মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতে নারীদের যৌন হেনস্থা - প্রমাণ সরকারি রিপোর্টে
২৬ আগস্ট ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম | আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম
দক্ষিণ ভারতের মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতে কীভাবে নারীদের যৌন হেনস্থা করা হয়, তা বেরিয়ে এসেছে সরকারি একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। এই রিপোর্ট ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে কেরালা, যার ঢেউ দেশের অন্যত্রও দেখা গিয়েছে।
কেরালার হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে হেমার নেতৃত্বাধীন একটা কমিটি (হেমা কমিটি) মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নারীদের কাজের পরিস্থিতি নিয়ে পেশ করা রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ্যে এনেছে কেরালার সরকার। সেই রিপোর্টে উঠে এসেছে কীভাবে ‘কাস্টিং কাউচ’ মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে ‘অঙ্গাঙ্গিক ভাবে জড়িয়ে রয়েছে’। হেমা কমিটির পেশ করা তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই ঘটনায় তদন্তের জন্য এক সিনিয়র পুলিশ অফিসারের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্ত দল গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারায় বিজয়ন।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে একটা বিবৃতে জানানো হয়েছে, “মালয়ালম সিনেমা জগতের একাধিক নারী তাদের সাক্ষাৎকারে এবং বিবৃতিতে যে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার কথা সবিস্তারে জানিয়েছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোববার বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারায় বিজয়ন।” “আইজিপি জি স্পারজনের নেতৃত্বে একটা বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যারা প্রকাশ্যে আসা সমস্ত তথ্য এবং অভিযোগগুলোকে খতিয়ে দেখবে।”
এরইমধ্যে কেরালা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হেমা কমিটির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট যেন আদালতে পেশ করা হয়। হেমা কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মালয়ালম সিনেমা জগতে কয়েকটা ‘কোডওয়ার্ড’ প্রচলিত রয়েছে। চলচ্চিত্র জগতের বিভিন্ন স্তরে প্রবেশের জন্য যে শব্দগুলো কোডওয়ার্ড হিসাবে ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো ‘সমঝোতা’ ও ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’ । এর উদ্দেশ্য এটাই বোঝানো যে এই জগতে যে নারীরা আসতে ইচ্ছুক তারা যেন ‘প্রয়োজন মতো’ পুরুষদের ‘যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখেন’।
চলচ্চিত্র প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা নবাগতদের সামনে একটা বিষয় বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কিন্তু ‘কাস্টিং কাউচ’ প্রচলিত পদ্ধতি। যারা এই ব্যক্তিদের ‘জালে’ আটকে পড়েন, তাদের আবার ‘কোড নম্বরও’ দেয়া হয়।
হেমা কমিটি
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে হেমার নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার সাড়ে চার বছর পর কেরালার সরকার এই প্রতিবেদনকে প্রকাশ করেছে। ২৯০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে ৪৪টা পৃষ্ঠা নেই, কারণ নির্যাতন ও হয়রানির শিকার নারীরা সেখানে অভিযুক্ত পুরুষদের নাম উল্লেখ করেছেন।
প্রতিবেদনের যে দ্বিতীয় অংশ সরানো হয়েছে, ঠিক পরেই যৌন নির্যাতনের শিকার এক নারী তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন কীভাবে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাকে স্বামী-স্ত্রীর মতো আচরণ করতে হয়েছিল এবং আলিঙ্গন করতে হয়েছিল যিনি তাকে ঠিক একদিন আগে যৌন হেনস্থা করেছেন। রিপোর্টে প্রতিফলিত হয়েছে কীভাবে এই হেনস্থার ঘটনাগুলো প্রভাব ফেলত চলচ্চিত্র জগতের অভিনেত্রী এবং সেখানে কর্মরত নারীদের উপরে।
এমনই এক ঘটনার উল্লেখ করে হেমা কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে- “এটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ছিল। শুটিংয়ের সময় এই নারীর (অভিনেত্রীর) সঙ্গে সাথে যা কিছু ঘটেছিল তার কারণে, তার চোখে মুখে ক্রোধ এবং ঘৃণা স্পষ্টতই দৃশ্যমান ছিল।” “মাত্র একটা শটের জন্য উনি (অভিনেত্রী) ১৭টা রিটেক নেন। এই কারণে তাকে পরিচালকের সমালোচনার সম্মুখীনও হতে হয়।”
২০১৭ সালে গঠন হয় হেমা কমিটি
২০১৭ সালে মালয়ালম বিনোদন জগতের এক চলচ্চিত্ৰ অভিনেত্রীকে তারই গাড়িতে কয়েকজন যৌন হেনস্থা করেন। তার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর উত্তাল হয়ে ওঠে কেরালা। এই ঘটনার পর ‘উইমেন ইন সিনেমা কালেক্টিভ’ (ডব্লিউসিসি) নামক এক সংগঠন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের কাছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের পরিবেশ নিয়ে সমীক্ষা করার জন্য একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কে হেমার নেতৃত্বে কমিটিটা গঠন করা হয়েছিল এরপরই। প্রবীণ অভিনেত্রী টি শারদা এবং কেরালার সাবেক মুখ্য সচিব কেবি ভালসলাকুমারীকে এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত ডব্লিউসিসি নামক সংগঠন চলচ্চিত্র জগতে নারীদের লিঙ্গ সমতার জন্য কাজ করে। ২০১৭ সালে গঠিত এই সংগঠন সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে কাজ করে।
এই সংগঠনে সামিল সদস্যদের মধ্যে এমন নারীও রয়েছেন যারা মালয়ালম সিনেমায় কাজ করেন। হেমা কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর ডব্লিউসিসির সদস্যরা মনে করেন তাদের উদ্বেগ শেষপর্যন্ত সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। সরকারের কাছে এর প্রতিকারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
জনসমক্ষে সদ্য প্রকাশিত হেমা কমিটির রিপোর্টে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। কমিটির সামনে এসে অভিনেত্রী এবং সিনেমা জগতের সঙ্গে যুক্ত নারীরা জানিয়েছেন তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। রিপোর্টের হাত ধরে উঠে এসেছে সিনেমা জগতে আসা নারীদের সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা কী।
রিপোর্টে বলা হয়েছে “ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সাধারণ একটা ধারণা রয়েছে যে নারীরা অর্থ উপার্জনের জন্য সিনেমায় জগতে আসেন এবং তারা যে কোনও কিছুর কাছেই আত্মসমর্পণ করে দেবেন।”
“সিনেমায় কর্মরত পুরুষরা এটা কল্পনাও করতে পারেন না যে শিল্প ও অভিনয়ের প্রতি তাদের তীব্র আবেগের কারণে নারীরা (ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে) এসেছেন। বরং এমনটা মনে করা হয় যে তারা (নারীরা) অর্থ এবং খ্যাতির জন্য এসেছেন এবং ছবিতে সুযোগ পাওয়ার জন্য তারা যে কোনও পুরুষের যৌন চাহিদা মেটাতে প্রস্তুত।”
ডব্লিউসিসির সদস্য এবং মালয়ালম চলচ্চিত্রের পুরস্কারপ্রাপ্ত সম্পাদক বীণা পাল বিবিসি হিন্দিকে বলেন, “বহু বছর ধরে আমরা বলে আসছি যে এই ইন্ডাস্ট্রিতে পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে। এই রিপোর্ট কিন্তু তারই প্রমাণ। এর (বিদ্যমান অব্যবস্থার) মধ্যে যৌন হেনস্থা অন্যতম।”
“আমাদের সবসময় বলা হত যে এই প্রশ্নগুলো (যৌন হেনস্থা এবং অন্যান্য সমস্যা সম্পর্কিত) তুলে আমরা শুধুমাত্র সমস্যাই তৈরি করছি। কিন্তু এই প্রতিবেদন প্রমাণ করে যে পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা যা অনুমান করেছিলাম বাস্তব তার চেয়েও খারাপ।”
‘মাফিয়া রাজ’
ভারতে বিভিন্ন ভাষায় চলচ্চিত্র তৈরি হয়। সেই বহুভাষী চিত্র জগতের মাত্র একটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নারীদের কাজের পরিস্থিতির প্রতিফলন মিলেছে সাবেক বিচারপতি হেমা কমিটির প্রতিবেদনের মাধ্যমে। সেটাও এই প্রথমবার।
হেমা কমিটির প্রতিবেদনে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য হলো, “সামনে আসা প্রমাণ অনুযায়ী যৌন হেনস্থা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভাবনীয় ভাবে একটা সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা বিনা বাধায় এবং নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ঘটে।”
কমিটির সামনে এসে নিজেদের অভিজ্ঞতা জানানো নারীরা যৌন হয়রানির প্রমাণও দিয়েছেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “পুরুষদের দ্বারা যৌন হেনস্থার হিসাবে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার অডিও, ভিডিও ক্লিপ এবং স্ক্রিনশট সরবরাহ করেছিলেন নির্যাতনের শিকার নারীরা।”
একজন ‘শীর্ষস্থানীয় অভিনেতা’ ওই কমিটিকে জানিয়েছিলেন যে মালয়ালম সিনেমা জগতে একটা ‘শক্তিশালী লবি’ রয়েছে যা ‘মাফিয়ার’ মতো কাজ করে এবং এরা যে কোনও কিছু করতে পারে। এমনকি এরা একজন নামী পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা, অভিনেত্রী বা যে কোনও ব্যক্তিকে নিষিদ্ধ করতে দিতে পারে তা সেই ‘নিষেধাজ্ঞা অবৈধ বা অনুমোদনহীনই হোক না কেন।’
কমিটির কাছে মৌখিক এবং নথি ভিত্তিক প্রমাণ পেশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে কিছু অভিনেতা, প্রযোজক, ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটর (পরিবেশক), পরিচালক, “যে সমস্ত পুরুষই প্রচুর খ্যাতি ও অর্থ অর্জন করেছেন তারা এখন সম্পূর্ণরূপে মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন।”
“ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই আমাদের (হেমা কমিটির সদস্যদের) সামনে জোর দিয়ে বলেছিলেন, বিখ্যাত অভিনেতাসহ অনেককেই এই শক্তিশালী ব্যক্তিরা সিনেমা থেকে নিষিদ্ধ করেছে। তাদের নামও জানানো হয়েছে।”
চলচ্চিত্র ইতিহাসবিদ ওকে জনি বিবিসি হিন্দিকে বলেন, “মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি দেশের অন্যান্য ভাষার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির তুলনায় সবচেয়ে ছোট। কিন্তু এটা খুবই কুখ্যাত। এটা বড় মাফিয়া যারা নারী ও জনবিরোধী।”
নারী শিল্পীদের স্বল্প পারিশ্রমিক নিয়ে কমিটির অনুসন্ধান থেকেও জনির বক্তব্যের প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু কোনও চুক্তি স্বাক্ষরিত না হওয়ায় পারিশ্রমিক নিয়ে কেউ প্রশ্ন করতে বা আইনি আশ্রয় নিতে পারবে এমন সুযোগও নেই।
কমিটিকে জানানো হয়, কীভাবে সিনেমায় নগ্ন দৃশ্য বা দেহ-প্রদর্শন সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি ভেঙে ফেলেন কিছু পরিচালক। আর অভিনেত্রীরা সেই কাজ ছেড়ে দিলে তাদের কোনও পারিশ্রমিকই দেওয়া হয়নি। অথচ ততদিনে তিনি কিন্তু তিন মাস কাজ করেছেন কিন্তু তা সত্ত্বেও তাদের টাকা দেওয়া হয় না।
কমিটির সামনে আসা নারীরা জানিয়েছেন কীভাবে শুটিংয়ের সময় হোটেলেও নিরাপদ বোধ করেননি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “দরজায় এত জোরে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল (মদ্যপ ব্যক্তিরা) যে মাঝে মাঝে মনে করা হয়েছিল যে সেটা ভেঙে ফেলা হবে এবং পুরুষরা জোর করে তাদের ঘরে ঢুকে পড়বে।”
‘জুনিয়র শিল্পীদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো আচরণ’
জুনিয়র আর্টিস্ট এবং হেয়ার স্টাইলিস্টদের অবস্থার কথাও প্রকাশ পেয়েছে এই প্রতিবেদনে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে উঠেছে জুনিয়র শিল্পীদের সাথে “ক্রীতদাসের মতো আচরণ করা হয়।”
এমনকি তাদের শুটিংয়ের সেটে শৌচাগারের মতো প্রাথমিক সুবিধাও দেওয়া হয় না। তাদের সকাল নয়টা থেকে দু'টো পর্যন্ত কাজ করতে বাধ্য করা হয়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া খাবারও দেওয়া হয় না।
হেয়ারস্টাইলিস্ট এবং মেক-আপ আর্টিস্টদের কাজের পরিস্থিতি আরও খারাপ কারণ তাদের ইউনিয়ন কাজের পরিবেশ নষ্ট করার পাশাপাশি বেতন নিয়ন্ত্রণকারী আইন লঙ্ঘনও করেছে।
রিপোর্টে নথিভুক্ত বিবৃতি অনুসারে, এই ইন্ডাস্ট্রিতে একমাত্র নিয়ম হলো যিনিই ‘ইয়েস ম্যান বা ইয়েস ওম্যান’ (সব সময় সম্মতি জানানো পুরুষ বা নারী ) নন এমন তেমন ব্যক্তিদের ইন্ডাস্ট্রির মাফিয়াদের দিয়ে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত নিষিদ্ধ হওয়াদের তালিকায় কয়েকজন ডব্লিউসিসির সদস্যও ছিলেন। এই সংগঠনই প্রথম মালয়ালম সিনেমায় কর্মরত নারীদের অবস্থা নিয়ে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি সরকারের কাছে এই বিষয়ে একটি সমীক্ষার জন্য আর্জি জানায়।
বীণা পাল বলেছেন, “মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে মানুষকে বাদ দেওয়ার একটা মনোভাব তৈরি হয়েছে, কারণ আমরা যে বাস্তব চিত্র নিয়ে আমরা প্রশ্ন করি মানুষ তার মুখোমুখি হতে চায় না। তাই আমাদের কিছু সদস্যকে কঠিন পরিস্থিতিরও সম্মুখীন হয়েছেন।”
হেমা কমিটির পক্ষ থেকে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পরিচালনার জন্য আইন প্রণয়ন এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নারী বিচারকদের নেতৃত্বে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের সুপারিশ করেছে।
সরকারকে কটাক্ষ বিরোধীদের
হেমা কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধী দল ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। রিপোর্ট প্রকাশে দেরি এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন মাফিক পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে দুষেছে বিরোধীরা।
জবাবে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, কমিটির কিছু সুপারিশ সরকার ইতিমধ্যেই কার্যকর করেছে।
হেনস্থায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে বিজয়ন বলেন, যদি কোনও নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন, তাহলে সরকার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। মালয়ালম মুভি আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএমএমএ) এর পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। এএমএমএ-এর কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করার পর এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবেন বলেছেন।
‘কেরালাতে এমনটা কী করে হলো?’
