সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ
০২ জুলাই ২০২৩, ১০:৩৭ পিএম | আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
# ভূমি অধিগ্রহণ, গাড়ি, জাহাজ, বিমান ক্রয় বন্ধ রাখার নির্দেশ # বিদ্যুৎ খাতে ২০-২৫ শতাংশ ব্যয় সাশ্রয় করা হবে # সব আবাসিক-অনাবাসিক স্থাপনায় ব্যয় বন্ধ # কৃচ্ছ্রসাধন নীতিতে গত অর্থবছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবার সব ধরনের গাড়ি, বিমান ও জাহাজ কেনাকাটায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এছাড়া উন্নয়ন বাজেটের আওতায় নতুন গাড়ি কেনা বন্ধ এবং প্রকল্পের অর্থ ছাড় পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। সব ধরনের আবাসিক, অনাবাসিক, অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা খাতে বরাদ্দ দেয়া অর্থ ব্যয়ও বন্ধ থাকবে। বৈদেশিক ভ্রমণ, কর্মশালা, সেমিনারে অংশগ্রহণ এবং ভূমি খাতের অধিগ্রহণ বাবদ বরাদ্দ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত জরুরি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকার এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ সাশ্রয় করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ খাতের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ এবং জ্বালানি খাতের বরাদ্দে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ খরচ করা যাবে বলেও নির্দেশনায় বলা হয়।
অর্থ বিভাগের উপ-সচিব আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরিত এ পরিপত্রে বলা হয়, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের লক্ষ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং আওতাধীন অধিদপ্তর/পরিদপ্তর/দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত/আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর কর্পোরেশন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে কতিপয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ বায়ে সরকার নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিচালন বাজেটের আওতায় অর্থনৈতিক কোডসমূহে বরাদ্দকৃত অর্থ নিম্নোক্তভাবে ব্যয় করা যাবেÑবিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ, পেট্রোল, ওয়েল ও লুব্রিকেন্ট ও গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ। সকল আবাসিক ভবন, অনাবাসিক ভবন এবং অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। সকল প্রকার মোটরযান, জলযান ও আকাশযান খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের অধিক পুরনো মোটরযান প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে ব্যয় নির্বাহ করা যাবে এবং ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে । উপরের খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কোনো খাতে এবং অন্য কোনো খাত হতে এসব খাতে পুনঃ উপযোজন করা যাবে না।
যেসব শর্তে বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে : নতুন নির্দেশনায় সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ, কর্মশালা, সেমিনার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হলেও কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে। কোনো বিদেশ ভ্রমণ কর্তৃপক্ষের অত্যাবশ্যকীয় বিবেচিত হলে সীমিত আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে করা যাবে। এছাড়াও পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা/বিশ্ববিদ্যালয়/দেশ প্রদত্ত স্কলারশিপ/ফেলোশিপের আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়ন করা যাবে। বিদেশি সরকার/প্রতিষ্ঠান/উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে ও সম্পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বৈদেশিক প্রশিক্ষণ; এবং সরবরাহকারী/ঠিকাদার/পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন কর্মকর্তারা সেবা/পণ্যের গুনগত মান নিরীক্ষা/পরিদর্শন খাতে সীমিত ভ্রমণ করতে পারবে।
গত অর্থবছরে ১৫ হাজার কোটি সাশ্রয় : ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরু থেকে সরকারের কৃচ্ছ্রসাধনের নীতিতে এ পর্যন্ত সরকারি ব্যয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এই অর্থের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা খাত থেকে সাশ্রয় হয়েছে ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। এছাড়া, পণ্য ও সেবাসহ পূর্ত কাজ এবং শেয়ার ও ইকুইটিতে বিনিয়োগের লাগাম টেনে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, এর আগে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধের বিষয়ে গত বছর ১২ মে পরিপত্র জারি করে সরকার। এর আগে ২০২২ সালের ৭ মেসহ একাধিকবার আমদানি নীতিমালার মাধ্যমে ২৬ শ্রেণির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে চিংড়ি; জীবিত শূকর ও শূকরজাত সব ধরনের পণ্য; পপি সিড ও পোস্তদানা; ঘাস; ওয়াইন লিজ ও আরগোল; ঘন চিনি; কৃত্রিম সরিষার তেল; নিম্নমানের পণ্য অথবা পুরোনো, ব্যবহৃত, রিকন্ডিশন্ড পণ্য বা কারখানায় বাতিলকৃত বা স্টক লটের পণ্য ইত্যাদি। এ ছাড়া রিকন্ডিশন্ড অফিস ইকুইপমেন্ট অর্থাৎ ফটোকপিয়ার, টাইপরাইটার, টেলেক্স, ফোন, ফ্যাক্স, পুরোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সামগ্রী ও পুরোনো ইলেকট্রনিকস সামগ্রী; সব ধরনের শিল্প সøাজ ও সøাজ দিয়ে তৈরি সার ও যেকোনো পণ্য, সব ধরনের বর্জ্য পদার্থ আমদানি নিষিদ্ধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সিলেটে কোরআন খতম ও দোয়া
অধ্যক্ষ হয়ে ভাগ্য বদলে যায় অনুতোষ কুমারের
দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে আন্দোলনে নামা হবে : কর্নেল অলি
ভুল এমনি এমনি হয় না, এর পেছনে কারো না কারো হাত থাকে : ইসি
সিলেটকে উড়িয়ে জয়ের ধারায় চট্টগ্রাম
ঈশ্বরগঞ্জে গলায় ফাঁস দিয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু
সচিবালয়ের পথে জবির অনশনকারী শিক্ষার্থীরা
হাজীগঞ্জে ছেলের ঘুষিতে বাবার মৃত্যুর অভিযোগ
ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা: চেয়ারম্যানকে আসামি করে মামলা
নরকিয়া ও এনগিডিকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ. আফ্রিকা দল
বান্দরবানে দূর্বৃত্তের গুলিতে মার্মা নারী আহত
‘বিতর্ক ওঠায়’ পিএসসির ৬ সদস্যের নিয়োগ বাতিল
পুলিশকে নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে : পুলিশ সুপার
কুয়াকাটায় জেলেদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ৩
বাংলাদেশে থেকে ওরা পালিয়েছে- আল্লামা তারেক মনোয়ার
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ সমস্যা সমাধানে কঠোর পদক্ষেপ চাই
"স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ: আপামর জনতার ত্যাগের ফসল"
পূর্ব ইউক্রেনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া
কিশোরগঞ্জ হাওর অঞ্চলে সারের বাফার গুদাম করা প্রয়োজন মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
তাইম ও হৃদয় হত্যাকাণ্ডে দুই পুলিশ সদস্যকে ২০ জানুয়ারি ট্রাইবুনালে হাজিরের নির্দেশ