১৫ দিনের সময় বাড়ানোর আবেদন নাকচ

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা মেলায় পণ্য প্রদর্শনীতেই সন্তুষ্ট বৃহত্তর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো

Daily Inqilab মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে :

২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৭ এএম | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৭ এএম

ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বছরের শুরুর দিন থেকে পূর্বাচলের স্থায়ী প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিভিশন সেন্টারে চলছে ২৯তম আসর। আর মাত্র ২ দিন পর পর্দা নামতে যাচ্ছে এ আসরের। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০২৫ (ডিআইটিএফ) আরো ১৫ দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করলেও তা নাকচ করেছেন ইপিপি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে মেলায় আগত বৃহত্তর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য প্রদর্শনীতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর শেষের দিকে স্থানীয় ক্রেতা দর্শনার্থীদের আনাগোনাও বেড়েছে বেশ।

মেলা প্রসঙ্গে বিজিএমইএ পরিচালক আবু হোসেন ভুইয়া রানু বলেন, এ মেলার উদ্দেশ্য উৎপাদনকারীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে পণ্যের মান বৃদ্ধি, পণ্যে বৈচিত্র আনা, মূল্যের ভারসাম্য রক্ষা এবং উৎপাদনকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা। বাংলাদেশের তুলনামূলক সুবিধা সম্পর্কে বিদেশি অংশগ্রহণকারী ও পরিদর্শনকারীদের অবহিত করা। বৃহত্তর প্রতিষ্ঠানগুলোর পন্য হয়তো সরাসরি এখান থেকে ক্রয় করেন না সাধারণ লোকজন। কিন্তু প্রদর্শন তো হয়।

মেলার আগত স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব আলম প্রিয় বলেন, বাণিজ্য মেলায় দেশি-বিদেশি প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। তবে এ বছর বিদেশী ও দূরদূরান্তের ক্রেতা দর্শনার্থীদের আনাগোনা কম। বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, বিশেষত দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য প্রদর্শনীর অনন্য সুযোগ পায় এ বাণিজ্যমেলায়। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শক-ক্রেতারা বছরের শুরুতেই এ মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। আমরা স্থানীয়রাও বছরের কেনাকাটা এখান থেকেই করি। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও তরুণ উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ থাকলে মেলার আয়োজন স্বার্থক হতো।
সূত্র জানায়, এবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেন। মেলা ও পণ্য প্রদর্শনীর বিষয়ে ইপিবির সচিব বিবেক সরকার বলেন, মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশি-বিদেশি ভোক্তাদের বিভিন্ন পণ্য ও সেবার সঙ্গে পরিচিত করা। সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদনকারীদের নিত্যনতুন ও অধিকতর মানসম্পন্ন পণ্য নিয়ে ভোক্তার মুখোমুখি হওয়ার এবং একই সঙ্গে ক্রেতা-বিক্রেতা ও উৎপাদনকারীদের প্রত্যক্ষ সংযোগ সৃষ্টি করে এ মেলা।
মেলার পরিচালক ও ইপিবি সচিব বিবেক সরকার বলেন, উৎপাদনকারীদের নতুন নতুন শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করাও মেলার লক্ষ্য। আর পণ্য প্রদর্শনীর তীর্থস্থান বাণিজ্য মেলা। প্রতি বছরই সময় বাড়ানোর আবেদন থাকে। এবারও ৫৬ ব্যবসায়ী ১৫ দিনের আবেদন বাড়ানোর দাবি করেছেন। উর্ধ্বতন মহল তা নাকচ করেছেন। ফলে ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাণিজ্য মেলা অনন্য ভূমিকা পালন করে। দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় অংশ নিয়ে অভ্যন্তরীণ বাজার সুসংহতসহ নতুন নতুন পণ্য ও সেবার পরিচিতির মাধ্যমে ব্যবসার সম্প্রসারণ করে। এছাড়া মেলার মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পণ্য রফতানির সুযোগ পায়। এসব কারণে এ মেলা আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং সরকারি-বেসরকারি সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় ঢাকায় আয়োজিত এ বাণিজ্য মেলা ইতিবাচক রফতানি প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এর বাইরে মেলা আয়োজনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণ, সজ্জিতকরণ, মালামাল বহন, ক্রয়-বিক্রয়সহ নানা কাজে প্রচুর জনবলের প্রয়োজন হয়। মেলারএ মাধ্যমে দক্ষ-অদক্ষ ও অর্ধ-দক্ষ জনবলের মৌসুমি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়।
বাণিজ্যমেলায় আসা মিনিস্টার কোম্পানির স্টল ম্যানেজার হাবিবউল্লাহ বলেন, মেলার মাধ্যমে ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ইনোভেটিভ দক্ষতা ফুঁটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়। খুব সহজেই দেশের ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং খাতের সুনাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে দিতে এ মেলা ভূমিকা রাখে।
গতকাল মেলাপ্রাঙ্গণে দেখা যায়, ইলেকট্রনিক্স পণ্যের স্টলগুলোতে ভিড় কিছুটা বেশি। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের নতুন ইনোভেশনগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছেন দর্শনার্থীরা।

