২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বছর শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশে। শিল্প ও সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি কমায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। অবশ্য চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ। গত বৃহষ্পতিবার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে এ তথ্য উঠে এসেছে। এই প্রথম সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থাটি কোনো চলমান অর্থবছরের ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্য প্রকাশ করল।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জিডিপি প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় কমেছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। আবার চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি কমেছে। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সরকারের ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বরের সিদ্ধান্ত এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ মোতাবেক বিবিএস’র ত্রৈমাসিক স্থূল দেশজ উৎপাদন (কিউজিডিপি) প্রাক্কলনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এর মাধ্যমে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও কিউজিডিপি প্রাক্কলন করছে। বিবিএস বলছে, ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলনের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির হ্রাস-বৃদ্ধির প্রবণতা পরিমাপ করা এবং ও নীতিনির্ধারকদের যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করা।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে স্থির মূল্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১ম প্রান্তিকে ছিল ২ দশমিক ০৭ শতাংশ ।
শিল্প খাতের ত্রৈমাসিক প্রবৃদ্ধিও কমে গেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ১১ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর এক বছর আগে এটি ছিল ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। তবে সেবা খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে ছিল ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তবে গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। চড়া মূল্যস্ফীতি থাকার সম্ভাবনার কারণে চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছু ধীর হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কম থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।