পুঁজি পাচার রুখতে হবে
১১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৪ এএম
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচার। পুঁজি পাচার ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রতি বছর যা হওয়ার কথা, এর চেয়ে ১ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ কম হচ্ছে। এই ক্রমবর্ধমান পুঁজি পাচারের কারণে প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগ-জিডিপির অনুপাত ২৪ শতাংশের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে, যদিও সরকারি বিনিয়োগ-জিডিপির অনুপাত বেড়ে ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ায় দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার তেমন কমছে না। গত প্রায় দুই বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতি বহু ধরনের সংকটে নিমজ্জিত। সংকটগুলোর প্রায় প্রতিটিই গুরুতর। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বিপজ্জনক পতন, টাকার হিসাবে ডলারের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধি, প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্স প্রেরণে হুন্ডি ব্যবসার ক্রমবর্ধমান প্রভাবে ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহে স্থবিরতা, কিংবা পতন, ব্যাপক ডলার সংকটের কারণে আমদানি এলসি খুলতে অপারগতা, কার্ব মার্কেটে হু হু করে ডলারের দাম বেড়ে ২০২১ সালের ৮৭ টাকা থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ১২৭ টাকায় উল্লম্ফন ও বাংলাদেশি টাকার বৈদেশিক মানের প্রায় ২৭ শতাংশ অবচয়ন, আমদানিতে ওভারইনভয়েসিং ও রফতানিতে আন্ডারইনভয়েসিং পদ্ধতিতে দেশ থেকে বিদেশে ব্যাপক পুঁজি পাচার, হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশ থেকে বিদেশে ক্রমবর্ধমান ব্যাংক ঋণ পাচার, খেলাপি ব্যাংক ঋণ সমস্যার বিপজ্জনক অবনতি, রফতানি আয় দেশে ফেরত না এনে সেগুলো দিয়ে বিদেশে ঘরবাড়ি-ব্যবসাপাতি ক্রয়, অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে লাগামহীন মূল্যস্ফীতির প্রকোপ, দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠন সম্পর্কে সরকারের অব্যাহত নিষ্ক্রিয়তা, দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টসের কারেন্ট অ্যাকাউন্টে গত চার বছর ধারাবাহিক ঘাটতি পরিস্থিতি, ব্যালান্স অব পেমেন্টসের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে বহুদিন পর সৃষ্ট বিপজ্জনক ঘাটতি পরিস্থিতি, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া, ২০২৩ সালে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি স্তিমিত হওয়ার লক্ষণ ইত্যাদি। এ সমস্যাগুলোর প্রতিটিই যেকোনো দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত খারাপ খবর এবং সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের কাছে বড় সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কথা। কিন্তু আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এ সমস্যাগুলো সত্ত্বেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে কুসুমাস্তীর্ণ মনে হচ্ছে! বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরও গত বছরের শেষের দিকে তার এক সাক্ষাৎকারে এসব সমস্যার অস্তিত্বকে স্বীকার করেছেন, কিন্তু তার বক্তব্যে সমাধানের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপগুলো কী হবে তার হদিস পাওয়া যায়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক এই সমস্যাগুলোর পেছনে প্রধান কারণ দায়ী করা হচ্ছে বিদেশে পুঁজি পাচার বেড়ে যাওয়াকে। পুঁজি পাচার একদিকে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থাকে গভীর সংকটে ফেলছে। অন্যদিকে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ লুণ্ঠিত হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পুঁজি পাচার কী? দেশ থেকে দেশের বাইরে অবৈধভাবে অর্থ-সম্পদ চলে যাওয়াকে অর্থনীতির ভাষায় পুঁজি পাচার বলা হয়। যতই দিন যাচ্ছে ততই বাংলাদেশ থেকে পুঁজি পাচার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক কারণেই পুঁজি পাচার হয়, তার মধ্যে হাতাশাজনক হলেও সত্যি বিনিয়োগ না হওয়ায় পুঁজি পাচার হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম পুঁজি পাচারকারীদের জাতির ‘এক নম্বর দুশমন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তারা যদি ব্যাপক হারে বিদেশে পুঁজি পাচার না করত তাহলে অর্থনীতি এতো সংকটে পড়ত না।
বাংলাদেশ থেকে টাকা যে নিয়মিত ভিনদেশে পাচার হয়ে যায়, তা নিয়ে কখনোই কোনো সন্দেহ ছিল না, এখনো নেই। যত সময় গড়িয়েছে, টাকা পাচারের পরিমাণ তত বেড়েছে। অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার পাশাপাশি পাচারকৃত টাকার অংকও বেড়েছে। তবে ঠিক কী পরিমাণ বা কত টাকা পাচার হয়, তার নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। বিভিন্নরকম হিসাব-নিকাশের ভিত্তিতে অনুমিত কিছু সংখ্যা মেলে। যেমন: বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি গত বছর মে মাসে বিকল্প বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরার সময় বলেছিল যে, ৫০ বছরে দেশ থেকে প্রায় ১২ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। সে হিসাবে গড়ে বছরে অন্তত ২৪ হাজার কোটি টাকা করে পাচার হয়েছে। আবার ওয়াশিংটনভিত্তিক গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি (জিএফআই)’র পরিসংখ্যান দেখায় যে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে ২০০৯-১৫ সময়কালে মোট অন্তত ৮২৭ কোটি ডলার পাচার হয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ৯১ হাজার কোটি টাকার বেশি। মানে, বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছে পণ্য আমদানিতে অধিক মূল্য ও পণ্য রপ্তানিতে কম দর দেখিয়ে। যেহেতু টাকা পাচার পরিমাপের কোনো সার্বজনীন পদ্ধতি বা আন্তর্জাতিক মাপকাঠি নেই, সেহেতু বিভিন্ন সূচকে বিভিন্ন রকম সংখ্যা মেলে। ২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ‘গোল্ডেন ভিসা’ পদ্ধতি চালু করে। কেউ ২০ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করলে বা আমিরাতের কোনো ব্যাংকে জমা রাখলে তাঁকে ১০ বছরের জন্য কোনো প্রশ্ন ছাড়া আমিরাতে অবাধে প্রবেশের ভিসা প্রদানের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই গোল্ডেন ভিসার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমানসংখ্যক ব্যবসায়ী চার বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডার পাশাপাশি দুবাইয়ে পুঁজি পাচারকে আকর্ষণীয় বিষয় হিসেবে বেছে নিতে শুরু করেছেন।
পুঁজি পাচারের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৫৭ সালে বাংলাকে উপনিবেশ করার আগে কয়েকশ’ বছর ধরে ভারতবর্ষের সবচেয়ে প্রাচুর্যময় অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত ছিল তদানীন্তন বাংলা। এই স্বীকৃতি প্রথম দিয়েছিলেন বিশ্বখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতা, যিনি বাংলার সুলতান ফখরুদ্দিন মুবারক শাহের আমলে এ দেশে এসেছিলেন। দ্বিতীয় স্বীকৃতিটি এসেছিল মোগল সম্রাট আকবরের ‘নবরতœ’ সভার খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ আবুল ফজলের লিখিত ইতিহাসে। তার রচিত আকবরনামায় তিনি স্বীকার করেছেন, সম্রাট আকবরের শাসনাধীন ভারতবর্ষে সবচেয়ে প্রাচুর্যময় প্রদেশ ছিল ‘সুবা বাংলা’। তৃতীয় স্বীকৃতি দিয়েছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেবের ফরাসি ‘কোর্ট ডাক্তার’ ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ার। বার্নিয়ারের মতে, সপ্তদশ শতাব্দীতে বিশ্বে সবচেয়ে প্রাচুর্যময় অঞ্চল হিসেবে মিসরের যে সুনাম ছিল, সে সুনামের প্রকৃত দাবিদার ছিল বাংলা। ১৭৫৭ সালে বাংলা দখল করার পর ১০০ বছর ধরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিপাহসালার ও সিপাহিরা জাহাজের পর জাহাজ বোঝাই করে বাংলা থেকে ধনসম্পদ ও সোনা-রূপা লুণ্ঠন করে ইংল্যান্ডে নিয়ে গেছে। তাদের এই পুঁজি পাচারের পরিমাণ এতই বেশি ছিল যে, লুণ্ঠিত সামগ্রীবাহী জাহাজগুলো লন্ডন বন্দরে খালাস করার সময় তিন মাসের একটি জাহাজ-জট সৃষ্টি হয়েছিল বলে প্রমাণ করেছেন ব্রুক অ্যাডামস নামে এক মার্কিন ইতিহাসবিদ। আরও অনেক ঐতিহাসিকের গবেষণার মাধ্যমে এই বাংলা লুণ্ঠনের কাহিনী প্রমাণিত হওয়ার ফলে এখন ইতিহাসে এই লুণ্ঠন পর্বকে ‘দ্য বেঙ্গল লুট’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে। ১৯৪৭ সালে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতার নামে আবার ২৪ বছরের জন্য পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ উপনিবেশে পরিণত হওয়ায় আরেক দফা লুণ্ঠন, বঞ্চনা ও পুঁজি পাচারের শিকার হয়েছিল তদানীন্তন পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান। বর্তমান সময়ের পুঁজি পাচারকারীরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও পাকিস্তানিদের ধারাবাহিকতাই রক্ষা করে চলেছেন বলে অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন। এই দেশের প্রতি পুঁজি পাচারকারীদের ন্যূনতম কমিটমেন্টও নেই। পুঁজি পাচারকারীরা অনেকটা চরের প্রভাবশালী মানুষের মতো। চরের মানুষরা যেমন নিরাপত্তা এবং উন্নত জীবনের আশায় চরের অর্জিত ও লুণ্ঠিত সমস্ত সম্পত্তি, চরে কোন রকমের একটি আস্তানা রেখে, শহরে পাচারের চেষ্টা করে, তেমনি এদেশের প্রভাবশালীরা এদেশ থেকে তাদের অর্জিত ও লুণ্ঠিত সমস্ত সম্পত্তি কোনো রকম একটি ঠিকানা রেখে নিরাপত্তা ও উন্নত জীবনের আশায় উন্নত বিশ্বে পাচার করে থাকে। তাছাড়া পাচারকারীদের অর্থের বড় উৎস হচ্ছে দুর্নীতি, দুর্নীতি বেড়েছে বলে অর্থ পাচার বেড়েছে।
২০২২ সরকারের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) বরাত দিয়ে দেশের পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছিল, শুধু হুন্ডি প্রক্রিয়ায় দেশ থেকে গড়ে বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। (সিআইডির দাবি ৭৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা দেশেই আসছে না। অথচ, এই পরিমাণ টাকা হুন্ডি প্রক্রিয়ায় দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবে জমা হয়ে যাচ্ছে)। এর সঙ্গে আমদানির ওভারইনভয়েসিং, রফতানির আন্ডারইনভয়েসিং এবং রফতানি আয় দেশে ফেরত না আনার মতো মূল সমস্যাগুলো যোগ করলে দেখা যাবে প্রতি বছর এখন কমপক্ষে দেড় লাখ কোটি টাকা সমপরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হচ্ছে। এর অর্থ বাংলাদেশ থেকে বছরে কমপক্ষে ১৫/১৬ বিলিয়ন ডলার পুঁজি এখন বিদেশে পাচার হচ্ছে, যার বড় অংশই পাচার হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে।
২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের অঙ্গীকার করলেও গত পাঁচ বছরে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম একেবারেই ‘কথার কথায়’ পর্যবসিত হয়েছে। এখন ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে, এখন দেখার বিষয় তারা কি পূর্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে না সত্যিকারর্থে দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতির প্রয়োগ করে। অর্থনীতিকে আবারো স্বস্তিকর অবস্থায় নিয়ে যেতে হলে বাংলাদেশ সরকারকে দুর্নীতি, পুঁজি লুণ্ঠন এবং পুঁজি পাচারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করতে হবে। এজন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে অবিলম্বে কঠোরভাবে হুন্ডি ব্যবস্থাকে দমন। কারণ, হুন্ডি পদ্ধতিতে বিদেশে থেকে যাওয়া ডলার বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা কেনার ক্ষেত্রে চাহিদার প্রধান অংশটাই আসছে দুর্নীতিবাজ আমলা ও রাজনীতিবিদ এবং ব্যাংক ঋণ লুটেরাদের পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশে কার্ব মার্কেটের ডলারের দামের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বীকৃত হারের ব্যবধান এখনো ১০-১২ টাকা রয়ে গেছে। এই দুই দামের এত বড় পার্থক্য শুধু হুন্ডি ব্যবস্থাকেই চাঙা করছে, ফলে ফর্মাল চ্যানেলে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি শ্লথ হতে বাধ্য। আর অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, অধিকাংশ রেমিট্যান্স হুন্ডি ব্যবস্থায় দেশে আসছে। এর মানে, ফরমাল চ্যানেলে প্রতি বছর ২১/২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এলেও আরো ২১/২২ বিলিয়ন ডলার হুন্ডির মাধ্যমে অর্থনীতিতে যুক্ত হচ্ছে! এর বেশির ভাগই ব্যাংকের ঋণ। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন যে টালমাটাল অবস্থায় পৌঁছে গেছে সেটার জন্য দায়ী চারটি প্রধান পুঁজি পাচার প্রক্রিয়া: ১. আমদানিতে ব্যাপক প্রবৃদ্ধির আড়ালে ওভারইনভয়েসিং পদ্ধতিতে পুঁজি পাচার, ২. রফতানিতে ব্যাপক আন্ডারইনভয়েসিং পদ্ধতিতে পুঁজি পাচার, ৩. রফতানি আয় দেশে ফেরত না এনে বিদেশে রেখে দিয়ে ওই অর্থ দিয়ে বিদেশে ঘরবাড়ি-ব্যবসাপাতি কেনার হিড়িক এবং ৪. দেশের ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠীগুলো কর্তৃক হুন্ডিওয়ালাদের ব্যাংক ঋণের টাকা প্রদানের মাধ্যমে এর সমপরিমাণ ডলার হুন্ডি প্রক্রিয়ায় বিদেশে পাচার। তাই পুঁজি পাচাররোধকে বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারে নিয়ে আসতেই হবে। পুঁজি পাচারের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের ধারা থামাতে না পারলে ডলারের কার্ব মার্কেটের দামের উল্লম্ফন এবং টাকার বৈদেশিক মানের দ্রুত অবচয়নকে থামানো যাবে না। আর এর জন্য প্রয়োজন পুঁজি পাচারের বিরুদ্ধে সরকারের বিশ্বাসযোগ্য কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা। সাথে সাথে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
লেখক : অর্থনৈতিক বিশ্লেষক।
[email protected]
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
অতিক্তি লোক ভিড় করায় মাওলানা মামুনুল হক মুক্তি পাননি
দুটি মার্কিন ডেস্ট্রয়ারসহ চার জাহাজে হামলা হুতিদের
দক্ষিণাঞ্চলীয় বাহিনীর সদর দফতরে হামলা রাশিয়ার
আমাকে উৎখাতের পর ক্ষমতায় কে?
ফজরের নামাযের দশটি ফযীলত-১
সম্রাট হুমায়ুন : উদারনীতির উদ্যান-১
উচ্চতাপ বজ্র-ঝড় কালবৈশাখী ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা এ মাসেই
অবশেষে গ্রেফতার সেই ভয়ঙ্কর প্রতারক মিল্টন সমাদ্দার
ধরা পড়েনি কিলিং মিশনের ১২ খুনি, অভিযোগ ভুক্তভোগীদের
ওসির শেল্টারেই চেয়ারম্যান তপনের নানা অপকর্ম
জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ আজ
৭ জানুয়ারির নির্বাচন ’৭৫ সালের পর দেশে অনুষ্ঠিত সুষ্ঠু নির্বাচন -ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশ ও ভারতের দুই সচিবের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
কাউকে ছাড় দেবে না বিএনপি
ওমরা পালনে সস্ত্রীক সউদী আরব গেছেন মির্জা ফখরুল
শনিবার মাধ্যমিকে রোববার থেকে প্রাথমিকে পাঠদান চলবে
এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি কমেছে ৪ কোটি ডলার
ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা কলম্বিয়ার
রাশিয়ার উপগ্রহ-বিরোধী পারমাণবিক অস্ত্র ভয়ঙ্কর হতে পারে : পেন্টাগন
শিক্ষা ক্যাম্পাসজুড়ে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ, চলছে গ্রেফতার-উচ্ছেদ