ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবায় পুলিশকে তথ্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে দিনমজুর রহিজ মিয়াকে হত্যা মামলায় জজ মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যু দন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার সাত আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও নয়জনকে মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দেওয়া হয়। তারা সবাই একই পরিবারের লোক। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আয়েশা আক্তার সুমি মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী মো. দিদারুল আলম এ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফাঁসির দন্ডাদেশ  হওয়া জজ মিয়া পলাতক রয়েছেন। 

বিভিন্ন সূত্রে জানান গেছে, জমি নিয়ে কসবা উপজেলার নিম বাড়ি গ্রামের রহিজ মিয়া ও তার  নাবালক মিয়ার সঙ্গে জমসিদ মিয়ার পরিবারের পূর্ববিরোধ চলছিলো। একটি মামলায় ওয়ারেন্ট থাকা জমসিদ মিয়ার ছেলে মনিরকে ধরিয়ে দিতে পুলিশকে সহযোগিতার অভিযোগ করা হয় রহিজ মিয়ার বিরুদ্ধে। এরই জের ধরে জমসিদ মিয়ার ছেলেরা দলবল নিয়ে ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল রহিজ মিয়াসহ তিনজনেক পিটিয়ে আহত করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রহিজ মিয়া মারা যান। এ ঘটনায় রহিজ মিয়ার স্ত্রী আদালতে মামলা করলে পুলিশ ওই বছরের ২৬ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দেন। আদালতের বিচারক আয়েশা আক্তার সুমি মামলার ২নং আসামী জজ মিয়াকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারা অনুযায়ি মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দন্ডিত আসামী পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও আদেশ দেন আদালত।

অন্যান্য দন্ডাতিদের মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামী মো. খোকন মিয়াকে পেনাল কোডের ৩২৩ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এক বছরে সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দন্ডিত করা হয়। মামলার অপর আসামী ইয়াসিন মিয়া, খোকন মিয়া, পারভেজ মিয়া, মনির মিয়া, আওয়াল মিয়া,আশরাফুল মিয়াকে পেনাল কাডের ১৪৩ ধারায় দোষী সাব্যস্তকরে  প্রত্যেককে ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ড এবং দুই হাজার টাকা করে অর্থদন্ডদের আদেশ দেওয়া হয়। অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দন্ডিত করা হয়। এর মধ্যে মো. ইয়াছিন মিয়া, মো. খোকন মিয়া ও মো. আশরাফুল মিয়া উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় জমসিদ মিয়া, আকবর মিয়া, ছোট মিয়া, রুবেল মিয়া, সাদের মিয়া, আব্দুল আজিজ, ফুরকান মিয়া, নিজাম মিয়া ও মো. ফরিদ মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়।