নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে নদ-নদী
২১ মার্চ ২০২৩, ০৯:০০ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪১ এএম
সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি এলাকার শেরপুরকে ইতোপূর্বে নদীমাতৃক জেলা বলা হতো। দেড় ডজন নদ-নদী ছিল গারো পাহাড়ি জেলায়। বর্তমানে নদীগুলো নাব্যতা ও অস্তিত্ব সঙ্কটে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অনেক নদীর গতিপথ গেছে পাল্টে। চলছে চাষাবাদ ও মাছের ঘের। তৈরি হচ্ছে ঘর-বাড়িও প্রতিষ্ঠান। মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে নদী-নালা, খাল-বিল। ইতিহাসে ১৬টি প্রধান নদী ও ৯টি ক্ষুদ্র নদীর উল্লেখ রয়েছে। ১৬ প্রধান নদীর নাম- ব্রহ্মপুত্র নদ, মালিঝি, সোমেশ্বরী, মৃগী, ন্ত্রেবতী, মহাঋষি, থলঙ্গ, ভোগবতী, খারুয়া, দর্শা, ভুরাঘাট, বলেশ্বরি, সুতি, মরাখড়িয়া, বৃদ্ধ ভোগবতী ও খড়িয়া নদী। নব্যতা হারিয়ে ৮ নদী কালেরসাক্ষী হয়ে আছে। বাকি ৮ নদী এখন ইতিহাস। ৮ নদী ব্রহ্মপুত্র নদ, মৃগী, সোমেশ্বরী ও মালিঝি নদী পূর্ব নামে পরিচিত, ৪ নদীর নাম পরিবর্তন হয়ে ভোগবতী থেকে ভোগাই, মহাঋষি থেকে মহারশি, থলঙ্গ থেকে চেল্লাখালিএবং ন্ত্রেবতী থেকে নেতাই নদী। বাকি নদীগুলোর বিলুপ্তি ঘটেছে। দশানি’ নামে নতুন নদীরও সৃষ্টি হয়েছে।
শেরপুরের ইতিহাসের আকবর গ্রন্থ নাগবংশের ইতিবৃত্ত ও ‘শেরপুর টাউনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ বইসূত্রে প্রকাশ ১৮৮৫, ১৮৯৭ এবং ১৯১৮ সালের ভূমিকম্পে শেরপুরের নদ-নদী, খাল-বিলের গতি পরিবর্তিন ও ভরাট হয়।
অথৈ পানির মৃগী নদী শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। যা এখন পৌর শহরের বর্জ্যরে আস্থানা। শহরের ড্রেন নামিয়ে দেয়া হয়েছে নদীতে। বিলীন হচ্ছে সুস্বাদু মাছ।
প্রবিণরা বলেন, অনেক নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ধান পাট, গম-মরিচ নিয়ে ব্যবসায়ীরা নদী পথে যাতায়াত করতেন। বিখ্যাত নেতাই নদী দখল দূষণে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যায়। অথচ এ নদ শেরপুর পরগণার ৪৩ মাইল দীর্ঘ। মৃগী নদীর দৈর্ঘ ২৯ মাইল, ব্রহ্মপুত্র সাড়ে ১০ মাইল, মালিঝি সাড়ে ৩৫ মাইল, চেল্লাখালি ১২ মাইল, সোমেশ্বরী সাড়ে ১৮ মাইল, মহারশি ১৫ মাইল এবং ভোগাই নদী ১৬ মাইল দীর্ঘ ছিল। নদীগুলো নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। নকলার সুতি নদীকে ঘিরে বৃটিশ আমলে চন্দ্রকোণায় ছিল বন্দর। সেই নদী আজ ধানিজমিও মৎস্য খামার। ইতোপূর্বে সুতি নদীতে ট্রলার, বড় বড় নৌকা চলতো। নদী ভরাটে ধান ক্ষেত ও মাছের ঘেরে পরিণত হয়েছে। হিমালয়ের থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ চীন-ভারত হয়ে কুড়িগ্রাম-জামালপুর-সিরাজগঞ্জ-শেরপুর-জামালপুরে প্রবাহমান। এই নদও এখন বালু চর। উন্নয়ন-উৎপাদন বাড়াতে ব্রহ্মপুত্র, মহারশি, সোমেশ্বরী, ভোগাই, চেল্লাখালি নদীতে বাঁধ, সøুইস গেট নির্মাণে তলদেশ ভরাটে চর জেগেছে। পাহাড়ি নদীগুলোয় বালু উত্তোলনে খননের অভাবে মরাখাল। বিবর্তন-পরিবর্তন, প্রাকৃতিক-অপ্রাকৃতিক ও জলবায়ুর পরিবর্তণে নাব্যতা হারিয়ে অনেক নদী এখন জলাধার।
অথচ পাহাড়ি নদীগুলো খননে লাভবান হতে পারেন সরকার। নাব্যতাও ফিরবে, খননে প্রাপ্ত বালু, নুড়িসহ বিপুল খনিজ সম্পদ বিক্রিতে রাজস্ব আয়ও সম্ভব।’
অথচ অসচেতনতায় নদী-খালগুলো ময়লা-আবর্জনার ডাস্টবিন। দখল-দূষণে ধ্বংস নদী রক্ষায় নেই উদ্বোগ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড শেরপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহজাহান বলেন, পাহাড়ি নদী বন্যায় পলিতে তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খননের উদ্যোগ নিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নদী ও জলাশয় দখলমুক্ত করতে জেলা প্রসাশনের সহায়তায় অভিযান চালানো হয়।
’শেরপুর জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। নকলার পেকুয়া বিলের প্রায় ১শ’ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ঝিনাইগাতীর ধলী বিলে প্রায় ৭০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।’
বিভাগ : আজকের পত্রিকা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম