তাদের সঙ্গে কিসের সংলাপ
১৩ মার্চ ২০২৩, ১০:৫১ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪১ এএম
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কাদের সঙ্গে সংলাপ করবো? ২০১৮ সালের আগে সংলাপ করেছিলাম। রেজাল্ট কি? তারা (বিএনপি) টাকা নিয়ে দলের নমিনেশন দেয়, বেশি টাকা নিয়ে প্রার্থী বদল করে ওই নির্বাচনকে বিতর্কিত করেছে। ’২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে।ওই হামলায় আইভিসহ অনেকেই মারা গেছে। তার (বেগম খালেদা জিয়া) সন্তানের মৃত্যের খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছিলাম, আমাকে দেখে বাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। যারা এতোটুকু ভদ্রতা দেখায় না, তাদের সঙ্গে কিসের সংলাপ? আপনি কি আপনার বাবা-মার হত্যাকারীদের সাথে সংলাপে বসতে পারবেন?
আমি দেশের স্বার্থে দেশের জনগণের স্বার্থে সেগুলো সহ্য করেছি। সদ্য সমাপ্ত কাতার সফর নিয়ে গতকাল সোমবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আন্তর্জাতিক কোনো চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এমন কোনো চাপ নেই যেটা শেখ হাসিনাকে টলাতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ। আর উপরে আল্লাহ আছে এবং আমার বাবার আশির্বাদের হাত আমার মাথায় আছে। কাজেই কে কী চাপ দিলো না দিলো এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। জনগণের স্বার্থে যেটা করার আমরা সেটাই করবো। জনগণের কল্যাণে যে কাজ করার সেটাই করবো। অতীতেও এরকম বহু চাপ ছিল, তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। পদ্মা সেতু নির্মাণর সময় অনেক চাপ দেয়া হয়েছিল। ড. মো. ইউনূসকে একটি ব্যাংকের এমডি রাখার জন্য চাপ দেয়া হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন স্বাধীন। তারা স্বাধীন ভাবে কাজ করছে। জনগণ যাতে স্বাধীন ভাবে পছন্দের ব্যাক্তিকে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতোদিন জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ও সেনাসমর্থিত সরকার নির্বাচনে নামে প্রহসন করেছে। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে। মানুষ যাকে খুশি ভোট দিতে পারছে। দেশে এতোগুলো উপ-নির্বাচন, স্থানীয় নির্বাচন হলো কোনো নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। এখন জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতেই রয়েছে। যারা নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার করার তারা সব সময় অপপ্রচার করবেই। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে আন্তর্জাতিক-দেশি এজেন্সিগুলো উন্মুখ হয়ে রয়েছে। একজন বুদ্ধিজীবীর পক্ষে ৪০ বিশ্বনেতার বিজ্ঞাপন তারই অংশ। যারা অপপ্রচার করার তারা করবে। তারা সেটা করতেই থাক। আমার কথা হলো তারা জনগণের কাছে যাক। জনগণ তার জবাব দেবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচনের আয়োজন করবে। জনগণ ভোট দিলে আছি না দিলে চলে যাব। আফসোস নেই। ১৪ বছর আগের কথা চিন্তা করেন! দেশে জনগণের ভোটের কোনো অধিকার ছিল না। নির্বাচনের নামে প্রহসন হতো। অপর এক প্রশ্নের জাবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার (বেগম খালেদা জিয়া) জন্য যা করেছি মানবিকতার কারণে। যতটুকু সহ্য করেছি দেশের স্বার্থে। তার (বেগম খালেদা জিয়া) বোন আমার ও শেখ রেহানার কাছে এসে অনুরোধ করেছিল। তাই তাকে সহানুভুতি দেখিয়েছি।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে ৪০ বিশ্বনেতার বিবৃতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা ঠিক বিবৃতি না, এটা একটি অ্যাডভার্টাইজমেন্ট। যে ৪০ জনের নাম ব্যবহার করেছে আমাদের বিশেষ একজন ব্যক্তির পক্ষে, এর উত্তর কী দেব জানি না। আমার একটা প্রশ্ন আছে, প্রশ্নটা হলো যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত তার জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশি পত্রিকায়। এটাই আমার প্রশ্ন আর কিছু না। অ্যাড দিতে হলো কেন? তিনি বলেন, আমার দেশে কতগুলো আইন আছে। সেই আইন অনুযায়ী সব চলবে এবং চলে। আমাদের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। আমরা শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ করি। যারা ট্যাক্স ঠিক মতো দেয়, আলাদা বিভাগ আছে. তারা ট্যাক্স আদায় করে। কেউ যদি এই সমস্ত বিষয়ে কোনো রকম আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকদের অধিকার; শ্রম আদালত সেটা দেখে। এখানে তো আমার কিছুই করার নেই, সরকারপ্রধান হিসেবে। সেখানে আমাকে বা-ই কেন বলা হলো? এর বাইরে আমি কী বলব? একজন ব্যাংকের এমডিকে তার স্বপদে রাখতে একটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চাপ থাকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমডি পদে কি মধু তা আমি জানি না। আইন অনুযায়ী তার বয়স ৬০ পেরিয়ে ৭০ হয়ে যাওয়ার পরও এমডি পদে থাকতে হবে। এমডি পদে থাকলে হয়ত মানি লন্ডারিং করা যায়, পয়সা বানানো যায়, পয়সা মারা যায়, গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। সেই চাপও শেখ হাসিনা সহ্য করে চলে এসেছেন। নিজের টাকায় পদ্মা সেতু বানিয়ে দেখালাম সেই চাপে আমাদের কিছু আসে যায় না।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে দল বেশি লাফায় সে দলের দুই নেতাই হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবে ইলেকশন করতে, না পারবে ক্ষমতায় আসতে। বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে। কারণ, তাদের গঠনতন্ত্রে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। এখন সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সরকারের একার নয়, সবার। সবাইকে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরও দায়িত্ব আছে। সত্যের জয় হয়। এটা কেউ ঢাকতে পারে না। এটা আমি বিশ্বাস করি। ২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ৩০০ সিটের মধ্যে পেলো ৩০টি সিট। আর ২৭০টি পেলাম আমরা মহাজোট। ২০০৮ এর নির্বাচন যেটাকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু বলা হয় সেই নির্বাচনেই যখন তাদের এই দুরবস্থা, এখন তো আমরা অন্তত কাজ করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। তিনি বলেন, আমি বগুড়ায় খবর নিলাম, সেখানকার মানুষেরও আমাদের সরকারের প্রতি একটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমার দল করে না, অন্য দল করে, তাদের মুখ থেকেই কিন্তু আমি আজ এ তথ্যটা নিয়েছি। সাধারণ মানুষের গ্রামের মানুষের একটাই কথা, এই সরকারেরই থাকা উচিত। এটা সাধারণ মানুষের আকাঙ্খা। এরপর কী হবে দেখা যাক। ইলেকশন এটা জনগণের ইচ্ছা।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দশ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লো, এটা আবার রাজনৈতিক হয় কী করে। এই দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাতেই কিন্তু তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত। এবং খালেদা জিয়ার মন্ত্রীরাও। তারপরও তারা যদি এটাকে রাজনৈতিক বলে তাহলে আমার মনে হয় জনগণই বিচার করবে। এটা জনগণের সঙ্গে মুনাফেকি ছাড়া আর কিছু না। অস্ত্র চোরাকারি ব্যবসাটাই হচ্ছে তাদের ব্যবসা। আর সেটাকে তারা রাজনীতি হিসেবে দেখাতে চায়। আসলে ওদের (বিএনপির) জন্মই হয়েছে অস্ত্র হাতে নিয়ে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী একজন সেনা অফিসার। সেই সেনা সে হলো সেনাবাহিনীর প্রধান, আবার সেই অবস্থায় থেকে নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়েছে, অস্ত্র হাতে নিয়ে। নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় বসেছে। আর সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তৈরি করা দল হলো বিএনপি। কাজেই এদের কাছ থেকে জনগণ আর বেশি কী আশা করবে? তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তার ছেলেদের লুটপাট-দুর্নীতির কথা আমাদের না, এটা আমেরিকা-সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। এমনকি তাদের পাচার করা ৪০ কোটি টাকা কিন্তু বাংলাদেশ উদ্ধার করে ফেরত এনেছে। এ কথাটা বোধহয় সবার মনে রাখা উচিত। সেটাকেও তারা রাজনৈতিক বলবে? তিনি বলেন, সরাসরি অস্ত্র চোরাকারবারি ও গ্রেনেড হামলা ওটাও তো রাজনৈতিক। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, এই তো। ভালো, সবই রাজনৈতিক বলে ধামাচাপা দেওয়া। এরা রাজনীতির কী জানে, রাজনীতির মাধ্যমে জন্ম না তো। জন্ম তো অস্ত্র হাতে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে। সেটা মনে রাখতে হবে সবাইকে। ওদের কাছে জনগণ কিছু আশা করতে পারে না।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে যে উন্নয়ন হয় তার অনেক প্রমাণ পেয়েছি। এর জন্য অনেক ধৈর্য থাকতে হয়। অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হয়। অনেকে অনেক সমালোচনা করছেন। অবশ্য আমরাই এই সুযোগ করে দিয়েছি ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়ে। বিনিয়োগ সম্মেলনে বলা হয়েছে, উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যাতে বজায় থাকে। সামনে তা ধরে রাখা যাবে কি-না এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টাও হচ্ছে। তবে তা মোকাবিলা করার সক্ষমতাও আমাদের আছে। আমি মনে করি, এটি মোকাবিলা করবে দেশের জনগণ।
আসন্ন রমজান মাসের প্রস্তুতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজান হচ্ছে কৃচ্ছতা সাধনের মাস। আমাদের সেই কৃচ্ছতা সাধনতো করতেই হবে। রোজার মাস সামনে রেখে দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য সংগ্রহ করে রাখা আছে। অনেকের একটা প্রবণতা থাকে, জিনিসের দাম বেড়ে যাবে, আমরা অনেক কিনে ঘরে মজুদ করি। দেখা গেল যে এত নুন কিনে মজুদ করে ফেলছে যে তা গলে পানি হয়ে গেল। বা এত পিঁয়াজ কিনে রেখে দিল যে পচে গেল। এটা যেন কেউ না করে। আমি বিশেষ করে বলব, কেউ এভাবে মজুদ করতে যাবেন না, যখন যেটুকু দরকার, সেটা বাজার থেকে নেবেন। আর নিজেদের ঘরে উৎপাদন করেন। যে যা পারেন, উৎপাদন করেন, আমাদের তাহলে আর কোনো অসুবিধা হবে না। আমাদের প্রচেষ্টা আছে। তিনি আরো বলেন, সেই সাথে কিছু আছে, মজুদকারী, তারা মজুদ করে রাখার চেষ্টা করে। আর আমাদের কিছু কিছু বিরোধী দল তো আছেই, সব জয়গায় ঝামেলা পাকানোর জন্য একটা চেষ্টা। কথায় কথায় কোনো একটা কথা ছড়ালো, মিথ্যা একটা ধুঁয়া তুললো। সবাইকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, এগুলো তো হবেই, এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। মানুষের যাতে কষ্ট না হয় রমজান মাসে, তার জন্য যথাযথ চেষ্টা আমরা করছি। রমজান মাসে চালের কোনো অভাব হবে না। দেশে ২১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমাদের মজুদ আছে। এক কোটি পরিবারকে ফেয়ার প্রাইস কার্ডে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে ডাল, তেল, চিনি এগুলো তারা কিনতে পারছে। এখন ছোলাও তার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। আর তার থেকে আরেকটু কম আয়ের যারা, প্রথমে ৫০ লক্ষ ধরেছিলাম, প্রয়োজনে এক কোটি লোক যদি পাওয়া যায়, তাদেরকেও আমরা ওই কার্ডের মাধ্যমে এই পণ্যগুলো, মাত্র ১৫ টাকা কেজিতে কিনতে পারবে। আর যারা একেবারেই কর্মক্ষম না, মানে কাজ করতে পারনে না, আমরা তো ভিজিডি ভিজিএফের মাধ্যমে মাসে ৩০ কেজি চাল দিয়ে দিচ্ছি। এভাবে কোনো স্তরের মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, সেই ব্যবস্থাটা আমরা করেছি।
নতুন প্রেসিডেন্ট (মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন) প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রেসিডেন্ট একজন পোড় খাওয়া মানুষ এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা। পঁচাত্তর পরবর্তী জিয়াউর রহমান তাকে গ্রেফতার করে ডান্ডাবেড়ি দিয়ে রেখেছিলেন। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী। তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিসেও চাকরি করেছেন। বিএনপির আমলে বাধ্য হয়ে চাকরি ছাড়তেও হয়েছে। কাজেই আমি মনে করি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার মাঝে ওই দায়িত্ববোধ, রাজনৈতিক সচেতনতা, দেশপ্রেম ও ব্যক্তিত্ব আছে। তারও সবসময় এই প্রচেষ্টাই থাকবে নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারে সম্মেলন নিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলেন, সম্মেলনে কোভিড মহামারি ও চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য গৃহীত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তা, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নিরাপদ অভিবাসন, জলবায়ু অর্থায়ন প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয়ে স্বল্পোন্নত দেশের বিশেষ প্রয়োজনের কথা তুলে ধরি। এ ছাড়া বাংলাদেশসহ উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর উন্নয়ন অর্জনকে গতিশীল রাখতে বর্ধিত সময়ের জন্য এলডিসিদের জন্য প্রযোজ্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই। বাংলাদেশের উত্তরণযাত্রা ত্বরান্বিত করতে আমাদের সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি উত্তরণমুখী দেশগুলোর পক্ষে পাঁচ দফা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করি। এই সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই সম্ভবত বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ। কারণ ২০২৬ সালে আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাব।
শেখ হাসিনা বলেন, সম্মেলনে আমি বাংলাদেশের অভাবনীয় আর্থসামাজিক উন্নয়ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরি। একইসঙ্গে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে আমাদের বিভিন্ন দাবি ও প্রত্যাশার কথা উত্থাপন করি।
উল্লেখ্য গত ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী কাতার সফর শেষে দেশে ফেরেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে ৪ মার্চ কাতার সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কাতার সফরকালে প্রধানমন্ত্রী এলডিসি-৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানসহ বেশ কয়েকটি ইভেন্টে যোগ দেন। ওইসব অনুষ্ঠানে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষে কথা বলেন তিনি। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি, প্রবাসী শ্রমিকদের ইস্যুসহ দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে আলাপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সফরে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরোসি, কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেইখা মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেন।
গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। ##
বিভাগ : আজকের পত্রিকা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি প্রকাশ, বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ ভারত
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
আগামী নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরু
রিহ্যাব মেলায় গতকাল আশিয়ান সিটি’র ১৩ নং স্টলে ছিল ক্রেতাদের ভীড়।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
‘বিক্ষোভ আর কালো পতাকায়’ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বরণ!
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ২৬ নারী-পুরুষ ও শিশু
লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমন গ্রেফতার
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ল
দূর্নীতিগ্রস্ত লুটেরা মাফিয়াদল যাতে বাংলাদেশে আর ফেরত না আসতে পারে: মেজর হাফিজ
শতভাগ দলীয়করণে ক্রীড়াঙ্গন আজ তলানিতে : আমিনুল হক
দৌলতদিয়ায় বড়দের আদলে ছোটদের জমজমাট নির্বাচন
বাজারে সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয় রয়েছে: নূর
খতমে নবুওয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল্লামা সাজিদুর, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ
প্রকৃত তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সংবাদ করুন: প্রেস সচিব
কুষ্টিয়ায় ভেড়ামারায় দুই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা ও কারাদন্ড
‘চাঁদাবাজ দখলবাজরা জুলাই অভ্যূত্থানের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করছে’
মানিকগঞ্জে আগামীকাল তিনদিন ব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ
আটঘরিয়ায় দলীয় পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ
প্রত্যেক ধর্মের শান্তির বাণী নিজের মধ্যে স্থাপন করতে হবে: ড. ইউনূস