গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজে জালিয়াতি করে ৩ শিক্ষকের এমপিওভুক্তি
২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ পিএম | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ পিএম
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজবাড়ী ডিগ্রি কলেজে জালসনদ, মুঞ্জরীপত্র জালিয়াতি করে ৩ জন শিক্ষকের এমপিওভুক্তি করেছেন সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ রেজাউল করিম। বিএনপি পন্থী এ অধ্যক্ষ সরকারকে বিতর্কিত করতে এবং সরকারি অর্থ লুটপাট করতে এ পন্থা অবলম্বন করেছেন বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন।
জানা গেছে, ২০০৩ ইং ও ২০০৪ ইং সালে তৎকালীন অধ্যক্ষ রেজাউল করিম মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে প্রভাবিত হয়ে সঙ্গীত বিভাগে শাহীন আক্তার ( ইনডেক্স নং ৩০৭৩১৪১), আরবী বিভাগে প্রভাষক মোঃ সাদিকুল ইসলাম ( ইনডেক্স নং ৩০১১২২০) ইন্সট্রাক্টর এসএম নাজমুস সাদাত (ইনডেক্স নং ৩০১১২২২) জাল সনদ ও মঞ্জুরীপত্র জালিয়াতি করে বেতনভাতার ব্যবস্থা করেন।
রেজাউল করিম অবসর গ্রহনের পর ২০১৭ ইং সালের ২৪ অগষ্ট অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন মোঃ সেলীম রেজা। এর পরপরই ওই তিন শিক্ষকের জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে এবং গর্ভনিং বডির সিদ্ধান্তক্রমে সভাপতি রাজশাহী জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট শিক্ষক নেতা মোঃ শাহাদুল হক তাদের মুঞ্জরীপত্র জালিয়াতি ও নকল সনদের বিষয়টি লিখিতভাবে জান চান। কিন্তু তারা সঠিক জবাব দিতে না পারায় তাদের বেতন ভাতা স্থগিত রাখা হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক মোসাঃ ফাহিমা সুলতানার সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের সমস্যাটি দীর্ঘদিনের, মুঞ্জরী নবায়ন বিহীন ৩ জন্য শিক্ষক, জাল সনদধারী একজন শিক্ষকের এমপি ভুক্তির বিষয়টি সহস্যজনক। তারা এমপিও ভুক্তি হতে পারেন না। গর্ভনিং বডির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের ব্যপারে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা যাচাই বাছাই করে দেখাছি যদি কলেজ প্রশাসনের কোন অসঙ্গি আছে কি না। ওই কলেজের শিক্ষকদের অনিয়ম, দূর্নীতির, সনদ জালিয়াতির ব্যপারে এমপিও ভুক্তি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দায়ী নয়। তিনি আরও বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড রাজশাহীর কলেজ পরিদর্শক, আমাদের এ ধরনের চিঠি দিতে পরেন না। বিধিমোতাবেক অমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
উল্লেখ্য মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড রাজশাহী কলেজ পরিদর্শক মোঃ এনামুল হক ( আইডি নং ০১৫২৫৮) স্মারক নং ১/কল/রাজ- ৪২৪/৭০৫ তারিখ ১৪/১২/২০২৩ ইং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মোসাঃ ফহিমা সুলতানাকে এক পত্র মারফত রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের চলমান গভর্ণিং বডির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করেন।
গত ১৪/০৯/ ২০১৭ ইং সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ হেলাল উদ্দিন তৎকালীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা অঞ্চল মিরপুর - ১, ঢাকার পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ ইউসুফকে কলেজের মুঞ্জরী নবায়ন জালিয়াতি করে সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ রেজাউল করিমের মাধ্যমে জালসনদধারী সঙ্গীত বিভাগের প্রভাষক শাহিন আক্তার, ( ইনডেক্স নং ৩০৭৩১৪১), আরবী বিভাগের প্রভাষক মোঃ সাদিকুল ইসলাম ( ইনডেক্স নং ৩০১১২২০) ইন্সট্রাক্টর এসএম নাজমুস সাদাত (ইনডেক্স নং ৩০১১২২২)
৩ জন্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে, গত ১৯/১০/২০১৭ ইং ও ২০/১০/২০১৭ তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সরজমিনে তদন্ত করেন প্রফেসার মোহাম্মদ ইউসুফ। ( স্মারকপত্র নং মাউশি, ঢাঅ/তদন্ত/২০১৭/১৫০) তিনি বিধিমোতাবেক তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষাভবনে সহঃ পরিচালক কলেজ - ৩ হেলাল উদ্দিনের নিকট জমাদেন কিন্তু বছরের পর বছর পার হলেও অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের এমপিও শীট থেকে নাম কর্তন হয় নি।
এ ব্যপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রফেসর মোহাম্মদ ইউসুফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাদের মঞ্জরী নবায়ন জাতিয়াতি ও নকল সনদপত্রের বিষয়ে প্রমান পায় এবং তদন্ত প্রতিবেদন জমা দি বলে জানান। তিনি আরও বলেন, তাদের ধরেন ছাড় দিবেন না। আমি এখন ঢাকা কলেজে কর্মরত আছি।
সহকারী পরিচালক ( কলেজ- ৩) তপন কুমার দাস এর সাথে এব্যপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযুক্ত ৩ জন শিক্ষকর এমপিও শীট থেকে নাম কর্তন না হওয়ার ব্যপারে তিনি বলেন, প্রতিবেদন দেখে বলবেন বলে জানান।
রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সেলীম রেজা বলেন, সাবেক অধ্যক্ষ রেজাউল করিম তিন জন শিক্ষকের মুঞ্জরী নবায়ন ছাড়াই নিয়োগ দেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ভূয়া, অফিসে নিয়োগ ও যোগদান পত্র নেই। তাদের নিয়োগ যোগদানের কোন রেজুলেশন নেই। তাদের ব্যপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, রাজশাহী, আঞ্চলিক অফিস, রাজশাহী, দুর্নীতির দমন অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছি, তদন্ত হলেও সে তদন্ত রিপোট শিক্ষভবনসহ বিভিন্ন স্থান থেকে হাওয়া গেছে। প্রভাষক সিরাজুল ইসলাম, উৎপাদন ও বিপনন বিভাগের প্রভাষক আহাদুজ্জামান নাজিমের বিরুদ্ধে স্থায়ী বরখাস্তের জন্য আরবিটিশনে আবেদন করা হয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রাজশাহী কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবু হাসনাৎ মোঃ রফিকুল ইসলামের ( ৫৪১১) সাথে যোগাযোগ করা করা হলে তিনি বলেন, বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় দেরী হয়ে গেছে, আমি আরও একটি এধরনের বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আমি অধ্যক্ষ সাহেবের সাথে কথা বলেছি আগামী বছর ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যেই তদন্ত করে রিপোট দিব। আপনি তদন্ত করতে ভয় পাচ্ছেন, কারো দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মোটেই না।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা