নবজাতকের অমৃত মাতৃদুগ্ধ
৩১ আগস্ট ২০২৩, ০৯:০৮ পিএম | আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম
মাতৃত্ব জীবজগতকে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রবাহিত করে রেখেছে সৃষ্টির মাধ্যমে। স্তন্যপায়ী প্রাণী মাতৃত্ব লাভ করার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর দান মাতৃদুগ্ধের সৃষ্টি হয়, যা নবজাতকের প্রথম খাদ্যের জোগান দেয়। একটি স্বাস্থ্যবান নবজাতকের এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আল্লাহর দান ‘মাতৃদুগ্ধ’-এর উৎপাদন হয়। যা একটি নবজাতকের জন্য অমৃত সমান।
শুদ্ধভাবে স্তন্যপান করালে শিশু এবং মা সুস্বাস্থ্য লাভ করতে সফল হতে পারেন। নবজাতককে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর অন্যতম উপাদান হচ্ছে স্তন্যপান। মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে পাওয়া পরিপুষ্টিতে জীবনের মানদন্ড উন্নত হয়, রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে মানসিক এবং আবেগিকভাবে সবল করে তোলে। স্তন্যপান মা এবং শিশুর মধ্যে এক মধুর সম্পর্ক গড়ে তোলার সঙ্গে মায়ের রক্তশুণ্যতা রোধ করে এবং স্তন ও ডিম্বাশয়ের কর্কট রোগের সম্ভাবনা হ্রাস করে।
স্তন্যপানের শুরু ঃ শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্তন্যপান করানোটা খুব জরুরি। কারণ জন্মের ৩০-৬০ মিনিটের মধ্যে শিশু সক্রিয় হয়ে ওঠে। জন্মের পরেই শিশুটির দুধ চুষে খাওয়ার ইচ্ছা বেশি হয়। স্তন থেকে বেরোনো প্রথম দুধের ফোটা ‘কলস্ট্রাম’ শিশুটিকে খাওয়ানো উচিত এবং এ প্রথম দুধের ফোটা শিশুটির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মা এবং শিশুর আবেগিক সম্পর্ক ভালো হয়। শিশুটি জন্মের পরে তাড়াতাড়ি স্তন্যপান করলে মায়ের প্রসবকালীন রক্তক্ষয় রোধ হয়।
উল্লেখ্য, জন্মের পর মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কোন খাবার এমনকি পানি খেতে না দিয়ে একমাত্র মায়ের দুধ (এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং) খাওয়াতে বলা হয়। শিশুর মুখে মধু, মিছরির পানি, চিনির পানি, পানি ইত্যাদি দিলে শিশুটিকে আরো একটি বিপজ্জনক পথে ঠেলে দেওয়া হয়। প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ দেওয়াটা খুব জরুরি। এবং শিশু যখন চাইবে তখন স্তন্যপান করানো উপিত। সাধারণত দিনে কম করে আটবার স্তন্যপান করাতে হয়। ছ’মাস পর শিশুটিকে স্তন্যপানের সঙ্গে অন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো আবশ্যক হয়ে পড়ে।
পরিপূরক খাবার এবং স্তন্যপান ঃ ছ’ মাস পর শিশুটিকে পরিপূরক আহারের সঙ্গে দু’বছর বা ততোধিক বয়স পর্যন্ত স্তন্যপান করিয়ে যাওয়া উচিত। কারণ মায়ের দুধ শক্তি এবং পুষ্টি যোগায়। মায়ের দুধ শিশুর ওজন কম হওয়া এবং সংক্রামক রোগের সম্ভাবনা কমায়। শিশুর ডায়রিয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের রোগ ইত্যাদি হলেও স্তন্যপান করিয়ে যাওয়া উচিত। ছ’মাস পর শিশুকে ঘরে তৈরি খিচুড়ি, দুধ, সুজি ইত্যাদি খাবার স্তন্যপানের সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে যাওয়া উচিত। শিশুর খাওয়া এমন হওয়া উচিত যা সহজেই হজম হতে পারে এবং শক্তিবর্ধক হওয়া চাই। সে সময় ডাল, চাল, শাক-সব্জি, তেল ইত্যাদি দিয়ে শিশুর খাবার তৈরি করা উচিত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের পরিমাণও বাড়ানো উচিত এবং মাছ-মাংস-ডিম ইত্যাদি খাবার অল্প অল্প করে দেওয়া উচিত।
বর্তমান সমাজে জনগণের মধ্যে মাতৃদুগ্ধের উপকারিতার উপর দ্বিমত নেই বলে নিশ্চিত বলা যায়। কিন্তু সামান্য কিছু কথার উপর গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য আজ অনেক নতুন মা স্তন্যপানের প্রক্রিয়ায় নিজের সন্তানকে দুধ খাওয়াতে পারছেন না। অথচ স্তন্যপান করানোর মাধ্যমে মা এবং শিশু দু’ জনেই সুস্বাস্থ্য অটুট রাখার মহামন্ত্র আয়ত্ত করে জন্মের আধ ঘন্টার মধ্যে কলস্ট্রামযুক্ত দুধের মাধ্যমে শিশুটির স্তন্যপান নিশ্চিত করতে পারে।
আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বেগমগঞ্জে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ আলোচনা সভা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত
ফতুল্লায় শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ
টানা ৪০ রাতের পর সূর্যোদয়
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর গ্রেফতার
বগুড়ার নন্দীগ্রামে তারুণ্যের ফুটবল প্রতিযোগিতার উৎসব
দেশে অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের আবারও সতর্ক করল সরকার
কালীগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী
বাউফলে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়কের বহিষ্কার দাবি
স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর জানালেন জয়
খালেদা জিয়া অনেকটা ভালো আছেন : মির্জা ফখরুল
সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ হবেনা- কমিশন প্রধান
সিংগাইরে স্থানীয় সরকার সংস্কার বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
মালি আছে, বাগান নেই
পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ
নতুন খেলোয়াড় চান গুয়ার্দিওলা
এস আলমের ৬৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, জব্দ ১৬ সম্পদ
সিলেটসহ দেশের পাথর ও বালু মহাল নিয়ে সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত
দৌলতপুরে নগদের মার্কেটিং অফিসারকে কুপিয়ে জখম
গোলের সুযোগ নষ্ট, হাভার্টজের পরিবারকে হত্যার হুমকি
ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে ভোলা জেলার উন্নয়ন শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত