দিশেহারা ঝিনাইগাতীর কৃষকরা

আলুখেতে লেট ব্লাইট রোগ

Daily Inqilab ঝিনাইগাতী (শেরপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশায় শেরপুর গারো পাহাড়ে আলুক্ষেতে দেখা দিয়েছে ‘লেট ব্লাইট রোগ’। ফলে ক্ষেত থেকে আলু তোলার শেষ সময়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। সার কীটনাশকের চড়া দামের সঙ্গে লেট ব্লাইট রোগ দমনে স্প্রে করতে বাড়তি খরচ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে কৃষকের জন্য।

ঝিনাইগাতী উপজেলার গোমড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান তার আলু ক্ষেতে রোগ দেখা দিয়েছে। এনিয়ে খুব চিন্তায় রয়েছেন তিনি। শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুরের কৃষক মোজাম্মেল হক ১ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। ঘন কুয়াশা ও প্রচ- ঠা-ায় শেষ সময়ে লেট ব্লাইটে আক্রান্ত হয়ে ৪০ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হয় তাকে। তিনি বলেন, আমার প্রতি কাঠায় ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উঠছে মাত্র ৩ হাজার টাকা। এতে একরে ৪০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। শুধু মোজাম্মেল হক নন, গেলো মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ায় এবারও অধিক লাভের আশায় আলুচাষে নেমেছিলেন শেরপুরের কৃষকরা।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় এবার ৫ হাজার ২১১ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। কিন্তু চলতি মৌসুমে আলুক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগের প্রাদুর্ভাবে দিশেহারা স্থানীয় কৃষকরা। কৃষকরা বলেন, আলু রোপনের দেড় থেকে দুই মাসের মাথায় গাছের কা- ও পাতা রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছ মরে যাচ্ছে। বার বার ছত্রাকনাশক প্রয়োগেও আলুর গাছ বাঁচাতে পারছেন না কৃষকরা। এতে হতাশ হয়ে পড়ছেন তারা। তাই এবার আলু উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা তাদের। রৌহার আলুচাষি কবির মিয়া বলেন, ঘন কুয়াশায় এবার আলু খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করেও লাভ হচ্ছে না। নকলার চন্দ্রকোণার রাজন শেখ বলেন, কীটনাশক কোনটা ব্যবহার করবো, তারও কোনো সমাধান পাচ্ছি না। একেতো কীটনাশকের দাম বেশি, তার উপর ১ দিন পর পর কীটনাশক দিয়ে উল্টো আলু গাছের ক্ষতি হচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে। এবার খুব ক্ষতির মধ্যে আছি। এবার বীজ আলু নিয়েও বিপাকে পড়তে হবে স্থানীয় কৃষকদের। কৃষক লতিফ মিয়া বলেন, যারা বিএডিসির চুক্তিভিত্তিক চাষি, তারাও এবার চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়বে। খরচ তোলা নিয়েও শঙ্কায় আছেন তারা। গত মৌসুমে আলুতে ভালো লাভ পেয়ে অনেকেই এবার ধারদেনা ও ব্যাংক ঋণ করে আলুচাষ করেছিলেন। কিন্তু এ রোগের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। মাঠকর্মীদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করলেও, তেমন কাজে আসছে না।

শেরপুর খামারবাড়ীর অতিরিক্ত উপপরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, তীব্র শীত ও কুয়াশায় এ রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। আমাদের কর্মকর্তারা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে এ রোগের সমস্যা থাকবে না।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সীমান্ত হত্যায় ব্যবহৃত চাকুসহ আরো এক আসামী  গ্রেফতার

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সীমান্ত হত্যায় ব্যবহৃত চাকুসহ আরো এক আসামী গ্রেফতার

সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়লো

সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়লো

৪২ মিনিটেই নেইমারের আয় ১০১ মিলিয়ন ইউরো

৪২ মিনিটেই নেইমারের আয় ১০১ মিলিয়ন ইউরো

মাগুরায় পিলখানা হত্যাকান্ডে হত্যাকারী ও পরকল্পনাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাগুরায় পিলখানা হত্যাকান্ডে হত্যাকারী ও পরকল্পনাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

কসাই থেকে নদীখেকো জাফর

কসাই থেকে নদীখেকো জাফর

পাঁচ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঁচ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পাঁচ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের পাঁচ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

ফ্যাসিবাদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে সক্রিয় ছিল ইবি ছাত্রদল

ফ্যাসিবাদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে সক্রিয় ছিল ইবি ছাত্রদল

সামনের বর্ষায় ঘাসে ঢাকা হবে রাজধানীর অনাবৃত সড়ক বিভাজন: উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

সামনের বর্ষায় ঘাসে ঢাকা হবে রাজধানীর অনাবৃত সড়ক বিভাজন: উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

মাদারীপুরে ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরে ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন

পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতি : দুদকের মামলায় হাসিনা-পুতুলসহ ১৬ আসামি

পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতি : দুদকের মামলায় হাসিনা-পুতুলসহ ১৬ আসামি

কোকোর দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আরাফাত রহমান বড় ভূমিকা ছিল: কাজী রিপন

কোকোর দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আরাফাত রহমান বড় ভূমিকা ছিল: কাজী রিপন

তারেক রহমান একজন মানবিক মানুষ: কাইয়ুম চৌধুরী

তারেক রহমান একজন মানবিক মানুষ: কাইয়ুম চৌধুরী

রাবির সাত হলে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় উত্তাল ক্যাম্পাস, তদন্ত কমিটি গঠন

রাবির সাত হলে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় উত্তাল ক্যাম্পাস, তদন্ত কমিটি গঠন

ডিসেম্বরে সর্বাধিক রেমিট্যান্স এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও সউদী আরব থেকে

ডিসেম্বরে সর্বাধিক রেমিট্যান্স এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও সউদী আরব থেকে

যশোরে চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকুরি পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন

যশোরে চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকুরি পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন

অপরাধী যদি আমার ভাই হয়, তাকেও ছাড় দিবেন না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অপরাধী যদি আমার ভাই হয়, তাকেও ছাড় দিবেন না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আবারও সিলেটের নায়ক জাকির, খুলনার টানা দ্বিতীয় হার

আবারও সিলেটের নায়ক জাকির, খুলনার টানা দ্বিতীয় হার

এবার হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে নারী আইনজীবীর মামলা

এবার হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে নারী আইনজীবীর মামলা

ব্যবসায়ীকে কোপানোয় শাস্তির হুঁশিয়ারি উপদেষ্টা আসিফের

ব্যবসায়ীকে কোপানোয় শাস্তির হুঁশিয়ারি উপদেষ্টা আসিফের

৩৮ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

৩৮ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া