সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কান্তার দাফন হয়ে গেল জানলো পিতা, স্বামী সহ অবুঝ সন্তান
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম
পটুয়াখালীর বাউফলের কালিশুরি ইউনিয়নের পাতিলাপাড়া গ্রামের নুসরাত জাহান কান্তার দাফন হয়ে গেল আজ নিজ পিতার বাড়ীতে ।অন্য দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে জীবন মৃত্যুর সাথে লড়ছে সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর জখম স্বামী ইঞ্জিনিয়ার আমিরুল ইসলাম মিন্টু,আড়াইবছরের অবুঝ ছেলে সন্তান মুনতাসির। এ ছাড়াও একদিন আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত কান্তার পিতা বরিশাল মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন জাকির হোসেন তালুকদারও জানলো না তার প্রিয় কন্যা সন্তানটি দাফন হয়ে গেলে নিজ বাড়ীর পারিবারিক কবর স্থানে। একটি মাত্র সড়ক দূর্ঘটনার মধ্য দিয়ে ঘটে গেলে এই নির্মম ট্রাজেডি।বলছিলাম গতকাল ২২ ফেব্রæয়ারী ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের সূর্যনগর বাজার সংলগ্ন এলাকার সড়কে হানিফ পরিবহনের বাস দূর্ঘটনায় নিহত কান্তার পরিবারের নির্মম ট্রাজেডির কথা।
২৬ বছর বয়স্ক ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স সহ মাষ্টার্স করা কান্তার সাথে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার আমিরুল ইসলাম মিন্টুর বিবাহ হয় ২০১৯ সালে । কান্তা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বড় ভাইয়ের রোববারে অনুষ্ঠিত বিবাহের আকদ্ উপলক্ষে বাড়িতে এসেছিল। মঙ্গলবার ঢাকায় ফেরত যায় কান্তা । বুধবার বাড়ীর মসজিদে এশার নামাজের মধ্যে কান্তার পিতা মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। পরবর্তিতে রাতেই তাকে বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পিতার অসুস্থতার খবর পেয়ে আবারও স্বামী সন্তান সহ কান্তা বরিশালের উদ্দ্যেশে হানিফ পরিবহনের গাড়ীতে করে শুক্রবার বিকেলে রওয়ানা হয় ঢাকার আরামবাগ থেকে ।বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের সূর্যনগর বাজার সংলগ্ন এলাকার সড়কে হানিফ পরিবহনের বাসটি দ্রুতগতিতে বরিশালগামী অপর একটি বাসকে অতিক্রম করতে গেলে সামনে থাকা ট্রাকের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় মালবাহী ট্রাকটি উল্টে পাশের সার্ভিস সড়কে পড়ে যায় এবং মহাসড়কের ওপর দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে যাত্রীবাহী বাসটি।
স্থানীয়রা জানান, বিকট শব্দ শুনে রাস্তায় এসে দেখেন একটি মালবাহী ট্রাক উল্টে পাশের সার্ভিস লেনে পড়ে আছে এবং ভাঙ্গাগামী লেনে হানিফ পরিবহনের একটি বাস দুমড়ে-মুচড়ে আছে। আহত যাত্রীরা যন্ত্রণায় কাঁতরাচ্ছেন। ঘটনাস্থলেই দুইজনের মরদেহ পড়ে আছে, নিহতের মধ্যে একজন কান্তা । আহত রয়েছেন অন্য যাত্রীরা,স্থানীয় জনগন উদ্ধার কাজ শুরু করেন। শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাকিল আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে আহতদের চিকিৎসা সহ বন্ধ হয়ে যাওয়া মহাসড়কের যানবাহন চলাচল স্বভাাবিক করেন।পরিচয় না জানা সহ গুরুতর জখম থাকায় তাৎক্ষনিক কান্তার শিশু সন্তানকে প্রথমে ভাংগা হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় জনগন সেখানে একজন মহিলা জনপ্রতিনিধির সহায়তায় চলতে থাকে মুনতাসিরের চিকিৎসা পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।এ ছাড়াও কান্তার স্বামী মিন্টুকে প্রথমে পাচ্চর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশংকাজনক হওয়ায় তাৎক্ষনিক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ দিকে দূর্ঘটনার পরে রাত আটটার দিকে কান্তার স্বামী মিন্টুর ফোন থেকে বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ স্বামীর পাশে সেবারত কান্তার মায়ের ফোনে একটি অপরিচিত ফোন আসে ,যে ফোন থেকে বলা হয় আমি এম্বুলেন্স ড্রাইভার অসুস্থ মিন্টু সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর জখম তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।এ সময় তারা জিজ্ঞেস করেন গাড়ীতে অন্য কেউ আছেন ড্রাইভার জানান গাড়ীতে অন্য কেউ নেই।পরবর্তীতে কান্তার চাচা নূর মোহাম্মদ কান্তার নম্বরে ফোন দিলে একজন ফোন ধরে জানান,কান্তা সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন আপনারা এসে মৃতদেহ নিয়ে যান।খবর শুনে হাসপাতালে অসুস্থ অচেতন স্বামীর পাশে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন কান্তার মা।পরবর্তিতে কান্তার চাচা নূর মোহাম্মদ ,কান্তার ভাই জিসান রাত একটায় শিবচর হাইওয়ে থানা থেকে কান্তার মৃতদেহ বুঝে নিয়ে পটুয়াখালীর উদ্দ্যেশে রওয়ানা হয়ে আসেন।মিন্টুর ভাইরা খবর পেয়ে ছুটে যান গুরতর জখম মৃত শান্তার অবুঝ সন্তান মুনতাসিরের কাছে।পরবর্তিতে মুনতাসিরকে ভোররাতে অসুস্থ অবস্থায় বাবার কাছে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে ।
কান্তার দাফন শেষে কান্না জড়িত কন্ঠে চাচা জসিম তালুকদার জানান,আমার ভাইজি তিনদিন আগেও বাড়ীতে এসেছিল,আজ আসলো বাড়ীতে লাশ হয়ে। অপর চাচা নূর মোহাম্মদ বলেন, আজ ভাইজিকে দাফন করলাম ,কালকে বাসে ওঠার পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায়ও আমার সাথে কথা হয়েছে একটি দূর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেল ।আমার অবুঝ ভাতিজাটা জানে না তার মা কোথায় আর কোনদিন সে তার মাকে দেখতে পাবে না,ভাইজি জামাই এখনো ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে কতক্ষন জ্ঞান আসে আবার অজ্ঞান হয়ে হয়ে যায় সে জানে না তার স্ত্রী আর জীবিত নেই। আমার অসুস্থ বড় ভাই জাকির তালুকদার জানেনা তার প্রিয় কন্যা সন্তানটি দুনিয়াতে আর নেই চল গেছেন পরপারে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ব্রুকের সেঞ্চুরিতে অজিদের জয়রথ থামিয়ে টিকে থাকল ইংল্যান্ড
বাংলাদেশকে পূর্ণ সমর্থন বাইডেনের
পাবর্ত্য চট্টগ্রামে দুর্গম পাহাড়ি সেনা ক্যাম্প পরিদর্শন সেনা প্রধানের
নিউইয়র্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
আম্মু তোমাকেও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে
দেশের মাজার রক্ষা করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য চীন খুবই গুরুত্বপূর্ণ: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
ক্ষোভ বাড়ছে ভারতে
ভারতীয় সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেলেন ড. ইউনূস
সোনারগাঁওয়ে তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা, আহত ৮
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য চায় পবিপ্রবির গ্রাজুয়েটবৃন্দ
হামজাকে পাওয়ার আরও কাছে বাংলাদেশ
বান্দরবানে জামাতুল আনসারের ৩১ সদস্য কে ৪ মামলায় জামিন
সাগরে লঘুচাপ, চার সমুদ্রবন্দরে বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত
সকল অপকর্মে জড়িতদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে সামাজিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে -চকরিয়ায় নারী সমাবেশে বক্তারা
সেনা কর্মকর্তা হত্যাকারীদের অবিলম্বে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি পঞ্চগড়ে
আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
এবার প্রকাশ্যে এলো চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক
জাতিসংঘ মহাসচিবের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ড. ইউনূস