পাসপোর্ট অফিসের অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম দূর করতে হবে
১১ জুন ২০২৩, ০৮:০৭ পিএম | আপডেট: ১২ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে আলোচিত বিষয়গুলোর অন্যতম হলো, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর রাষ্ট্র হিসেবে দেশকে গড়ে তোলাই মূলত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল উদ্দেশ্য। মানবসম্পদ উন্নয়ন, সবার কাছে ইন্টারনেটের সংযোগ পৌঁছে দেয়া, ই-প্রশাসন ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পখাত গড়ে তোলার লক্ষ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা বেশ পূর্বেই শুরু হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল জনগণকে মুহূর্তের মধ্যে কোনরকম হয়রানি ছাড়া প্রয়োজনীয় সকল তথ্য নিমিষেই হাতের নাগালে দেওয়া। জনগণের ভোগান্তি কমানোর লক্ষ্যে সরকারের এই ডিজিটালাইজেশনের যাত্রা এক অভিনব সূচনা বলা যায়। কেননা, এই পদ্ধতিতে জমানো কাগজের স্তূপ ঘেঁটে প্রয়োজনীয় তথ্য বের করার ভোগান্তি একেবারেই নেই। আবার জনগণের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা অবলম্বনের জন্য ডিজিটাল পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। এসকল নানা উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সরকার দেশকে ডিজিটাল করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ প্রশংসানীয়। এর সুফল জনগণ ধীরে ধীরে পেতে শুরু করেছে। কিন্তু ডিজিটালাইজেশনের নামে কিছু সেমি-ডিজিটাল পদ্ধতি চালু থাকায় জনগণের সুবিধার চেয়ে বেশি পরিমাণ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।
পাসপোর্ট অফিসের দিকে প্রথমে নজর দিতে চাই। প্রতিটি নাগরিকের অধিকার আছে পাসপোর্ট করার। বর্তমান সময়ে বিশ্ব যেখানে হাতের মুঠোয় সেখানে দেশের প্রতিটি নাগরিকের পাসপোর্ট থাকা অত্যাবশ্যকীয়। নানাবিধ কারণে একজন নাগরিকের যেকোন মুহূর্তে দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু পাসপোর্ট করতে গিয়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়। একজন নাগরিক যদি পাসপোর্ট করতে চায় তাহলে প্রথমে তাকে অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়। জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের উপর ভিত্তি করে যাবতীয় তথ্য দেওয়া লাগে। এরপর ব্যাংকে পাসপোর্টের ফিস জমা দিতে হয়। ব্যাংকে নির্দিষ্ট ফিস জমা দেওয়ার পরে সেই তথ্যও আবেদন ফর্মে দেওয়া লাগে। যাবতীয় তথ্য পূরণ করার পরে আবেদন ফর্মটি অনলাইনে সাবমিট করতে হয়। এরপর আবেদন ফর্মের প্রিন্ট কপি নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয়। যেখানে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল অনুসরণ করে পাসপোর্ট অফিসে প্রবেশ করা লাগে। এরপর একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার এই ফর্মের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধনের সাথে আবেদনকারীর তথ্য মিলিয়ে দেখে। তথ্যে গরমিল হলে আবেদনকারীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যদি কোনো গরমিল না থাকে তাহলে পরবর্তী ধাপে ছবি উঠানোর জন্য পাঠানো হয়। ছবি উঠানোর পরে আবেদনকারীকে পাসপোর্ট সংগ্রহের একটি সম্ভাব্য তারিখ দেওয়া হয়। এর পরপরই আবেদনকারীর বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে আবেদনকারীর ঠিকানা ভেরিফাই করা হয়।
পাসপোর্ট করতে গিয়ে জনগণ যে হয়রানির শিকার হয় সেটা বলে শেষ করা যাবে না। বিশেষ করে জেলা শহরের পাসপোর্ট অফিসগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। উদাহরণ হিসাবে আমার ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা এখানে তুলে ধরলাম। মা-বাবার পাসপোর্ট করার জন্য একবার ঢাকা থেকে সকল কাজ সম্পন্ন করে জেলা শহরের পাসপোর্ট অফিসে গেলাম। শুধুমাত্র স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য যাওয়া হবে এটা ভেবেই নিজ জেলার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসেই যাওয়া। আমাদের জেলা শহরে অবস্থিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি সম্পর্কে অনেকেই আমাকে পূর্বে অবহিত করেছিল। জানা ছিল স্থানীয় দালাল ছাড়া কেউ পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে পারে না। দালালদের সাথে পাসপোর্ট অফিসের সকল কর্মকর্তার সিন্ডিকেট আছে। তাই দালালের মাধ্যম ছাড়া কেউ পাসপোর্ট অফিসে গেলে তাকে নানান ভুল ভ্রান্তি বের করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ জন্য পরিচিত অনেকেই আমাকেও দালালের আশ্রয় নিতে বলেছিল। কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম। কেননা, দেশের নাগরিক হয়ে, বৈধ সকল কাগজপত্র সাথে নিয়েও দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করতে হবে বিষয়টা আমার কাছে বেশ অদ্ভুত মনে হলো। তাই কারও কথায় কর্ণপাত না করে সকালে বাবা ও মাকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে রওনা দিলাম। গিয়ে বেশ লম্বা লাইনের দেখা পেলাম। তখন পর্যন্ত অফিসের কর্তারা আবেদন ফর্ম জমা নেওয়ার বুথ খোলেনি। সকাল ৯টায় অফিসের কর্ম ঘণ্টা শুরু হলেও সাড়ে ৯টার দিকে একজন এসে বুথে বসল। এর মধ্যে আমাদের আগে প্রায় ৫০ জনের মতো লাইনে দাঁড়িয়ে গেছে। আমি বাবা মায়ের আবেদন হাতে নিয়ে লাইনে দাঁড়ালাম। সামনে বহু মানুষ থাকলেও খেয়াল করলাম খুব দ্রুতই লাইন সামনে এগুচ্ছে। কেননা, আমাদের আগের সিরিয়ালে থাকা আবেদনকারীদের ফর্মে কোনো না কোনো ভুল বের করে একে একে বাদ দেওয়া হচ্ছে।
আমাদের সিরিয়াল আসলে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি আবেদনের কাগজটা একটু এদিক সেদিক উল্টে পালটে দেখে ফিরিয়ে দিল। ঢাকার ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছি সেজন্য ভুল হয়েছে এটা জানিয়ে দিল। অর্থাৎ এখানে হবে না ঢাকার পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করতে হবে। বলে রাখা ভালো, আমি ঢাকায় অবস্থিত ‘ঢাকা ব্যাংক’ এর একটি ব্রাঞ্চে টাকা জমা দিয়ে পাসপোর্টের আবেদনের তথ্য পূরণ করি। ঢাকা ব্যাংকে যেহেতু শতভাগ অনলাইন সুবিধা আছে সেহেতু আমি এই কাজটি আমার কর্মস্থলের পাশেই অবস্থিত একটি ব্রাঞ্চ হতে সেরে নিই। তাছাড়া আমার উদ্দেশ্য ছিল সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে এক দিনের ভিতরে পাসপোর্টের আবেদন ফর্ম জমা দেওয়া। যাইহোক জেলা শহরের বাইরের কোনো অফিস থেকে পাসপোর্টের আবেদন ফিস জমা দিলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না, এমন তথ্য কোথাও পাইনি। আমার বেশ কিছু পরিচিত ব্যক্তি বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত আছে। তাদের থেকে আমি বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তবেই ঢাকার ব্রাঞ্চে টাকা জমা দিই। তাই এই টাকা জমা দেওয়ার বিষয়ে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। কিন্তু যে ব্যক্তি আবেদন জমা নিচ্ছে তার সিদ্ধান্তে সে অটল। আমি তখন নিজের পরিচয় দিলাম এবং বললাম ‘আপনি যদি এই বিষয়ে সঠিক যুক্তি দিতে পারেন বা লিখিত কোনো ডকুমেন্ট দেখাতে পারেন তাহলে আমি মেনে নেব’।
এরপর উনি কথা না বাড়িয়ে তিন তলায় যেতে বললেন। তিনতলায় গেলে আবেদন ফর্ম জমা নিল। এরপর ছবি ওঠানোর কাজ শেষ করে বাসায় ফিরলাম। দুইদিন পরেই পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের একজন এসআই ফোন দিয়ে বলল ওনার উপর ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব পড়ছে। যেহেতু দুই জনের পাসপোর্ট তাই ওনার মোবাইল নম্বরে ১০০০ টাকা বিকাশ করতে হবে। ১০০০ টাকা দিলেই উনি সঠিক ভেরিফিকেশনের কাজ করে দেবে। অর্থাৎ এসআই সাহেব কোনরকম তথ্য যাচাই বাছাই ছাড়া জায়গায় বসেই ভেরিফিকেশনের কাজটি করে দেবে পাসপোর্ট প্রতি ৫০০ টাকার বিনিময়ে। এই ধরনের কথা শোনার পরে এসআই সাহেবকে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা হলেও নিজের প্রয়োজনের তাগিদে চুপ থাকলাম। বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট হাতে পেয়ে গেলাম।
এবার আসি ডিজিটাল পদ্ধতির কিছু সনাতনী নিয়ম নিয়ে। পাসপোর্ট অফিসের ফিস কেন আলাদাভাবে ব্যাংকে জমা দিতে হবে সেই বিষয়টি বোধগম্য নয়। পাসপোর্ট অফিসে এই ফিস জমা নেওয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত। যেখানে একজন আবেদনকারী সাথে সাথে আবেদনের ফিস জমা দিতে পারবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত ‘নগদ’ এই সুবিধা অনায়াসে দিতে পারে। এজন্য পাসপোর্ট অফিসের নামে একটি নগদ একাউন্ট করাই যথেষ্ট। যেখানে একজন আবেদনকারী অ্যাপ ব্যবহার করে বা গ্রাহকের একাউন্ট নম্বর যোগ করে সাথে সাথে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারবে বা নগদ টাকার বিনিময়ে পাসপোর্টের নির্ধারিত ফিস জমা দিতে পারবে। একজন আবেদনকারী যখন ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যায় তখন তাকে ফিস জমা দেওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। আবার যেকোন ব্যাংকে এই ফিস জমা দেওয়া যায় না। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংক ছাড়া পাসপোর্টের ফিস জমা দেওয়ার সুযোগ নেই। যেখানে কোনো রকম ভুল ভ্রান্তি হলে আবেদনকারীকে পুনরায় ব্যাংকে গিয়ে লম্বা সিরিয়ালে দাঁড়াতে হয় ভুল সংশোধনের জন্য। তাই পাসপোর্ট অফিসে এই সুবিধা থাকলে সেখানে নিঃসন্দেহে একজন আবেদনকারী অনেক বেশি সুবিধা পাবে। আর এই ব্যবস্থা করলে পাসপোর্ট অফিসের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সরকারের উদ্দেশ্য যদি জনগণের অহেতুক হয়রানি লাঘব করা হয় তাহলে এই পদ্ধতি চালু করলে নিঃসন্দেহে সরকার জনগণের বাহবা পাবেন।
পাসপোর্ট অফিসের যাবতীয় কাজ অনলাইন নির্ভর। তাহলে সেখানে আবেদন ফর্মের হার্ডকপি বা তার সাথে আনুসঙ্গিক কাগজপত্র জমা দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত সেটার ভাববার বিষয়। অনেকেই হয়তো বলবে, পাসপোর্টের আবেদন করার সময় আবেদনপত্র সত্যায়ন করার বিষয়টি থাকে এবং সেই কারণে সফটকপির সাথে হার্ডকপি জমাদানের দরকার পড়ে। কিন্তু পাসপোর্ট করার সময় সত্যায়ন করার প্রয়োজন কতটুকু, সেটিও প্রশ্ন। যদি আবেদনকারীর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সত্যায়নের প্রয়োজন পড়ে তাহলে ফাঁক ফোঁকর দিয়ে কীভাবে অনেকে অবৈধ উপায়ে পাসপোর্ট করে সেটা বোধগম্য নয়। দৈনিক খবরের সূত্র ধরে জানতে পারি, অনেক রোহিঙ্গা পর্যন্ত অবৈধ উপায়ে পাসপোর্ট করেছে। সবকিছু অনলাইন বা ডিজিটাল নির্ভর হলে এই অবৈধ উপায়ে পাসপোর্ট করার বিষয়গুলো চিরতরে দূর হবে বলে আশা করা যায়। একজন চাকরি প্রার্থীর ক্ষেত্রেও চাকরিতে আবেদনের সময়ে তার শিক্ষার যাবতীয় সনদসহ সকল ডকুমেন্ট সত্যায়িত করার প্রয়োজন পড়ে। এই সত্যায়িত কতটুকু নিয়ম মেনে একজন চাকরিপ্রার্থী করে থাকে সেটি অনেকের অজানা। একজন প্রার্থী চাকরিতে আবেদনের জন্য তার ডকুমেন্টের সত্যায়িত কপি কী জন্য প্রয়োজন সেটি আমার বোধগম্য নয়। কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, এই সত্যায়নের ফলে প্রার্থীর জাল সনদ যাচাই করা হয় তাহলে সেটা ভ্রান্ত ধারণা। প্রকৃতপক্ষে যদি জাল সনদ খুঁজে বের করার তাগিদ দেওয়া হয় তাহলে প্রার্থীর প্রতিটি ডকুমেন্ট অনলাইনে যাচাই করার ব্যবস্থা থাকা উচিত। যেখানে কর্তৃপক্ষ একজন চাকরি প্রার্থীর প্রতিটি একাডেমিক সনদ, জাতীয় পরিপয়পত্র বা অন্যান্য তথ্য মুহূর্তের মধ্যে অনলাইন থেকে যাচাই করে নিতে পারবে। এছাড়া এই ব্যবস্থা চালু হলে একজন চাকরি প্রার্থীর অহেতুক হয়রানির হাত থেকে অনেক খানি রেহায় পাবে বলে আমি মনে করি।
এরপর আসি পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে আরও এক অবাঞ্ছিত ঝামেলা নিয়ে। পাসপোর্টের আবেদনকারীর ঠিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হলে পুলিশ ভেরিফিকেশনের দরকার পড়তে পারে। কিন্তু এই ভেরিফিকেশনে আবেদনকারীর হয়রানি ব্যতীত কোনো সুবিধা হয় কিনা আমার জানা নেই। কেননা এই ভেরিফিকেশনে একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশরা আবেদনকারীর থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আবেদনকারীর ঠিকানায় গিয়ে হাজির হয়। যেখানে আবেদনকারীর কাছে পুলিশের দাবিকৃত টাকার পরিমাণ বেশ বেশি হয়। এমন বহু উদাহরণ আছে যে, পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে আমাদের গ্রামের বহু মানুষের থেকে অনেক বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে। পাসপোর্টের আবেদনের সাথে যেহেতু আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র জমা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে আলাদাভাবে ঠিকানা যাচাই করার প্রয়োজন আছে কিনা সেটা কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত। যাচাই করার দরকার পড়লে সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ইউনিয়ন পরিষদের থেকে তথ্য নেওয়া যেতে পারে। ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে এই ধরনের তথ্যের জন্য কাউকে স্বশরীরে আবেদনকারীর ঠিকানায় উপস্থিত হতে হবে, তেমন বাধ্যবাধকতা থাকাও বাঞ্ছনীয় নয়। কোনো আবেদনকারীর নামে যদি সংশ্লিষ্ট থানায় কোনো ক্লেইম থাকে বা কোনরকম অপরাধ সংঘটিত হয় তাহলে সেটাও অনলাইনে এন্ট্রি থাকা উচিত। তাহলে এই পুলিশ ভেরিফিকেশানের নামে জনগণের অহেতুক হয়রানি বন্ধ হবে। একজন চাকরি প্রার্থীর ক্ষেত্রেও পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়টি বেশ ঝামেলাপূর্ণ। কেননা, সদ্য চাকরি পাওয়া অনেকের কাছে পুলিশ গিয়ে পজেটিভ প্রতিবেদন দেওয়ার নাম করে মাত্রারিক্ত টাকা দাবি করে। এসময় অনেক ক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীকে নানা ধরনের ভয়ভীতিও প্রদর্শন করে। পুলিশের দাবি করা টাকা না দিলে ক্ষেত্রবিশেষ নেগেটিভ প্রতিবেদন দেওয়ারও হুমকি প্রদর্শন করে। যেখানে প্রার্থী অনেকটা নিরুপায় হয়ে পুলিশের দাবিকৃত মোটা অংকের অর্থ দিয়ে থাকে। তবে অবশ্য ব্যতিক্রম কিছু কিছু সংবাদও অনেক সময় আনন্দের খোরাক হয়। যখন দেখি অনেক এলাকায় পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে চাকরিতে নির্বাচিত প্রার্থীদের বাসায় ফুলেল শুভেচ্ছাসহ যখন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ হাজির হন।
দেশকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজেশানের আওতায় নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ্য এসকল বিষয়াদি আমলে নিয়ে নীতি নির্ধারকদের আরও গভীরভাবে ভেবে দেখা উচিত। ডিজিটালাইজেশানের নামে সেমি-ডিজিটালাইজড এসব নানা ধরনের পদ্ধতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সনাতনী পদ্ধতির চেয়ে ভোগান্তি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। যেখানে একজন নাগরিক খুবই সহজে হয়রানি ছাড়া তার কাক্সিক্ষত সেবা পায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু
রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে
বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে
বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা
লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই
রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে
দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা
জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ
উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন
সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।
ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার
রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল
‘স্পেন্ড অ্যান্ড উইন’ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে মাস্টারকার্ড
সিটি ব্যাংক আনল অভূতপূর্ব ভিসা ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড
শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই, জবাব তাকে দিতেই হবে : মির্জা ফখরুল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে