এমন ঈদযাত্রাই সকলের কাম্য
০৬ মে ২০২৩, ০৮:০৩ পিএম | আপডেট: ০৭ মে ২০২৩, ১২:০৩ এএম
দেশের মানুষ বরাবরই প্রত্যাশা করে অন্তত জাতীয় উৎসবগুলোতে নির্বিঘেœ তাদের প্রিয়জনের সাথে উৎসবের আমেজ ভাগাভাগি করে নেওয়ার সুব্যবস্থা থাকবে। যেখানে উৎসব উপলক্ষে বাড়ি ফেরা নিয়ে থাকবেনা কোন অনিশ্চয়তা। উৎসব শেষে কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে পোহাতে হবেনা কোন ভোগান্তি। কিংবা পথিমধ্যে অনিয়ন্ত্রিত গতির খপ্পরে পড়ে চিরতরে বিদায় নেওয়ার মতো নির্মম ঘটনার উদাহরণ থাকবে না। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতার সঙ্গে মানুষের এই প্রত্যাশার অনেক ক্ষেত্রে অমিলই দেখা যায়। ঈদ এলে মানুষের ভিতর বাড়ি ফেরা নিয়ে শুরু হয় অনিশ্চয়তা। টিকিটের দ্বিগুণ মূল্যের সাথে কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য বহুগুণে বেড়ে যায়। বাস, রেল ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। সড়ক-মহাসড়কে যানজট, বাসের জন্য অপেক্ষা ও রেলের টিকিটের জন্য রেল স্টেশনে দীর্ঘ লাইন।
কিন্তু এবারের ঈদের দৃশ্যপট একটু ভিন্ন ছিল। পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় এবার দক্ষিণাঞ্চলের ঈদযাত্রায় মহাসড়কে যানজট দেখা যায়নি। ঈদ উপলক্ষে পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেলে চলাচল শুরু হওয়ায় ঈদযাত্রায় নতুন মাত্রা সংযোজিত হয়েছে বলা যায়। সুবিধাস্বরূপ অনেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি পাড়ি জমিয়েছে। কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া নিয়ম নীতির গ-ির ভিতরে চলাচলকৃত এসব মোটরসাইকেল থেকে অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনা ঘটেনি। এর ফলে বাসগুলোতে যাত্রীর চাপ একটু হলেও কম অনুভূত হয়েছে। দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ে বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় সকল বাস গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। আগের মতো দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরির জন্য বাসে বসে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি। এ পথের অধিকাংশ যাত্রী পদ্মাসেতু হয়ে বাড়ি পৌঁছেছে। এই কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ধারণ ক্ষমতার সীমার মধ্যেই যানবাহন থাকায় দীর্ঘ যানজটের দেখা পায়নি এ পথে ঈদযাত্রায় পাড়ি দেওয়া ঘরমুখো যাত্রীরা। অন্যদিকে কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে ট্রেন। কোনো শিডিউল বিপর্যয়ের খবর পাওয়া যায়নি। নদীপথেও মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়নি। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে লঞ্চগুলো ঘরমুখো যাত্রী দ্বারা বোঝাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
তবে যাত্রীদের কিছু কিছু অভিযোগ ছিল। যেমন, বাসগুলোতে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া রাখা হয়েছে। ‘ঈদ বখশিশ’ এর নামে যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়েছে, এমন অভিযোগ বেশিই নজরে এসেছে। যেগুলোর জন্য প্রশাসন ও মাঠ পর্যায়ে বেশ শক্ত অবস্থানে ছিল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অনেকের উপর জরিমানা আরোপ করার দৃশ্যও দেখা গেছে। একথাও অনস্বীকার্য যে, প্রশাসন এবার মহাসড়কে যানজট নিরসনে তৎপর ছিল, যাতে করে কোনো অবস্থাতেই যেন কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি না হতে পারে সেদিকে কঠোর দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। চুরি-ছিনতাইয়ের তেমন খবরও সামনে আসেনি। যেমনটি বিগত দিনগুলোতে ঈদকে সামনে রেখে বা ঈদের পরে অহরহ ঘটেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনার হারও কম ছিল। সড়ক-মহাসড়কের শৃঙ্খলিত গতির জন্য এধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কম ঘটেছে বলে প্রতীয়মান হয়।
