দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে গত অর্থবছর সরকারের বাজেট ছিল ৩৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। মাত্র ১০ লাখ বাড়িয়ে এবার তা ৩৬ কোটি টাকা করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) নির্বাহী কমিটির সভায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ক্রীড়া সংস্থা মঞ্জুরিত খাতে ৩৬ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদিত হয়েছে। বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন, ৬৪ জেলা ও আট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা পরিচালনা ব্যয়,খেলাধূলা আয়োজন ও প্রশিক্ষণসহ সব মিলিয়ে এই পরিমাণ টাকা খরচ করা হবে চলতি অর্থ বছরে। ক্রীড়াঙ্গনের মানউন্নয়নের জন্য এই বাজেট একেবারেই অপ্রতুল-মানছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান পাপন। তারপরও ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন। কাল এনএসসি টাওয়ারে অনুষ্ঠিত সভা শেষে পাপন বলেন,‘অর্থ মন্ত্রণালয়ে আমরা একটা চাহিদাপত্র দিয়েছি। সেই চাহিদার কতটুকু পূরণ হবে জানি না। সেখান থেকে কিছু পেলে আমরা ফেডারেশনগুলোকে আরো সাপোর্ট দিতে পারব।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিজেই সাবলম্বী। তাই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে সরকারি অনুদান বিসিবি গ্রহণ করে না। তবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে দেয়া চাহিদাপত্রে অবশ্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নাম নেই। সেটি স্পষ্টভাবেই বলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী,‘অন্য সব ফেডারেশন মিলিয়ে যা চাহিদা। ফুটবলের একাই সেই চাহিদা। বাফুফের সঙ্গে আরেকবার আলোচনায় বসে ঠিক করতে হবে সবকিছু।’ বাজেটে সর্বোচ্চ ২৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছে বাফুফে। তাদের চেয়ে ৬০ হাজার টাকা কম পেয়েছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন (বাহফে)। সাঁতার, অ্যাথলেটিক্স, শুটিং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা করে বরাদ্দ পেলেও ২০ লাখ টাকার উপরে পেয়েছে মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ও ভলিবল ফেডারেশন। আর টেবিল টেনিস, জিমন্যাস্টিক্স, বাস্কেটবল ও ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন পেয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা করে।

পল্টনস্থ এনএসসি’র পুরাতন ভবনে দাবা ফেডারেশনের ক্রীড়া কক্ষে গত ৫ জুলাই জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডের খেলা চলাকালীন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারান দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি। তখন যদি এনএসসিতে একজন ভালোমানের চিকিৎসক থাকতেন তাহলে জ্ঞান হারানোর পরই জিয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা সেখানেই করানো যেত। সেই ক্ষেত্রে হাসপাতালে নিয়ে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন পড়তো না। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীকে। তাই এবার নড়েচড়ে বসেছেন তিনি। এনএসসিতে চিকিৎসক নিয়োগ জরুরী হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন তিনি,‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে অবশ্যই চিকিৎসক থাকা প্রয়োজন। এখানে দ্রুততার সঙ্গে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে।’

এনএসসির কালকের সভায় টাঙ্গাইল জেলা স্টেডিয়ামের নাম ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল’ নামকরণের প্রস্তাব উঠেছিল। আরেকটি প্রস্তাবনা ছিল বাংলাদেশ অ্যামেচার বক্সিং ফেডারেশনের নামকরণ নিয়ে। এই ফেডারেশনের ‘অ্যামেচার’ শব্দটি বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছিলেন বক্সিংয়ের কর্তারা। এ দুইটি বিষয় নিয়ে বিষদ আলোচনা হলেও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের জন্য কার্যবিবরণী অনুমোদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী।