রোজ সকালে এক কাপ চা হাতে বই পড়া কিংবা অবসর সময়ে বইয়ের মাঝে ডুবে যাওয়াটা একসময় অনেকেরই অভ্যাস ছিল। বইপ্রেমী মানুষদের উঠাবসা সর্বত্রই কাটে বইয়ের সাথে। ছাত্র জীবনে বই পড়ার সময়টা অনেকেরই সুখকর কেটেছে। সময়ের পরিবর্তনে কর্মজীবনে প্রবেশের সাথে সাথে মানুষ এখন খুবই কম সময় পায় বই পড়ার। আগের মতো আর বই পড়া হয় না। প্রযুক্তির যুগে সকলের হাতেই এখন স্মার্টফোন। অবসর, বিনোদন সবই যেন ওই এক মোবাইল ফোনকে ঘিরেই। সময়ে, অসময়ে মোবাইল নিয়েই সকলের ব্যস্ত সময় কাটে। তাই একটু মোবাইল থেকে দূরে থেকে বইয়ের সাথে সেই আগের মতো আর সখ্য গড়ে উঠে না অনেকের। তবে এভাবে চলতে থাকলে একসময় আর বই পড়া হবে না আমাদের। জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আমাদের জীবনের সুন্দর কিছু মুহূর্তও জীবন থেকে চলে যাবে এই বই না পড়ার ফলে। কেননা, যারা বই পড়ে তারাই জানে বই আমাদের জীবনে সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধুর ন্যায় আচরণ করে। পৃথিবীর সব বন্ধুই কোনো না কোনোভাবে কষ্ট দিলেও, বই কখনও আমাদের কষ্ট দেয় না। বরং নীরবে নিভৃতে পাশে থেকে আত্মিক উন্নতি ঘটায়। মন মানসিকতা উন্নত ও সজীব রাখতে সহায়তা করে। তাই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে কিছু কৌশল নেয়া যেতে পারে। যেমন, নিয়মিত বই পড়ার জন্য দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে নিতে পারি। নির্দিষ্ট সংখ্যক পৃষ্ঠা বা অধ্যায় পড়ার পরিকল্পনা করে বই পড়া। বই পড়ার সময় অন্য কিছু চিন্তা না করা। বইয়ের প্রতিটি লাইনের মাঝে ডুবে যাওয়া। এক্ষেত্রে মোবাইল ফোন হাতের কাছে না রাখাই উত্তম। রাখলেও যতক্ষণ পড়বেন ততক্ষণ ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখা। ক্যাফেইন জাতীয় খাদ্য মানুষের শরীর ও মন চাঙা করে তুলে। ফলে পূর্ণ মনোযোগ পাওয়া যায় বই পড়ার ক্ষেত্রে। তাই বই পড়ার আগে একটু চা বা কফি পান করা যেতে পারে। বই পড়ার আগে বই কেনার অভ্যাস গড়ে তোলা। কেননা, নতুন বই জানান দেবে আপনার পূর্ববর্তী বই পড়ার বর্তমান অবস্থা। জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি তার চর্চা করা। কেননা চর্চা বিহীন জ্ঞান দ্রুত মস্তিষ্ক থেকে পলায়ন করে। এভাবে বই পড়ার প্রতি মনোযোগী হতে পারবেন বলে আশা করা যায়।

তাহমিনা আক্তার
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।