ঈদযাত্রাকে স্বস্তিময় করে তুলতে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে হয়েছে তার কিছু নমুনা এখনে আলোচনা করতে চাই। প্রথমে বলতে চাই, এবার ঈদুল ফিতরের ছুটির সময়সীমা সম্পর্কে। এবারের ঈদে সরকারি ছুটি ছিল মোট ৩ দিন। ঈদের দিন, ঈদের আগে ও পরে ১ দিন করে মোট ৩ দিন। বিগত বছরগুলোতে এভাবেই ঈদের ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং সেভাবেই ছুটি প্রদান করা হয়। উক্ত হিসাবে এবারের প্রকৃতপক্ষে ঈদের ছুটি পড়ে ১ দিন। কেননা, অবশিষ্ট ২ দিন সাপ্তাহিক ছুটির আওতায় পড়েছিল। শবে-ই-কদরের ছুটি ও ঈদের ছুটি শুরু হওয়া মিলিয়ে মাঝের ১ কর্মদিবসকে নির্বাহী আদেশে ছুটি প্রদান করায় সব মিলিয়ে এবারের ঈদের ছুটি গিয়ে দাঁড়ায় ৫ দিনে। তার সাথে অনেকের ১ বা ২ দিন ঐচ্ছিক ছুটি যোগ হওয়ায় মোট ছুটির সংখ্যা প্রায় ১ সপ্তাহে গিয়ে ঠেকেছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন অনেক প্রতিষ্ঠানে এবারের এই ৫ দিনের ছুটির সাথে অতিরিক্ত আরও ১ সপ্তাহ ছুটি যোগ করা হয়েছে। সে হিসাবে মে দিবসের পরেই অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের অফিসের কর্মদিবস চালু করেছে। বেশিরভাগ তৈরি পোশাক শিল্প কারখানা এবার এই নিয়ম অনুসরণ করে ছুটি প্রদান করা হয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদযাত্রাকে মসৃণ ও আরামদায়ক করতে এই ধরনের পরিকল্পনা অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। ঠিক এভাবেই প্রতিটি কর্মক্ষেত্র হতে হবে কর্মীবান্ধব। যেখানে প্রতিটি কর্মী তাদের নিজ নিজ ধর্মানুসারে উৎসব পালনে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুচিন্তিত হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করে। তাহলে প্রতিটি কর্মী আরও বেশি মনোবল নিয়ে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হবেন, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আমাদের দেশ আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যার আধিক্য রয়েছে। সকলের আশা থাকে, ঈদে আপনজনের কাছে ফেরার। কিন্তু ছুটির পরিমাণ যখন একেবারেই কম হয় তখন চারিদিক থেকে নানান ধরনের সমস্যা দেখা যায়। বাড়তি জনসংখ্যার চাপ সামাল দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পরিবহন বা রাস্তাঘাট থাকলে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়। কিন্তু সেদিক থেকে আমরা বেশ পিছিয়ে, যার ফলে উৎসব পরবর্তী ছুটির তালিকা দীর্ঘ করা অতীব প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সপ্তাহের পুরো ৫ কর্মদিবস ছুটি দেওয়া যেতে পারে। যেখানে উৎসবের পূর্বের এবং পরের সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে মোট ৯ দিনের দীর্ঘ ছুটি জনগণ ভোগ করতে পারবে। বিপরীতপক্ষে, পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সপ্তাহের সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ১ দিন করে অতিরিক্ত কর্মদিবস হিসেবে সচল রাখা যেতে পারে। জনগণ এই প্রস্তাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেবে বলে আশা করা যায়। অতিরিক্ত ছুটির দিনগুলো সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেকাপ করা হলে দেশের চলমান অর্থনীতিতে কোন প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। উপুর্যুপুরি পরিবহন সঙ্কট বহুগুণে কমে বাড়তি আয়ের উদ্দেশ্যে চালক বা মালিক সমিতির তাড়াহুড়োর কারণে যেসব অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা ঘটে সেগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
এছাড়া অন্য আরও একটি বিষয় এবারের ঈদে আলোচনার বিষয় হয়েছে। এবার ঈদ উপলক্ষে রেলের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়েছে। মূলত যাত্রীর নিজস্ব ভ্রমণ নিশ্চিত করতে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার পূর্বক অনলাইনে রেলের টিকিট ক্রয় এবং ভ্রমণের সময় উক্ত পরিচয়পত্র সাথে রাখা বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। যেসব স্টেশনে অধিকতর যাত্রীর চাপ থাকে সেগুলোতে কয়েক স্তরের টিকিট চেকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে ভ্রমণের উদ্দেশে রেল স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীরা। প্রথমবারের মতো ঢাকা, বিমানবন্দর এবং জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিটধারীদের বাইরের কাউকে প্ল্যাটফর্ম এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি, ফলে