অপরিকল্পিত নগর ব্যবস্থার কারণে ঢাকা শহরে অগ্নি দুর্ঘটনায় জীবন ও মাল বেশি ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হয়। আর এ অপরিকল্পিত নগর ব্যবস্থা গড়ে ওঠার পিছনে পুরোপুরি আমরাই দায়ী। আধুনিক সভ্যতায় এসে একটি শহরের বৈশিষ্ট্য যেরকম থাকা উচিত, ঢাকা শহরের বৈশিষ্ট্য তেমনটা নেই। ঘনবসতিপূর্ণ শহর ও অপ্রশস্ত রাস্তা ঢাকা শহরের বাসিন্দাদের সাধারণ জীবনযাপন ব্যবস্থা অনেক দুরূহ করে তুলেছে। অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দ্রুত এসে আগুন নিভানোর কাজ শুরু করবে সে ব্যবস্থা নেই। শহরের অধিকাংশ অলিগলিতে পানির গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করার সুযোগ নেই। আর কিছু যায়গায় প্রশস্ত রাস্তা থাকলেও, নেই পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। ফলে ঢাকা শহরে অগ্নি দুর্ঘটনায় ব্যাপক জানমালের ক্ষতি লক্ষ করা যায়। এই অপরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাকে এখন সুন্দর পরিকল্পিত কাঠামোতে রূপ দেওয়া অনেক দুরূহ ব্যাপার। তাই ঢাকা শহরের বর্তমান কাঠামোর সাথে মিল রেখে অগ্নি দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে ‘স্ট্রিট ফায়ার হাইড্রেন্ট পয়েন্ট’ স্থাপন অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে। স্ট্রিট ফায়ার হাইড্রেন্ট পয়েন্ট হলো- রাস্তার পাশে স্থাপন করা এক ধরনের পানিকল। এ কল অত্যাধিক পানির চাপ দিয়ে ওয়াসার লাইনের সাথে যুক্ত করা থাকে। যদি কোথাও দ্রুত পানির দরকার হয়, তাহলে এই ফায়ার হাইড্রেন্টের মুখ খুলে পাইপ যুক্ত করে দরকারী স্থানে পানি সরবরাহ করা হয়। আমরা উন্নত দেশের শহরের দিকে তাকালে রাস্তার পাশে স্বল্প দূরত্বে এই স্ট্রিট ফায়ার হাইড্রেন্ট পয়েন্ট দেখতে পাই। অনেক মরুভূমির দেশেও এ ফায়ার হাইড্রেন্ট পয়েন্ট দেখতে পাওয়া যায়, আর যেখানে ঢাকা শহরের চারিদিকে নদী দ্বারা বেষ্টিত, ফায়ার হাইড্রেন্টের মাধ্যমে পানি সরবরাহের ঝামেলা নেই, সেখানে ঢাকা শহরে ফায়ার হাইড্রেন্ট থাকবে না কেন? তাই সিটি কর্পোরেশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, ঢাকা শহরে অগ্নি দুর্ঘটনায় জীবন ও মালের ক্ষতি এড়াতে স্ট্রিট ফায়ার হাইড্রেন্ট পয়েন্ট স্থাপনে অতিসত্বর ব্যবস্থা নিন।

শেখ আব্দুল্লাহ, শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা।