তুরস্কের জাতীয় নির্বাচন আজ
১৩ মে ২০২৩, ১১:১৯ পিএম | আপডেট: ১৪ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
তুরস্কের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আজ ১৪ মে। ইতোমধ্যে নির্বাচন নিয়ে প্রচারণা থেকে শুরু করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রার্থীরা। তবে, অর্থনৈতিক সংকটে থাকা তুরস্কের মসনদে কে বসবেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। নির্বাচনের আগে জরিপগুলোতে এগিয়ে রয়েছেন তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক অবস্থানে রয়েছেন এরদোগানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) কামাল কিলিকদারোগলু। তবে, ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া কাহারামানমারাস প্রদেশে এগিয়ে আছেন দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোগান। সব মিলিয়ে এই নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার আভাষ পাওয়া যাচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এবার দুই ধাপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে তুরস্কে। কারণ, প্রথম ধাপে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন না। জরিপেও সেই ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। আর কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে ২৮ মে দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনের এখন পর্যন্ত তিনজন প্রেসিডেন্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতার লড়াইয়ে টিকে রয়েছেন। তারা হলেনÑ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে পার্টি) থেকে এরদোগান, রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা কিলিকদারোগলু ও সিনান ওগান। এরদোগানের ইসলামপন্থী দল একে পার্টির প্রধান জোট এমএইচপি। আর অন্যদিকে, সিএইচপিসহ পাঁচটি রাজনৈতিক দল ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদী জোট করেছে। এমনকি, সদ্য প্রেসিডেন্ট লড়াই থেকে সরে যাওয়া মুহাররেমের দল এইচডিপি।
তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোগানের কয়েক ডজন নির্বাচনে জয়ী হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এমনকি, ২০১৬ সালে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানও সামাল দিয়েছেন। তিনি নিজ দৃষ্টিভঙ্গিতে তুরস্ক অনেকটা সাজাতে সক্ষম হয়েছেন।
এবারের নির্বাচনের আগে জনগণকে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট। প্রচারাভিযানে এরদোগান বড় বড় অবকাঠামো ও নির্মাণ প্রকল্প করার কথা জানিয়েছে। এমনকি, বিরোধীরা জয়ী হলে দেশে বিশৃঙ্খলা হতে পারে এমন সতর্কবার্তা দিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন।
এবারের নির্বাচনে যারা ভোট দিচ্ছেন তাদের আট শতাংশ ‘ফার্স্ট-টাইম ভোটার’ যারা প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছেন। অনেকে মনে করেন, তুরস্কে যেসব গ্রুপ এখনও মনস্থির করেননি যে, তারা কাকে ভোট দেবেন, তাদের মধ্যে এ গ্রুপটি সবচেয়ে বড়। তবে ২০ বছর বয়সী সালিহ কাকে ভোট দেবেন সেটা তার কাছে পরিষ্কার। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি রজব তাইয়্যেব এরদোগান একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতা। তুরস্কের রাজনীতিতে এ ধরনের ক্যারিশমা থাকা গুরুত্বপূর্ণ’।
তিনি বিশ্বাস করেন, জনাব এরদোগান তার শাসনামলের বিভিন্ন অর্জনের ওপর ভিত্তি করে তুরস্কের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবেন।
‘এর আগে তুরস্কে জ্বালানির বিষয়ে অনেক সমস্যা ছিল এবং সামরিক কারণে দেশটিকে অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হতো। কিন্তু এখন আমরা নিজেরাই নিজেদের গাড়ি উৎপাদন করছি, ড্রোন ও বিমান তৈরি করছি। মি. এরদোগান আমাদের সব সমস্যা সমাধান করে দিয়েছেন’ -বলেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় সব প্রার্থী এবার তরুণ ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেছেন। জনাব এরদোগান জোর দিয়েছেন প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতির ওপর, কিন্তু বিরোধী প্রার্থী মি. কুলুচদারুলু আরো বেশি স্বাধীনতা ও উন্নত কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু ২০ বছর বয়সী গিজেম মনে করেন প্রেসিডেন্ট এরদোগানই তুরস্কে সবার স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন।
‘আজকের তুরস্কে যে যা করতে পছন্দ করে সেটাই সে করতে পারে। কয়েক দশক আগে তার বিরোধীরাই লোকজনের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। আমার মতো যেসব নারী হিজাব পরতো তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ ছিল না’ -বলেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান তার শাসনামলে বড় ধরনের যেসব সংস্কার ঘটিয়েছেন তার একটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি চাকরিতে নারীর হিজাব পরার ওপর দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।
‘আজকের দিনে এই দেশে যদি হিজাব পরিহিত কোনো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিম্বা শিক্ষক থাকেন, তাহলে সেটা সম্ভব হয়েছে এরদোগানের জন্য। তিনিই এই স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি যদি এটা না করতেন তাহলে আজকেও ধর্মনিরপেক্ষতার নামে আমাদের এই স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত থাকতে হতো’ বলেন তিনি।
৭৪ বছর বয়সী কিলিকদারোগলুকে এরদোগানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ধরা হচ্ছে। তিনি দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের প্রধান বিরোধী দল সিএইচপির অন্যতম নীতি নির্ধারক। গত মার্চে ছয় দলের জোট করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দেন কিলিকদারোগলু। দীর্ঘদিন এরদোগানের ছায়ায় থাকা কিলিকদারোগলু ২০১০ সালে তুরস্কের সংসদীয় নির্বাচনে একেপি পার্টির কাছে ধরাশয়ী হয়েছিলেন। ২০০২ সালে সিএইচপির হয়ে সংসদ সদস্য হওয়া রাজনীতিতে আসা কিলিকদারোগলু প্রাক্তন সরকারি কর্মচারী।
এ রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মোস্তফা কামাল আর্তাতুক। ৫৫ বছর বয়সী সিনান ওগানের নির্বাচনে জয়ের আশা ক্ষীণ। তুর্কসাম থিংক ট্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এ ব্যক্তি ২০১১ সালে তুরস্কের সংসদ সদস্যা হন। চরম ডানপন্থী দল এমএইচপির হয়ে তিনি পার্লামেন্টে যান। তবে, ২০১৫ সালে দলটি থেকে বহিষ্কৃত হন। সূত্র : বিবিসি বাংলা, আনাদোলু, রয়টার্স।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
গাবতলীতে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি লালু
যমুনার ভাঙনের মুখে আলোকদিয়াবাসীর বসতবাড়ি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
নোবিপ্রবির সঙ্গে নেদারল্যান্ডের ইউট্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর
৯ দফা দাবীতে নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালরে সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
এলজিইডির এক প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
আবাসিক হোটেলের নামে মাদকের আড্ডা
নোয়াখালীতে মসজিদের ইমাম ও খতিবকে বিদায়ী সংবর্ধনা
খুলনাকে বিদায় করে ফাইনালে মেট্রো
কালিয়াকৈরে চাঁদাবাজের হামলায় চাঁদাবাজ কালামের মৃত্যু
বিরল উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ১
কামালপুর সড়কের ব্রিজ ভেঙ্গে মরণফাঁদ চরম দুর্ভোগে পথচারীরা
মেয়েদের ক্রিকেটে যুক্ত হলো যেসব সুযোগ-সুবিধা
বাড়ছে শীতের প্রকোপ, সাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
জকিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলার অভিযোগে যুবলীগ নেতা গ্রেফতার
খালিশপুরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন
যুব এশিয়া কাপজয়ীরা পাচ্ছেন আর্থিক পুরস্কার
আদমদিঘীতে বিএনপি কার্যালয় উদ্বোধন
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
গোপালগঞ্জে বিএনপির বহিস্কৃত ও আ. লীগ কর্মীদের নিয়ে বিএনপির ২ জেলা কার্যালয়