আর বিক্রেতারা তাদের পণ্য নিয়ে দর্শনার্থীদের ধারণা দিচ্ছেন। তবে এবার এক্সিবিশন সেন্টারের ভিতরে হাতেগোনাএ কয়েকটি স্টল হয়েছে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

আলাভেসকে হারিয়ে রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধান কমালো বার্সা

আলাভেসকে হারিয়ে রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধান কমালো বার্সা

সউদী যুবরাজের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট জোলানির সাক্ষাৎ

সউদী যুবরাজের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট জোলানির সাক্ষাৎ

ট্রাম্পের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন আরব মন্ত্রীরা

ট্রাম্পের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন আরব মন্ত্রীরা

নববর্ষের ছুটিতে নিজ শহরে বীরোচিত অভ্যর্থনা ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতাকে

নববর্ষের ছুটিতে নিজ শহরে বীরোচিত অভ্যর্থনা ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতাকে

ট্রাম্পের নির্দেশে আইএসের বিরুদ্ধে সোমালিয়ায় বিমান হামলা শীর্ষ পরিকল্পনাকারী নিহত

ট্রাম্পের নির্দেশে আইএসের বিরুদ্ধে সোমালিয়ায় বিমান হামলা শীর্ষ পরিকল্পনাকারী নিহত

সংঘাত নিরসন আলোচনা শুরুর প্রস্তুতি নিশ্চিত করেছেন জেলেনস্কি

সংঘাত নিরসন আলোচনা শুরুর প্রস্তুতি নিশ্চিত করেছেন জেলেনস্কি

সরে গেলো নৌকা

সরে গেলো নৌকা

জানুয়ারিতে টার্কস্ট্রিম দিয়ে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রফতানি রেকর্ড উচ্চতায়

জানুয়ারিতে টার্কস্ট্রিম দিয়ে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রফতানি রেকর্ড উচ্চতায়

ভারতের ৭৮ বিলিয়ন ডলার বাড়লো প্রতিরক্ষা বাজেট

ভারতের ৭৮ বিলিয়ন ডলার বাড়লো প্রতিরক্ষা বাজেট

ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তরের দ্বী-বার্ষিক সম্মেলনে রেজাউল করিম

ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তরের দ্বী-বার্ষিক সম্মেলনে রেজাউল করিম

স্বামীর টাকা তাকে না বলে স্ত্রীর বাবা-মাকে দিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে।

স্বামীর টাকা তাকে না বলে স্ত্রীর বাবা-মাকে দিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে।

মির্জাপুরে মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’  ঘোষণা উপজেলা প্রশাসনের

মির্জাপুরে মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা উপজেলা প্রশাসনের

বান্দরবানের লামায় ৭ শ্রমিককে অপহরণের অভিযোগ

বান্দরবানের লামায় ৭ শ্রমিককে অপহরণের অভিযোগ

মির্জাপুরে মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা উপজেলা প্রশাসনের

মির্জাপুরে মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা উপজেলা প্রশাসনের

নবাব সলিমুল্লাহ্'র ১১০ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

নবাব সলিমুল্লাহ্'র ১১০ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

৩৭ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আফ্রিদিকে মনে করালেন অভিষেক

৩৭ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আফ্রিদিকে মনে করালেন অভিষেক

ভারত সীমান্তের সেই বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে যাবেন জামায়াত আমির

ভারত সীমান্তের সেই বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে যাবেন জামায়াত আমির

তৌহিদের সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন

তৌহিদের সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন

গণতন্ত্রের আপসহীন সংগ্রামী বেগম খালেদা জিয়া

গণতন্ত্রের আপসহীন সংগ্রামী বেগম খালেদা জিয়া

পাঠ্যপুস্তক ইতিহাস-সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের অনুগামী হতে হবে

পাঠ্যপুস্তক ইতিহাস-সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের অনুগামী হতে হবে