আমদানিতে ভারতের সুরক্ষাবাদ মনোভাব, মূল্য দেবে জনগণ

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২০ আগস্ট ২০২৩, ০৮:১২ পিএম | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ এএম

ভারতের অর্থনীতি ক্রমেই বাড়ছে। পশ্চিমা কোম্পানিগুলো দেশটিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে। কারণ চীন থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বলছে, তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠ অংশীদার। যদিও ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনার পাশাপাশি পশ্চিমাবিরোধী সম্মেলনগুলোতে অংশ নিচ্ছে। এদিকে জনসংখ্যার দিক থেকেও বিশ্বের এক নম্বর দেশ ভারত। এক্ষেত্রে চীনকে টপকে গেছে এশিয়ার এই উদীয়মান অর্থনীতির দেশটি। সম্প্রতি ভারত লিথিয়াম খনির সন্ধান পেয়েছে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধাতু, যা দিয়ে ব্যাটারি তৈরি করা হয়। বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে ভারতের অর্থনীতি কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে। অন্যদিকে সংকুচিত হচ্ছে চীনের অর্থনীতি। কিন্তু ভারতে এত বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও রয়েছে বেশ কিছু বাধা। এর মধ্যে অন্যতম হলো আমদানির ক্ষেত্রে রক্ষণশীল মনোভাব। অর্থাৎ আমদানি বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ অথবা বিধিনিষেধ জারি করা। রক্ষণবাদের ক্ষেত্রে ভারতের একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালে ভারত তার বাজার উন্মুক্ত করে। দেশটি ১৯৯০ সালে গড় শুল্ক ৮০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০০৮ সালে ১৩ শতাংশে নামিয়ে আনে। ২০১৪ সালে ভারতে ক্ষমতায় আসে নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুরু হয় ‘মেইক ইন ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইন’। আমদানিতে বাড়ানো হতে থাকে শুল্ক, যা বর্তমানে গড়ে প্রায় ১৮ শতাংশ। সম্প্রতি কম্পিউটার ও ল্যাপটপ আমদানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারত। এক্ষেত্রে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। ভারত সরকার মনে করে কর্মসংস্থান তৈরি ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আমদানি কমানো অপরিহার্য। বিশেষ করে চীন থেকে আমদানি কমানো। যুক্তরাষ্ট্রের মতো চীনকে সন্দেহের চোখে দেখে ভারত। সীমান্ত বিরোধ তো রয়েছে। তাছাড়া কয়েক দশক ধরে চীনের টানা প্রবৃদ্ধিতে দেশটি ঈর্ষান্বিত। যদিও ভারতের কৌশল এখনো ঠিকভাবে কাজ করছে না। ২০২২ সালে ভারতের জিডিপিতে উৎপাদনখাতের অবদান ছিল ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ, যা ২০১৫ সালের ১৫ দশমিক ৬ শতাংশের চেয়ে কম। একই সঙ্গে ১৯৬৭ সালের পর সর্বনিম্ন। ভারত চীনের কাছ থেকে ভুল শিক্ষা নিচ্ছে। মূলত গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে সমন্বিত হয়ে দ্রুত সমৃদ্ধ হয়েছে চীন। ভারতের মতো চীন কখনোই বৈশ্বিক বাণিজ্যে সন্দিহান ছিল না। যাইহোক চীনের সংকটময় অর্থনীতি রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদের সীমা প্রকাশ করতে শুরু করেছে। তাই অনুকরণীয় উদাহরণ হতে পারে দক্ষিণ কোরিয়া। ১৯৭০ সালের পর দেশটি দ্রুত উন্নতি করেছে। রপ্তানিমুখী উৎপাদনখাতে দেশটি প্রণোদনা দিয়েছে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। অর্থাৎ বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসেনি। দেশটি বুঝতে পেরেছিল মূলধনী পণ্যের প্রবাহ সীমাবদ্ধ করা মানে বিপরীত উৎপাদনশীলতা। কারণ সেরা ইনপুটগুলো আমদানি করলে উৎপাদকরা লাভবান হবে। ভারত কম্পিউটার আমদানির ওপর যে বিধিনিষেধ জারি করেছে সেটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ১৯৯০ সালের সংস্কারের আগে ভারত তার ‘লাইসেন্স রাজের’ জন্য বেশ পরিচিত ছিল। কারণ তখন সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো কিছুই বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না। উন্মুক্ত নীতি পরিহার করে ভারত যদি আবার সেই পুরোনো ব্যবস্থায় ফিরে যায় তাহলে অর্থনীতি থেকে সুবিধা নিতে ব্যর্থ হবে। ফলে এর মূল্য দিতে হবে দেশটির জনগণকে। দ্যা ইকোনমিস্ট।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

যুদ্ধবিরতির প্রতীক্ষায় গাজার ফিলিস্তিনিরা, নিহত ৪৭ হাজার ছুঁই ছুঁই
নাইজেরিয়ায় পেট্রোল ট্যাংকার বিস্ফোরণে নিহত ৭০
ভারতীয় ৭২ গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্য প্রচার
ইস্তানবুলে বিষাক্ত মদ পানে ৩৩ জনের মৃত্যু, আশঙ্কাজনক ৩২ জন
চিকি‍ৎসার নামে ২০০ রোগিনীকে যৌন হেনস্থা
আরও

আরও পড়ুন

বিএসএফ সাইন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে : লে. কর্নেল কিবরিয়া

বিএসএফ সাইন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে : লে. কর্নেল কিবরিয়া

যুদ্ধবিরতির প্রতীক্ষায় গাজার ফিলিস্তিনিরা, নিহত ৪৭ হাজার ছুঁই ছুঁই

যুদ্ধবিরতির প্রতীক্ষায় গাজার ফিলিস্তিনিরা, নিহত ৪৭ হাজার ছুঁই ছুঁই

এক সপ্তাহে মসজিদে নববীতে ৫৪ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়

এক সপ্তাহে মসজিদে নববীতে ৫৪ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়

ধর্ম নিয়ে তাচ্ছিল্যকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিলেন আজহারী

ধর্ম নিয়ে তাচ্ছিল্যকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিলেন আজহারী

‘মা’ দেশ স্বাধীন করেছি- মৃত্যু শয্যায় শহীদ সাব্বির

‘মা’ দেশ স্বাধীন করেছি- মৃত্যু শয্যায় শহীদ সাব্বির

নাইজেরিয়ায় পেট্রোল ট্যাংকার বিস্ফোরণে নিহত ৭০

নাইজেরিয়ায় পেট্রোল ট্যাংকার বিস্ফোরণে নিহত ৭০

লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা : মেঘমল্লার বসুর শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ

লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা : মেঘমল্লার বসুর শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ

চুয়াডাঙ্গার কুমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুল হককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম

চুয়াডাঙ্গার কুমারী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুল হককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম

বিএনপিতে কোন সন্ত্রাসীর ঠাঁই হবে না কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু

বিএনপিতে কোন সন্ত্রাসীর ঠাঁই হবে না কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু

মধ্যরাতে জাবির ছাত্রী হলের রুম থেকে লালন ভক্ত যুবক আটক

মধ্যরাতে জাবির ছাত্রী হলের রুম থেকে লালন ভক্ত যুবক আটক

মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে : তারেক রহমান

মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে : তারেক রহমান

ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পায় চেষ্টা করবো : মির্জা ফখরুল

ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পায় চেষ্টা করবো : মির্জা ফখরুল

অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবে না : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

টিসিবি’র এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা

টিসিবি’র এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ভোজ্যতেলের সরবরাহ নিশ্চিতে কারখানা পরিদর্শন ভোক্তা অধিকারের

ভোজ্যতেলের সরবরাহ নিশ্চিতে কারখানা পরিদর্শন ভোক্তা অধিকারের

গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা

গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা

রাজধানীর তিন পার্কে ভেন্ডারের চুক্তি : শর্ত ভঙ্গের তদন্তে ডিএনসিসি

রাজধানীর তিন পার্কে ভেন্ডারের চুক্তি : শর্ত ভঙ্গের তদন্তে ডিএনসিসি

বাবা-মায়ের পুরোনো বাড়িতে যাই : শফিকুল আলম

বাবা-মায়ের পুরোনো বাড়িতে যাই : শফিকুল আলম

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ১৫০ কোটি টাকা অনুদান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ১৫০ কোটি টাকা অনুদান

২০২৪ সালে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

২০২৪ সালে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা