ভাল নেই দেশের মানুষ

Daily Inqilab কামরুল হাসান দর্পণ

০১ মার্চ ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৪, ১২:১২ এএম

দেশের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র ও নিম্নবিত্তের মানুষ নীরবে দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে, কিংবা দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে সংগ্রাম করছে, এটা বললে খুব বেশি বলা হবে না। সরকার সমর্থকদের অনেকে হয়তো ‘দুর্ভিক্ষ’ কথাটি শুনে ‘তেলে বেগুনে’ জ্বলে উঠতে পারেন। কারণ, তারা সরকারের উন্নয়ন ছাড়া কিছু ভাবতে পারেন না। তারা চোখে উন্নয়নের চমশা পরে আছেন। তাদের কাছে এ সরকারের সময় ‘দুর্ভিক্ষ’ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা অকল্পনীয়। তারা সরকারের কোনো না কোনো সুবিধাপ্রাপ্ত এবং আয়েশী জীবনযাপন করেন। তবে মাঝে মাঝে পত্রপত্রিকায় যেসব সংবাদ আসে, তা বালিতে মুখ গুঁজে থাকার মতো নয়। আবার প্রতিদিনই দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, তাতে দেশ যে চরম অর্থসংকটে পড়েছে, সে চিত্র পরিস্কার। ডলার সংকট, জ্বালানি সংকট, টাকার মান ও মানুষের আয় কমে যাওয়া, বেকারত্ব বৃদ্ধি, সর্বোপরি নিত্যপণ্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে না পেরে তাদের কষ্টকর জীবনের যে চিত্র সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসে, তা কোনোভাবেই উন্নয়নের সূচক বলা যায় না। প্রায় প্রত্যেক দেশেই মানুষের মধ্যে পাঁচটি শ্রেণী থাকে। এগুলো হচ্ছে, অতিদরিদ্র, দরিদ্র, নি¤œবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত। আমাদের দেশেও আছে। তবে এ ধারাবাহিকতা এখন ভেঙ্গে গেছে। জরিপ করলে দেখা যাবে, নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীটি ক্রমেই ক্ষয়ে যাচ্ছে। নি¤œবিত্ত দরিদ্রে, মধ্যবিত্ত নি¤œবিত্তে পরিণত হচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে, তারা যা আয় করে, তা দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না। আয়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছে না। নি¤œবিত্তের ব্যয় দরিদ্রের মতো এবং মধ্যবিত্তের ব্যয় নি¤œবিত্তের মতো হয়ে গেছে। স্বাভাবিক নিয়মে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটে। অতিদরিদ্র দরিদ্রে, দরিদ্র নি¤œবিত্তে, নি¤œবিত্ত মধ্যবিত্তে, মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্তে পরিণত হয়। উন্নতি না হলেও স্থিতিশীল থাকে, অবনমন ঘটে না। নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীটি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকে। এখন জরিপ করলে দেখা যাবে, দেশে মানুষের এই শ্রেণীভেদ বলতে কিছু নেই। দুটি শ্রেণীর প্রাধান্য বেশি। প্রথমত দরিদ্র, দ্বিতীয়ত উচ্চবিত্ত। এর মাঝের অংশটি ক্ষয়ে গেছে। নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কথাই যদি এখন ধরা হয়, তাহলে দেখা যাবে, এ শ্রেণীর জীবনযাপন করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। মৌলিক চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না। পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও মানুষের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী আগে তুলনামূলক সস্তা পাঙ্গাস মাছ দিয়ে পুষ্টি চহিদা পূরণ করত। এখন এ মাছ তারা কিনতে পারছে না। তারা কিনছে মাছটির কাঁটা ও মাথা। অর্থাৎ পুরো মাছের মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত যে গোশত থাকে তা বেশি দামে আলাদাভাবে বিক্রি করা হয়। মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত কাটা বিক্রি করা হয়। এগুলো একেকটি ২০টাকা দিয়ে কিনে শাক-সবজি দিয়ে কোনো রকমে রান্না করে মানুষ আমিষের চাহিদা পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু পাঙ্গাস মাছই নয়, কম আয়ের মানুষের পুষ্টির অন্যতম চাহিদা পূরণ করা ব্রয়লার মুরগী এখন তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। তারা সেগুলোর পা, পাখা কিনে চাহিদা পূরণে নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছে। এ থেকে বোঝা যায়, সাধারণ মানুষ ‘দুর্ভিক্ষ’ পরিস্থিতি ঠেকাতে কী ধরনের সংগ্রাম করছে।

