কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে আন্দোলনের রেষে সিলেটে বিভিন্ন খাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকার। এমন দাবী দাবি সিলেটের ব্যবসায়ী নেতাদের। এমনকি শুধু মাত্র পর্যটন খাতেই ক্ষতি হয়েছে অন্তত পাঁচশ কোটি টাকার।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই ) মহানগরীর বিভিন্ন বিপণিবিতান পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য প্রকাশ করেন সিলেট চেম্বার অব কমার্স কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ ।

সিলেটে বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে কৃষি ও ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক । এরপর অপ্রত্যাশিত কোটা সংস্কার আন্দোলনে ক্ষতির মুখে পড়ে সিলেট। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। বাকীতে চলছে তাদের সংসার।
এমন পরিস্থিতিতে সিলেট জেলায় অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে সিলেটে ১৩ বর্ডার দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। কেবল পর্যটনে পাঁচশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আন্দোলনে পথের মধ্যে ট্রাকেই অন্তত ৮-১০ কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়েছে।এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা। তার মতে, এখন প্রয়োজন সবকিছু সহজ করে দেওয়া, লাইসেন্স মওকুফ করা। বিশেষ করে এক বছরের জন্য ব্যবসায়ীদের ভ্যাট, ট্যাক্স ও ঋণের সুদ মওকুফ করে দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, এমনিতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত, অথচ এ পরিস্থিতিতেও ভ্যাট অফিস থেকে ফোনে ব্যবসায়ীদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে অন্তত এই মাসে কাউকে বিরক্ত করতে না করেছি। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে ক্ষতি হয়েছে বেশি ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের।

সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান রিপন বলেন, কারফিউ শিথিল করা হলেও মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি কাজ করছে। কর্মচারীদের চালানো দায় হয়ে গেছে। কোটা আন্দোলনের কমপ্লিট শাটডাউন থেকে দোকানপাট বন্ধ। দুই দিন ধরে দোকানপাট খোলা হলেও ক্রেতা নেই। তিনি আরও বলেন, নগরে সাড়ে সাত হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কর্মচারীর বেতন, নানা বিলের পরও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আছেন ঋণের চাপে। তাদের মাথার ওপর কিস্তির খড়্গ। আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের ৮-৯ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ী এ নেতা বলেন, যাদের দেড়-দুই লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হতো, তারা ১০ হাজার টাকার পণ্যও বিক্রি করতে পারছেন না। সিলেটে জুলাই-আগস্টে প্রবাসীরা বেশি দেশে আসেন। কিন্তু এবার বৈরী পরিস্থিতির কারণে প্রবাসীরাও আসছেন না। এটিও ক্ষতির আরেকটি বড় কারণ।