নোভাক জোকোভিচ আর কার্লোস আলকারাজের মুখোমুখি লড়াই মানেই যেন এখন রোমাঞ্চে ঠাসা তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার ম্যাচ। তেমন কিছুর দেখা মিলল আরেকবার। প্রায় চার ঘন্টার লড়াইয়ে স্প্যানিশ তরুণকে হারিয়ে সিনসিনাটি ওপেন জিতলেন পুরুষ এককে রেকর্ড ২৩ বারের গ্র্যান্ড সø্যাম জয়ী সার্বিয়ান তারকা। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওতে বাংলাদেশ সময় গতকাল সকালে শিরোপা লড়াইয়ে ৫-৭, ৭-৬ (৯-৭), ৭-৬ (৭-৪) গেমে জেতেন ৩৬ বছর বয়সী জোকোভিচ। ম্যাচের স্থায়িত্ব ছিল ৩ ঘন্টা ৪৯ মিনিট, এটিপি ট্যুরের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘতম তিন সেটের ফাইনাল এটিই।
গত মাসে উইম্বলডনের ফাইনালে জোকোভিচকে পাঁচ সেটের লড়াইয়ে হারিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড সø্যাম জিতেছিলেন শীর্ষ বাছাই ২০ বছর বয়সী আলকারাজ। তার বিপক্ষে খেলাটা জোকোভিচকে মনে করিয়ে দেয় তার দীর্ঘদিনের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের সঙ্গে দ্বৈরথের কথা। এই ম্যাচকে ২০১২ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ফাইনালের সঙ্গে তুলনা করেছেন জোকোভিচ। সে ম্যাচে স্প্যানিশ কিংবদন্তি রাফায়েল নাদালকে ৫ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটের লড়াইয়ে হারিয়েছিলেন সার্বিয়ান তারকা। এদিন ম্যাচ শেষে যেমন বলছিলেন, ‘কোর্টে আমার যে অনুভূতি ছিল, তা আমাকে কিছুটা মনে করিয়ে দেয় নাদালের বিপক্ষে লড়াইয়ের কথা, যখন আমরা আমাদের সেরা সময়ে ছিলাম। মনে হয় না, জীবনে এরকম খুব বেশি ম্যাচ আমি খেলেছি।’
গত ১৭ বছরে জোকোভিচ ও নাদাল একে অপরের মুখোমুখি হয়েছেন ৫৯ বার। জোকোভিচ ও আলকারাজের মুখোমুখি লড়াই হলো অবশ্য এই নিয়ে মাত্র চারটি। যেখানে এখন ২-২ সমতা। আলকারাজের মুখোমুখি হয়ে জোকোভিচের বরাবরই নাদালের সঙ্গে দ্বৈরথ মনে পড়ে। এর আগেও তা বলেছেন, সিনসিনাটি ওপেন জেতার পরও পুনরাবৃত্তি ঘটল সে কথার, ‘নিজেদের সেরা সময়ে যখন নাদালের মুখোমুখি হতাম, তার (আলকারাজ) বিপক্ষে খেললে তেমনই মনে হয়। আমার মনে হয় না জীবনে এমন ম্যাচ খুব বেশি খেলেছি।’ কোর্ট যা-ই হোক, সাম্প্রতিক সময়ে জোকোভিচ-আলকারাজ লড়াই রোমাঞ্চ ছড়াচ্ছে। বেশি দিন আগের কথা নয়, পাঁচ সপ্তাহ আগেই উইম্বলডনে ঘাসের কোর্টে ফাইনালে রোমাঞ্চকর পাঁচ সেটের লড়াইয়ে জোকোভিচকে হারিয়েছিলেন আলকারাজ। এরপর এদিন হার্ড কোর্টে ২০ বছর বয়সী স্প্যানিশ তারকার বিপক্ষে প্রথম মুখোমুখিতে প্রতিশোধ নিলেন জোকোভিচ। ইউএস ওপেন শুরু হবে আগামী সোমবার থেকে। তার আগে সিনসিনাটিতে রোমাঞ্চকর এই ফাইনাল যেন বছরের শেষ গ্র্যান্ড সøাম টুর্নামেন্টের ‘সম্ভাব্য’ ফাইনালেরই মহড়া!
সিনসিনাটি ওপেন দিয়ে প্রায় দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে এককের ম্যাচ খেলতে নামেন জোকোভিচ। গত বছর ইউএস ওপেনে তিনি খেলতে পারেননি কোভিড টিকা না নেওয়ার কারণে। তবে টিকা না নেওয়া বিদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের নিয়ম গত মে মাসে শিথিল করে দেশটি। এই নিয়ে ক্যারিয়ারের ৯৫তম ও এটিপি মাস্টার্স ১০০০ টুর্নামেন্টে রেকর্ড ৩৯তম শিরোপা জিতলেন জোকোভিচ। এই হারের পরও র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থেকেই আগামী ২৮ আগস্ট শুরু ইউএস ওপেনের শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে নামবেন আলকারাস। নিউ ইয়র্কের ফ্লাশিং মিডোসে একটি ম্যাচ জিতলেই অবশ্য র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে যাবেন জোকোভিচ।