কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘকে ভূমিকা রাখতে হবে

Daily Inqilab বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

০৫ আগস্ট ২০২৩, ১০:০২ পিএম | আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাশ্মীরের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
গতকাল শনিবার সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদে ‹কাশ্মীর ইস্যু এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা শীর্ষক একটি গোলটেবিল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় এমন কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন আলোচকরা। এতে সঞ্চালনা ও সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংস্থার গবেষণা পরিচালক হুসাইন মো: ইসরাফিল।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. রুহুল আমিন (সাবেক চেয়ারম্যান) ভারতকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গণতন্ত্র চর্চার আহ্বান জানান। তিনি কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন আর্টিকেল ৩৭০ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতকে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। হিন্দুত্ববাদী পলিসির মাধ্যমে কাশ্মীর হতে পারে আগামীর ইসরাইল। ফিলিস্তিনের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে কাশ্মিরিদের। ৩৭০ বাতিল করার মধ্য দিয়ে সকল ভারতীয় কাশ্মীরে জমি ক্রয় করতে পারবে। এই নীতির কারণে অদূর ভবিষ্যতে নিজ ভূমে পরবাস হতে পারে কাশ্মিরের মুসলিম জনতা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুধু পাকিস্তান ও ভারতকে সংযত থাকার অনুরোধ করে, কিন্তু কাশ্মীরের প্রকৃত সমস্যা সমাধানের জন্য কেউ কাজ করে না। দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা রক্ষায় সংঘাতমুক্ত কাশ্মীর প্রতিষ্ঠা এবং কাশ্মীরের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের উভয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার যে সংকট তা শুধু এই দুই দেশকেই ভোগায় না বরঞ্চ বাংলাদেশসহ এই অঞ্চল তথা সমগ্র বিশ্বের জন্যই এটি হুমকিস্বরূপ। কাশ্মীরের মানবাধিকার লংঘন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। এক্ষেত্রে সার্ক-কে কার্যকরী করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। কাশ্মীরের অধিবাসীদের মানবাধিকার সংরক্ষণ এবং সংঘাতযুক্ত কাশ্মীর প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ এবং ভারতের ভূমিকার উপর তিনি গুরুত্ব দেন। তিনি কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন আর্টিকেল ৩৭০ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে
ভারতকে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। কাশ্মীরি জনগণের প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে সমর্থন তা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের উচিৎ কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়ানো।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর পাশে দেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দল সমূহকে সহায়তা করার আহ্বান জানান। জাতিসংঘের মাধ্যমে গণভোট আয়োজনের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরীদের মতামত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন। মানবাধিকার সংরক্ষন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীল শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের কথা বলেন এবং সেখানে যুব সমাজের দুর্দশা ও তাদের উপর সশস্ত্র বাহিনীর নির্মমতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কাশ্মীরে নির্বিচার হত্যাকান্ড, গুম, নির্যাতন ইত্যাদি মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কাজের জন্য ভারতকে দায়ী করেছে এবং নি¤œা জানিয়েছে। তিনি বলেন, কাশ্মীরিদের যে বিশেষ স্বায়ত্বশাসন (আর্টিকেল ৩৭০) তা রদ করে ভারত এই অঞ্চলকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলেছে।
সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টার এর গবেষণা পরিচালক হুসাইন মোঃ ইসরাফিল বলেন, কাশ্মীরের সংকটের ভুক্তভোগী আমরা সবাই। কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানে আজকের এই সংহতি দিবসে আমাদের সবাইকেই একত্রিত হওয়া উচিত। কারফিউ, অবৈধ আটক, খুন সুপরিকল্পিত হত্যা, অবরোধ, বসতবাড়িতে আগুন, নির্যাতন, গুম, ধর্ষন, মুসলিম নারীদের উপর নির্যাতন এবং নকল এনকাউন্টারের মাধ্যমে হত্যা কাশ্মীরের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব মৃত্যু এবং নির্যাতন বন্ধের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সুশীল সমাজ এবং জাতিসংঘের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর পাশে দেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দল সমূহকে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার আক্ষেপ ক্লাব বিশ্বকাপে ঘোচাতে চায় ইন্টার

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার আক্ষেপ ক্লাব বিশ্বকাপে ঘোচাতে চায় ইন্টার

বিজিবির অভিযানে মে মাসে ১৩৩ কোটি ১১ লক্ষাধিক টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ

বিজিবির অভিযানে মে মাসে ১৩৩ কোটি ১১ লক্ষাধিক টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ

পরিবহন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৭টি ওমরাহ কোম্পানি স্থগিত

পরিবহন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৭টি ওমরাহ কোম্পানি স্থগিত

রাশিয়ার হামলায় কিয়েভে মার্কিন নাগরিকসহ নিহত ১৪

রাশিয়ার হামলায় কিয়েভে মার্কিন নাগরিকসহ নিহত ১৪

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না হলে আন্দোলন চলবে

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না হলে আন্দোলন চলবে

জি-৮ থেকে রাশিয়াকে বাদ দেয়া ‘বিশাল ভুল’ ছিল: ট্রাম্প

জি-৮ থেকে রাশিয়াকে বাদ দেয়া ‘বিশাল ভুল’ ছিল: ট্রাম্প

সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

এস আলমের ২০০ একর জমি জব্দের নির্দেশ আফতাবুলের ৯৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ

এস আলমের ২০০ একর জমি জব্দের নির্দেশ আফতাবুলের ৯৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ

নগর ভবন অচলাবস্থার জন্য এই সরকার দায়ী : ইশরাক

নগর ভবন অচলাবস্থার জন্য এই সরকার দায়ী : ইশরাক

বাবার যত্নে ওষুধ, মেডিকেল টেস্ট, হেলথ চেকআপে বিকাশ পেমেন্টে ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক

বাবার যত্নে ওষুধ, মেডিকেল টেস্ট, হেলথ চেকআপে বিকাশ পেমেন্টে ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক

শেখ হাসিনা নিজের ইচ্ছেমতো ইতিহাস ও পাঠ্যবই রচনা করেছিল: রিজভী

শেখ হাসিনা নিজের ইচ্ছেমতো ইতিহাস ও পাঠ্যবই রচনা করেছিল: রিজভী

‘ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে পারবে না’

‘ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে পারবে না’

ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাওয়ার দাবীতে বিশ্বনাথে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ-দোয়া মাহফিল

ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাওয়ার দাবীতে বিশ্বনাথে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ-দোয়া মাহফিল

দোয়ারাবাজারে সড়ক দূর্ঘটনায় গরুটি মৃত্যু  আহত ৪

দোয়ারাবাজারে সড়ক দূর্ঘটনায় গরুটি মৃত্যু আহত ৪

জুবাইদা রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ২ দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন

জুবাইদা রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ২ দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন

সুন্দরগঞ্জে জামের গাছ থেকে পড়ে একজনের মৃত্যু

সুন্দরগঞ্জে জামের গাছ থেকে পড়ে একজনের মৃত্যু

ভবিষ্যতে ছেড়ে দেব এমন কথা বললে তালাক হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে।

ভবিষ্যতে ছেড়ে দেব এমন কথা বললে তালাক হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে।

পরিবার থেকে রাষ্ট্র : ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের উপায়

পরিবার থেকে রাষ্ট্র : ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের উপায়

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ এবং জেরুজালেমের মুক্তির প্রশ্ন

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ এবং জেরুজালেমের মুক্তির প্রশ্ন

সকলের দৃষ্টি এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে

সকলের দৃষ্টি এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে