”ময়মনসিংহ নগরীর খাল খনন, পকেট ভরছে কর্মকর্তাদের; দুর্ভোগ জনসাধারণের”
০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম | আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম

সামান্য বৃষ্টি হলেই ময়মনসিংহ নগরীর অধিকাংশ এলাকায় হাঁটুপানি জমে ভোগান্তিতে পড়তে হয় জনসাধারণকে। আর জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ৯ কিলোমিটার খাল প্রতিবছর পরিষ্কার ও খনন করছেন সিটি করপোরেশন। এতে ব্যয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। সাধারণ মানুষ বলছেন, দায়সাড়া খাল খননের নামে কোটি কোটি টাকা লুটছেন কর্মকর্তারা। যার কারণে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। আর নাগরিক নেতারা বলছেন, অপরিকল্পিত খনন ও পরিষ্কারে শুধু কাগজে-কলমেই অর্থের অপচয় দেখানো হচ্ছে।
সেহড়া, মাকড়জানি, কাটাখালি, বগামারি, গোহাইলকান্দি ও আকুয়া খাল দিয়ে ময়মনসিংহ নগরীর পুরাতন ৯টি ওয়ার্ডের পানি পাগারিয়া নদীতে নিষ্কাশিত হয়ে আসছে। আরেক অংশের পানি পাইপ ড্রেনের মাধ্যমে ফেলা হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদে। জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন ও পরিষ্কারে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৫ লাখ ১৬ হাজার ৮৫০টাকা ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৪ লাখ ৮৫ হাজার ৮৪০টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬০ লাখ ৩০হাজার টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৩ লাখ ৯০হাজার টাকা ব্যয় করে সিটি করপোরেশন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খাল খনন ও পরিষ্কার কাজ চলমান রয়েছে। বর্ষাকে সামনে রেখে নগরীর বিভিন্ন খাল ও ড্রেন পরিষ্কারের অভিযান শুরু হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে। চারটি খননযন্ত্র দিয়ে খাল খনন ও পরিষ্কার করা হচ্ছে। এসময়ে বেশিরভাগ খাল ও ড্রেনের উজানের দিকে পরিষ্কারের ফলে পানির প্রবাহ সচল হলেও মাটি ভরাট এবং জমাটবাধা ময়লার কারনে পথে পথে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে এই প্রবাহ। এতে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় অন্যান্য বছরের ন্যায় এবার বর্ষায়ও সামান্য বৃষ্টিতেই নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো.আরিফুর রহমান এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো.মহব্বত আলী খাল খনন ও পরিষ্কারের অনিয়ম দুর্ণীতি করায় সাধারণ মানুষ সুফল পাচ্ছে না। এতে তাদের পকেট ভারী হলেও সাধারণ মানুষের দৈন্যদশা কাটছে না। খননযন্ত্র দিয়ে সামান্য কাজ করেই তারা প্রতিবছর এ খাত থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।
আকুয়ার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, আকুয়া খালটির বেশির ভাগ অংশ ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। এতে করে পানিপ্রবাহ নেই বললেই চলে খালে। আসছে বর্ষার আগে খালটি পুরোপুরি ভাবে পরিষ্কার না করা হলে ভয়াবহ ভোগান্তির মধ্যে আমাদেরকে পড়তে হবে। মাঝে মধ্যে দেখা যায় সিটি করপোরেশন খননযন্ত্র ভেকু দিয়ে দায়সাড়া ভাবে খাল পরিষ্কায় করায় তা কোন কাজে আসছে না।
বাড়েরা এলাকার তোফাজ্জল হোসেন বলেন, একসময় খালের পানিতে লাফালাফি করে গোসল করলেও এখন ময়লা আবর্জনা এবং দুর্গন্ধের কারণে নামা যায় না। খালগুলো সরু হয়ে গেছে মানুষের দখলের কারণে। খালের দুপাশে গড়ে উঠছে বসতি। তবে তা ভালো ভাবে খনন না করায় প্রতিবছর আমাদের বাসা বাড়িতে পানি উঠছে। আমাদের অন্যত্র গিয়ে থাকতে হয়।
একই এলাকার মো.শাহজাহান নামে একজন বলেন, বিগত কয়েক মাস ধরে আমাদের এলাকায় দুটি খনন যন্ত্র ভেকু দিয়ে খাল খনন করা হচ্ছে। এতে সাময়িক ভাবে দেখতে সুন্দর দেখা গেলেও কোন কাজে আসবে অর্থের অপচয় ছাড়া। খননের মাটি পাড়ে রাখার কারণে তা সামান্য বৃষ্টিতেই আবার খালে পড়ে ভরাট হবে। পরিকল্পিত ভাবে খাল খনন না করা হলে নগরীতে জলাবদ্ধতা হবেই। আমরা চাই অন্তত খননের নামে যে অর্থ প্রতিবছর ব্যয় করা হচ্ছে সঠিক ভাবে ব্যয় করা হয়। এতে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের শুধু পকেট ভারী হচ্ছে।
খননযন্ত্র ভেকুর মালিক আব্দুস সালাম বলেন, খাল পরিষ্কার ও খনন কাজে আমার একটি ভেকু সিটি করপোরেশন ভাড়া নিয়েছে এবং তাদের তিনটি ভেকু রয়েছে। মোট চারটি ভেকু নিয়মিত কাজ করছে। প্রতিমাসে আমি সাড়ে ৪ লাখ টাকা পাই। তবে জায়গা না থাকায় খননের মাটি খালের পাড়েই আমরা ফেলছি। এতে করে বর্ষার সময় কিছু মাটি খালে পড়বে এটাই স্বাভাবিক।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, বারবারই আমরা বলে আসছি খাল খনন উদ্যোগটি সিটি করপোরেশনের অপরিকল্পিত। যার ফলে প্রতিবছর নগরীতে হাঁটু পানি জমে। বাসাবাড়িতে পানি উঠায় মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। দীর্ঘস্থায়ী ভাবে খাল খননের উদ্যোগটি নেয়া হলে এতে যেমন অর্থের অপচয়রোধ হত তেমনি মানুষের ভোগান্তি লাঘব হত।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো.মহব্বত আলী বলেন, খাল খননে কোন অনিয়ম হয়নি। আমরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করে থাকি।
মানুষের ভোগান্তি লাঘবে পরিকল্পিত ভাবে খাল খননের কথা জানিয়ে সিটি প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ বলেন, সেক্ষেত্রে অনিয়ম রোধে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। খনন কাজ সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে। খননের মাটি পাড়ে ফেলায় খুব একটা সুফল আসবে না জানিয়ে সিটি প্রশাসক আরও বলেন, ৬টি খালকে নিয়ে এডিবি থেকে একটি প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হলে আগামী বছর নগরবাসীর কোন ভোগান্তি থাকবে না বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
ছবিগুলো সম্প্রতি আকুয়া খাল থেকে তোলা।স্থানীয়দের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনে সচিব সুমনা আল মজীদ কখনো ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন তার কর্মকাণ্ড বিতর্কিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ তিনি প্রভাবশালী, কাউকে তোয়াক্কা করেন না ? ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্টের থেকে শুরু করে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ বর্তমানে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের কখনো প্রধান নির্বাহী, কখনো সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন দাপটে কর্মকর্তা কর্মচারীরা অতিষ্ঠ,তিনি ময়মনসিংহ সিটিতে কেওয়াটখালীতে আলিশান বাসা বাড়ি গরেছেন। তার জন্য ময়মনসিংহ এখন মধুর হাড়ি ? তিনি এই সিটির থেকে বদলি হতে চান না এটার রহস্য কি? অনেকেই বলেছেন নারী বলে কথা আছে ? যার ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না?
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদে চাঁদপুরে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের বিক্ষোভ

১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার

গত ২৪ ঘন্টায় বিশেষ অভিযানে ৩জনসহ আটক ২৫

অবশেষে বিটি মাটেই হচ্ছে কেরাণীগঞ্জে সর্ববৃহৎ বৈশাখী মেলা

খুনি হাসিনার দোসর শেখ বাদল এখনো অধরা

নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় বসাতে এত অনিহা কেন অন্তবতীকালীন সরকারের, জনগণ তা জানতে চায় - প্রিন্স

সুদানে আরএসএফের হামলায় শতাধিক নিহতের আশঙ্কা

সোনালী ব্যাংকের নতুন ডিএমডি হলেন মো. রেজাউল করিম

চার দিনের সম্মেলনে বিনিয়োগ এসেছে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার

সিংগাইরে আগুনে পুড়ে নিঃস্ব ২ পরিবার, পুড়লো গরু ও টাকা

অভিবাসীদের জন্য নতুন নিয়ম, গ্রিনকার্ড নিয়ে আরও কঠোর মার্কিন সরকার

বগুড়া চেম্বারে মতবিনিময় সভায় ইরানি রাস্ট্রদূত

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য ভান্ডার সংরক্ষণের জন্য 'সার্ভার স্টেশন' উদ্বোধন

সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করেছিল প্রতারক চক্র

ম্যান ইউ স্কোয়াড থেকে বাদ ওনানা

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চারগুণ রোগী

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে শেরপুরে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ

কুলাউড়ায় ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মসজিদের মুয়াজ্জিনের মৃত্যু
সহিংসতার শিকার ভারতীয় শহরের শেষ মুসলিম পুরুষ

ফরিদপুরে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৫০ টাকা প্রতি মণ প্রায় ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে