ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে বড় সংগ্রহ এনে দিলেন কুসল মেন্ডিস। পরে বাংলাদেশের ব্যাটারদের উপর তাণ্ডব চালালেন নুয়ান থুসারা। এই পেসারের হ্যাটট্রিকে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়া বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। রিশাদ হোসেনের ছক্কার রেকর্ড হারের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজও জেতা হলো না বাংলাদেশের।

১৭৫ রানের লক্ষ্যে ৬ ওভারের মধ্যে ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ ৩২ রানে হারায় ষষ্ঠ উইকেট। রিশাদ হোসেনের লড়াকু ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২ বল বাকি থাকতে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায়।

২৮ রানে ম্যাচ হারের সাথে তিন ম্যাচের সিরিজও ২-১ ব্যবধানে হেরে গেল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

হার দিয়ে সিরিজ শুরু করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে লড়াইয়ে ফেরে। কিন্তু অঘোষিত ফাইনালে রূপ নেওয়া শেষ ম্যাচে এসে লড়াই-ই করতে পারল না টাইগাররা।  

শ্রীলঙ্কার পঞ্চম বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করেন থুশারা। আগের চারজন- থিসারা পেরেরা, লাসিথ মালিঙ্গা (২), আকিলা দানাঞ্জয়া ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। এদের মধ্যে মালিঙ্গার প্রথম হ্যাটট্রিকটিও বাংলাদেশের বিপক্ষে। সব মিলিয়ে এই সংস্করণে বাংলাদেশের বিপক্ষে ষষ্ঠ হ্যাটট্রিক এটি।

সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিক করলেন থুশারা। এই পেসারের কোনো জবাবই দিতে পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ। নুয়ানের চতুর্থ শিকার সৌম্য সরকার। জাকের আলি এলবিডব্লিউ হন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলে ফেরা অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে।

শেখ মেহেদি হাসানকে নিয়ে এরপর জুটি গড়েন রিশাদ। দুজনে ৪১ বলে যোগ করেন ৪৪ রান। মেহেদি ফেরেন ২০ বলে ১৯ রান করে হাসারাঙ্গার বলে বোল্ড হয়ে।

এরপর তাসকিনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান রিশাদ। এবার গড়েন ২১ বলে ৪১ রানের জুটি। বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭ ছক্কার রেকর্ড গড়ে রিশাদ আউট হন ৩০ বলে ৫৩ রানের ঝড় তুলে। তার ইনিংসে চার নেই একটিও, ছক্কা সাতটি। এই সংস্করণে আট বা তার নিচে নেমে বাংলাদেশের পক্ষে এটিই সর্বোচ্চ ইনিংস।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬ ছক্কায় এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড নিজের করে নিয়েছিলেন জাকের।

শেষ ব্যাটার হিসেবে তাসকিন আউট হওয়ার আগে খেলেন ২১ বলে ৩টি চার ও ২ ছক্কায় ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস।

৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন থুশারা। তার পঞ্চম শকিার শরিফুল ইসলাম।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার টসে জিতে বোলিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তৃতীয় ওভারে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাবে ফিরিয়ে শুরুটা করেন তাসকিন। এরপর ক্রিজে আসেন কুসল। শুরুতে দেখেশুনে খেলতে থাকেন তিনি। অষ্টম ওভারে কামিন্দু মেন্ডিস শিকার হন রিশাদ হোসেনের। এরপর হাত খুলে খেলতে থাকেন কুসল। ৩৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন এই টপ অর্ডার।

১৭তম ওভারে তাসকিনকে হাঁকাতে গিয়ে বল আকাশে তুলে আউট হন কুসল। ৫৫ বলে ৬টি করে ছক্কা-চারে ৮৬ রান করেন তিনি।

অন্য প্রান্তে থিতু হতে পারেনি কেউ। যে কারণে দুইশ ছাড়ানো ইনিংসের সম্ভাবনা জাগিয়েও পারেনি লঙ্কানরা। দুটি করে শিকার ধরে তাতে সবচেয়ে বড় বাঁধ দেন তাসকিন ও রিশাদ। একটি করে নেন শরিফুল ও মুস্তাফিজ। ৪ ওভারে ৪৭ রান দিয়ে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন মুস্তাফিজ।

আগামী বুধবার চট্টগ্রামে শুরু হবে দুই দলের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।