আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে হবে
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪০ পিএম | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০২ এএম
১০ সেপ্টেম্বর পালিত হল বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস ২০২৩। বিশ্বে আত্মহত্যা প্রতিরোধে ২০০৩ সাল থেকে প্রতিবছর ১০ই সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থা দিবসটি পালন করে আসছে। দিবসটি পালনের মাধ্যমে আত্মহত্যার প্রবণতা রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে সংস্থাটির সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একসাথে কাজ করে। বর্তমানে বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর ২০টি কারণের মধ্যে একটি অন্যতম কারণ হ’ল আত্মহত্যা। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে বিশ্বের কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ আত্মহত্যা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, বছরে প্রায় আট লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশেষতঃ ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী যুবক-যুবতীরা বেশি আত্মহত্যা করে বলে জানা গেছে। যা মানবতার জন্য এ এক অপূরণীয় ক্ষতি। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। দক্ষিণ এশিয়ায় দশম। প্রতি বছরই আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে এবং গড়ে প্রতিদিন ৩০ জন করে আত্মহত্যা করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মহত্যার পেছনে অন্যতম কারণগুলো হ’ল মানসিক হতাশা ও বিষণনতা, দাম্পত্যজীবনে কলহ কিংবা যেকোনো সম্পর্কে অনৈক্য, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতনতা ও পারিপার্শ্বিক অসহযোগিতা আর ২০০৩ সাল থেকে দিবসটি পালন করা শুরু হলেও ২০১১ সালে প্রায় ৪০টি দেশ এই দিবসটি উদযাপন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘প্রিভেন্টিং সুইসাইড: অ্যা সোর্স ফর মিডিয়া প্রফেশনালস ২০১৭’ জরিপ বলছে, ‘প্রতিবছর বিশ্বে ১০ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে একটি।’ আরও একটি জরিপ বলছে, ‘গত ৪৫ বছরে আত্মহত্যার ঘটনা ৬০ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্বে বর্তমানে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী মানুষের মৃত্যুর প্রধান তিনটি কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে আত্মহত্যা। এতো গেল বিশ্বের কথা।
বাংলাদেশে সাইবার অপরাধপ্রবণতা- ২০২৩’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন ইউনিটে ৩০ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়ে ৩৪ হাজার ৬০৫টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৯২।
লিঙ্গভিত্তিক তুলনামূলক পরিসংখ্যানে সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারীর হার ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এই বিশাল সংখ্যার নারীর অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগী নারীদের এই উচ্চ হার জানিয়ে দিচ্ছে, প্রযুক্তির অপব্যবহার, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি করছে ব্যাপক মাত্রায়।
এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ৬৯ জন নারী। যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ১০ জন, ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন এবং যৌতুকের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন নারী।
দেশের পত্রপত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী আত্মহত্যায় শীর্ষে ঢাকা। বিভাগটিতে আত্মহত্যা ২৩.৭৭ শতাংশ। এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ যা ১৭.২৭ শতাংশ এবং রাজশাহী বিভাগ যা ১৬.৮১ শতাংশ। এ ছাড়া খুলনা বিভাগে ১৪.১৩ শতাংশ, রংপুরে ৮.৭৪ শতাংশ, বরিশালে ৮.৫৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৬.২৭ শতাংশ এবং সিলেটে ৪.৪৮ শতাংশ স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থী রয়েছেন। পরিসংখ্যান বলছে নারীদের আত্মহত্যার সংখ্যা বেশি। স্কুল এবং কলেজ পড়–য়া আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী রয়েছে ৬০ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং পুরুষ ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। শুধু স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যাকারী নারী শিক্ষার্থীর পরিমাণ ৬৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ। শুধু কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যাকারী নারী ৫৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং পুরুষ ৪০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আত্মহত্যার পেছনের কারণ হিসেবে মান-অভিমানকে দেখানো হয়েছে। জরিপে উঠে আসা এমনই বেশ কিছু কারণের মধ্যে দেখা যায়, অভিমান তাদের সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যাপ্রবণ করে তোলে। ২৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে অভিমান করে। এদের বড় অংশই অভিমান করেছিল পরিবারের সদস্যদের ওপর। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে প্রেমঘটিত কারণ, পারিবারিক কলহসহ নানা কারণ।
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার মানুষ শুধু ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। বর্তমানে নানা কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। এ হার প্রতি লাখে ৮ দশমিক ৫ জন। এটি আমরা ২০২৫ সালে ৩ দশমিক ৫ ও ২০৩০ সালে ২ দশমিক ৮ জনে নামিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। তবে এটা কারোর একার পক্ষে সম্ভব নয়, সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এর জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর জোর দিতে হবে। “আত্মহত্যা জীবনে সবচেয়ে বড় কাপুরুষতার পরিচয়”- উক্তিটি জগদ্বিখ্যাত নেপোলিয়ান বোনাপার্টের। ভারতবর্ষের মহান সাধক ফকির লালন সাঁই জীবনকে দেখেছেন আশ্চর্য এক সাধনার মঞ্চ হিসেবে। সেই জীবনের টানেই জীবনানন্দ দাশ কবিতার পঙক্তিতে ঢেলেছেন সুরিয়ালিস্টিক ভাবধারা। মনীষীরা মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করে জীবনকেই করেছেন মহিমান্বিত। তবে কেন এ আত্মহনন? কেন এ জীবনবিমুখতা? চিকিৎসাবিজ্ঞান আত্মহত্যার চেষ্টাকে মানসিক অবসাদজনিত গুরুতর উপসর্গ হিসেবে দেখেন। বিশ্বের অনেক দেশ আত্মঘাতকদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ বলছে, প্রতিবছর বিশ্বে যেসব কারণে মানুষের মৃত্যু ঘটে এর মধ্যে আত্মহত্যা ১৩তম প্রধান কারণ।
বয়স্ক মানুষ হার্ট অ্যাটাকে বেশি মারা যাচ্ছে, বাড়ছে আত্মহত্যাও: ৬০ বছর বয়সী মানুষের মৃত্যুহার হিসাব করলে হার্ট অ্যাটাক প্রথমে। এর পরে রয়েছে ব্রেন স্ট্রোক, হার্ট ডিজিস, অ্যাজমা, হাই ব্লাড প্রেশার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগে, লিভার ক্যানসার, প্যারালাইসিসে, ব্লাড ক্যান্সারে, নিউমোনিয়া ও স্টমাক ক্যান্সারে মানুষ মারা যান। অপরাপর কারণের মধ্যে আত্মহত্যা, খুন, সাপের কামড়, সড়ক দুর্ঘটনা ও অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু অন্যতম। বিবিএস মানুষের মৃত্যুর ১০০টি কারণ উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম আত্মহত্যা।
বর্তমানে নানা কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। এ হার প্রতি লাখে ৮ দশমিক ৫ জন। এটি আমরা ২০২৫ সালে ৩ দশমিক ৫ ও ২০৩০ সালে ২ দশমিক ৮ জনে নামিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়েছি।
> আত্মহত্যার কারণ:
* জেনেটিক: আত্মহত্যার প্রবণতার অন্যতম কারণ জেনেটিক (বংশানুক্রমিক) কারণ। মোট আত্মহত্যার প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রেই জিন দায়ী। ফলে কোনো পরিবারে একজন আত্মহত্যা করলে এর প্রভাব অন্য সদস্যদের ওপরও পড়ে।
* হঠকারিতা বা ইমপালসিভিটি: আত্মহত্যার অন্যতম কারণ হঠকারিতাও। মানসিক রোগ না থাকার পরও হঠাৎ করেই অনেকে আত্মহত্যা করে বসেন। ধর্ষিত হওয়ার পরপরই আত্মহত্যা, দাম্পত্য কলহে আত্মহত্যা, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আত্মহত্যা, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আত্মহত্যা, প্রিয়জনের মৃত্যুসংবাদে আত্মহত্যা ইত্যাদি যার মধ্যে অন্যতম।
* মানসিক রোগ: আত্মহত্যার জন্য অন্যতম কারণ মানসিক রোগ। বিষণ্ণতা, ম্যানিক-ডিপ্রেসিভ, সিজোফ্রেনিয়া, পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার ও লাভ অবসেশন এর মধ্যে অন্যতম।
* প্রত্যাশার মানসিক চাপ: কারও কারও প্রত্যাশা অনেক বেশি। পাশাপাশি পরশ্রীকাতরতাও আছে। কেউ যদি নিজে ব্যর্থ হন এবং পাশাপাশি কাছের কেউ সফল হন তবে সেই গ্লানিবোধ থেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। অনেকসময় আমরা নিজেরাই নিজেদের ওপর প্রত্যাশার চাপ বাড়িয়ে দিই।
* পারিবারিক কলহ: দাম্পত্য কলহের কারণে অনেকসময় স্বামী বা স্ত্রী আত্মহত্যা করে বসেন। অনেক সময় সন্তানরা বাবা-মায়ের নিত্যকলহের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে এ পথে পা বাড়ান।
* দারিদ্র্য: বিশেষত, আমাদের উপমহাদেশে আত্মহত্যার অন্যতম কারণ দারিদ্র্য। অনেকে বেশিরভাগ সময় ঋণগ্রস্ত থাকেন। সেটা তার মাথার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে। ব্যক্তি তখন চাইলেই ফুরফুরে মুডে থাকতে পারে না। ঋণ পরিশোধ না করতে পেরে তখন বেছে নেন আত্মহত্যার পথ।
* অপরিকল্পিত নারীর ক্ষমতায়ন: নারীর ক্ষমতায়নে সরকার এবং বেসরকারি এনজিও ও উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নারীদের আজ ঘরের বাইরে নানা ক্ষেত্রে সরব উপস্থিতি। শিল্প কলকারখানা থেকে শুরু করে শিক্ষা-দীক্ষা এমনকি সামরিক বাহিনীতেও নারীদের জয়জয়কার। কিন্তু নারী ক্ষমতায়নের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঘরের বাইরে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানি বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেককেই আত্মাহুতি দিতে বাধ্য হন।
* রাত জাগার বদভ্যাস: মানসিক রোগে ভুগে আত্মহত্যা করেছেন, তাদের বেশিরভাগেরই অন্যতম উপসর্গ রাতে ঠিকমতো ঘুম না হওয়া।
* মাদকাসক্তি: মদ্যপায়ীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। হিরোইনসেবীদের আত্মহত্যার হার সাধারণ মানুষের তুলনায় প্রায় ১৪ গুণ বেশি। ইয়াবা সেবনেও আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়ে।
* জুয়া খেলা: জুয়াড়িদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। অনেক জুয়াড়ি সবকিছু বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হন। এর পরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন মূলত ঋণের কারণে। এদের ঘরের স্ত্রীদের আত্মহত্যার হার সাধারণ মানুষের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি।
* দীর্ঘমেয়াদি পীড়াদায়ক রোগ: দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, ক্যানসার, কিডনি নষ্ট হওয়া, অনিদ্রা (ইনসোমনিয়া), হাঁপানি ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি, কষ্টদায়ক ও ব্যয়বহুল রোগের রোগীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কোনো ব্যক্তির ক্যানসার ডায়াগনোসিস হলে তার আত্মহত্যার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
* লাভ অবসেশন: অনেক প্রেম ‘লাভ অবসেশন’ নামে মানসিক রোগের জন্ম দেয়। ফলে এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ভালোবাসার মানুষের সামান্যতম অবহেলাও সহ্য করতে পারেন না। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তিনি মানসিক রোগাক্রান্ত হয়ে যাওয়ায় ভালোবাসার মানুষটিকে ফিরে পেতে কিংবা তার বিরহে আত্মহত্যার পথ ধরেন।
> আত্মহত্যার লক্ষণ
নিজেকে অন্যের জন্য বোঝা মনে করা বা সীমাহীন কষ্টের কথা প্রকাশ করতে না পারাও আত্মহত্যার অন্যতম লক্ষণ। এছাড়া হঠাৎ করেই নিজের সব জিনিস অন্যদের দিয়ে দেওয়া, মৃত্যু বিষয়ে নানা চিন্তা-ভাবনার কথা প্রকাশ করা, আত্মহত্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা, মনের বিক্ষিপ্ততা দৃশ্যমান হওয়া যেমন- একটুতেই উত্তেজিত হওয়া, প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলা, অকারণে কেঁদে ফেলা, নিজেকে গুটিয়ে রাখা, অস্বাভাবিক শান্ত হয়ে যাওয়া- এসব লক্ষণেও বুঝতে হবে ওই ব্যক্তি হয়তো আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেছেন।
> আত্মহত্যা প্রবণতারোধে করণীয়ঃ-
১. সঙ্গে সঙ্গে রায় না দিয়ে তারা কী বলছে শুনুন। তাদের অভিজ্ঞতা বা আবেগকে অশ্রদ্ধা করবেন না।
২. আত্মহত্যা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
৩. মাদকাসক্ত ব্যক্তি, মানসিক রোগী, অভিবাসী, বেকার ও সাংস্কৃতিকভাবে শ্রেণিচ্যুতদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। এ কারণে তাদের প্রতি বিশেষ সহায়তা কার্যক্রম চালানো প্রয়োজন।
৪. আমাদের দেশে যৌতুক, পারিবারিক নির্যাতন এবং উত্ত্যক্তকরণের ফলে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। এসব দূর করার জন্য প্রয়োজন নারীশিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়ন। নারীর প্রতি নারী-পুরুষ সবার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করাও আত্মহত্যা প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
পরিশেষে বলতে চাই, আত্মহত্যা প্রতিরোধে সবার আগে আত্মহত্যাপ্রবণ লোকদের শনাক্ত করতে হবে। তারপর তাদের আত্মহত্যা থেকে দূরে রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত, তাদের স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আর মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, কীটনাশক বা বিষ, বিষাক্ত পদার্থ ইত্যাদি দূরে রাখতে হবে। এছাড়া গণমাধ্যমে আত্মহত্যাবিরোধী প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। তাই আমাদের সকলের উচিত আমাদের পারিবারিক, সামাজিক বন্ধনটা আরও শক্ত করা। একে অপরের খোজ খবর রাখা। সমাজের সকলকে সচেতন করে তোলা। তাহলে ধীরে ধীরে আত্মহত্যার প্রবণতা কমে আসবে। মুছে যাবে আত্মহত্যা নামক শব্দটি। তাই আসুন আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতন হই। প্রিয়জনের জীবন বাঁচাই।
মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
কলাম লেখক ও গবেষক
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।
ইমেইল : [email protected]
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে
ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি
ইভেন্টের সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা
বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম
নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক
পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা
দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত
জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে
আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি
ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা
বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা
সিলেটে মাজিদের ফিফটি
অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন
মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে