বিজয়ের পথে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিরা
১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের চীন সীমান্ত সংলগ্ন শান রাজ্য ও অন্যান্য অঞ্চলের জান্তা সরকার বিরোধী কোকাং, দিআং ও রাখাইনের তিনটি সশস্ত্র গোষ্ঠির (টিএনএল, এমএনডিএএ ও এএ) জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের’ সাথে জান্তা সরকারের যুদ্ধ বিরতি চুক্তি হয়েছে চীনের মধ্যস্থতায়। কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত গত ১১-১২ জানুয়ারি সভা শেষে এ চুক্তি হয়েছে। সে মতে, ‘একে অপরের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারবে’। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের শান্তি-প্রক্রিয়াকে একযোগে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এমন আশা করে বেইজিং, বলে চীন জানিয়েছে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন এনএলডির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছে দেশটির আর্মি। তার পর থেকে ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করছে। তাতে জান্তা বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ (নাগ) পূর্ণ সহায়তা করছে। সম্প্রতি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের ব্যাপক আক্রমণে জান্তা বাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে এবং অনেক এলাকায় পরাজিত হয়েছে। তাতে চীনের বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে এবং দেশটিতে বিপুল শরণার্থী প্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই চীন এ যুদ্ধ বিরতির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে অনেকদিন থেকেই। অন্যদিকে, দেশটির প্রধান শহর ছাড়া বেশিরভাগ এলাকা ও সামরিক স্থাপনা দখল করেছে নাগের সশস্ত্র যোদ্ধারা। সম্প্রতি আরাকান আর্মি রাখাইনের বন্দরনগর পালেতাওয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং সেখানের সরকারের বিগ্রেড জেনারেলকে আটক করেছে। আরাকান আর্মির প্রধান নাইং মিয়ানমারের সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন।
ইতোপূর্বে জান্তা বাহিনীর অনেক সদস্য প্রাণ ভয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই নাগের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। উপরন্তু জান্তা সরকারের অনেককে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন সংস্থা মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করেছে। রোহিঙ্গা জেনোসাইডের অভিযোগে আর্জেন্টিনার আদালতে জান্তা প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন হ্লাইংসহ সাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে গত ৫ ডিসেম্বর। আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ বিষয়টি তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সংস্থাটি প্রাথমিকভাবে ২০১৭ সালের ২৭ আগস্টে সংঘটিত রাখাইনের একটি রোহিঙ্গা গ্রামের জেনোসাইডের তদন্ত করছে। জাতিসংঘ ও আঞ্চলিক জোটেও মিয়ানমারের সদস্য পদ স্থগিত রয়েছে। তাই জান্তা প্রধান হ্লাইং রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানান গত ডিসেম্বর। কিন্তু নাগের মুখপাত্র খিয়াও তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, সরকারি বাহিনী লড়াইয়ে খুব বাজেভাবে হারছে। তাই বের হওয়ার পথ খুঁজছে। এই পরিস্থিতিতে যেকোন সময়ে সামরিক জান্তার পতন আর গণতন্ত্রপন্থীদের বিজয় হবে। তাই সেনা সরকারের উচিত অবিলম্বে ক্ষমতার অবসান ঘটানো। তাহলে ধ্বংস ও প্রাণহানি বন্ধ হবে এবং গণতন্ত্র হত্যার দায়ে তাদের শাস্তির মাত্রা কমতে পারে। উল্লেখ্য যে, মিয়ানমারের সেনা বাহিনীর বর্তমান ক্ষমতা গ্রহণ এবং টিকে থাকার পেছনে রয়েছে চীনের পূর্ণ সহায়তা। সেই চীনই এখন গণতন্ত্রপন্থীদের সাথে হাত মিলিয়েছে। গণতন্ত্রপন্থীরা পশ্চিমাদের পূর্ণ সহায়তায় জান্তা বিরোধী যুদ্ধ করে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। তাই চীন মিয়ানমারের সাথে তার দীর্ঘদিনের মিত্রতা ভবিষ্যতেও অটুট রাখার লক্ষ্যে কৌশল পাল্টিয়েছে!
মিয়ানমার ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি, যার নেতৃত্ব দেন দেশটির তৎকালীন জেনারেল অং সান। স্বাধীনতার পর তিনি দেশটির কর্তৃত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে তিনি গুপ্তহত্যায় নিহত হলে আর্মি ক্ষমতা দখল করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকে। তখন সেনাশাসনবিরোধী আন্দোলন শুরু করে সুচির দল এনএলডি। স্বল্প দিনের মধ্যেই দলটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। সুচিও জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে। ফলে তাকে গৃহ বন্দি করে রাখা হয় বহুদিন। সে অবস্থায় সুচি শান্তিতে নোবেল পান এবং আন্দোলন জোরদার করেন। ফলে আর্মি বাধ্য হয়ে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র চালু করে। তাদের সমর্থিত দল নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে এবং ২০১১ সালের ৩০ মার্চ সংবিধান সংশোধন করে আর্মির জন্য পার্লামেন্টের ২৫% আসন ও ৩টি মন্ত্রণালয় সংরক্ষণ এবং দ্বৈত নাগরিকদের জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে আসীন হওয়া নিষিদ্ধ করে। শেষের বিধানটি সুচির ক্ষমতা গ্রহণ বন্ধ করার লক্ষ্যেই করা হয়েছে। কারণ, সুচি এক ব্রিটিশকে বিবাহ করায় ব্রিটিশের নাগরিকত্ব পান। যা’হোক, ব্যাপক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গণতন্ত্র চালু হয় এবং ২০১৫ সালে নির্বাচনে সুচির দল ভূমিধ্বস বিজয় লাভ করে। ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও সুচির দল পুনরায় ভূমিধ্বস বিজয়ী হয়। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের দিন আর্মি পুনরায় ক্ষমতা দখল করে, যা এখনো বহাল আছে।
এর আগে ২০০৯ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তার ফল প্রত্যাখ্যান করে সেনারা। অর্থাৎ মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায় দেশটির সেনারা। তাই জান্তা সরকারকে হঠানোর জন্য এনএলডিসহ সব রাজনৈতিক দল মিলে জাতীয় সরকার গঠন করে তার নেতৃত্বে সশস্ত্র যুদ্ধ করছে। তাতে সব সংখ্যালঘুর সশস্ত্র গ্রুপও শরীক হয়েছে। তাই জান্তা সরকার এনএলডিসহ ৪০টি রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করেছে গত ২৮ মার্চ। ইতোপূর্বে দুর্নীতি, বেআইনিভাবে ওয়াকি-টকি ব্যবহার, কোভিড আইন ভঙ্গ করাসহ বিভিন্ন মামলায় সুচিকে ৩৩ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়েছে। তিনি এখনো বন্দি আছেন। উপরন্তু দেশটির বহু রাজনৈতিক নেতা-কর্মী জেলে রয়েছে। গৃহ যুদ্ধে এ পর্যন্ত বহু মানুষ নিহত-আহত হওয়া ছাড়াও বহু সম্পদ ধ্বংস হয়েছে! জাতিসংঘের সাম্প্রতিক রিপোর্ট মতে,মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সামগ্রিকভাবে ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এছাড়া, বার্মিজ উইমেনস ইউনিয়নের প্রতিবেদন মতে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ৬৬৪ নারী নিহত হয়েছে। এখনও জান্তা সরকার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নৃশংস কামান, বিমান এবং অন্যান্য ভারী অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব সাগাইং অঞ্চলে হত্যাকা- চালাচ্ছে ‘টাইগার ওগ্রেস’ নামে সামরিক জান্তার একটি অংশ।ফলে মানুষ প্রাণভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে অন্যত্র।
উল্লেখ্য যে, মিয়ানমারে স্বাধীনতাত্তোরকাল থেকেই বহু ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠি স্বীয় দাবি আদায়ের জন্য সশস্ত্র যুদ্ধ করছে।সরকার তাদের কঠোরভাবে দমন করার চেষ্টা করেছে। তাতে সহায়তা করেছে উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। তবুও সরকার সফল হয়নি। সে ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠিগুলোর অন্যতম রোহিঙ্গা। তাদের বসবাস আরাকান বা রাখাইন রাজ্যে এবং অধিকাংশই মুসলিম। সরকার রোহিঙ্গাদের নির্মূল করার জন্য গত ৭০ দশক থেকে বহুবার সামরিক অভিযান চালিয়েছে। তাতে বহু বাড়ী-ঘর ও সম্পদ ধ্বংস এবং ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। প্রাণভয়ে বহু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। অনেক আলোচনার পর এক চুক্তির প্রেক্ষিতে কিছু রোহিঙ্গা স্বদেশে ফেরত যায় ১৯৭৭ সালে। কিন্তু পরবর্তীতে জাতিগত নিধন পুনরায় শুরু এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হলে তাদের অনেকেই পুনরায় বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়।সবচেয়ে বেশি শরণার্থী এসেছে ২০১৭ সালে, প্রায় ৭ লাখ। পূর্ব থেকেই রয়েছে প্রায় ৪ লাখ। সাকুল্যে এখন ১০ লাখের অধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। তারা চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের স্বদেশে ফেরত নেওয়ার জন্য চীন, ভারত, জাতিসংঘসহ পশ্চিমারা অনেক চেষ্টা করছে। তৎপ্রেক্ষিতে মিয়ানমার সরকার তাদেরকে দেশে ফেরত নিয়ে ক্যাম্পে রাখার কথা বলছে। কিন্তু তাতে রাজী হচ্ছে না রোহিঙ্গারা। তারা নাগরিকত্ব ফেরত এবং স্বগৃহে প্রত্যাবাসনে আগ্রহী। সরকার তাতে সন্মত নয়! এদিকে, বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর কারণে কক্সবাজারের পরিবেশের চরম ক্ষতি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও মারাত্মক অবনতি হয়েছে। কারণ, শরণার্থীদের অনেকেই নানা অপরাধে সম্পৃক্ত হওয়া ছাড়াও হানাহানিতে অনেক খুন-জখম হচ্ছে প্রায়ই। মাদক ব্যবসা ও আরাকান আর্মিতে যোগদান নিয়ে হানাহানি হচ্ছে বেশি। এছাড়া, কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বিভিন্ন দেশে গেছে। ভারতেও অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু ভারত সরকার তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে!
মিয়ানমার বিশাল দেশ- মোট আয়তন ৬,৭৬,৭৫৮ বর্গ কিলোমিটার। কিন্তু জনসংখ্যা মাত্র ৫.৫ কোটি, যার প্রায় ৮৮% বৌদ্ধ। উপরন্তু দেশটি খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। কৃষির অবস্থাও খুব ভালো। তাই দেশটির দ্রুত ধনী হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তবুও দেশটি গরিবই রয়ে গেছে। নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে ২০১৫ সালে। দেশটির এই দৈনদশার প্রধান কারণ দীর্ঘকালীন সেনা শাসন। উপরন্তু সামরিক শক্তি ও ব্যয় অত্যধিক। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ডটকমের বৈশ্বিক সামরিক শক্তির সূচক-২০২৪ মতে, সামরিক শক্তিতে ১৪৫টি দেশের মধ্যে মিয়ানমার ৩৫তম (বাংলাদেশ ৩৭তম)। জাতিসংঘের প্রতিবেদন মতে, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের জান্তা সরকার এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম আমদানি করেছে, যার প্রধান সরবরাহকারী দেশ রাশিয়া ও চীন। তাই সংস্থাটি মিয়ানমারের সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি বেড়ে যাওয়ায় জান্তা সরকারের কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের জন্য আহবান জানিয়েছে গত ডিসেম্বরে। দ্বিতীয়ত: সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অধিকাংশই চরম দুর্নীতিবাজ। তাই দেশের সম্পদের সিংহভাগই এখন তাদের দখলে। ফলে দেশটির সার্বিক উন্নতি হচ্ছে না। উপরন্তু মাদক কারবারের প্রধান দেশে পরিণত হয়েছে দেশটি। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দফতরের সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী, আফগানিস্তানকে টপকে ২০২৩ সালে বিশ্বের বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ এখন মিয়ানমার। চলতি বছর মিয়ানমার আনুমানিক ১ হাজার ৮০ টন আফিম উৎপাদন করেছে। দেশটিতে চলমান গৃহযুদ্ধে আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে আফিম উৎপাদনকে জীবিকা নির্বাহের উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। মিয়ানমার, লাওস এবং থাইল্যান্ডের মধ্যে ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ সীমান্ত অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ মাদক উৎপাদন এবং পাচার, বিশেষত মেথামফেটামিন এবং আফিমের স্বর্গরাজ্য ছিল। এছাড়া, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক উৎপাদনের অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে দেশটিতে।
যা’হোক, মিয়ানমারের অখ-তা রক্ষা, জাতীয় ঐক্য, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও কাংখিত সার্বিক উন্নতির জন্য প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য। তাই জান্তা সরকারের বিদায়ের পর প্রথম কাজ হবে স্বল্প দিনের মধ্যেই এসব প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু সেটা বর্তমানে গঠিত জাতীয় সরকারের অধীনে হওয়া ছাড়া কঠিন। উপরন্তু সময়ও প্রয়োজন কমপক্ষে ২-৩ বছর। এ সময়ের মধ্যে জাতীয় সরকারের কাজ হবে: সব বেসরকারি যোদ্ধাদের নিরস্ত্রকরণ ও মূল স্ট্রিমে সংযুক্ত করা, সব সংখ্যালঘুর ন্যায্য দাবি পূরণ, যারা বিভিন্ন দেশে আশ্রয় শিবিরে রয়েছে, তাদেরকে দেশে ফেরত নিয়ে নাগরিকত্ব প্রদান ও স্বগৃহে পুনর্বাসন। সংবিধান সংশোধন করে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য পার্লামেন্টের ২৫% আসন ও ৩টি মন্ত্রণালয় সংরক্ষণ বাতিল, বহু দলীয় ও সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা। দ্বিতীয়ত: সামরিক ব্যয় তিন চতুর্থাংশ হ্রাস করে সে অর্থ মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্যয় করা।উপরন্তু সশস্ত্র বাহিনী, সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও পুলিশে গণতন্ত্রপন্থী যোদ্ধাদের নিয়োগ করা। কারণ, মিয়ানমার সামরিক শক্তি যতই বৃদ্ধি করুক না কেন, তা কখনই পার্শ্ববর্তী দেশ চীন ও ভারতের সমান হবে না। এছাড়া, অন্য পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড কখনোই মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধ করবে না। তাই জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে বিশাল সশস্ত্র ও অন্য বাহিনী পালন করা নিঃস্প্রয়োজন। তৃতীয়ত: জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব দ্বন্দ্ব-ভেদাভেদ বন্ধ করে জাতীয় ঐক্য দৃঢ়করণ, দুর্নীতি, মাদকসহ সব অপরাধ বন্ধ, সর্বত্রই ন্যায় বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্র পরিচালনার সব কাঠামো পূর্ণ স্বাধীন ও শক্তিশালীকরণ এবং জাতি সংঘ, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর সাথে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করা। অতঃপর নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন করে বিজয়ীদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তবেই দেশটির ঐক্য, শান্তি ও কাক্সিক্ষত সার্বিক উন্নতি সম্ভবপর হবে। মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ অফিসার নিহত অপর এক ঘটনায় নিহত ২
আখাউড়ায় রেলওয়ের জায়গা থাকা ৪০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় আরও একজনসহ গ্রেপ্তার ৬
সাধ্যের বাইরে গিয়ে মা-বাবার চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে?
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন
ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞানীয় বিজ্ঞানে শীর্ষ দুয়ে ইরান
জাইসের লেন্সের জয়জয়কার, স্মার্টফোনেও দুর্দান্ত
সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : শামসুজ্জামান দুদু
আন্দোলন সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের পিছনে রাখার সুযোগ নেই : আমিনুল হক
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার সাথে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের বৈঠক
যশোরে সাবেক এমপি, এসপিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রিটের আদেশ আগামী রোববার
গণহত্যাকারী আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা নয় : আসিফ নজরুল
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি শুরু
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে নোবিপ্রবি শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রদান
সিল্ক রোড উৎসবে ইরানের ‘মেলোডি’
বেনজির ও আজিজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
৬ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ বাতিল
১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো সেপ্টেম্বরের ১৭ দিনে