ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হলে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে না সউদী

ইসরাইলি হামলায় আরো ৪৮ ফিলিস্তিনি নিহত

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১১ এএম | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১১ এএম

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও প্রায় অর্ধশত নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন শিশুও রয়েছে। গতকাল গাজার মেডিকেল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ হাজার ২৭২ জনে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের এ হামলায় সব মিলিয়ে গাজার ৯৫ হাজার ৫৫১ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরের রয়েছেন পাঁচ হাজার ৭০০ জনের বেশি। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের হামলায় ইসরাইলে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত আট হাজার ৭৩০ জন। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দেশটির এ হামলার জবাবে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল। এরপর থেকে এ যুদ্ধ শুরু হয়। ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর রূপ নেয় যুদ্ধ। এরপর থেকে গাজার ওপর বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এমনকি তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদসহ ধর্মীয় স্থাপনাও। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, ইসরাইলি আগ্রাসনের ফলে গাজার ৯০ শতাংশ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ ছাড়া সেখানবার কয়েক লাখ মানুষ বিপর্যকর ক্ষুধার সম্মুখীন। এমনকি উপত্যকাটির বেশির ভাগ হাসপাতালও বন্ধ অবস্থায় রয়েছে।

সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে গাজার ২০ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। দেশটির হামলার কারণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরাইলে হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি আর ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। এ ছাড়া ভ‚খÐের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ইসরাইলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক আদালতে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে দেশটি।

এদিকে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন না করা পর্যন্ত সউদী আরব ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এছাড়াও ‘দখলদারি অপরাধ’ ও গাজায় চলমান বর্বরতার জন্য ইসরাইলের প্রতি কঠোর নিন্দা জানান তিনি।

সালমান বলেছেন, ‘পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় সউদী আরব। এই লক্ষ্য পূরণ হওয়া পর্যন্ত আমরা অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। আর আমরা অঙ্গীকার করছি যে, স্বাধীন ফিলিস্তিন ছাড়া ইসরাইলের সঙ্গে কোনও ক‚টনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে না।’ শুরা কাউন্সিলে দেয়া ভাষণে এই মন্তব্য করেন যুবরাজ। বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে বার্ষিক এই বক্তব্য প্রদান করেন তিনি। ভাষণের আগে যুবরাজের সামনে শপথ গ্রহণ করেছেন শুরা কাউন্সিলের সদস্যরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্র জানিয়েছে যে, তেল আবিবের সঙ্গে রিয়াদের স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। এর নেপথ্যে রয়েছে গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসন। যুবরাজের শেষ বক্তব্য থেকে ধারণা করা যায়, ইসরাইলি আগ্রাসনের অবসান না হওয়া পর্যন্ত মার্কিন প্রচেষ্টা ধোপে টিকবে না।

গাজা যুদ্ধ শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে যুবরাজ সালমান জানিয়েছিলেন, ইসরাইল-সউদী একটা চুক্তির সন্নিকটে আছে। ওই দুই সূত্র রয়টার্সকে আরও বলেছে, ইসরাইলের সঙ্গে সউদীর স্বাভাবিক ক‚টনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে কিছু বিলম্ব হবে। রিয়াদের জন্য এই আলোচনার সবচেয়ে লাভজনক দিক হিসেবে অনেক বিশেষজ্ঞ যেটা ধারণা করছেন, তা হলো, এর বিনিময়ে মার্কিনিদের সঙ্গে একটা প্রতিরক্ষা চুক্তির দ্বার উন্মোচিত হতে পারে। সূত্র : আল-জাজিরা, এএফপি।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ঈদের ছুটিতে শুল্ক স্টেশনে চালু থাকবে আমদানি-রপ্তানি সেবা
নারী সাংবাদিককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: এক জনের দোষ স্বীকার, অপরজন কারাগারে
পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকলেই ইটভাটা অবৈধ
অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের দ- থেকে খালাস লুৎফুজ্জামান বাবর
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক-ইনুসহ সাত জন বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে
আরও
X

আরও পড়ুন

ইউএসএআইডি বন্ধ করে দেয়া ‘সম্ভবত অসাংবিধানিক’

ইউএসএআইডি বন্ধ করে দেয়া ‘সম্ভবত অসাংবিধানিক’

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট কোন দেশের?

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট কোন দেশের?

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ চায় সউদী, নিন্দা রাশিয়ার

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ চায় সউদী, নিন্দা রাশিয়ার

বিচার প্রক্রিয়ায় ধীরগতি

বিচার প্রক্রিয়ায় ধীরগতি

ঈদের ছুটিতে শুল্ক স্টেশনে চালু থাকবে আমদানি-রপ্তানি সেবা

ঈদের ছুটিতে শুল্ক স্টেশনে চালু থাকবে আমদানি-রপ্তানি সেবা

নারী সাংবাদিককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: এক জনের দোষ স্বীকার, অপরজন কারাগারে

নারী সাংবাদিককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: এক জনের দোষ স্বীকার, অপরজন কারাগারে

পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকলেই ইটভাটা অবৈধ

পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকলেই ইটভাটা অবৈধ

অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের দ- থেকে খালাস লুৎফুজ্জামান বাবর

অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের দ- থেকে খালাস লুৎফুজ্জামান বাবর

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক-ইনুসহ সাত জন বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক-ইনুসহ সাত জন বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে

তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাস আদেশের বিরুদ্ধে আপিল

তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাস আদেশের বিরুদ্ধে আপিল

রাজধানির বিলাসি ব্র্যান্ডের আউটলেটে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের

রাজধানির বিলাসি ব্র্যান্ডের আউটলেটে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের

ধামরাইয়ে ব্রিজের নিচ থেকে মাটি কেটে নিল দুর্বৃত্তরা

ধামরাইয়ে ব্রিজের নিচ থেকে মাটি কেটে নিল দুর্বৃত্তরা

রিমান্ড শেষে কারাগারে পলক, প্রতিমন্ত্রী এনাম ফের রিমান্ডে

রিমান্ড শেষে কারাগারে পলক, প্রতিমন্ত্রী এনাম ফের রিমান্ডে

হায়রানিমূলক ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে নেত্রকোনায় বিক্ষোভ মিছিল

হায়রানিমূলক ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে নেত্রকোনায় বিক্ষোভ মিছিল

ইফায় ফ্যাসিস্টের সহচরদের পদোন্নতি দেয়ার পাঁয়তারা

ইফায় ফ্যাসিস্টের সহচরদের পদোন্নতি দেয়ার পাঁয়তারা

নারীর প্রতি সহিংসতা ভয়াবহতায় রূপ নিয়েছে মহিলা পরিষদ

নারীর প্রতি সহিংসতা ভয়াবহতায় রূপ নিয়েছে মহিলা পরিষদ

পাঁচ পণ্য নিয়ে ঢাকায় ‘জনতার বাজার’ উদ্বোধন

পাঁচ পণ্য নিয়ে ঢাকায় ‘জনতার বাজার’ উদ্বোধন

ড. ইউনূসের আপিলের রায় ২৩ এপ্রিল

ড. ইউনূসের আপিলের রায় ২৩ এপ্রিল

ঈদ নিরাপত্তায় ডিএমপি ১৪ নির্দেশনা

ঈদ নিরাপত্তায় ডিএমপি ১৪ নির্দেশনা

জাগপা’র নিবন্ধন ফেরত দিতে ইসিকে নির্দেশ

জাগপা’র নিবন্ধন ফেরত দিতে ইসিকে নির্দেশ