কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় মহাসড়ক লাগোয়া নাঙ্গলকোটের সীমান্তঘেঁষা সড়ক ও জনপথের (সওজ) জায়গা দখল করে এক আওয়ামী লীগ নেতা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। স্থাপনা নির্মাণকারী ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম মো. আবুল কাশেম। তিনি লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছেন। এছাড়া আবুল কাশেম স্থানীয় বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। মহাসড়ক লাগোয়া দখলকৃত ওই জমিকে নিজের দাবি করে ওই আওয়ামী লীগ নেতা স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দত্তপুরে মহাসড়কের পূর্বপাশে গুঙ্গিয়াজুরি খালের ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেমের ‘প্রিথিলা রাইস মিল’ নামে একটি চালকল রয়েছে। খালের ওপরে মহাসড়কের ব্রিজ ঘেঁষে ওই নেতার চালকল লাগোয়া স্থানে সম্প্রতি একটি পাকা স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা কাশেম এলাকার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এজন্য তিনি সড়কের জায়গা দখল করলেও কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পান না। এছাড়া তার চালকলের বিষাক্ত বর্জ্য এবং গরম পানি সরাসরি গুঙ্গিয়াজুরি খাল হয়ে পাশের ডাকাতিয়া নদীতে মিশছে। এতে বিষাক্ত হয়ে পড়েছে খালের পানি। বিষাক্ত বজর্য পানিতে ফেলায় ফসল উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। এছাড়া চালকলের কালো ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ। সম্প্রতি দখল করা ওই স্থাপনা নির্মাণের পর সেখানে চালকলের জন্য বড় ট্রান্সফরমার রাখবেন তিনি।

ট্রান্সফরমার স্থাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর লালমাই উপজেলার বাগমারা জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) গাজী হাফিজুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের পাশে ট্রান্সফরমার লাগাতে হলে অবশ্যই বিদ্যুৎ অফিসের নিরাপত্তা বিভাগের অনুমতি নিতে হবে। না হয় আমরা ট্রান্সফরমার দেবো না। তাছাড়া মহাসড়কের পাশেই যেহেতু স্থাপনের কথা বলা হচ্ছে, এতে নিরাপত্তাজনিত কারণে অনুমতি না পাওয়ারই কথা।

এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, কুমিল্লার উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবদুল মমিন বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য রাইস মিলের মালিককে বলা হয়ছে। কিন্তু তিনি দাবি করেছেন ওই জায়গাটা তার মালিকানাধীন। এজন্য আমরা শিগগিরই সার্ভেয়ার দিয়ে স্থানটি পরিমাপ করে চিহিৃত করে দেব। পরিমাপের পর মহাসড়কের জায়গায় হলে সেটি উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, সড়কের পূর্ব পাশে জমি অধিগ্রহণ না করেই চার লেনের কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সেজন্য আমার মালিকানাধীন জায়গা মহাসড়কের ভেতরেও রয়েছে। আমি আমার জায়গাতেই স্থাপনা নির্মাণ করছি। সেখানে আমার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান প্রিথিলা রাইস মিলের ট্রান্সফরমার রাখা হবে। আমি কোন জায়গা দখল করিনি। নিজের জায়গার মধ্যেই কাজ করছি। এরপরও আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।