সিলেটে নৌকার ২ মন্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে, একজনের ব্যাংকে জমা বেড়েছে ৪ গুণ, কমেছে সাবেক এক মন্ত্রীর সম্পদ
১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:১৪ পিএম | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:১৪ পিএম
আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে সিলেটে এবার নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন ৩ মন্ত্রী ও সাবেক এক মন্ত্রী। সেই ৩ মন্ত্রীর মধ্যে দুই মন্ত্রী সম্পদ বেড়েছে, এক মন্ত্রী আয় কমলেও ব্যাংকে জমা বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। তবে সাবেক এক মন্ত্রীর সম্পদ কমেছে। তারা হচ্ছেন, বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ তথ্য পাওয়া গেছে হলফনামা পর্যালোচনায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই ৪ হেভিওয়েট প্রার্থী হলফনামায় যে সম্পদ উল্লেখ করেছিলেন গেল পাঁচ বছরে বেশ পরিবর্তন হয়েছে তার।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী দেশের মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে। অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫০৬ টাকা। আর স্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৫৭ লাখ ৫১ হাজার ৭১০ টাকা। তবে গত পাঁচ বছরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাৎসরিক আয় কমেছে ৯ লাখ ৭০ হাজার ১৯৫ টাকা। আর স্ত্রীর নামে আগে ১৩ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। গেল পাঁচ বছরে তাঁর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ অপরিবর্তিত রয়েছে।
ড. মোমেনের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর ও পেশা রাজনীতি ও অন্যান্য উল্লেখ করেছেন। আয়ের উৎস দেখিয়েছেন বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ও অন্যান্য ভাড়া বাবদ ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪২৪ টাকা। আর পেশা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ব্যাংক থেকে বার্ষিক মুনাফা পান ৯ লাখ ৬০ হাজার ৫৫২ টাকা আয়। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের রয়েছে নগদ ৩৪ লাখ ২৩ হাজার ২৪১ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে জমা ৩ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার ৬৯৫ টাকা, শেয়ার ৮ লাখ টাকার, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ১০ লাখ টাকা, যানবাহন ২০ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার স্ত্রীর নামে ৫ লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৫ লাখ, স্ত্রীর নামে আসবাবপত্র ৩ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে অকৃষি জমি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, দালানকোঠা ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮৫ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট ৪ কোটি ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৮২৫ টাকার রয়েছে। এদিকে, সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের বাৎসরিক আয় বেড়েছে ১৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৮ টাকা। সেই সঙ্গে অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৪ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭১ টাকার। স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭৩ টাকা দেখিয়েছেন হলফনামায়।
একাদশ সংসদ নির্বাচনকালীন হলফনামায় স্ত্রীর নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ টাকা। সে হিসেবে মন্ত্রীর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৩ কোটি ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭০৯ টাকার। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ ও পেশায় চা ব্যবসায়ী ও পরামর্শক দেখিয়েছেন। হলফনামায় বছরে আয় দেখিয়েছেন ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮০ টাকা। স্থাবর সম্পদ রয়েছে কৃষি জমি ৪ দশমিক ৪৭ একর পৈত্রিক সূত্রে এবং স্ত্রীর নামে ৭৫ লাখ ১৮ হাজার ৫৬০ টাকা মূল্যের ১০৫ শতক, অকৃষি জমি নিজ নামে ৪ দশমিক ৫ একর ক্রয়কালীন মূল্য ৫৫ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ৫ কাটা জমি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার। ২৫ শতক জায়গাতে স্ত্রীর নামে ৬ তলা বাড়ি ১ কোটি ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৪ টাকা মূল্যের। অপরদিকে, ৫ বছরের ব্যবধানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর বার্ষিক আয় ২০ লাখ টাকা কমেছে। কিন্তু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নগদ জমার পরিমাণ প্রায় চার গুণ বেড়েছে। মাহবুব আলী ২০১৪ সালে যখন প্রথম সংসদ সদস্য হন, তখন তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৫৬ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৫ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর নগদ জমার পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৮০ লাখ ৭ হাজার ৫১৬ টাকা। এবার তাঁর বার্ষিক আয় কমে ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৫৮৬ টাকায় এসে ঠেকেছে। তবে ব্যাংকে নগদ টাকা জমার পরিমাণ বেড়ে ৩ কোটি ১৮ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৮ টাকা হয়েছে। তিনি আগে চড়তেন ১০ লাখ টাকার মূল্যের গাড়িতে। মন্ত্রী হওয়ার পর কোটি টাকায় কিনেছেন দুটি গাড়ি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব আলী পুনরায় এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন তিনি। এবারের হলফনামায় তিনি দেখিয়েছেন, তাঁর আয় ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৫৮৬ টাকা। এর মধ্যে ব্যবসায় থেকে ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, কৃষি থেকে আয় ৮০ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত থেকে ১৪ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৬ টাকা এবং তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী পান ১১ লাখ ৪ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে তিনি একই খাত থেকে এ আয় দেখিয়েছিলেন, ৫৬ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৫ টাকা। অর্থাৎ গত ৫ বছরে তাঁর আয় কমেছে ২০ লাখ টাকা। এছাড়া সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তাঁর হলফনামায় বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৫০ লাখ ৩০ হাজার ১১৩ টাকা। গেল নির্বাচনে তাঁর আয় ছিল ৩২ লাখ ১০ হাজার ৪১০ টাকা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় নুরুল ইসলাম নাহিদ তাঁর অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন এক কোটি ৯ লাখ ৯৩ হাজার ১৩২ টাকার। আর আগের নির্বাচনে তার এই সম্পদের পরিমাণ ছিলেন- ২ কোটি ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯ টাকা। এবার স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ২২ লাখ ২৮ হাজার ৪৪০ টাকার। গত নির্বাচনে স্থাবর সম্পদ দেখান ৬৬ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪০ টাকার। অর্থাৎ গেল পাঁচ বছরে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আয় বাড়লেও কমেছে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ। হলফনামায় নাহিদ তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ উল্লেখ করেছেন তিনি। পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন রাজনৈতিক কর্মী।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বড় জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল দ. আফ্রিকা
গোল উৎসবে বার্সার ছয়ে ছয়
রোনালদোর দ্রততম শত গোলের রেকর্ড ছুঁলেন হল্যান্ড
ঘটনাবহুল ড্রয়ে শেষ আর্সনাল-সিটি মহারণ
বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়
বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর পালিয়েছেন লাখ লাখ ইসরাইলি
পাহাড়ে অশান্তির বীজ উপরে ফেলতে হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যে কোন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে : বাংলাদেশ ন্যাপ
শৈলকুপায় অস্ত্র ও গুলিসহ ২ জন আটক
অশান্ত মণিপুরে সেনা টহল
‘ট্রাম্প ও তার দল ভণ্ডামি করছে’