অপারেশন করেছেন একজন। ক্লিনিকের রেজিষ্টারে লেখা আরেক চিকিৎসকের নাম। এই মহাজালিয়াতির ঘটনা ফাঁস হওয়ায় দৌড়ঝাপ শুরু করেছে শৈলকুপার শাহিদা ক্লিনিকের মালিক শাহাজাহান পারভেজ মিলন। তিনি রাতের আঁধারে কুষ্টিয়ার ডাঃ গোলাম রহমান নামে এক চিকিৎসকের বাসায় গিয়ে ধর্ণা দিয়েছেন। তাঁর বাসায় গিয়ে বলা হয়েছে আপনি অপারেশন করেছেন তা স্বীকার করে ক্লিনিকের রেজিষ্টারে সাক্ষর করুন। জবাবে ডাঃ গোলাম রহমান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মৃত রোগীর দায়ভার তিনি নিবেন না। এদিকে মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের নির্দেশে শৈলকুপার শাহিদা ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ক্লিনিক বন্ধের পর বিতর্কিত চিকিৎসক কাশমিম সুজনকে বাঁচাতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন ক্লিনিক মালিক শাহাজাহান পারভেজ মিলন। জানা গেছে, গত শনিবার (২০ জুলাই) শৈলকুপার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কুশোবাড়িয়া গ্রামের প্রসূতি সুমাইয়া খাতুন কবিরপুর শাহিদা ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পর ওই দিন রাতে বিতর্কিত চিকিৎসক কাশমিম সুজন তাকে সিজার করেন। সিজারের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখা দিলে সুমাইয়াকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমাইয়ার মৃত্যু ঘটে। শাহিদা ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অপারেশন রেজিষ্টারে সার্জিক্যাল চিকিৎসক হিসেবে ডাঃ গোলাম রহমান ও অজ্ঞানের চিকিৎসক হিসেবে ডাঃ রফিকুল ইসলামের নাম লেখা আছে। কিন্তু তারা ঘটনার দিন ওই ক্লিনিকে কোন অপারশেন করেননি। বিতর্কিত চিকিৎসক কাশমিম সুজনের দিয়ে গোপনে অপারেশন করে ওই দুই ডাক্তারের নাম রেজিষ্টারে লেখা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্লিনিকের মালিক শাহাজাহান পারভেজ মিলন ডাঃ গোলাম রহমানের কুষ্টিয়ার বাসায় গিয়ে পা জড়িয়ে সাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন। এদিকে প্রসূতির স্বামী রাজিব হোসেন স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি মিটিয়ে ফেরেছেন বলে জানান। কত টাকায় রফা হয়েছে তা তিনি জানাতে অস্বীকৃতি জানান। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আহসানুল মিজান রুমি জানান, শাহিদা ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি জানান, ক্লিনিকে রেজিষ্ট্রারে যে দুই ডাক্তারের নাম লেখা হয়েছে তারা অপারশেন করেননি বলে তার আমাকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান। উল্লেখ্য ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস থেকে বিতর্কিত চিকিৎসক কাশমিম সুজনকে দিয়ে যাতে কোন ক্লিনিক মালিক অপারেশন না করান সে বিষয়ে একাধিকবার সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হলেও কবিরপুর শাহিদা ক্লিনিক মালিক শাজাহান নির্দেশনা অগ্রাহ্য করে বিতর্কিত চিকিৎসত কাশমিম সুজনকে দিয়ে একের পর এক অপারেশন করিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন বলে অভিযোগ।