কিন্তু কেরালার মতো রাজ্যে, যেখানে চলচ্চিত্র বিভিন্ন প্রান্তের সমালোচক ও দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে, সেখানে এটা কীভাবে সম্ভব?
বিশিষ্ট চলচ্চিত্র সমালোচক আন্না এম এম ভেট্টিকাড, যিনি মালায়ালাম চলচ্চিত্র শিল্প সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট করেছেন, তার কাছে এর একটা উত্তর রয়েছে।
তিনি বলেছেন, “কেরালার এমন রাজ্য যেখানে চরম প্রগতিশীলতা এবং চরম পিতৃতন্ত্রের সহাবস্থান রয়েছে। তারই একটা ক্ষুদ্র অংশ মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। মালয়ালম সিনেমাতেও এরই প্রতিফলন দেখা যায়।”
“পিতৃতন্ত্রকে অনুসন্ধান করে বেড়ানো কিছু সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র কিন্তু মালয়ালম ভাষায় তৈরি হয়েছে। তবে এই একই ইন্ডাস্ট্রি ভীষণভাবে পিছিয়ে থাকা পশ্চাদপদ চলচ্চিত্রও তৈরি করে।”
“এই পরিস্থিতিতে, এটা মোটেই আশ্চর্যজনক নয় যে নারী বিদ্বেষীরা সিনেমার মতো সৃজনশীল ক্ষেত্রে কিছু প্রচলিত ধারণাকে কাজে লাগায় এবং নারীদের শোষণ করে। আবার একই ইন্ডাস্ট্রি থেকে সাম্যের জন্য একটা অভূতপূর্ব প্রচারও উঠে এসেছে যা ভারতের অন্য কোনও পেশায়, চলচ্চিত্র বা অন্য কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।” সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : বিনোদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মাদারীপুরের কালকিনিতে মটরসাইকেলের ধাক্কায় কিশোর নিহত
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেটে একটি হাসপাতাল উদ্বোধন করলেন ড. ইউনুস
বাংলাদেশ মাঠ প্রশাসন প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখার কমিটি গঠন
জানুয়ারির মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে : ড. বিধান রঞ্জন
মুকসুদপুর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিএনপির দু গ্রুপের সভা হয়নি গোটা উপজেলার পরিবেশ শান্ত
সংস্কারের ৩১দফায় তারেক রহমান শিক্ষকদের অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন - ডা. মাজহার
৪৩তম বিসিএসের ২৬৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম জয়ন্ত ও মধুমেলা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা
পাকিস্তানের সামরিক আদালতের বিচারকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
রেকর্ড ও পরিসংখ্যানের আয়নায় তামিম
আমরা বিগত ১৮ বছর আওয়ামী জাহেলিয়াতের যুগ পার করেছি- মাওলানা এ টি এম মা’ছুম
টঙ্গীতে নূরুল ইসলাম সরকারের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ
দোয়ারাবাজারে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ
ক্যাম্পাস সমূহ র্যাগিং ও মাদকমুক্ত রাখতে হবে: প্রফেসর ড. মাছুমা
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নবীনদের বরণ করে নিলো শহীদ নূর আলী কলেজ
ঈশ্বরগঞ্জে শহীদ পরিবার ও আহতদের মাঝে আর্থিক সহায়তা
ডনবাসের তিনটি এলাকা মুক্ত করেছে রাশিয়া
মার্চের মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে: পরিবহন উপদেষ্টা
খনন ফিল্ডে প্রত্নতাত্ত্বিক তারিখ নির্ধারন সংক্রান্ত মাঠ কর্মশালা
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফরিদপুরে যুব সমাবেশ