দুই.
মানুষের জীবনযাপন কত কঠিন হয়ে পড়েছে এবং তাদের মধ্যে যে নীরব হাহাকার চলছে, তা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। অফিস-আদালতে, হাটে-বাজারে আলাপ-আলোচনা ও প্রতিবেশিদের সাথে কথা বললেই বোঝা যায়। বেশিরভাগ কথার মধ্যেই থাকে তাদের জীবনসংগ্রামের কথা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধিতে তাদের নাভিশ্বাস উঠার কথা। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, রসুন, শাক-সবজিসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে না পারার দুঃখের কথা। চাল কেনার পর মাছ-গোশত দূরে থাক, প্রয়োজনীয় শাক-সবজি কেনার সামর্থ্য তারা হারিয়ে ফেলেছে। অনেকের পক্ষে শাক-সবজি দিয়ে খাওয়াও কষ্টকর হয়ে পড়ছে। সীমিত আয়ের মানুষকে নেহায়েত যতটুকু না খেলে নয়, ততটুকু খেয়ে কোনো রকমে দিন পার করতে হচ্ছে। এর উপর যদি অসুস্থ্যতা বা দুর্ঘটনাজনিত কোনো বিপত্তি ঘটে, তবে তা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠে। আত্মসম্মান দূরে ঠেলে ধার-কর্যের দিকে হাত বাড়াতে হয়। বাড়ির পাশের দোকানে বাকির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হয়। দোকানির বিরক্ত মুখ সহ্য করতে হয়। একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে এক মুদি দোকানির বক্তব্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, গত কয়েক মাসে তার দোকানে বাকিতে কেনাবেচা বেড়েছে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। নগদ কেনাবেচা কমে গেছে। আগে যে ক্রেতা মাসে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বাকি নিত, এখন নিচ্ছে তিন থেকে চার হাজার টাকা। সময়মতো টাকাও পরিশোধ করতে পারছে না। টাকা চাইলে বলে, ভাই, কী করব, টাকা নাই। দোকানদার জানান, বেচাকেনা কমে যাওয়ায় তার লাভও কমে গেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবকিছুর দাম বেশি। খরচ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। নতুন নতুন খরচের খাতও তৈরি হচ্ছে। অথচ সীমিত আয়ের মানুষের আয় বাড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে সঞ্চয়ের করা দূরে থাক, আগে যে সঞ্চয় ছিল তা নেই। যখন একজন সীমিত আয়ের মানুষের সঞ্চয় না থাকে, তখন তাকে প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যেতে হয়। বছরের পর বছর ধরে একটু একটু করে যে সঞ্চয় করেছে, তা নিঃশেষ হয়ে গেলে তার পক্ষে নতুন করে সঞ্চয় করা সম্ভব হয় না। তাকে প্রান্তিক পর্যায়েই থেকে যেতে হবে। টানাপড়েনের মধ্যে বাকি জীবন কাটাতে হবে। এ সময়ে সীমিত আয়ের কত মানুষ প্রান্তিক পর্যায়ের চলে গেছে, তার সঠিক সংখ্যা কেউ বলতে পারবে না। তবে আশপাশের মানুষের দিকে তাকালে উপলব্ধি করা যায়। যারা শহরে ভদ্রস্ত জীবনযাপন করে, তারা যখন টানাপড়েনের মধ্যে পড়ে, তখন শত কষ্ট হলেও তা মানসম্মানের ভয়ে প্রকাশ করে না। তাদের মানসিক অবস্থা ও চেহারা দেখে উপলব্ধি করা যায়। মানুষের জীবনযাত্রার এই টানাপড়েন কবে শেষ হবে, তা কেউ বলতে পারে না।সরকার মানুষের যে উন্নয়নের কথা বলছে, তা এখন সাধারণ মানুষের কাছে অসার ছাড়া কিছু নয়। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির বিষয়টি এখন তাদের কাছে পরিহাসে পরিণত হয়েছে। একটি শ্রেণী, বিশেষ করে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন দ্বিগুণ-তিনগুণ বাড়িয়ে দিয়েই মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি দেখানো হচ্ছে। এ শ্রেণীর মানুষকে তুষ্ট করেই সরকার সার্বিক উন্নতির কথা বলছে। সরকারের মধ্যে এ প্রবণতা বিদ্যমান, সরকারি চাকরিজীবীরা সুখে থাকলে, তার ক্ষমতাও দীর্ঘস্থায়ী হবে। ক্ষমতার মূল উৎস প্রশাসন, জনগণ নয়। সাধারণ মানুষ কষ্টে থাকলেও তাদের কিছু বলার থাকে না। যেভাবে রাখা হবে, সেভাবেই থাকবে। বাস্তবেও তাই দেখা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ ক্ষোভে, দুঃখে ফুঁসে উঠলেও সরকারের কিছু যায় আসে না। উল্টো সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ভ্যাট-ট্যাক্সের নামে যতভাবে অর্থ আদায় করা যায়, প্রতিনিয়ত তার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের অর্থে টান পড়লে, কষ্টে থাকা মানুষগুলোর পকেটেই হাত দেয়। দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বৃদ্ধি, হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে শুরু করে এমন কোনো খাত নেই, যেখান থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে না। সরকার সমর্থকদের কেউ কেউ বলেন, জিনিসপত্রের দাম এই ক’মাস হলো বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে সবকিছুরই দাম কম ছিল। তাকে কে বলবে, মানুষের দম বের হতে খুব বেশি সময় লাগে না। পানিতে ডুবে পাঁচ-দশ মিনিটের বেশি টিকে থাকা যায় না। দম ঠিক রাখতে সবসময় বাতাসের প্রয়োজন এবং তা ঠিক রাখতে হয়। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মানুষের জীবন বাঁচিয়ে রাখার উপকরণ। যত কম সময়ের জন্য হোক না কেন, তা সামর্থ্যরে বাইরে চলে গেলে মানুষের জীবনীশক্তিও কমে যায়। এ পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে, তাহলে সুস্থভাবে মানুষের জীবনযাপন করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। বলতেই হবে, সরকার নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।

তিন.
দেশের মানুষের ভালো-মন্দ দেখা সরকারের দায়িত্ব। কোনো সরকার যদি এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তবে জনগণকে দুর্ভোগে পড়তে হয়, আফসোসও করতে হয়। এ দেশের মানুষও এখন এই আফসোসের মধ্যে রয়েছে। তারা দেখছে, সরকার তাদের জীবনমান উন্নয়নে ক্রমেই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এ নিয়ে সরকারকে কোনো জবাবদিহিও করতে হচ্ছে না। এর কারণ হচ্ছে, সরকার জনগণের প্রত্যক্ষ রায় ও পছন্দে নির্বাচিত হয়নি। নিজে নিজেই নির্বাচিত হয়েছে। ফলে যা হবার, তাই হচ্ছে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত না হওয়ার কারণে জনগণের দুঃখ-কষ্ট ও উন্নয়ন নিয়ে, তার তেমন মাথাব্যাথা নেই। তার কথার মধ্যেই উন্নয়ন আটকে পড়েছে। বড় বড় মেগা প্রকল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। জনগণেরই বা কী ক্ষমতা, এর প্রতিকার করা! আমাদের দেশে একটা সময় সরকার হটানো এবং বসানোর ক্ষেত্রে জনগণই মুখ্য ভূমিকা পালন করতো। স্বৈরাচারী সরকার হলে তাকে হটিয়ে দিয়েছে। তবে গণতন্ত্রের মোড়ক ও মুখোশ নিয়ে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ভোট ছাড়া যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তাকে হটানোর অভিজ্ঞতা তাদের কখনো হয়নি। গণতন্ত্রের নামে কর্তৃত্ববাদী কোনো সরকারের মুখোমুখি তাদের হতে হয়নি। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জেনেছে, বর্তমানে তারা এমনই এক সরকারের অধীনে বসবাস করছে। ক্ষমতার দাপটের কারণে সে কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না। নিজের দুর্বলতা ঢাকতে ব্যাপক উন্নয়নের কথা বলছে। অন্যদিকে, দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেলেও তার কোনো প্রতিকার নেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দশ বছরে দেশ থেকে প্রায় দশ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে এক মন্ত্রীর ২০০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এত অর্থ দেশ থেকে তিনি কিভাবে বিদেশে নিলেন, তার কোনো জবাবদিহিতা সরকার নিচ্ছে না। চুপ মেরে বসে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেনের ৬৫ শতাংশ সন্দেহজনক। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক যখন এ কথা বলে, তখন বুঝতে অসুবিধা হয় না, লুটেরা চক্র দেশ থেকে অর্থপাচার করে শূন্য করে দিচ্ছে। দেশ থেকে যদি প্রতিনিয়ত অর্থ পাচার হয়ে যায়, তবে দেশের জনসাধারণের ভালো থাকার কোনো কারণ নেই। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় এখন তাদের দুঃখ-দুর্দশার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এ নিয়ে সরকারের কোনো বিকার আছে বলে মনে হয় না। মাঝে মাঝে আদূরে ধমক দিতে শোনা যায়। তাতে কোনো কাজ হয় না। বুঝতে অসুবিধা হয় না, সরকার টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে এই লুটেরা চক্রের অবদান রয়েছে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারে না। ক্ষমতায় থাকার জন্য জনগণকে তোয়াক্কা করারও কোনো প্রয়োজন নেই। সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের ট্র্যাডিশন হচ্ছে, যে রাজনৈতিক দল চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমাতে সক্ষম হবে, জনগণ তাকে নির্বাচিত করে। নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোও এ বিষয়টি বেশি প্রাধান্য এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। ১০ টাকায় চাল খাওয়ানোর মতো মনোমুগ্ধকর প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সরকার এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সব মানুষ ১০ টাকায় চাল কিনতে পারবেÑএমন প্রতিশ্রুতিই ছিল। এখন মানুষকে মোটা চাল কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকায়। চিকন চাল ৭০-৮০ টাকায়। এই চাল কিনতে গিয়েই সাধারণ মানুষের এখন কষ্টের সীমা নেই। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। খোলা বাজারে কমদামে চাল বিক্রির যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না। সে দামেও মানুষের কেনার সামর্থ্য নেই। অথচ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, এ কথা ঢাকঢোল পিটিয়ে বলা হয়। স্বয়ংসর্ম্পূর্ণতা ও উন্নয়নের ‘ভরা জোয়ারের সময়’ মানুষকে ভাতের কষ্টে পড়তে হবে, এটা কী ভাবা যায়!

চার.
সাধারণ মানুষের কাছে রাজনীতির চেয়ে স্বচ্ছন্দে জীবনযাপনই বেশি পছন্দ। এখন মানুষের মৌলিক এই চাহিদা বলতে কিছু নেই। সরকারও তা নিশ্চিত করতে পারছে না। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও এ ব্যাপারে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছে না। এর কারণ হচ্ছে, বিরোধীদলগুলোকে সরকার যেমন পাত্তা দিচ্ছে না, তেমনি তারাও সরকারের কাছ থেকে জনদাবী আদায়ে সক্ষমতা দেখাতে পারছে না। জনগণের কল্যাণে সরকার ও বিরোধীদল যখন ব্যর্থতার পরিচয় দেয়, তখন কোনো দেশের জনগণই ভাল থাকতে পারে না। আমাদের দেশেও জনগণও ভালো নেই।

[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ইউনাইটেডের আরও এক লজ্জার রাত

ইউনাইটেডের আরও এক লজ্জার রাত

গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সিরিজ নিশ্চিতের অভিযানে শান্ত-হৃদয়রা

সিরিজ নিশ্চিতের অভিযানে শান্ত-হৃদয়রা

খুলনায় কাটলো তাপদাহ, নামলো বৃষ্টি

খুলনায় কাটলো তাপদাহ, নামলো বৃষ্টি

কুষ্টিয়ায় বিয়ের গাড়ি আটকে ভাঙচুর , আটক ৪

কুষ্টিয়ায় বিয়ের গাড়ি আটকে ভাঙচুর , আটক ৪

কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড মীরসরাই

কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড মীরসরাই

শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা

শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা

নিজ কক্ষে মিললো আওয়ামী লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশ

নিজ কক্ষে মিললো আওয়ামী লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশ

বজ্রপাতে তিন জেলায় ৪ জনের মৃত্যু

বজ্রপাতে তিন জেলায় ৪ জনের মৃত্যু

মধুখালি ডুমাইনের পঞ্চপল্লীতে দুই সহোদর হাফেজ খুন,স্বজনরা উল্টো আতঙ্কে কেটে গেল ১৮ প্রহর

মধুখালি ডুমাইনের পঞ্চপল্লীতে দুই সহোদর হাফেজ খুন,স্বজনরা উল্টো আতঙ্কে কেটে গেল ১৮ প্রহর

প্রশ্ন : প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ঋণ নিয়ে হজ্জ করা প্রসঙ্গে।

প্রশ্ন : প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ঋণ নিয়ে হজ্জ করা প্রসঙ্গে।

আমেরিকা ও ইউরোপের বহিষ্কৃত ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে ইরান

আমেরিকা ও ইউরোপের বহিষ্কৃত ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে ইরান

একটানা ৩৭ দিন তাপপ্রবাহে অতিষ্ট চুয়াডাঙ্গাবাসীর ভাগ্যে অবশেষে মিললো স্বস্তির শিলা বৃষ্টি

একটানা ৩৭ দিন তাপপ্রবাহে অতিষ্ট চুয়াডাঙ্গাবাসীর ভাগ্যে অবশেষে মিললো স্বস্তির শিলা বৃষ্টি

বজ্রপাতে মাদারীপুরে পৃথক স্থানে দুই জন নিহত

বজ্রপাতে মাদারীপুরে পৃথক স্থানে দুই জন নিহত

শম্ভুগঞ্জ ইউসি উচ বিদ্যালয়র সভাপতি মোক্তার হোসেনর বিরুদ্ধ দূর্নীতির অভিযাগ: ছয় সদস্যের পদত্যাগ

শম্ভুগঞ্জ ইউসি উচ বিদ্যালয়র সভাপতি মোক্তার হোসেনর বিরুদ্ধ দূর্নীতির অভিযাগ: ছয় সদস্যের পদত্যাগ

সিলেটে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি : বাড়ছে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের পরিমান

সিলেটে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি : বাড়ছে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের পরিমান

অপহরণের ১৩ ঘণ্টা পর চুয়েট স্কুলছাত্র উদ্ধার

অপহরণের ১৩ ঘণ্টা পর চুয়েট স্কুলছাত্র উদ্ধার

বরগুনায় গণমাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে কর্মশালা

বরগুনায় গণমাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে কর্মশালা

গৌরনদীতে লোডশেডিং ও তীব্র গরমে কদর বেড়েছে হাতপাখার

গৌরনদীতে লোডশেডিং ও তীব্র গরমে কদর বেড়েছে হাতপাখার

নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে টাকা বিতরণ করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে টাকা বিতরণ করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা