ভাষা আন্দোলনে ছাত্ররাই ছিল মূল ভূমিকায়
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৬ এএম

বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছোট্ট হলেও রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়ার কারণে বিশ্বাঙ্গনে বাংলাভাষার স্থান অনেক উঁচুতে। এটা গোটা বিশ্বের বাংলাভাষীদের কাছে গৌরবের ব্যাপার। বিশেষ করে, জাতিসংঘ একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তÍর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে বাংলা ভাষাকে যথোচিত স¤মান প্রদান করায় এ ভাষা ও দেশের মান ও পরিচিতি যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।
একুশে ফেব্রুয়ারি মানেই ফাল্গুন। আর ফাল্গুন মানেই বসন্তÍ। বাসন্তিÍ কৃষ্ণচূড়ার মাথায় ফোটা রক্তরঙ্গের পু®পরাজি। তা বাতাসে দোলায় মনে করিয়ে দেয় একুশের ভাষা শহীদদের কথা, ভাষা সংগ্রামের কথা। বাংলা ভাষা-রাষ্ট্রভাষা হওয়ার জন্যে আমরা গর্বিত। হয়ত বা আরও গর্বিত হওয়া সম্ভব ছিল, যদি বাংলা ভাষা বৃটিশ ভারতের একাংশের রাষ্ট্রভাষার পরিবর্তে গোটা ভারতেরই রাষ্ট্রভাষা হতো। আমাদের পূর্ব প্রজন্মের বাংলাভাষী মনীষিরা এ ব্যাপারে তৎপর থাকলেও সঙ্কীর্ণমনা রাজনীতির ডামাঢোলে তা চাপা পড়ে যায়। কংগ্রেস মহল হিন্দির পক্ষে আর প্রভাবশালী কিছু মুসলমান উর্দুর পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। এ দু’মতবাদের বিপক্ষে বাংলাভাষী অঞ্চল হতে বাংলাকে ভারতের সাধারণ ভাষা করার জন্যে দাবি তোলা হয়। এ নিয়ে বহু বৈঠক হয়। বৈঠকে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখ ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলা ভাষার দাবি উত্থাপন করেন। এ দাবির পক্ষে জনমত সৃষ্টি হলেও তা কার্যকর হয়নি।
১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে ভারত ভাগের প্রাক্কালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ অভিমত ব্যক্ত করেন যে, কংগ্রেস স^াধীন ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে হিন্দিকে গ্রহণ করার পর স^াভাবিকভাবেই উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা উচিত। তার বক্তব্যকে খন্ডন করে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা সমস্যা নামে এক নিবন্ধ প্রকাশ করে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলার স^পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। নিবন্ধটি আজাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ১৯৪৭ সালের ২৯ জুলাই।
‘পূর্ব-পাকিস্তানের জবান’ শীর্ষক এক নিবন্ধে আবুল মনসুর বলেন, উর্দু নিয়ে এ ধস্তাধস্তি না করে আমরা যদি সোজাসুজি বাংলাকেই পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ও জাতীয় ভাষারূপে গ্রহণ করি, তাহলে পূর্ব-পাকিস্তান প্রবর্তনের সাথে সাথে আমরা বাংলার শিক্ষিত সম্প্রদায় নিজেরাই পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, শিক্ষাগত, অর্থনৈতিক ও শিল্পায়নে হাত দিতে পারব। এ লেখাটি প্রকাশিত হয় মোহা¤মদীতে ১৯৪৩ সালে।
১৯৪৪ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রভাষা ও সাহিত্য নিবন্ধে কবি ফররুখ আহমদ লেখেন, পাকিস্তানের অন্তÍতঃ পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা যে বাংলা হবে একথা সর্বস¤মত হলেও আমাদের এ পূর্ব পাকিস্তানেরই ক’জন তথাকথিত শিক্ষিত ব্যক্তি বাংলাভাষার বিপক্ষে এমন অবার্চিনের মত প্রকাশ করেছেন, যা নিতান্তÍই লজ্জাজনক। অবশ্য শেষ পর্যন্তÍ তা টিকেনি।
১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের জন্ম হলো। এর কয়েকদিন পর ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেমের উদ্যোগে ‘পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিস’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে উঠে। মোহা¤মদ তোয়াহার ভাষায়, বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা যায় কিনা তা নিয়ে বুদ্ধিজীবী ও ছাত্রমহলে প্রথম চিন্তÍার সূত্রপাত করে এ সংগঠন। এরাই প্রথম রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি তোলে এবং ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত করে। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের কিছু কর্মকর্তা রাষ্ট্রভাষা বাংলার প্রশ্নে নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেন। প্রথমদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলাভাষা রাষ্ট্রভাষা করার প্রশ্নে বেশ অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেয়াওত খাঁ ছিলেন অবাঙ্গালী। তিনি অবশ্য রাষ্ট্রভাষা বাংলার সমর্থক এবং রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্যও ছিলেন। অধ্যাপক খাঁর ভাষায়, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ সারা পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা বাংলা ভাষায় কথা বলেন। কাজেই বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ন্যায্য, স^াভাবিক ও যুক্তিসঙ্গত।
১৯৪৮ সালে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে করাচীতে গণপরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এ অধিবেশনে ভাষা প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তানের বেশিরভাগ সদস্যই সরকারি প্রস্তাবের উপর সংশোধনী বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, রাষ্ট্রভাষা সে ভাষাই হওয়া উচিত বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ যে ভাষা ব্যবহার করেন। যদি ২৯ নং বিধিতে ইংরেজি ভাষা স¤মানজনক স্থান পেতে পারে, পরিষদের কার্যাবলী উর্দু এবং ইংরেজির মাধ্যমে চলতে পারে, তাহলে বাংলা, যা ৪ কোটি ৪০ লক্ষ লোকের ভাষা কেন স¤মানজনক স্থান পাবে না? কাজেই এ ভাষাকে প্রাদেশিক ভাষা হিসাবে বিবেচনা করা উচিত নয়। এ ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বিবেচনা করা হোক, প্রস্তাবটি সরকারি বেশিরভাগ সদস্যদের বিরোধিতার মুখে অগ্রাহ্য হয়।
এদিকে গণপরিষদে বাংলা ভাষার দাবি অগ্রাহ্য হওয়ার পর ঢাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আন্দোলন গড়ে তোলার। তমদ্দুন মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠন ও নেতৃবৃন্দ সংবাদপত্রে বিবৃতির মাধ্যমে জনগণকে সংগ্রামে এগিয়ে আসার জন্য আবেদন জানান। গড়ে উঠে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ও বাংলাভাষা প্রচার তহবিল। সংগ্রামের প্রয়োজনে পরিষদের কলেবর বৃদ্ধি করে ১৯৪৮ এর ৭ মার্চ ঢাকায় ধর্মঘট এবং ১১ মার্চ দেশের সর্বত্র সাধারণ ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ১১ মার্চ ১৯৪৮ আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। বিচারপতি আব্দুর রহমানের ভাষায়, ১১ মার্চের আন্দোলন না হলে ৫২-এর আন্দোলন হতো না। ৪৮-এর ১১ মার্চ রাষ্ট্র ভাষার দাবি নিয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়, ৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারিতে তা পূর্ণতা পায়। ভাষা সৈনিকদের মতে, ৪৮ সালের ১১ মার্চ ছিল ভাষা সংগ্রামের ইতিহাসে প্রথম সংগঠিত গণবিক্ষোভ। সভা, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ, মিছিল ছাত্রছাত্রীদের পিকেটিং এবং পুলিশের লাঠি চার্জের ফলে ঢাকা শহর বিক্ষোভের নগরীতে পরিণত হয়। গ্রেপ্তার ও পুলিশী জুলুমের প্রতিবাদে ১২,১৩ ও ১৪ মার্চ, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব করেন। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ আলোচনার টেবিলে সাত দফা দাবির চুক্তিপত্রের খসড়া পেশ করে। আলোচনায় আরো একটি নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে চুক্তি স^াক্ষরিত হয়। ইত্তেহাদ তার স¤পাদকীয়তে লিখে, ‘বিরাট শক্তি আর দুর্জয় বিরোধিতার মধ্যে সংগ্রাম করে বাংলা ভাষা আন্দোলনকারীরা যে সাফল্য লাভ করেছে তা ইতিহাসে সোনার হরফে লেখা থাকবে।’
কায়দে আযম মোহা¤মদ আলী জিন্নাহ তখন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল। তিনি ১৯ মার্চ বিকালে ঢাকায় আগমন করেন। ২১ মার্চ রেসকোর্সের ময়দানে এক সংবর্ধনা সভায় তিনি ঘোষণা করেন, ‘একমাত্র উর্দুই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে।’ ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়েও তিনি বলেন, ‘এটা আমার বিশ্বাস যে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু হওয়া উচিত।’ বছর চারেক পর ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পল্টনের এক জনসভায় খাজা নাজিমউদ্দিন পুনরায় ঘোষণা করেন ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।’ এ ঘোষণা ছিল প্রকৃত পক্ষে পূর্বোক্ত চুক্তির খেলাপ।
১১ মার্চের চুক্তিকে স্মরণ করে প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা দিবস উদযাপিত হতো। ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রভাষা দিবস উদযাপন কমিটির নেতৃত্বে নাজিমউদ্দিনের ঘোষণার প্রতিবাদে ১৯৫২ সনের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণ ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনই বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতা ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের এক বৈঠকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পরিচালনার প্রয়োজনে ৪০ জনেরও অধিক কর্মকর্তা নিয়ে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ গঠিত হয়।