প্ল্যাটফর্ম এলাকায় নির্ধারিত যাত্রী ছাড়া টিকিটবিহীন কাউকেই দেখা যায়নি। কোনো ভিড় না থাকায় যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে প্ল্যাটফর্মে বিচরণ করতে দেখা গেছে। বিগত বছরগুলোতে যেখানে অস্বাভাবিক যাত্রীর চাপে বাংলাদেশ রেলওয়ে সময়মত রেল ছাড়তে পারেনি, সেখানে এবার রেলের শিডিউল বিপর্যয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। টিকিটধারীদের নির্বিঘেœ রেল ভ্রমণে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার এই বিশেষ ব্যবস্থার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে এখানে আরও কিছু ব্যবস্থা সংযোজন করা যেতে পারে। যেমন, টিকিট রিফান্ড পলিসি ও পুরোপুরি অনলাইন নির্ভর করা যেতে পারে, যেখানে একজন যাত্রী টিকিট ক্রয়ের সময়ে ব্যয়কৃত সমপরিমাণ অর্থ ফেরত পাওয়ার নিয়ম থাকতে হবে। একজন যাত্রী টিকিট ক্রয় করার পরে সাময়িক অসুবিধা বা যেকোন কারণে তাঁর যাত্রা বাতিল করতে পারেন। তাই যাত্রীবান্ধব রিফান্ড পলিসি থাকাটা বাঞ্ছনীয়।
আরাম ও স্বস্তিদায়ক যাত্রার অন্যতম যোগাযোগব্যবস্থা হলো রেল। অনেকেই আবার বাসে চলাচল করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না, তাদের জন্য একমাত্র অবলম্বন হলো এই রেল ব্যবস্থা। দেশের অধিকাংশ মানুষই রেলে ভ্রমণ করে বেশ কিছু সুবিধার কথা মনে করে। একমাত্র রেল ভ্রমণে যাত্রীরা দ্রুত ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। তাছাড়া রেল ভ্রমণ তুলনামূলক সাশ্রয়ী এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয় না এজন্য অধিকাংশ যাত্রী রেল ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করে। যদিও আমাদের দেশের রেল লাইনের নড়বড়ে অবস্থা, পর্যাপ্ত বগি ও ইঞ্জিনের সঙ্কট, পুরানো পদ্ধতিতে লাইন পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণসহ নানান কারণে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন কোনো সুবিধা করতে পারছে না। আবার একই ইঞ্জিনের বার বার পরিবর্তন করে লাগামহীনভাবে ছুটে চলায় রেলের ইঞ্জিন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সেইসাথে ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা কমে যাচ্ছে ও জ্বালানি অপচয় বাড়ছে। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে রেল খাত। এসব পরিস্থিতি সামাল দিয়ে রেল খাতের দুর্বল পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করে এই খাতকে আরও মজবুত করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা একসাথে অনেক যাত্রীকে তাঁদের নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রেল সেবার জুড়ি নেই। সেজন্য দেশের রেল খাতকে মজবুত ও আধুনিকায়ন ছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশের মসৃণ যোগাযোগ ব্যবস্থা আশা করা একধরণের বোকামি।
বাস, রেল বা লঞ্চ টার্মিনালে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের সরব উপস্থিতি জনমনে স্বস্তি এনে ঈদযাত্রাকে আরামদায়ক করলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু অনিয়ম লক্ষ করা গেছে। যেমন, বেশিরভাগ বাস বা লঞ্চ পরিবহন মালিকদের অনলাইনে টিকিট কাটার ব্যবস্থা আছে। যে ব্যবস্থাপনায় ঈদ উপলক্ষে টিকিটের নিয়মিত মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলতে চাই, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার নন-এসি কোচের নিয়মিত ভাড়া ৬৫০-৭০০ টাকা হলেও অনলাইনে সেটা নিতে হয়েছে ৯৫০-১০০০ টাকা দিয়ে। এসি কোচের নিয়মিত ভাড়া ১১০০-১২০০ টাকা হলেও অনলাইনে সেটা বেড়ে ১৫০০ টাকা করা হয়েছে। আবার অফলাইনে টিকিট কাটতে গেলে সেখানে প্রতি টিকিটের বিপরীতে ঈদ বখশিশের নামে টিকিট প্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি নেওয়া হয়েছে। ঈদ বখশিশ দেওয়ার জন্য তাদের মালিক পক্ষ রয়েছেন। এভাবে ঘরমুখো যাত্রীদের কাছে ঈদ বখশিশের নামে অতিরিক্ত অর্থ দাবি কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অবশ্য কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালগুলোতে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বেশি ভাড়া দাবি করার জন্য নির্দিষ্ট হারে জরিমানা করেছেন। কিন্তু অনলাইনে