গোদাগাড়ীতে বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব
১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৬ এএম
রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্তবর্তী প্রথম শ্রেণীর গোদাগাড়ী পৌরসভায় বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে। ১০-১৫টি করে কুকুরের একেকটি দল বিভিন্ন এলাকায় অলিগলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
স্কুল-কলেজ-মাদরাসাগামী শিক্ষার্থী, শিশু, পথচারীসহ সাধারণ মানুষকে তাড়িয়ে কামড়ানোর চেষ্টা করছে এসব কুকুর। দীর্ঘদিন ধরে সরকারিভাবে কুকুর নিধন বা বন্ধ্যত্বকরণ কার্যক্রম ও বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া আইনের কারণেও কুকুর নিধন ও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দিনকে দিন বেড়েই চলছে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব।
সীমান্তবতী গোদাগাড়ী উপজেলা এবং পৌরসভার মহিশালবাড়ী, গোদাগাড়ী, মাদারপুর, সারাংপুর, সুল হাটপাড়া, রেলগেট, গোদাগাড়ী, সুলতানগঞ্জ, সারাংপুর, গেেড়র মাঠ, মাদারপুর, রেলওয়ে বাজার, কুঠিপাড়া, থানারমোড এবং উপজেলা সদর, রাজাবাড়ী, প্রেমতলী, পিরিজপুর, গোগ্রাম, কাঁকনহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের আক্রমণে মারাত্মক আহত হচ্ছে শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ। স্কুল কলেজ মাদ্রাসায়, হোটেল-রেস্তোরার সামনে ও বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে এসব কুকুর। হঠাৎ মানুষকে আক্রমণ করে। এছাড়া পাগলা কুকুরতো আছেই। এরশাদ সরকারের আমলে কুকুরের উপদ্রব বেড়ে গেলে কুকুর নিধন করা হয়েছিল।
কিন্তু ২০১২ সালে উচ্চ আদালত নির্বিচার কুকুর নিধনকে অমানবিক উল্লেখ করে তা বন্ধের নির্দেশ দেয়। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কুকুরকে বন্ধ্যা (প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়া) করে সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার ঘোষণা দেয় সরকার। এজন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত একটি প্রকল্প রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯ করা হয়। এ আইনে কুকুর নিধন বা বিনাকারণে অপসারণ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু বন্ধ্যত্বকরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। তবে তা খুবই অল্প এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকে। এরপর বন্ধ্যত্বকরণ কার্যক্রমেও ভাটা পড়ে।
ফলে রাজশাহীর সীমান্ত অঞ্চলজুড়ে বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত ও আক্রমণের শিকার হয়ে আহতের সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সারা দেশে ৬ লাখের বেশি মানুষ কুকুরের কামড় খেয়ে জলাতঙ্ক রোগের টিকা নিয়েছে। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫ লাখের সামান্য কম। এর মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি। এই দুই বছরে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৬ জন। শুধু তাই নয়, ২০১২-২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে দেশে কুকুরের কামড়ে মারা গেছে ৭৭১ জন।
তবে ২০১০ সালের আগে দেশে প্রতি বছর জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে আড়াই হাজার মানুষ মারা যেত। জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলে সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের ফলে মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা কমেনি। ২০২০ সালে জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছিলেন ১ লাখ ৫২ হাজার ১৪ জন। ২০২১ সালে ২ লাখ ৭৮ হাজার। দেশে সংক্রামক রোগের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল। এই হাসপাতালে কুকুর-বিড়ালসহ বিভিন্ন প্রাণীর আক্রমণে আহত হয়ে ২০২৩ সালে চিকিৎসা নেয় ৯৪ হাজার ৩৮০ জন। ২০২২ সালে চিকিৎসা নেয়া মানুষের সংখ্যা ছিল ৮৯ হাজার ৯২৮ জন। তার মধ্যে সিংহভাগই কুকুরের আক্রমণে আহত হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিডিসি ও বিভিন্ন প্রাণিকল্যাণ সংগঠনের দেয়া তথ্যানুযায়ী দেশে প্রায় ১৭ লাখ কুকুর রয়েছে। গোদাগাড়ী পৌরসভার ২ নং এরফান আলী (৯০) বলেন, প্রতিদিন কুকুরের কামড়ে কেউ না কেউ আহত হচ্ছেন। কোন কোন কুকুর পাগল হয়ে মানুষ দেখলেই কামড়ে দেয়।
আলহাজ গোলাম রাব্বনী বলেন, ফজরের নামাজ আদায় আর সকালে হাঁটাহাঁটি করতে বের হলেই কুকুরের আক্রমণের শিকার হতে হয়। এলাকায় কুকুরের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এসব কুকুর দলবেঁধে চলাচল করে। মাঝে মধ্যেই কেউ না কেউ কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। কুকুরের কারণে অনেকে রাতে দেরি করে বাড়ি ফেরার পথে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। অনেক স্থানে নারী ও শিশুরা কুকুরের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন। কয়েক বছর আগে মৌলভী এরফান আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ কুকুরের কামড়ে মারা গেছেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন এমবিবিএস ডাক্তার বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিডিসির অধীন ডিএসসিসিসহ দেশে কুকুর বন্ধ্যত্বকরণ করা হয়। কিন্তু গত অর্থবছর থেকেই এটি বন্ধ রয়েছে। এ জন্য কুকুরের সংখ্যা উপদ্রব বেড়ে গেছে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?
তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল
অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার
'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল
অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি
নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু
বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন
মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ
যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়
‘হাই অ্যালার্টে’ লন্ডন, মার্কিন দূতাবাসের সামনে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