর থেকে ফেডারেশন ভবনে আসছেন না। আওয়ামী লীগ ঘরনার বাফুফে কর্মকর্তারা বর্তমানে কে কোথায় আছেন তাও জানেন না কেউ। তবে এমন অবস্থায় গতকাল অনলাইনে একটি জরুরি নির্বাহী সভা করেছে দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থাটি। এই অনলাইন সভায় বাফুফের চার সহ-সভাপতির মধ্যে শুধুমাত্র ইমরুল হাসানই অংশ নেন। ১৪ নির্বাহী সদস্যের মধ্যে অর্ধেক উপস্থিত ছিলেন এ সভায়।

জরুরি সভার প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল ‘বাফুফের চেকে স্বাক্ষরদাতা কারা হবেন’? তবে এ বিষয়টি ছাড়াও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে অনলাইন সভায় আলোচনা হয়েছে। সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে কাল সকালে বাফুফে ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন বিএনপিপন্থী ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকরা। এরপর তারা বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারের সঙ্গে দেখা করে ফেডারেশনের নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। বিকালে অনুষ্ঠিত অনলাইন জরুরি সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন তুষার। আওয়ামী লীগ সরকার পতন ও পদত্যাগ আন্দোলন নিয়ে এখন বেশ চাপেই আছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নির্বাহী সভায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন পেছানোর দাবি উত্থাপন করলে সালাউদ্দিন সদস্যদের মতামত চান। তখন ২৬ অক্টোবরই নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়ে কয়েকজন সালাউদ্দিন বিরোধীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসার কথা বলেন। বাফুফের পূর্ব নির্ধারিত নির্বাচনের দিন বসুন্ধরা কিংসের এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের ম্যাচ পড়েছে। তাই মৃদুভাবে নির্বাচন এগিয়ে আনারও আলোচনা হয় সভায়। দুয়েকজন সদস্য নির্বাচন এগিয়ে আনার বিষয়টি জোর দিলেও শেষ পর্যন্ত অবশ্য আর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।

অর্থ লেনদেনে বাফুফের চেকে স্বাক্ষর দেওয়ার এখতিয়ার সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদের। সালাম মুর্শেদী পদত্যাগ করেছেন আগেই। আর কাজী নাবিল নিখোঁজ আছেন। চেক লেনদেনের জন্য তিনজনের মধ্যে দুইজনের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক। এই সংকট নিরসনেই মূলত কালকের সভা। বাফুফে সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানকে ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। ইমরুল হাসানের পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারকেও স্বাক্ষর প্রদানের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে এ সভায়। বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের এই এখতিয়ার ছিল না। এখন থেকে ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ইমরুল হাসানের স্বাক্ষর চেকে থাকা বাধ্যতামূলক। সভাপতি সালাউদ্দিন, সহ-সভাপতি নাবিল ও সাধারণ সম্পাদক তুষারের মধ্যে যেকেনো একজনের স্বাক্ষরে লেনদেন করতে পারবে বাফুফে।

জরুরি সভায় সাধারণত একটিই আলোচ্যসূচি থাকে। এরপরও বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ফেডারেশনের স্টাফদের বেতনের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। নতুন ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ও সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান অধিকতর মূল্যায়নের জন্য পরবর্তী সভায় রেফার করার মত দেন।

অনলাইন সভা ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সভায় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান, নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে জাকির হোসেন চৌধুরি, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ, হাজী টিপু সুলতান, মাহফুজা আক্তার কিরণ, আমের খান ও মহিদুর রহমান মিরাজ। জরুরি সভা হওয়ায় অবশ্য কোরামের বিষয় ছিল না। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে বাফুফে সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহী অনেকটা আত্মগোপনে। আরেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক বিদেশে। নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় নিভৃতে রয়েছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাদের অনেকেরই বাফুফে ভবনে সশরীরে এসে কাজ করা কঠিন, এরপরও পদ আকড়ে আছেন তারা!

বিভাগ : খেলাধুলা