বিএনপি কেন মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার?
২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ এএম

বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকেই কমবেশি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়ে আসছে। ক্ষমতায় থাকতে কিংবা ক্ষমতার বাইরে, উভয়ক্ষেত্রেই মিডিয়ার বিরূপ আচরণের শিকার হয়েছে। মিডিয়া কেন যেন বিএনপিকে খুব একটা সহ্য করতে পারে না। দলটি যতটা না খারাপ করে তার চেয়ে অনেক বড় করে তা দেখিয়ে এক ধরনের হুলুস্থুল কা- বাঁধিয়ে দলটির ইমেজকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যায়। আমরা দেখেছি, ’৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ’৯৪ সালের ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত মাগুরা-২ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে কারচুপি করে হারিয়ে দেয়ার অভিযোগে সমস্ত মিডিয়া কীভাবে বিএনপি সরকারের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল। সে সময় প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান সম্পাদিত জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ‘যায়যায় দিন’-এ ‘মা-গুড়া’ হেডিং দিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করা হয়েছিল। এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিএনপিকে একেবারে গুড়া করে দেয়া হয়েছিল। শুধু যায়যায় দিনই নয়, সমস্ত পত্রপত্রিকা (তখন এক বিটিভি ছাড়া এ সময়ের মতো ৩৫-৪০টা টিভি চ্যানেল, অনলাইন, ইন্টারনেট ছিল না) বিএনপিকে মৌমাছির মতো হুল ফুটিয়ে যাচ্ছিল। বিএনপিকে একেবারে ত্যানা ত্যানা করে ছেড়েছিল। বিএনপির শাসনামলের বাকি প্রায় আড়াই বছর পত্রপত্রিকাগুলো একেবারে বিপরীত মেরুতে অবস্থান নিয়েছিল। ’৯৬ সালের নির্বাচনের সময় এমন একটি পত্রিকা ছিল না, যেটি বিএনপির ভাল কাজ নিয়ে দুটি লাইন লিখেছে। সে সময় দৈনিক জনকণ্ঠ নতুন। তখন পত্রিকাটির মতিঝিলের অফিসে গেলে দেখা যেত দেয়ালের একদিকে শেখ মুজিবের ছবি, আরেক দিকে জিয়াউর রহমানের ছবি। বিষয়টি ছিল এমন, পত্রিকা কর্তৃপক্ষ উভয়কেই সম্মান করে বা উভয় দিকেই রয়েছে। অথচ ’৯৬ সালের নির্বাচনের সময় পত্রিকাটি একচোখা হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিদিন ব্যানার হেডিংয়ে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যদি ধরেও নেয়া হয়, বিএনপি খারাপ করেছে, ঠিক আছে। সেই খারাপটুকুই লিখুক। তা না। যতটুকু খারাপ করেছে, তাকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল যে, বিএনপির মতো খারাপ দল পৃথিবীতে আর একটিও নেই। শুধু জনকণ্ঠ নয়, অন্যসব পত্রিকা বিএনপির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। অর্থাৎ বাংলাদেশের সব মিডিয়া একদিকে, বিএনপি সরকার আরেক দিকে। বিএনপিকে মিডিয়ার সামনে দাঁড় করিয়ে ট্রায়াল শুরু করে। তখন একজন সাধারণ মানুষও ধরে নিয়েছিল, এমনকি বিএনপির ঘোর সমর্থকও ভেবেছিল, নির্বাচনে বিএনপি হারবে তো হারবেই, সর্বকালের সর্বনি¤œ আসন পাবে। মান-সম্মান আর থাকবে না। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। বিএনপির উপর দিয়ে এমন মিডিয়া টনের্ডো বইয়ে দেয়ার মধ্য দিয়েই নির্বাচন হয়। দেখা গেল, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ১৪৬ আসন। অর্থাৎ সরকার গঠন করার মতো যে ১৫১ আসন প্রয়োজন, তা পায়নি। অন্যদিকে, চরম প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বিএনপি আসন পেয়েছে ১১৬টি। প্রায় তলানিতে চলে যাওয়া একটি দল এত আসন পাবে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত বিএনপিই জাতীয় সংসদে একমাত্র বৃহৎ বিরোধীদল হয়ে আছে। এ ইতিহাস তুলে ধরার কারণ হচ্ছে, মিডিয়া শতভাগ বিএনপির বিপক্ষে চলে গেলেও জনগণ চলে যায়নি। জনগণ ঠিকই ক্ষমতায় থাকাকালীন তার কাজের ভাল-মন্দ বিচার করে রায় দিয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৩ সালের বিনাভোট, ’১৮ সালের রাতের ভোট আর ’২৪ সালের আমি-ডামির ভোট যে আওয়ামী লীগ করলো, এ নিয়ে মিডিয়াগুলো কি তাকে ট্রায়াল করেছে? করেনি। এমনকি, সাড়ে ১৫ বছরে হাসিনার যে ফ্যাসিজম তা কি তুলে ধরছে? ধরছে না। আজ তার জায়গায় যদি বিএনপি থাকত, তাহলে কী অবস্থা হতো!
দুই.
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন এবং আওয়ামী লীগের আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাওয়ার পর অটোমেটিক্যালি মাঠে একমাত্র বড়, অভিজ্ঞ এবং ক্ষমতায় যাওয়ার মতো দল এখন বিএনপি। যেভাবেই বলা হোক এবং যেকোনো দৃষ্টি থেকেই দেখা হোক না কেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠার মতো দল আপাতত নেই। জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি বা অন্য কোনো দল বিএনপির ভোটের রেশিও বা হার অতিক্রম করা এ বছর কেন, আগামী কয়েক যুগেও অতিক্রম করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা অমূলক নয়। যদি এমন হয়, বিএনপিকে ন্যাক্কারজনকভাবে, ম্যাসিভ রিগিং কিংবা জোর করে ভোটে হারিয়ে দেয়া হয়, তাহলে ভিন্ন কথা। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে বিএনপির নিরঙ্কুশ বিজয় ঠেকানোর মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দল এ মুহূর্তে নেই। যারা রয়েছে, তারা বিএনপির থেকে যোজন যোজন দূরে রয়েছে। তারা যতই স্বপ্ন দেখুক, সে স্বপ্ন দেখার সীমা আছে, পূরণ করার সক্ষমতাও থাকতে হয়। চাইলেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে যায় না। তা পূরণের ভিত্তি তৈরি করতে হয়। বিএনপির সেই ভিত্তি তৈরি হয়ে আছে। এই ভিত্তির উপর দাঁড়িইে একাধিকবার ক্ষমতায় এসেছে এবং জনগণের দলে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনার পথ সবসময়ই থাকে। বিএনপির যে জনভিত্তি তা একদিনে বা এক অভ্যুত্থানেই তৈরি হয়নি। এর পেছনে ইতিহাস, ঐতিহ্য, আদর্শ ও নিরেট দেশপ্রেমিকের স্পিরিট রয়েছে। শুধু দেশ ও জাতির চিন্তা তথা জাতীয়তাবাদের বাইরে দলটির ভিন্ন কোনো চেতনা নেই, যেটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ‘ভারতীয় চেতনা’ রয়েছে। ভারত ছাড়া এ দলটি ভিন্ন কোনো চিন্তা করতে পারে না। এটি একটি বেনিয়াভিত্তিক দল, যার মূল দেশের বাইরে। আর ক্ষমতায় এসে শোষণ করে সম্পদ নিয়ে যায়। বিএনপির মূল ভিত্তি জিয়াউর রহমান গড়ে দিয়েছেন দেশের মাটিতে। বাংলাদেশ প্রথম, বাংলাদেশই শেষ-এ নীতিতে তিনি বিএনপি গড়েছেন। এই নীতিতেই বাংলাদেশের মানুষ বাংলাদেশী হয়ে উঠে। এই নীতিতেই বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয় দলে পরিণত হয়েছে। জিয়াউর রহমানকে আওয়ামী লীগ তো বটেই তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়াগুলো দুচোখে দেখতে পারে না। এর কারণ হচ্ছে, শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারেননি, অন্যদেকি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে নেমে গিয়েছিলেন। মুজিবের স্বাধীনতা ঘোষণা দিতে না পারার আক্ষেপ ও লজ্জা ঢাকতে হয়তো তার জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর কোরাস গাইতে হয়। স্বাধীনতার ঘোষক ও মুক্তিযুদ্ধের সমর নায়ক আর সে সময় জেলখানায় বন্দি মুজিব (অনেকে বলে থাকেন স্বেচ্ছা কারাবাস), যিনি স্বাধীনতার ঘোষণাও দেননি, মুক্তিযুদ্ধও দেখেননিÑএই দুইয়ের বাস্তবতা ও ব্যবধান আকাশ-পাতাল। ঐতিহাসিক এই বাস্তবতা তথাকথিত আওয়ামী ও বাম বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকরা মেনে নিতে না পেরে জিয়াউর রহমান ও বিএনপির বিরুদ্ধে যেকোনো ছুতোয় বিরোধিতা করতে উঠেপড়ে লাগে। এখনো বিএনপিকে মিডিয়া ট্রায়ালের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।
তিন.
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কয়েক দিন আগে বিএনপির মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হওয়ার কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, এক-এগারোর মতো আবারও বিএনপি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হচ্ছে। তার এ কথা সত্য তো বটে, তবে শুধু এক এগারোর সময়কালেই নয়, বিএনপি জন্মের পর থেকেই মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়ে আসছে। এমনকি, এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া যে আপসহীন সংগ্রাম করেছেন, সে সংবাদও সে সময় খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হতো না। অন্যদিকে, যে শেখ হাসিনা ‘এরশাদের অধীনে যারা নির্বাচনে যাবে, তারা জাতীয় বেইমান হবে’ বলে নিজেই জাতীয় বেইমান হয়ে নির্বাচনে চলে গেছেন, তার সংবাদ সে সময়ে ফলাও করে প্রচার করা হতো। সে সময়ের পত্রপত্রিকাগুলো দেখলেই তা বোঝা যায়। তবে এক্ষেত্রে জনগণের কাছে বিএনপির চিরজীবন কৃতজ্ঞ হয়ে থাকতে হবে। জন্মগতভাবে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার বিএনপিকে জনগণ ঠিকই ভালোবেসেছে, ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে। এক্ষেত্রে বিএনপিকে সৌভাগ্যবান বলতে হয়। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, মিডিয়া ভাগ্য ও বুদ্ধিজীবী ভাগ্য। তারেক রহমান এ সময়ে কেন বিএনপির মিডিয়া ট্রায়ালের কথা বলছেন? এর কারণ কি? কারণ স্পষ্ট। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর মাঠে বিএনপি ছাড়া বড় ও ক্ষমতায় যাওয়ার মতো দল আর নেই। যারা আছে, তারা এখন বিএনপিকে টেক্কা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। তা তারা চাইতেই পারে। তবে ক্ষমতায় যাওয়ার মতো জনগণের সমর্থন কতটুকু রয়েছে, তা বিবেচনা করেই স্বপ্ন ও চাওয়াটাকে বড় করতে হয়। এখন কেউ যদি ‘কেউকাটা’ হয়ে উঠতে চায়, তাহলে কিছু বলার নেই। এই ‘কেউকাটা’ হয়ে উঠতে গিয়ে তারা এখন কীভাবে বিএনপির বদনাম করা যায়, সেই মিশন নিয়ে নেমেছে। অস্বীকার করার উপায় নেই, দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা যেভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে, আর কোনো দলকে এমন পিষ্ট হতে দেখা যায়নি। হাসিনার পতনের পর এই নিপীড়িত-নির্যাতিত লাখ লাখ নেতাকর্মী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। তবে একেবারে শুরু থেকেই তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরা ও প্রতিহিংসা-প্রতিশোধপরায়ন না হওয়ার জন্য কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। যদি এই নির্দেশ না দিতেন, তাহলে নিপীড়িত-নির্যাতিত, জেল-জুলুমের শিকার ও বাড়িঘর ছাড়া বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীর মধ্যে দেড় যুগের ক্ষোভ উগড়ে দেয়া স্বাভাবিক ছিল। আর উগড়ে দিলে কী হতো, তা সহজে অনুমেয়। সেরকম কিছু কি হয়েছে? হয়নি। হ্যাঁ, সারাদেশে প্রান্তিক পর্যায়ে কিছু চাঁদাবাজি, দখল ইত্যাদির সাথে বিএনপির নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। আবার সাথে সাথে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে দলীয় ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বহিস্কার করা হয়েছে। বিএনপির হিসাবে, এমন প্রায় চার হাজার নেতাকর্মীকে বহিস্কার করা হয়েছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, এসব ঘটনা যতটা না বড়, তার চেয়ে দশ গুণ বাড়িয়ে মিডিয়াগুলো দেখিয়েছে ও দেখাচ্ছে। কিছু অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট যারা দেশের বাইরে থেকে নিজেদের রাজা ভাবেন, অথচ দেশে আসলে জিরো হয়ে যাবেন, তারা বিএনপির এসব ঘটনা বড় করে দেখিয়ে পারে না বিএনপিকে এখনই শেষ করে দেয়। অন্যদিকে, বিএনপির ধারে কাছে নেই, এমন রাজনৈতিক দলের নেতারাও ইঁদুরের হাতির কান চুলকানির মতো বিএনপির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে বদনাম করতে চাচ্ছে। অথচ মিডিয়া ও কিছু ইউটিউব ভিউ ব্যবসায়ী বিশেষ করে নিজেকে দেশের রাজা-উজির ভাবা যিনি গালি ছাড়া কথা বলতে পারেন না, তার এখন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপিকে গালমন্দ করা। পারলে তিনি গালি দিয়ে দাঁতের নিচে বিএনপিকে পিঁষে মারেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজির কথা বলতে তো আপত্তি নেই, তবে যারা এ কাজের সাথে যুক্ত হয়ে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছে, সে কথাও তো বলা উচিৎ। সেটা তো বলে না। মিডিয়া বলে না, কেউ বলে না। এমন অসম্পূর্ণ অর্ধসত্যের মাধ্যমে বিএনপিকে এখন মিডিয়া ট্রায়াল করা হচ্ছে। এটা বলে না, বিএনপির নেতাকর্মীরা যে দেড় যুগ ধরে সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও অসীম ধৈর্য ধারন করে প্রতিপক্ষের কাউকে আক্রমণ করেনি বা করছে না। অন্য কোনো দলের ক্ষেত্রে হলে এটা কি কল্পনা করা যেত?
চার.
মিডিয়া কখনো বিএনপি ফ্রেন্ডলি নয়। এটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য। তবে এক্ষেত্রে বিএনপিরও সমস্যা রয়েছে। এ কথা অহরহ বলতে শুনি, বিএনপি মিডিয়ার দিকে কখনো নজর দেয় না। সারাবিশ্ব যখন অনলাইন থেকে শুরু করে মিডিয়ার দিকে ঝুঁকেছে এবং কাজে লাগাচ্ছে, সেখানে বিএনপি বরাবরই উদাসীন। সংস্কৃতি অঙ্গণে আওয়ামী লীগের যে পরিমাণ শিল্পী ও কলাকুশলী আছে বিএনপির তা নেই। অথচ ইতিহাসে যুদ্ধকে গতিশীল ও পরিণতির দিকে এগিয়ে নিতে কালচারাল রেভ্যুলেশন সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং করছে। আওয়ামী লীগ তার সংস্কৃতি কর্মীদের নির্বাচন এবং নির্বাচনী প্রচারণা থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রচারণায় কীভাবে কাজে লাগিয়েছে, তা দেশের মানুষ দেখেছে। বিএনপি যে দেড় যুগ ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, সেখানে বিএনপির কি কোনো ধরনের কালচারাল অ্যাক্টিভিটি ছিল? ছিল না। এখনও নেই। তৈরি করেনি। উদ্যোগও নেই। এমনকি মিডিয়া ট্রায়াল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পাল্টা মিডিয়া হাউস তৈরি বা জাতীয়তাবাদী ঘরানার মিডিয়া হাউসকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ারও উদ্যোগ নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে যে কয়জন চেনা ইউটিউবার রয়েছেন, তাদের কয়জন বিএনপির? আওয়ামী লীগ তো বটেই জামায়াতেরও যে পরিমান ইউটিউবার রয়েছে, বিএনপির একজনও কি টুকিয়ে পাওয়া যাবে? বিএনপির মিডিয়া সেল রয়েছে ঠিকই, তবে এর কাজ কি, কি করছে, তার কোনো হদিস পাওয়া যায় না। যদি এই সেল সঠিকভাবে কাজটি করত, তাহলে কি তারেক রহমানকে বলতে হতো, বিএনপি এখনো মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হচ্ছে? এটা তো স্বাভাবিক বিষয়, এখন সব দিক ও সব পক্ষ থেকে বিএনপিকে আক্রমণ করা হবে। তার চলার পথে কাঁটা বিছিয়ে দেয়া হবে। ক্ষমতায় যাতে যেতে না পারে, সে প্রক্রিয়া তো এখনই দেখা যাচ্ছে। ফলে তার যত দোষ-ত্রুটি, তা তিল হলেও তাল করে দেখানো হবে এবং হচ্ছে। মিডিয়া ও সংস্কৃতি অঙ্গণের প্রতি চির উদাসীন বিএনপি যদি এখনো এদিকে নজর না দেয়, তাহলে তাকে চিরকাল মিডিয়া ট্রায়ালের মধ্য দিয়েই যেতে হবে।
darpan.journalist@gmail.com
বিভাগ : সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

তালতলীতে ঈদের নামাজে ইমামকে হত্যা চেষ্টায় যুবক আটক

নাটোরে ঈদের নামাজ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ঘিরে উত্তেজনা, গুলিবর্ষণ

আমরা মুক্ত পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছি : মির্জা ফখরুল

ড. ইউনূসকে শেহবাজের ফোন, পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ

ফাঁস হয়ে গেছে সালমানের 'সিকান্দার', আর্থিক ঝুঁকির শঙ্কা

যমুনা সেতু দিয়ে এক সপ্তাহে ২ লাখ ৪৭ লাখ যানবাহন পারাপার, ১৭ কোটি টাকার টোল আদায়

দেশে দেশে ঈদ উদযাপিত

ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় বাড়িতে আসতে পারেনি চৌদ্দগ্রামে স্বাচ্ছন্দে ঈদ উদযাপন সাবেক এমপি ও শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির

টেকেরহাট বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে অতিরিক্ত দামে

মিথ্যাচার করছেন নেহা কক্কর,দাবি আয়োজকদের

সম্প্রীতির নজির, ঈদের দিন নামাজিদের উপর পুষ্পবর্ষণ হিন্দুদের

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদেরকে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে দেয়নি: এ্যানি

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বারুইপাড়া ঈদগাহ মাঠ বিভিন্ন স্থানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত

চৌদ্দগ্রামে মদের কারখানা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন, আটক ৪

ঈদের পরে কোন পথে রাজনীতি? কী পরিকল্পনা বিএনপি, জামায়াত আর এনসিপির?

তারাকান্দায় বিদ্যুৎপৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

ঈদের মাংশ নিয়ে বাড়ী ফেরা হলো না রুহুল আমিনের

সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে যা বললেন সারজিস আলম