নির্ধারিত ভাড়ার বিপরীতে তেমন কেউ কোনো কথা কেউ বলেনি। এক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে পরিবহন মালিক কর্তৃক নির্ধারিত অফলাইনে টিকিটের বাড়তি মূল্য যাচাইয়ের পাশাপাশি অনলাইন টিকিটের নির্ধারিত মূল্যও খতিয়ে দেখতে হবে। অনলাইনে বাড়তি মূল্য নির্ধারণ করলে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এবারের ঈদে আরও একটি ব্যতিক্রম ঘটনা নজর কেড়েছে। অন্যান্য ঈদে বেতন বোনাসের দাবিতে অনেক ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের রাস্তায় নামা লেগেছে। বিগত দিনে দেখেছি, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করাসহ আরও অনেক বিষয়ে চড়াও হতে হয়েছে মালিকপক্ষ থেকে শ্রমিকদের নায্য পাওনা বুঝে নিতে। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু এবারের ঈদে সে ধরনের কার্যকলাপ চোখে পড়েনি। অর্থাৎ মালিকপক্ষ সময়মত সকল কর্মীর বেতন ও বোনাস বুঝিয়ে দিয়েছে। কারও পাওনা নিয়ে কোনরকম বিরূপ মন্তব্য বা রাস্তায় নামার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এটাও খুব একটা ভালো প্রভাবক, যেটা গেল ঈদ বা ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত সুবিধা যুক্ত করেছে বলে মনে হয়। সর্বোপরি এসকল বিষয় এমন শিক্ষা দেয় যে, মানুষের অসাধ্য বলে কিছুই নাই। অর্থাৎ মানুষ চাইলেই সবকিছু পারে। এর জন্য প্রয়োজন সুন্দর মন-মানসিকতা। শুধুমাত্র শৃঙ্খলিত নিয়মনীতি মানুষের জীবনযাত্রাকে বহুরূপে পাল্টে দিতে পারে, যার চাক্ষুষ প্রমাণ আমরা এবারের ঈদে উপভোগ করেছি।
পরিশেষে বলতে হয়, যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পদ্মাসেতু এক যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার সাথে রাজধানীর দূরত্ব কমিয়ে যাতায়াতকে করেছে সহজ ও মসৃণ। রাজধানীর সাথে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ তরান্বিত করতে বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চার লেন থেকে আট লেনে উন্নীত করার কাজ চলমান রয়েছে, যার সুফল জনগণ অতি শীঘ্রই পাবে বলে আশা করা যায়। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ এবং দ্রুতগতির হলে মানুষ নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারবে এবং অর্থনীতি আরও বেগবান হবে। সর্বোপরি রাজধানীর ওপর চাপ অনেকাংশেই কমে যাবে এবং আগামী দিনে উৎসব পালনে কোনরকম প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জানা গেল ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ব্রাজিলের একাদশ
বাংলাদেশে ন্যায্য রুপান্তরে অর্থায়নের জন্য ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান
গোপালগঞ্জে কারাগারে থাকা বাবার অবশেষে জামিন মঞ্জর
ওসমানী বিমান বন্দরে বিদেশী বিমান উঠা-নামার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী- প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে সিলেটে স্মারকলিপি
ময়মনসিংহে ফিলিং স্টেশনে আগুনের ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ৬
জানুয়ারি পর্যন্ত ছিটকে গেলেন এনগিডি
দুবাইয়ে নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেলের সাথে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্টস ট্রেডার্স আজমানের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুবিধা নিশ্চিতে দেওয়া হবে ইউনিক আইডি কার্ড
যে কারণে হারপিকে মেতেছে নেটিজেনরা
আ.লীগের মতো পরিবারতন্ত্র করবে না বিএনপি: তারেক রহমান
প্যারাগুয়ে ম্যাচে কেমন হবে আর্জেন্টিনার একাদশ
অর্থাভাবে ব্যক্তিগত বিমান ভাড়া দিয়েছেন শন ডিডি, বিক্রি করবেন বাড়ি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্রেনী কক্ষে অসুস্থ ১০ শিক্ষার্থী
ভারতীয় গণমাধ্যম আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নরসিংদীতে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
পুলিশ সংস্কার ও একটি কৌশলপত্র
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে কেন উপদেষ্টা করতে হবে?
শ্যামনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
অভ্যুত্থানে আহতদের প্রতি এই অবহেলা অমার্জনীয়
নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