সর্বদলীয় কর্ম পরিষদের উদ্যোগে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। বিকালে এক জনসভায় লীগ সরকারের চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের নিন্দা ও বাংলাভাষার দাবি প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্তÍ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তÍ গৃহীত হয়। পরবর্তী ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট পালনের সর্বস¤মতিক্রমে সিদ্ধান্তÍও গৃহীত হয়।
এদিকে ২০ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে একমাসের জন্য ঢাকার সর্বত্র ধর্মঘট, সভা, মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। একুশের সাধারণ ধর্মঘটকে সফল করে তুলতে ১৪৪ ধারা বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায়। কর্ম পরিষদ জরুরি আলোচনায় বসে। আলোচনা সভায় আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের প্রশ্নে দেখা দেয় বিতর্ক। অবশেষে সভায় ১১-৪ ভোটে গণতান্ত্রিক উপায়ে ১৪৪ ধারা না ভেঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তÍ গৃহীত হয়। অপরদিকে ফজলুল হক ও সলিমুল্লাহ হলে ছাত্রদের অপর দু’টি সভায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্তÍ গ্রহণ করা হয়।
একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা শহরের ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক আমতলায় জড়ো হয়। বেলা সাড়ে ১২টার সময় গাজীউল হকের সভাপতিত্বে সভার কাজ শুরু হয়। সর্বদলীয় কর্ম পরিষদের পক্ষ থেকে শামসুল হক ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার জন্য ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আবেদন জানিয়ে শান্তিÍপূর্ণ আন্দোলন চালানোর আহবান জানানো হয়। এদিকে আহবায়ক আব্দুল মতিন আন্দোলনের পেক্ষাপটে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্তÍ ছাত্রছাত্রীদের উপর ছেড়ে দেন। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদের চেতনায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্তেÍ অটল থেকে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে অব্যাহতভাবে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের প্রতিবাদী মিছিল বের হতে থাকে। প্রতিবাদী মিছিলের গতি রোধ করতে চলে পুলিশের কাদুনে গ্যাস, লাঠিচালনা আর গুলিবর্ষণ। ফলে শহীদ হন রফিক, জব্বার, বরকতসহ আরো ক’জন। বাঙ্গালীর রক্তের বিনিময়ে রচিত হয় ভাষা আন্দোলনের অন্য এক নতুন অধ্যায়। প্রকৃতপক্ষে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের উত্তাল জোয়ার ছিল ২১, ২২, ২৩ এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি অবধি। পরে পুলিশি নি®েপষনে তা স্তিমিত হয়ে আসে।
একুশের পর বাইশে ফেব্রুয়ারি অধিক গুলি বর্ষিত হয় এবং সে দিনই বেশি লোক গুলিতে মারা যায়। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম কর্মী ও প্রত্যক্ষ দর্শীদের মতে, ২১ ফেব্রুয়ারি মূলত ছিল ছাত্র আন্দোলন আর ২২ ফেব্রুয়ারি তা দুর্বার গণআন্দোলনে রূপান্তÍরিত হয়। বলা বাহুল্য, বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসাবে শাসনতান্ত্রিক স^ীকৃতি পায় ১৯৫৫ সালে। বায়ান্নর পর থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি ‘ভাষা দিবস’ উদযাপন করার মধ্য দিয়েই ভাষা আন্দোলন গণমানসে উদ্দীপিত ছিল। ৫৩-৫৪ সালে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু না হলেও ৫৫ সালে আন্দোলন ভিন্ন পথে হাঁটতে শুরু করে। ৫৪ সালের নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। কিছুদিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার ভেঙ্গে দিয়ে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করে। গভর্নর হয়ে আসেন-ইস্কান্দার মির্জা। ১৯৫৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচির মধ্যে ছিল শহীদ মিনার ও মাজারে ফাতেহা পাঠ, আমতলায় ছাত্রসভা ও ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার প্রচেষ্টা। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই ব্যাপক পুলিশি তৎপরতা চলে, গ্রেপ্তার করা হয় দলে দলে ছাত্রদের। গ্রেপ্তারের আওতা থেকে ছাত্রীরাও রেহাই পায়নি। এ বছরই ব্যাপক সংখ্যায় ছাত্রছাত্রী গ্রেপ্তার বরণ করেন। ৫৫ সালের পরই বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসাবে শাসনতান্ত্রিক স^ীকৃতি লাভ করে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

সাবেক এমপি আফজাল ৭ দিনের রিমান্ডে

ক্ষমা চাইলেন ড্যাফোডিলের সেই শিক্ষিকা

সারাদেশে চলছে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি

ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় ২০ দিনে ৪৯০ শিশু নিহত

চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেড পরিদর্শনে ৪০ দেশের প্রতিনিধি

রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে গেছে শত বাংলাদেশি

ইন্দুরকানীতে ডায়রিয়া রোগীর প্রকোপ হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন সংকট

গাজায় মানবিক বিপর্যয় নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ, অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান

এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪৪ ধারা, কোচিং-ফটোকপি বন্ধসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা

এশিয়ার শেয়ারবাজারে বড় ধস, তেলের দামেও পতন

গাজা ইস্যুতে সিসি ও ম্যাখোঁর সঙ্গে জর্দানের রাজার বৈঠক আজ

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ ফের শুরু আজ

সকালে ব্রিদিং এক্সারসাইজের উপকারিতা

মতলব দক্ষিণ থানার এসআই জীবন চৌধুরীর বেতন বন্ধের নির্দেশ

সাবেক এমপি কেরামত আলী গ্রেফতার

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে মেশিন বিস্ফোরণে ২জন শ্রমিক দগ্ধ

ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটলেন নেতানিয়াহু

বিক্ষোভে উত্তাল মণিপুর, নেতার বাড়িতে আগুন দিলো জনতা

ঢাকায় ৪ দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন আজ শুরু

ইয়েমেনে সর্বশেষ মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৪