বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালককে হত্যার দায়ে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ কে এম রাশেদুজ্জামান-এর আদালত। সোমবার আসামিদের উপস্থিতিতে জেলা ও দায়রা জজ এ রায় ঘোষণা দেন বলে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ওবায়দুল্লাহ সাজু জানান। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত রাসেল হাওলাদার (৩০) বরগুনার সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা চেয়ারম্যান বাজার এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া ওই গ্রামের বাসিন্দা বেল্লাল হোসেন (৩৩), শাহিন মিয়া (৩২) এবং ইদ্রিস হাওলাদার (৩০)কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ৪ মার্চ বাকেরগঞ্জ উপজেলার বালি গ্রামে শহিদুল ইসলামের বাড়িতে গভীর নলকূপ স্থাপন করতে আসেন আসামিরা। পরদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই গ্রামের সড়কে ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক ফয়সালকে একা পান তারা।তখন ফয়সালের পথরোধ করে রড দিয়ে তার মাথায় সজোরে আঘাত করে ও গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে ফয়সালকে হত্যা করে পাশের এক দোকানের পেছনে লাশ লুকিয়ে ফেলে।
পরে রাতেই ফয়সালের মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটরসাইকেলের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘরষে যড়িয়ে পরে আসামিরা। বাড়ির গৃহকর্তা শহিদুল এসে মারামারি থামানোর সময় মোবাইল ফোনে ফয়সালের ছবি দেখতে পান।
পরে তার ঘরে পেছনে মোটরসাইকেল দেখে পাশের গ্রামের ফয়সালের বাবা নুরুল ইসলামকে খবর দেন তিনি। এরপর নুরুল ইসলাম এসে তার ছেলের মোটরসাইকেল শনাক্ত করেন।
এঘটনায় চারজনকে আটক করা হলে তারা ফয়সালকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে ফেলার কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশ এসে ফয়সালের লাশ উদ্ধার করে আসামিদের গ্রেপ্তার করে।এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করে।
বাকেরগঞ্জ থানার পরিদর্শক নকীব আকরাম হোসেন পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ আদালত সোমবার এ রায় ঘোষনা করেন।
রায়ে আদালত আসামি রাসেলকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান।