দেশে কোনো সরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, দেশে সরকার থাকলে ৭০০’র অধিক মানুষ গুম এবং নিখোঁজ হতো না। সরকার থাকলে নির্বিচারে এভাবে মানুষ হত্যা করা হতো না। দেশের নাগরিকরা ট্যাক্স-ভ্যাট দিচ্ছে, আইন মানছে, কিন্তু তাদের কোনো অধিকার নেই। তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূচনা লগ্নে অন্যতম সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান নিখোঁজ হয়ে গেলেন। অনেকে বলেন, তার কাছে যারা মুক্তিযুদ্ধের দাবিদার তাদের আসল চরিত্র, আসল চিত্র, আসল ঘটনা ছিল। এই যে গুম শুরু হয়েছে, তা মঙ্গলবার পর্যন্তও হবিগঞ্জে হয়েছে। ৬০০-৭০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে। সন্তান তার পিতার মুখ দেখতে চায়, হাত ধরে স্কুলে যেতে চায়। এই বাচ্চা তার অভিভাবককে, পিতাকে পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকা-ে প্রধানমন্ত্রী তার স্বজনদের হারিয়েছেন। আমরা তার কষ্ট বুঝি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এই ৬০০-৭০০ মানুষের পরিবারের কষ্ট স্বীকার করতে চান না। এইজন্যই আমি বলেছি, দেশে সরকার আছে, সেটি মনে হচ্ছে না। বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, যিনি দেশে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন, স্বৈরাচারদের পতন ঘটিয়েছেন, নারী শিক্ষার অগ্রগতি যার হাত ধরে হয়েছে, সেই বেগম খালেদা জিয়াকে একটি মিথ্যা মামলায় পাঁচ বছর জেলখানায় রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, সংবিধানের স্বীকৃত বিষয় মানুষের কথা অধিকার থাকবে। কিন্তু তারেক রহমানের বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে কোথাও রাখতে দেওয় হচ্ছে না। তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন। তার কথা কেউ প্রকাশ করতে পারবে না। যে কোর্ট মানুষের অধিকার নিশ্চিত করবে, সেই কোর্ট মানুষের অধিকার কেঁড়ে নিচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না।

দুদু বলেন, এজন্য আমরা বলেছি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং একটি নির্বাচন কমিশন আলোচনার মধ্য দিয়ে গঠন করতে হবে। আজকে বলছি। তার মানে এই নয় যে বলতেই থাকবো। এক সময় বিএনপি এবং তার সৈনিকরা এই বলাটাকে কার্যকর করবে। আপনি বাধ্য হবেন পদত্যাগ করতে, সংসদ ভেঙে দিতে, নির্বাচন কমিশনকে পুর্নগঠন করতে। কারণ এই জাতি মুক্তিযুদ্ধ করা জাতি, এই জাতি লড়াই-সংগ্রাম নয়, যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অর্জন করেছে। জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের সভাপতি মোক্তার আখন্দের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, শাম্মী আক্তার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের রাশেদুল হক, বিএনপি নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, মুক্তিযোদ্ধা দলের লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ।