সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দিব কোথা

Daily Inqilab ড. অজয় কান্তি মন্ডল

৩১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৯ এএম

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে: সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দিব কোথা? প্রবাদটি পুরোপুরি বাস্তবধর্মী। দুর্নীতি ও অনিয়ম আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এমনভাবে পৌঁছে গেছে, যার প্রতিকার করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতি নির্মূল ও অনিয়ম দূর করার কাজটি কোথা হতে শুরু করতে হবে সেটা নিয়েও আমরা অনেক সময় দ্বিধাদ্বন্দ্ব বা অনিশ্চয়তায় ভুগি। আবার ব্যাপকভাবে অভিযান পরিচালনা করতে গেলে দেখা যাবে, ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এক লেখার মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা অসম্ভব। তাই সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছোট্ট একটি ঘটনা নিয়ে আপাতত আলোকপাত করতে চাই। সম্প্রতি একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক বিভাজকে হেলান দিয়ে রাখা মই। সেই মই বেয়ে নেমে মহাসড়ক পার হচ্ছে যাত্রীরা। এর বিনিময়ে যাত্রীদের থেকে জনপ্রতি পাঁচ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। ঘটনাটি গেল ১৭ মার্চ দুপুরের দিকের, স্থান: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ের সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর অফিসের সামনে।

দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে জানতে পারলাম, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো সরাসরি যেন ঢাকায় যেতে পারে, সেজন্য চার লেনের ঢাকামুখী সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজ থেকে কুয়েতপ্লাজা এলাকা পর্যন্ত উঁচু বিভাজক দিয়ে দুই লেন বিভক্ত করে দেওয়া হয়। পাঠকের বুঝার সুবিধার জন্য বলে রাখি, এই দুই লেনের একটিকে ‘বিজি লেন’ বা ‘দূরপাল্লার লেন’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। বিজি লেনের দুইপাশে দুইটি ‘লোকাল লেন’ বা ‘আঞ্চলিক লেন’ আছে যে লেনগুলো দিয়ে আঞ্চলিক যানবাহন চলাচল করে। এটা সচারাচার রাজধানী ঢাকা থেকে বের হওয়ার সবগুলো মহাসড়কের দৃশ্য। এই লেন সম্পর্কে পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব। যাহোক, সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজ এলাকায় বিজি লেন থেকে লোকাল লেনে যাত্রীদের চলাচলের জন্য সওজ কার্যালয়ের সামনে একটি গেট খোলা রাখা হয়। যেখানে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো শিমরাইল মোড়ের যাত্রীদের নামিয়ে দিত। কিন্তু এই ঘটনা ঘটার মাস দুয়েক আগে থেকে সেটা বন্ধ করে রেখেছে সওজ কর্তৃপক্ষ। তবে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো এখনো ওই স্থানেই যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে এবং যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে লেন বিভক্তকারী উঁচু বিভাজক দিয়ে পার হচ্ছে।

লেন বিভক্তকারী উঁচু বিভাজক টপকে পার হওয়ার এমন ঘটনা বিরল নয়। এক্ষেত্রে সামান্য নিজস্ব অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করলাম। বিগত প্রায় ৭ মাস যাবত সাভারের নয়ারহাট থেকে সাইন্সল্যাব পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে যাতায়াত করেছি। সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে নয়ারহাট থেকে রওনা দিয়ে সাড়ে ৯ টায় পৌঁছাতে হয়েছে সাইন্সল্যাবে। কোনো কোনো দিন ১০টা বা তারও বেশি বেজে যেত। দূরত্ব ৩৩ কি.মি.। এই ৩৩ কি.মি. এর ২৬ কি.মি. অর্থাৎ নয়ারহাট থেকে গাবতলী আসতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট। বাকি ৭ কি.মি আসতে ১ বা দেড় ঘণ্টা। তবে নয়ারহাট থেকে গাবতলী বিপরীতক্রমে গাবতলী থেকে নয়ারহাট পর্যন্ত রাস্তাটুকু অতিক্রম করতে ব্যয়িত সময় প্রায় ফিক্সড বলা যায়। গাবতলী থেকে সাইন্সল্যাব আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে এক এক দিন এক এক সময় লাগত। লাগারই কথা। কেননা ঢাকা শহরের ভিতর ট্রাফিক জ্যাম এখন এমনভাবে জেঁকে বসেছে তাতে এটা কমন দৃশ্য। মজার বিষয় হলো, এই ৩৩ কি.মি. পর্যন্ত দূরত্বের পুরোটাই কিন্তু রাস্তা বিভাজক আছে। তবে গাবতলীর পরে কিছু জায়গায় এখনো লেন বিভক্তকারী উঁচু বিভাজক তৈরির কাজ নির্মাণাধীন। সে হিসেবে ২৬ কি.মি. রাস্তা যেতে ২৬ মিনিট বা সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টা সময় লাগার কথা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ব্যয় হয় তার ৩ গুণ সময়। এই অতিরিক্ত সময় লাগার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম এই লেন বিভক্তকারী উঁচু বিভাজক।

সাভার তুলনামূলক ব্যস্ত উপজেলা। বিশেষ করে অধিকাংশ পোশাক শিল্প কারখানা সাভারের আশপাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠায় প্রচুর মানুষের আনাগোনা। এসব মানুষের পদচারণা শুরু হয় সকাল ৭টার পরপরই। রাস্তার যানজট কমাতে এখানেও লেন বিভক্তকারী উঁচু বিভাজক রয়েছে। অল্প দূরত্ব পরপর পথচারী পারাপারের জন্য আছে ওভারব্রিজ। গাবতলী থেকে নয়ারহাট বা তৎপরবর্তী ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের অনেকাংশেই এই লেন বিভক্তকারী উঁচু বিভাজক বিদ্যমান। অল্প দূরত্ব পরপর লেন পরিবর্তন করার জন্য কিছু জায়গা রাখা আছে। যেগুলোর প্রতিটার প্রবেশ মুখ এবং বের হওয়ার মুখে যত গণপরিবহন আছে সেগুলো ইচ্ছামত গাড়ি পার্ক করে যাত্রী ওঠানামা করায়। পুরো রাস্তা বন্ধ করে যাত্রী ওঠানামা করানোর চিত্র খুবই কমন। ফলে পেছনে অন্য পরিবহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে। যেটা সামলানোর জন্য কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই। আর এই সুযোগে প্রতিটা গণপরিবহনের চালক ইচ্ছামত রাস্তা বন্ধ করে যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে। তবে এখানে ট্রাফিক পুলিশ থাকতে হবে তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কেননা, ট্রাফিক পুলিশের সাহায্য ছাড়াই যানজট নিরসনের জন্যই এই লেনে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সমস্যাটা আমাদেরই। বিজি লেন করার সময় সুস্পষ্ট রূপরেখা থাকাটা বাঞ্ছনীয় ছিল। যেখানে বিজি লেনে প্রবেশ করার বা বের হওয়ার পরে অবশ্যই বাস স্টপেজ করার জন্য রাস্তার পাশে যথোপযুক্ত জায়গা রাখা উচিত ছিল। যেখানে গণপরিবহন থামিয়ে যাত্রী ওঠানো বা নামানোর কাজ করা যেত। সেইসাথে বিজি লেনে সকল পরিবহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে লেন বিভক্তকারী রাস্তাসমূহ থেকে জনগণ সুবিধা পেত। কিন্তু তেমন কোনো ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই। পক্ষান্তরে লোকাল লেন দখল করে রাখা কিছু কিছু ট্রাক, ব্যক্তিগত পরিবহন, লেগুনা লোকাল লেনের যানজট বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

এছাড়াও কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিবহনগুলোর বিজি লেনের মধ্যবর্তী স্থানে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামার চিত্র অতি পরিচিত। বিজি লেনে নামা এসব যাত্রীরা লেন বিভক্তকারী উঁচু বিভাজক টপকে পার হচ্ছে। কিছু কিছু স্থানে কর্তৃপক্ষ অবশ্য উঁচু বিভাজকের উপরে আরও উঁচু করে আলাদা লোহার বেড়া দিয়েছে। কিন্তু জনগণ সেই বেড়ার ও কিছু রড ভেঙে তার ভিতর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে। বাসে বসে যেকেউ দৃষ্টি বাইরে দিলেই এসব নিত্যদিনকার দৃশ্য চোখে পড়বে। পুরুষ-মহিলা, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সব বয়সের মানুষ ব্যাগ-বস্তা, বাচ্চা নিয়ে বহু কষ্টে এসব বিভাজক পার হতে দেখা যায়। তবে রাস্তা পারাপার হওয়ার ফুট ওভারব্রিজগুলোর নিচে এই দৃশ্য তুলনামূলক বেশি। অনেকে উঁচু বিভাজক পার হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে ইট দিয়ে উঁচু করে নিয়েছে। যেটাকে মই এর বিকল্প হিসেবে যাত্রীরা ব্যবহার করছে। তবে এখানে টাকা নেওয়ার মতো ঘটনা চোখে পড়েনি।

এবার আসি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের ঘটনায়। মই দিয়ে যাত্রী পারাপারের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনার মূল হোতা রবিউলকে আটক করেছে পুলিশ। এক্ষেত্রে পুলিশ একেবারেই কালক্ষেপণ করেনি বলা যায়। অর্থাৎ ঘটনা ঘটার দিনই সন্ধ্যায় তাকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে তিন ফুটের দুইটি মই। যেটি ছিল রবিউলের অপরাধ ঘটানোর প্রধান হাতিয়ার। বাংলাদেশ পুলিশ এক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। কেননা, প্রকাশ্য দিবালোকে জনসম্মুখে মানুষ খুন করা আসামিও কখনো এত দ্রুত গ্রেফতার হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তবে রবিউল হয়েছে। তাও আবার তার অপরাধ ঘটানোর সরঞ্জামাদিসহ। নারায়ণগঞ্জ সওজ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, এর আগেও একাধিকবার এভাবে মই বসিয়ে যাত্রী পারাপার করা হয়েছিল। এ বিষয়ে তারা নাকি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। সে হিসেবে রবিউলের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বা এতদিনে হয়েছে।

পুলিশের ভাষ্যমতে, চট্টগ্রামের পূর্ব দুর্গাপুর এলাকার রবিউল পেশায় গাড়ি চালক। থাকত সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে। কিছুদিন ধরে রবিউল গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়ে বেকার ছিল। সামনে ঈদুল ফিতর। কিছু বাড়তি খরচের ব্যাপার তো আছেই। এই সময়ে বেকার থাকাটা একটু বেমানান। হয়ত সেই চিন্তায় বেকার রবিউল সহজ আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছিল। অল্প বিনিয়োগে অন্তত ঈদুল ফিতরের খরচ যোগানোর মতো ব্যবস্থা রবিউলের হয়ে যেত এটা নিশ্চিত বলা যায়। কিন্তু মাঝে বাঁধ সাধলো ভাইরাল হওয়াতে। হয়ত রবিউলের সাজা হবে। কিন্তু রবিউলের অপরাধের ধরন কতটা গভীর সেটা অজানা রয়ে গেল। রবিউল রোজাদার মানুষদের কষ্ট কিছুটা লাঘব করার জন্য মইয়ের সাহায্যে উঁচু বিভাজক পার হওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এটা তার পরোপকারী মনোভাব। কিন্তু টাকা নেওয়ার বিষয়টি অপরাধ। সেই অপরাধের ধরন অনুযায়ী রবিউল শাস্তি পাক। কিন্তু নির্দিষ্ট স্টপেজে যাত্রী না নামিয়ে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামায় বাধ্য করানো পরিবহন চালকদেরও শাস্তি হওয়া উচিত। শাস্তি হওয়া উচিত ঘুষের বিনিময়ে যেসব ট্রাফিক পুলিশ নিয়মনীতি ভঙ্গ করে। শাস্তি হওয়া উচিত সেসব পথচারীর যারা ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে সড়ক পার হয়। আমরা আশা করব, এসব বিষয় কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখবে।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ঘটনায় যাত্রী, বাস চালক, পুলিশ পৃথক পৃথক বিবৃতি দিয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে যত্রতত্র যাত্রী নামানো নিয়ে। ভুক্তভোগী অনেকেই বলেছে, বাসের চালক ইচ্ছা করে মহাসড়কের মাঝখানে তাদের নামিয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে এই যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাফিয়ে উঁচু সড়ক বিভাজক পার হতে হচ্ছে। অনেকেই শিশু সন্তান, ব্যাগ বস্তাসহ উঁচু বিভাজক পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় কবলিত হয়। পুলিশের উপস্থিতিতেই এই কাজ হয় বলেও অনেকে অভিযোগ করে।

যাত্রীদের নামানো নিয়ে অনেক বাস চালকেরও অভিযোগ রয়েছে। লোকাল লেনে চলাচল করার ব্যাপারে অনেক বাস চালক অনীহা প্রকাশ করে। অনেকের অভিযোগ, লোকাল লেনের অর্ধেকটাতে অবৈধ পার্কিং থাকে। সারাক্ষণ জ্যাম হয়ে থাকে। এতে লোকাল লেন দিয়ে বাস নিয়ে গেলে যানজটে পড়তে হয়। আবার অনেক সময় যাত্রীরাও তাদের পছন্দমতো জায়গায় নামতে চায়। যাত্রীদের অভিযোগ এবং বাস মালিকদের অভিযোগ পুরোপুরি সত্য।

হাইওয়ে পুলিশ বলছে, ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গকারী বাসগুলোর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। মামলা দিয়েও মহাসড়কের মাঝখানে যাত্রী নামানো বন্ধ করা যাচ্ছে না। কোনোভাবেই বাসের এই কার্যক্রম থামানো যাচ্ছে না। পরিবহন সংশ্লিষ্ট লোকজন যদি সচেতন না হয় তাহলে তো মামলা দিয়ে এসব থামানো কষ্টকর। বাসচালকসহ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সচেতনতা তৈরি না হলে এটি থামানো কঠিন।

যাত্রী ও পথচারীদের পারাপারে পথচারী পারাপার সেতু, ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে হবে। জেব্রা ক্রসিং ব্যতীত রাস্তা পারাপার হওয়া বন্ধ করতে হবে। এগুলো ব্যবহার ছাড়া মহাসড়ক পারাপার হওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের জন্য কান্না হতে পারে। এই বিষয়ে যাত্রীদের যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। কেউ যাতে মহাসড়কে এ ধরনের কাজ করতে না পারে, সেজন্য হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে হবে। ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গকারী চালকদের নামে মামলা দিয়ে নিয়ম না মানানো গেলে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিলসহ আরও কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। ঢাকা শহরসহ সমগ্র মহাসড়ক সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে। ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ পূর্বক অপরাধের ধরন নির্ধারণ করে চালকসহ যাত্রীদের তাৎক্ষণিক আইনের আওতায় আনতে হবে। শুধুমাত্র এক অধিদপ্তর অন্য অধিদপ্তরের নামে অভিযোগ না করে যেটাতে সমস্যার সমাধান হয়, অনতিবিলম্বে সে ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। সড়ক বা মহাসড়ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেকোন পরিকল্পনা গ্রহণ করার আগে সুদূরপ্রসারী সুচিন্তিত মতামতের ভিত্তিতে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

নির্দিষ্ট গন্তব্য, নিয়ন্ত্রিত গতি ও নিরাপদ সড়ক সকলের কাম্য। কিছুদিন পরেই ঈদুল ফিতর। এই উৎসব ঘিরে মানুষের বাড়ি ফেরা নিয়ে শুরু হবে চরম অনিশ্চয়তা। সারা বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন নিয়ে মানুষ বাড়ি ফিরবে। কেউ ফিরতে পারবে, কেউ পারবে না। দুর্ঘটনা ঘটবে এবং সড়কে মৃত্যুর মিছিল চলবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই ট্রেনের ছাদে চড়ে বসবে। যদিও ট্রেনের ছাদে যাত্রী বহন বন্ধ করতে বলেছেন হাইকোর্ট। বন্ধ করা না হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরেও থেমে নেই ট্রেনের ছাদে যাত্রী নেওয়া।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট।
[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ইউনাইটেডের আরও এক লজ্জার রাত

ইউনাইটেডের আরও এক লজ্জার রাত

গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

গ্রামে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সিরিজ নিশ্চিতের অভিযানে শান্ত-হৃদয়রা

সিরিজ নিশ্চিতের অভিযানে শান্ত-হৃদয়রা

খুলনায় কাটলো তাপদাহ, নামলো বৃষ্টি

খুলনায় কাটলো তাপদাহ, নামলো বৃষ্টি

কুষ্টিয়ায় বিয়ের গাড়ি আটকে ভাঙচুর , আটক ৪

কুষ্টিয়ায় বিয়ের গাড়ি আটকে ভাঙচুর , আটক ৪

কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড মীরসরাই

কালবৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড মীরসরাই

শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা

শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা

নিজ কক্ষে মিললো আওয়ামী লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশ

নিজ কক্ষে মিললো আওয়ামী লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশ

বজ্রপাতে তিন জেলায় ৪ জনের মৃত্যু

বজ্রপাতে তিন জেলায় ৪ জনের মৃত্যু

মধুখালি ডুমাইনের পঞ্চপল্লীতে দুই সহোদর হাফেজ খুন,স্বজনরা উল্টো আতঙ্কে কেটে গেল ১৮ প্রহর

মধুখালি ডুমাইনের পঞ্চপল্লীতে দুই সহোদর হাফেজ খুন,স্বজনরা উল্টো আতঙ্কে কেটে গেল ১৮ প্রহর

প্রশ্ন : প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ঋণ নিয়ে হজ্জ করা প্রসঙ্গে।

প্রশ্ন : প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ঋণ নিয়ে হজ্জ করা প্রসঙ্গে।

আমেরিকা ও ইউরোপের বহিষ্কৃত ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে ইরান

আমেরিকা ও ইউরোপের বহিষ্কৃত ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে ইরান

একটানা ৩৭ দিন তাপপ্রবাহে অতিষ্ট চুয়াডাঙ্গাবাসীর ভাগ্যে অবশেষে মিললো স্বস্তির শিলা বৃষ্টি

একটানা ৩৭ দিন তাপপ্রবাহে অতিষ্ট চুয়াডাঙ্গাবাসীর ভাগ্যে অবশেষে মিললো স্বস্তির শিলা বৃষ্টি

বজ্রপাতে মাদারীপুরে পৃথক স্থানে দুই জন নিহত

বজ্রপাতে মাদারীপুরে পৃথক স্থানে দুই জন নিহত

শম্ভুগঞ্জ ইউসি উচ বিদ্যালয়র সভাপতি মোক্তার হোসেনর বিরুদ্ধ দূর্নীতির অভিযাগ: ছয় সদস্যের পদত্যাগ

শম্ভুগঞ্জ ইউসি উচ বিদ্যালয়র সভাপতি মোক্তার হোসেনর বিরুদ্ধ দূর্নীতির অভিযাগ: ছয় সদস্যের পদত্যাগ

সিলেটে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি : বাড়ছে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের পরিমান

সিলেটে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি : বাড়ছে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের পরিমান

অপহরণের ১৩ ঘণ্টা পর চুয়েট স্কুলছাত্র উদ্ধার

অপহরণের ১৩ ঘণ্টা পর চুয়েট স্কুলছাত্র উদ্ধার

বরগুনায় গণমাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে কর্মশালা

বরগুনায় গণমাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে কর্মশালা

গৌরনদীতে লোডশেডিং ও তীব্র গরমে কদর বেড়েছে হাতপাখার

গৌরনদীতে লোডশেডিং ও তীব্র গরমে কদর বেড়েছে হাতপাখার

নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে টাকা বিতরণ করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে টাকা বিতরণ করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা