দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর- হরিরামপুর- সদরের একাংশ) আসনে নির্বাচনী সহিংসতার জন্য দলীয় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর সমর্থকেরা নৌকার সমর্থকদের মারধরসহ বাড়ি ঘরে হামলার ঘটনায় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে মমতাজ বেগম বলেন, "আমার নৌকার পক্ষে কাজ করায় এ পর্যন্ত ৫০/৬০ জন নিরীহ কর্মীদের মারধর করে আহত করেছেন। বাড়ি ঘর ভাংচুর করেছেন। দুটি থানায় বেশ কয়েকটি অভিযোগসহ মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রশাসন এর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি ২৪ ঘণ্টা সময় দিলাম। এরমধ্যে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আমরা নিজেরাই হামলাকারীদের বাড়ি ঘেরাও করব।"
শুক্রবার দুপুরে হরিরামপুর উপজেলা চত্বরে আ. লীগের দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও প্রতিবাদ সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। এর আগে তিনি উপজেলা চত্বরে নির্বাচনী সহিংসতায় হামলার শিকার ফরিদের হোটেল পরিদর্শন ও মেগার চায়ের দোকানে তার স্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
প্রতিবাদ সভায় তিনি বলেন, "ওটা মানুষের ভালোবাসার ভোটে জয়লাভ করতে পারেনি। ওরা টাকার বিনিময়ে এমপি হয়েছে। । বিএনপির কিছু লোককে মোটা অংকের টাকা দিয়ে আমার সিঙ্গাইরের দুটি ইউনিয়ন অস্বাভাবিক ভোট কাস্ট করে। এই ষড়যন্ত্র আমরা তখন ধরতে পারিনি। এখন আস্তে আস্তে সবই বের হয়ে আসছে। তবে
হরিরামপুর ও সদরের তিনটি ইউনিয়নের মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে প্রায় ১৫ হাজার ভোটে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার সিঙ্গাইরের দুটি ইউনিয়নে ষড়যন্ত্র করে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিএনপির ভোটারদের কেন্দ্রে এনে সবেচেযে বেশি ভোট কাস্ট করায়। টাকা ছাড়া সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় সে এমপি হতে পারে নাই।"
মমতাজ আরও বলেন, "সাহস থাকলে টাকা ছাড়া মাঠে আসুক। আমি ঢাকায় বসে নির্বাচন করব। দেখা যাবে তাতে কে, কত ভোট পায়? টাকা না ছড়ালে সে ৫ হাজার ভোটও পাবে না। আমি হরিরামপুরের সাধারণ জনগণসহ আমার দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞ। হরিরামপুরের মানুষ আমাকে ভালোবাসে বলেই টাকা পয়সা ছাড়াই আমাকে ১২ হাজার ভোট বেশি দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন।"
মমতাজ বেগম বলেন, "বিএনপি-জামায়াতকে সাথে নিয়ে আমার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। আপনারা মনে রাখবেন, সরকার কিন্তু আওয়ামী লীগ। আর জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের দেখভালের দায়িত্বটা আমাকেই দিয়েছেন। তাই আপনারা ভয় পাবেন না। সবাই সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। আমি আপনাদের পাশে আছি এবং থাকব। আপনাদের কোনো ভয় নেই। মনে রাখবেন সরকার আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী কিন্তু শেখ হাসিনা। "
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবিদ হাসান বিপ্লব, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাজী ইউসুফ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলজার হোসেন বাচ্চু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান চুন্নু, শফিকুল ইসলাম হাজারী শামীম, যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক মো. মহিদুর রহমান, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুর রহমানসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, মমতাজ বেগম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে দলীয় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে পরাজিত হন।