হাঁপানি এড়াতে যা করবেন
১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম

যে সব জিনিস থেকে হাঁপানির আক্রমণ শুরু হয় সেগুলো বাড়ি থেকে দূরে রাখুন। এজন্য হাঁপানি রোগীদের এলার্জি পরীক্ষা করে জানা দরকার তার কোন দ্রব্যাদি থেকে এলার্জি শুরু হয়।
* হাঁপানি রোগে আক্রান্ত অনেকেরই পশুপাখীর লোমে এলার্জি থাকে। এইসব প্রাণী বাড়ির বাইরেই রাখুন।
* বিছানা করুন প্লেন লিনেন দিয়ে। প্রতিদিন দু‘বেলা ঘরের মেঝ পরিষ্কার করা দরকার। যে সব জিনিস থেকে ধুলা ওড়ে সেগুলো নাড়াচাড়া করবেন না। এসব ঝাড়ার সময় রোগীকে ঘরের বাইরে থাকতে হবে।
*কোন ঝাঁজালো গন্ধ যেমন মশলা ভাজার গন্ধ, মশা মারার স্প্রে, পারফিউম যেন নাকে প্রবেশ না করে।
* ধুলো, ধোঁয়া, ঠান্ডা বা শীতের কুয়াশা লাগানো চলবে না। রাস্তার ধুলো, ঘরের পুরাতন ধুলো, গাড়ির ধোঁয়া থেকে রক্ষা পাবার জন্য ফিল্টার মাস্ক ব্যবহার করুন। যারা বাইক অথবা নন এসি গাড়ি চালান তারা অবশ্যই মাস্ক পরে নিবেন।
*ধূমপান বারণ: সিগারেটের ধোঁয়া হাঁপানির কষ্ট সাংঘাতিকভাবে বাড়িয়ে দেয়। শুধু হাঁপানি নয় ফুসফুস ও শ্বাসনালী সংক্রান্ত অনেক অসুখের অন্যতম কারণ ধূমপান। সিগারেটের ধোঁয়া থেকে প্রথমে ব্রঙ্কাইটিস, পরে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস সৃষ্টি হয়। হাঁপানি রোগী নিজে তো ধূমপান করবেই না উপরন্তু যে ঘরে হাঁপানির রোগী থাকে সেখানেও কোন স্মোকারের প্রবেশ নিষেধ। কারণ পরোক্ষ ধূমপানও হাঁপানির কষ্ট অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।
* শোবার ঘর রদবদল করুন: ঘর থেকে কার্পেট বের করে দিন। এগুলোতে প্রচুর ধুলা জমে। নরম চেয়ার, কুশন ও বাড়তি বালিশও বের করে দিন।
* পরিষ্কার ও খোলা হাওয়ার জন্য জানালা খোলা রাখুন। ভ্যপসা ও দমবন্ধ লাগলে জানালাগুলো খুলে দিন, এমনকি রান্না করার সময় ধোঁয়া উঠলে উগ্র গন্ধ ছাড়লেও তা করতে পারেন। কাঠ বা কেরোসিনে রান্না করলে ধোঁয়া বেরিয়ে যাওয়ার জন্য একটা জনালা অল্প খুলে রাখুন।
* ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন নিয়ম করে হালকা ব্যায়াম করা খুব জরুরি। তবে একটা ব্যাপার ভুললে চলবে না বেশি ব্যয়ামের জন্য যেন হাঁপানির টান না ওঠে হাঁটা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো এগুলো কিন্তু হাঁপানি রোগীদের পক্ষে ভাল ব্যায়াম। বাচ্চাদের ব্যায়াম ও খেলাধুলার সময়ে সতর্ক দৃষ্টি রেখে দেখা উচিৎ যে ওদের কোন অসুবিধা বা শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা। হলে খেলার আগে ওষুধ দিয়ে দিতে হবে।
* টেনশন মুক্ত থাকতে হবে:- কোন কারণে ভয় পেলে, মানসিক উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা বা শোক পেলেও হাঁপানির টান হতে পারে।
* হাঁপানি রোগীর অনুপস্থিতিতে কয়েকটি কাজ সেরে রাখুন। ঘরদোর মুছে, ভ্যাকুয়াম করে বা ঝাট দিয়ে রাখুন, পোকা-মাকড়ের জন্য স্প্রে করুন, কড়াগন্ধক্তুক্ত রান্না সেরে রাখুন, ঘরে ফিরার আগে হাওয়া খেলতে দিন।
* খাওয়া-দাওয়া: বেশি রাতে ভরপেট খেলে টান উঠতে পারে। তাই রাত্রিতে পেট ভরে ভুলেও খাবেন না। হাঁপানি রুখতে নিয়ম করে হাতে কিছুটা সময় নিয়ে খেতে হবে।
* ঘরের তাপমাত্রা: শীতকালে ঘর গরম রাখতে পারলে ভাল হয়। ঘরে বাতানুকূল যন্ত্র থাকলে অনেক সময় ধুলা-ময়লার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
* হাঁপানি আক্রমণ শুরু হলে চটপট তা সামলাতে চেষ্ট করুন- হাঁপানি আক্রমণ শুরু হওয়ার লক্ষণগুলে হল: কাশি, শো শো শব্দ, বুকে চাপ সৃষ্টি রাতে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া, যে জিনিষ থেকে শুরু হয়েছে সেটি থেকে দূরে সরে যান। সালবুটামল জাতীয় ওষুধের ইনহেলার ব্যবহার করুন প্রয়োজনে ৫ মিনিটে পর পর। শান্ত থাকুন, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস স্বভাবিক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন।
* যদি এতেও ভাল না হন তাহলে ডাক্তারের কাছে জরুরি সহায়তার জন্য যান। যদি হাঁপানির এই বিপদ সংকেতগুলোর কোনও একটিও দেখেন তাহলে সাহায্য নিন।
(ক) আপনার চটপট আরামের ওষুধ যদি খুব বেশিক্ষণ কাজ না করে বা তাতে একেবারেই উপকার না হয়।
(খ) শ্বাস-প্রশ্বাস যদি দ্রুত ও জোরে জোরে হয়।
(গ) যদি কথা বলতে কষ্ট হয়।
(ঘ) ঠোঁটে বা আঙ্গুলের নখ নীল বা ছাই রঙের হয়ে যায়।
(ঙ) পাঁজরের চারপাশে ও ঘাড়ের কাছের চামড়া শ্বাস নেয়ার সময় ভেতর দিকে টেনে ধরে।
(চ) হঠাৎ স্পদন বা নাড়ির গতি অত্যন্ত দ্রুত হয়, হাঁটা-চলা করতে কষ্ট হয়।
* আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনযায়ী ওষুধ ব্যবহার করবেন। অনেক সময় ডাক্তার ইনহেলার প্রেসক্রিপশন করেন কিন্তু রোগী/ রোগীর অভিভাবকরা দ্বিধাদ্বন্দে ভোগে থাকেন এটা ব্যবহার করবেন কি করবেন না, মনে করেন এটা একবার ব্যবহার করলে সারা জীবন নিতে হবে, বিশেষ করে যখন ১ বছরের নিচের বাচ্চাদের দেয়া হয়। বর্তমানে উন্নত বিশ্বের সর্বত্রই ইনহেলার ব্যবহার হচ্ছে। এতে ওষুধের পরিমাণ কম লাগে এবং কাজও হয় খুব তাড়াতাড়ি। তাই স্পেসারের মাধ্যমে শিশুদের ব্যবহার কারাবেন।
* তাছাড়া রোগীদের চিকিৎসায় এলার্জির ধরণ অনুযায়ী ডাক্তার ভ্যাকসিন দিলে তা ঠিকমত দিতে হবে। অনেক ভ্যাকসিন নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দে ভোগে থাকেন। এটাও আধুনিক চিকিৎসার একটা অংশ। দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে এর কোন বিকল্প নেই। তাই ডাক্তারের নির্দেশ মত সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন নিতে ভুল করবেন না।
ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস
এলার্জি এন্ড এ্যজমা রোগ বিষেশজ্ঞ
দি এলার্জি এন্ড এ্যাজমা সেন্টার,
৪র্থ তলা, স্কাইটাচ রাজকুশ,
৪৩ আর/৫ সি, পশ্চিম পান্থপথ (শমরিতা হাসপাতালের পাশে), ঢাকা ১২০৭।
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ট্রাম্পের শুল্কে বাংলাদেশে কমবে প্রবৃদ্ধি, বাড়বে শঙ্কা-অনিশ্চয়তা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে শীর্ষে সউদী

