পণ্যের চড়া দামেও জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা
০৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:২৯ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:০৫ পিএম
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম প্রতিটি জামা-কাপড়ের দোকান। সাধারণ সময়ের চেয়ে দেড়-দ্বিগুণ দাম বেশি রাখছেন দোকানিরা।
আজ শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের চৌরাস্তার দুধারের মার্কেট গুলোয়, পৌর শহরের বিপণিবিতান, জুতার শোরুম ঘুরে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেতারা দর-কষাকষি করে ঈদের কেনাকাটা করছেন।
এসব বিপণি বিতান, শপিং সেন্টারের মালিক ও ব্যবসায় সমিতির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথম রোজার পর থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষজন বিপণিবিতানগুলোতে জড়ো হচ্ছেন। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটার চলছে। এতে করে পুরোপুরি জমে উঠেছে ঈদের বাজার। প্রতিটি দোকানে গড়ে দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসলে বেচাকেনার চাপ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে জানান তারা।
সবচেয়ে বেশি ভিড় পড়ে মেয়েদের ও ছোট শিশুদের জামাকাপড়ের দোকানে। দিন যত যাচ্ছে, বিক্রির পরিমাণ ততই বাড়ছে বলে জানান শহরের শতরুপা ফ্যাশন দোকানের স্বত্বাধিকারী বলেন, প্রতিবারই ঈদের কেনাকাটার শবে বরাতের পর থেকে শুরু হয়ে যায়। এবার একটু দেরি করে হয়েছে। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা দেখে, শোনে সময় নিয়ে কেনাকাটা করছেন। সাধারণ সময় আমাদের দোকানে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। তবে ঈদের এই মৌসুমে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ঈদ যত কাছাকাছি আসবে বিকিকিনি পরিমাণ আরও বাড়বে।
দুপুর দুইটার দিকে শহর মার্কেটের ভেতরে ঢুকতেই আমাদের প্রতিবেদক মাসুদ রানা পলক এর সঙ্গে কথা হয় কয়েকজন ক্রেতার। তারা চারজন সদর উপজেলা থেকে ৩৮ কিলোমিটার অদূরে রানীশংকৈল উপজেলার ভান্ডারা এলাকা থেকে এসেছেন। ছেলে, মেয়েসহ পরিবারের সবার জন্য করছিলেন ঈদের কেনাকাটা।
এদের একজন মোঃ সইদুল হক, দুই মেয়ে নিয়ে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, মার্কেটে মানুষের অনেক ভিড়। সব জিনিসের দাম দ্বিগুণ। সকালে এসেছি দুই মেয়ে, শ্বশুর, শাশুড়ি ও নিজের জন্য জামা-কাপড় কিনতে। শিশু, বুড়ো সবার পোশাকের দাম অনেক বেশি। দুপুর পর্যন্ত ঘুরে শুধু মেয়েদের কেনাকাটা সেরেছি। বিকেলের মধ্যে সবার কেনাকাটা শেষ করেই বাড়ি ফিরব।
তবে একই মার্কেটে কথা হয় আব্দুল হেলাল এর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার নিজের ও দুই ছেলে-মেয়ে কেনাকাটা করতে ৮ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলাম। জামা-কাপড়, জুতার এতটাই দাম, বাচ্চাদের কেনাকাটা করতে গিয়ে সব টাকা শেষ নিজের জন্য কোনো কিছু না কিনেই এখন বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
শহরের নাম করা কয়েকটি বিপণিবিতানের একটি সন্তোষ ক্লথ স্টোর। এখান থেকে নিয়মিত জামা, গজ কাপড় কেনেন শিক্ষক সীমা আকতার।
শীমা বলেন, দুই মাস আগে যে গজ কাপড় ১৫০ টাকায় কিনেছি, সেগুলোর দাম ৩২০ টাকা ফিক্সড দাম চাচ্ছে। গত মাসে পাকিস্তানের যে সব থ্রি পিছ ৪ হাজার টাকায় কিনেছিলাম সেগুলো এখন ৬ হাজার টাকার কম বিক্রি করতে চাচ্ছে না। এমন দাম হলে মানুষ কীভাবে ঈদের কেনাকাটা করবে। পোশাকের দাম সত্যি এতটা বেশি না সিন্ডিকেট করে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে কে জানে।
পোশাক কেনা শেষে সবাই ঢুঁ মারছেন জুতা ও কসমেটিকসের দোকান এবং শোরুমে। জুতা পছন্দের ক্ষেত্রে বাটা, অ্যাপেক্স, লোটো ও ক্যাজুয়াল রয়েছে শীর্ষে।
বাটা শোরুমের একজন বিক্রয় কর্মী বলেন, নারী ক্রেতারা তাঁদের পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে স্যান্ডেল, শু, নাগরা, পেনসিল হিল ও স্লিপার কিনছেন। ছেলেরা পাঞ্জাবি, প্যান্ট ও টি-শার্টের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্যাজুয়াল ও ফ্ল্যাট জুতা নিচ্ছেন। এখানেও দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের রয়েছে আক্ষেপ অভিযোগ।
শহরে চাইনা সুজ দোকানের বিক্রয় কর্মী আবির হোসেন বলেন, জোতার দোকানে গতবারের তুলনায় এবার বিকিনি পরিমাণ কম। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। তিন মাস আগে যে জুতা ৫০০-৭০০ টাকায় পাইকারি কিনেছি, সেগুলো ঈদ উপলক্ষে ৮০০-১০০০ হাজার টাকায় কিনেছি। এতে বাধ্য হয়ে আমাদেরও বেশি দামে জুতা বিক্রি করতে হচ্ছে। ক্রেতারা দোকানে ডোকেন। দাম বেশি হওয়ায় দরদাম করে চলে যান। তবে আশা করছি, ঈদের আগে বিকিকিনি পরিমাণ অনেক ভালো হবে।
পোশাকের রং ও ধরনের সঙ্গে মিল রেখে তরুণী ও নারীরা কিনছেন বিভিন্ন গয়না, গলার সেট, হাতঘড়ি, পায়েল, ব্রেসলেট, মাথার টিকলি, সানগ্লাস ও বাহারি রঙের চুড়ি।
ঠাকুরগাঁও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো.ফরিদ বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে ঈদে বিপণিবিতানগুলোতে বিক্রির পরিমাণ একটু কম ছিল। এ বছর রমজানের শুরু থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়েছে।
আশা করছি এবার ঈদে শুধু শহরের দোকানগুলোতে বিক্রির পরিমাণ প্রায় কয়েক কোটি টাকার বেশি ছাড়িয়ে যাবে।
দামের বিষয়ে তিনি বলেন, বৈশ্বিক মন্দার কারণে সব পণ্যের দাম অনেক চওড়া। কোনো দোকানদার যেন ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য না নেয় সেজন্য সব ব্যবসায়ীদের মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জুলাই হতাহতের বিচার আদৌ হবে কিনা সংশয় স্বজনের মধ্যে
হরিণাকুন্ডুতে যুবদল সভাপতির উপর গুলি অল্পের জন্য রক্ষা
সচিবালয়ে আগুন, টঙ্গী হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের আস্ফালন একই সূত্রে গাঁথা : যুব সমাবেশে মাওলানা মামুনুল হক
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে :পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সেই সুখরঞ্জন বালির ভারতে গুমের লোমহর্ষক কাহিনী
খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন শাস্তি হলে হাসিনার সুযোগ নেই :অ্যাটর্নি জেনারেল
থার্টি ফাস্ট নাইট নিষিদ্ধ করতে হবে আইন করে :জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান
হাসিনা-জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের প্রমাণ পেয়েছে এফবিআই
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন
সংস্কারের সঙ্গেই নির্বাচন প্রস্তুতি
‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে বিকল্প সোলার সিস্টেম চালু করুন’
আসিফ মাহমুদের হেলিকপ্টারে ছয় দিনে ২৮ বার সফর বিতর্ক
বন্ধ রয়েছে পায়রা বন্দরে পণ্য খালাস কার্যক্রম
ডেঙ্গুতে মৃত্যুহীন ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৫৩
নববর্ষ উদযাপনে ৭ বছরে শব্দদূষণ বেড়েছে ৭৪ শতাংশ
হাসিনা পরিবারের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরুর পরই সচিবালয়ে আগুন : রিজভী
হাসিনার ফ্যাসিজম নিয়ে সস্তা কথা টিকবে না : শফিকুল আলম
চাঁদপুর মেঘনায় ড্রেজারসহ ২৮ জন আটক
ব্যাট হাতেও উজ্জ্বল অভিষিক্ত বশ,চালকের আসনে দক্ষিণ আফ্রিকা
১৬ বছরের অভিনেতার অকাল প্রয়াণে হলিউডে শোকের ছায়া