ইউরোপের প্রথম ধূমপানমুক্ত দেশ হচ্ছে সুইডেন
২২ মার্চ ২০২৩, ০৭:৫৪ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৯ পিএম
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তার সদস্য দেশগুলোকে ২০৪০-এর মধ্যে তামাকমুক্ত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেও সুইডেন সেই লক্ষ্য অর্জন করতে যাচ্ছে ২০২৩ সালের মধ্যেই। কোনো দেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ধূমপানের হার ৫ শতাংশের নীচে নেমে এলে ইউরোপীয়ান নেটওয়ার্ক ফর স্মোকিং অ্যান্ড টোব্যাকো প্রিভেনশন (ইএনএসপি) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওই দেশকে ধূমপানমুক্ত দেশ হিসাবে বিবেচনা করে। সুইডেনে মাত্র ১৫ বছরে ধূমপায়ীর সংখ্যা ১৫ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। সুইডেনের এই অর্জনের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তামাকের ক্ষতিহ্রাস সহায়ক পণ্যসমূহ। যেগুলোর কর সুইডেনে সিগারেটের তুলনায় মাত্র ৮ থেকে ৩৬ শতাংশ যার ফলে ভেপ, ই-সিগারেট, এইচটিপি, ¯œুস ইত্যাদি ক্ষতিহ্রাস সহায়ক পণ্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য। তাই যেসব ধূমপায়ী ধূমপান ছাড়তে চান তাদের জন্য বিকল্প পণ্যগুলো বেছে নেওয়া খুবই সহজ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য কোনো দেশ সুইডেনের এই অর্জনের কাছাকাছিও নেই। লক্ষ্যমাত্রার ১৭ বছর আগেই চলতি ২০২৩ সালের মধ্যেই সুইডেন ঐতিহাসিক এই মাইলফলক কিভাবে অর্জন করতে যাচ্ছে এই বিষয়টি গত ১৪ মার্চ একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সেমিনারে ‘অ্যা রোডম্যাপ টু স্মোক-ফ্রি সোসাইটি’ শিরোনামযুক্ত একটি কৌশলপত্র উপস্থাপন করে। এই প্রতিবেদন তৈরিতে যুক্ত ছিলেন কার্ল ফাগারস্ট্রোম, যিনি তামাক নিয়ন্ত্রণে তার অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে "ডাব্লিউ এইচ ও মেডেল" অর্জন করেন, ড. ডিলন হিউম্যান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তিনজন সাবেক মহাপরিচালক ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন-এর উপদেষ্টা এবং ড. আন্ডার্স মিল্টন যিনি ওয়ার্ল্ড মেডিকেল এসোসিয়েশন এর প্রাক্তন সভাপতি ও সুইডেনের বর্তমান স্নুস কমিশনের প্রধান।
সুইডেনের মতো ধূমপান ত্যাগ করো জীবন বাঁচাও, এই গবেষণার অন্যতম লেখক এবং বিশেষজ্ঞ অ্যান্ডার্স মিল্টন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “সুইডেন যে প্রক্রিয়া দ্বারা তামাক নিয়ন্ত্রনে সফল হয়েছে, অন্য সব ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে যদি তা অনুসরণ করা হয় তাহলে আগামী দশকের মধ্যে শুধু ইউরোপেই ৩৫ লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।”
সুইডিশ মডেলটি তামাক নিয়ন্ত্রনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল সুপারিশগুলোকে অনুসরণ করার পাশাপাশি ধূমপান ছাড়তে তামাকের ক্ষতিহ্রাস সহায়ক পণ্যে যেমন: ভেপ/ই-সিগারেট, স্নুস (এক প্রকার নিকোটিন পাউচ), এইচটিপি ইত্যাদি - এর অনুমোদন দেয়। গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মতে সুইডেনের মডেল একটি দেশকে ধূমপানমুক্ত করার একটি অত্যন্ত সফল কৌশল যা অন্যান্য দেশেও অনুসরণ করা উচিত।
সুইডিশ মডেল প্রণয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মতে, যদি সুইডেনের মতো অন্যান্য দেশও তামাকের ক্ষতিহ্রাস সহায়ক পণ্যগুলোর জন্য পৃথক কর হার নির্ধারণ করে জনগণের জন্য সহজলভ্য করা গেলে দ্রুতই একটি তামাকমুক্ত বিশ্ব গড়া সম্ভব হবে। কেননা তখনি ধূমপান ছাড়তে ইচ্ছুকদের জন্য নিরাপদ বিকল্পগুলো সাশ্রয়ী হবে।
সুইডেনের অর্থমন্ত্রী মিকাইল ড্যামবার্গ নিজেই এক বিবৃতিতে বলেছেন, "যেই পণ্যের ক্ষতি বেশি সেই পণ্যের উপর আরোপিত কর বেশি হবে এইটাই স্বাভাবিক, এই কারণেই সিগারেটের তুলনায় ভেপ, স্নুস ইত্যাদি পণ্যের কর সুইডেনে কম"
প্রতিবেদনে আরো তুলে ধরা হয় ই-সিগারেট, প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর। একজন ধূমপায়ীর জন্য ধূমপান চালিয়ে যাওয়ার চেয়ে নিয়মিত সিগারেট থেকে ই-সিগারেট বা নিকোটিনের প্যাচ পাল্টানো অনেক ভালো।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় সুইডেনে তামাকজনিত রোগের হার সর্বনিম্ন এবং ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ৪১ শতাংশ কম।
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা সেমিনারে যে দেশগুলি সুইডিশ মডেল অনুসরণে ধূমপানমুক্ত দেশ গড়তে চায় তাদের জন্য কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছেন। তারা তামাকের ক্ষতিহ্রাস সহায়ক পণ্যগুলোকে কম ক্ষতিকারক হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার পাশাপাশি ধূমপায়ীদের সিগারেটের পরিবর্তে ভেপ, ই-সিগারেট, এইচটিপি, ইত্যাদি বিকল্প পণ্য বেছে নিতে উৎসাহিত করার পরামর্শ দিয়েছেন। একই সাথে প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় নিরাপদ বিকল্পগুলিকে আরও সহজলভ্য করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?
তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল
অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার
'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল
অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি
নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু
বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন
মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ
যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়
‘হাই অ্যালার্টে’ লন্ডন, মার্কিন দূতাবাসের সামনে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