দাঁত ভাঙ্গা জবাব চীনের

সেনাবাহিনীতে আরও রোবট নিয়োগ করছে রাশিয়া

ইমরান খানের সমর্থকদের বিক্ষোভ

ইনভেস্টমেন্ট সামিটে টেকসই অর্থনীতির ধারণা উপস্থাপন জামায়াতের

বাংলাদেশে সউদী আরবের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে -স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সউদী রাষ্ট্রদূত

ট্রাম্প ও ওবামার মধ্যে জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে?

জাতিসংঘ-ওআইসির নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এনপিপির

তানজির ফাহিম জুম্মার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে সিকিউরিটি গার্ড আহত

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার নিন্দায় লেজিসলেটিভ অ্যাসোসিয়েশন

পহেলা বৈশাখে ব্যাপক নিরাপত্তার পরিকল্পনা ডিএমপি কমিশনার

ডাকাতির পর হত্যা : ১০ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড

আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার মানববন্ধন

সড়কের মৃত্যুদূত মোটরসাইকেল

দায়ের করলেন ‘গোপন অভিযোগ’ দুদকে হঠাৎ হাসনাত-সারজিস

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও বহুত্ববাদের সঙ্গে একমত নয় বিএনপি : সালাহ উদ্দিন আহমেদ

গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির আহ্বান ইউজিসির