ভারতীয় নারীরা যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে যে ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করেন
২১ মার্চ ২০২৩, ০৯:১৬ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৩৬ এএম
ভারতে প্রায় প্রতিটি নারীই যৌন হয়রানির শিকার হয়। সেটা জনাকীর্ণ স্থানে, বাসে বা রাস্তায়। অনেক নারীই চেষ্টা করে এ ধরনের আচরণের পাল্টা জবাব দিতে। নিজের কাছে যা আছে সেটাকেই কাজে লাগায় তাদের হেনস্থাকারীদের আঘাত করার জন্য। বিবিসি প্রতিনিধি গীতা পান্ডে নিজের অভিজ্ঞতার জানান। তিনি বলেন, ‘নারীরা যা পেত তাই ব্যবহার করত। কয়েক দশক আগেও কলকাতায় কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ট্রামে যাতায়াত করত। ভিড়ের মধ্যে সেই ট্রামে আমি আর বন্ধুরা যাতায়ত করতাম। তখন আমরা আমাদের ছাতা ব্যবহার করতাম। আমরা অনেকেই লম্বা নখ রাখতাম। বেশ ধারালো করেই রাখতাম। যাতে হেনস্তাকারীদের নখের আঁচড়া দেওয়া যায়। অন্যরা আবার নিজেদের হিল দিয়ে এ ধরনের পুরুষদের আঘাত করত। যারা ভিড়ের সুযোগ নিয়ে আমাদের যৌন হয়রানি করত।’ তবে অন্য সব কিছুর চেয়ে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হলো ‘সেফটি পিন’। ১৮৪৯ সালে এই সেফটি পিনের উদ্ভাবন। এর পর থেকেই এটি বিশ্বজুড়ে নারীরা তাদের পোশাকে ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু শুধু পোশাকে নয়, হয়রানিকারীদের শক্ত জবাব দিতেও এটি ব্যবহার করছে। কয়েক মাস আগে ভারতের বেশ কয়েকজন নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে স্বীকার করেছিলেন, তারা সব সময় তাদের হ্যান্ডব্যাগে সেফটি পিন রাখেন। এই ছোট জিনিসটি দিয়ে জনাকীর্ণ স্থানে বিকৃত আচরণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাদের পছন্দের অস্ত্র। এমনই একজন দীপিকা শেরগিল। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি নিয়মিত বাসে করে অফিসে যাতায়াত করতাম। ঘটনাটি কয়েক দশক আগে ঘটেছিল। কিন্তু কিছুটা মনে আছে। তখন আমার বয়স ছিল ২০। আর যে লোক আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছিল তার বয়স ছিল ৪০। সে সব সময় একটি ধূসর সাফারি পরত, পায়ে খোলা স্যান্ডেল পরত এবং একটি চামড়ার ব্যাগ নিত সঙ্গে। লোকটি সব সময় আমার পাশে এসে দাঁড়াত। ঝুঁকে পড়ত আমার ওপর। আমার পিঠে তার কুনই দিয়ে ঘষা দিত আর ড্রাইভার যখনই ব্রেক লাগাত তখনই আমার ওপর পড়ে যেত।’ তিনি বলেন, ‘সেই দিনগুলোতে খুব ভীত থাকতাম এবং নিজের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এমন কিছু করতাম না। কয়েক মাস ধরে নীরবে ভুগেছি। কিন্তু এক সন্ধ্যায় সে বাসে আমার সিটের পাশে দাঁড়িয়ে হস্তমৈথুন শুরু করল এবং আমার কাঁধে বীর্যপাত করল। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, এবার যথেষ্ট হয়েছে!’ তিনি আরো বলেন, ‘নিজেকে অপবিত্র লাগছিল। বাসায় পৌঁছে আমি সত্যিই অনেকক্ষণ ধরে গোসল করেছি। আমি আমার মাকেও বলিনি আমার সঙ্গে কী ঘটেছে। সেই রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি। চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছি। কিন্তু তারপর আমি প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করি। আমি তার শারীরিক ক্ষতি করতে চেয়েছিলাম, তাকে আঘাত করতে চেয়েছিলাম। এ ধরনের জঘন্য কাজ যেন ওই লোক না করতে পারে আর।’ এর পরদিন শেরগিল হিল জুতা আর সেফটি পিন নিয়ে বাসে ওঠেন। ওই লোক তার পাশে এসে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সে তার সিট থেকে উঠে যান। এরপর হিল জুতা দিয়ে ওই লোকের পা পিষে ফেলেছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘তার চিৎকার শুনে আমি খুব আনন্দ পেয়েছিলাম।’ শুধু তা-ই নয়, নিজের কাছে রাখা সেফটি পিনটি দিয়ে লোকটির কপালে খোঁচা দিয়ে দ্রুত বাস থেকে নেমে পড়েন তিনি। যদিও তিনি আরো এক বছর ধরে ওই বাসে যাতায়াত করেছিলেন; কিন্তু ওই লোকটিকে আর দেখেননি। শেরগিলের এই গল্পটি জঘন্য হলেও কিন্তু বিরল নয়। শেরগিলের অন্য একজন সহকর্মীও তার সঙ্গে ঘটা একটি ঘটনার কথা বলেছিলেন। ত্রিশের কোঠার ওই নারী রাতের বাসে ভারতের দক্ষিণের নগরী কোচি থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিলেন। বিবিসি।
বিভাগ : আজকের পত্রিকা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ফের্নন্দেসের লাল কার্ডের দিনে ফের হারল ইউনাইটেড
শেষের গোলে জিতে চেলসির জয়রথ থামাল ফুলহ্যাম
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু