সাবমেরিন নিখোঁজ: পাওয়া গেছে মৃদু শব্দ
২১ জুন ২০২৩, ১০:০৮ এএম | আপডেট: ২১ জুন ২০২৩, ১০:০৮ এএম
আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে বিলিয়নিয়ারসহ পর্যটকবাহী সাবমেরিন নিখোঁজ হয়েছে। এটি খুঁজে পেতে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে) সাবমেরিন হারিয়ে যাওয়া এলাকায় একটি মৃদু শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন অনুসন্ধানকারীরা।
কানাডার উপকূল থেকে যাত্রার সময় সাবমেরিনটিতে ৯৬ ঘণ্টা অক্সিজেন ছিল। সেই ক্রমেই কমে আসছে। স্থানীয় সময় রোববার ভোট ৬টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রোববার বিকাল ৪টা) সাবমেরিনটি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের দিকে যাত্রা করে। ২১ ফুট দীর্ঘ সাবমেরিন টাইটানকে খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
মিলেছে শব্দ
অনুসন্ধানে অংশ নেওয়া একটি কানাডিয়ান এয়ারক্রাফ্ট সাবমেরিনটির অদৃশ্য হয়ে যাওয়া এলাকায় ৩০ মিনিটের ব্যবধানে একটি মৃদু শব্দ শুনতে পেয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে রোলিং স্টোন প্রকাশিত হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের একটি ইমেইলে বিমানে থাকা বিশেষজ্ঞ সোনোবুয়েরা 'দুর্দশার অবস্থানের' কাছাকাছি শব্দগুলো শনাক্ত করেছেন।
অনুসন্ধানে আরসিসি হ্যালিফ্যাক্স একটি পিএইট পোসেইডন চালু করেছে। এটি বাতাস থেকে পানির নিচে শব্দ শনাক্ত করতে পারে। ডিএইচএস মেমোতে লেখা হয়েছে, 'দুর্দশার অবস্থানের কাছাকাছি একটি শব্দ শনাক্ত করা গেছে।'
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়েছে, পিএইচ প্রতি ৩০ মিনিটে ওই এলাকায় একটি ধাক্কার শব্দ শুনতে পেয়েছে। এর চার ঘণ্টা পরে সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। এখনও ধাক্কার শব্দ শোনা যাচ্ছে।'
তবে কেন বা কিসের থেকে এমন শব্দ আসতে পারে সেটি মেমোতে প্রকাশ করা হয়নি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে ভ্রমণ ও গবেষণা গ্রুপ, এক্সপ্লোরার্স সোসাইটির সভাপতির কাছ থেকেও একটি মেইল এসেছিল। সেখানেও শব্দগুলো রিপোর্ট করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়, সাইটে স্থানীয় সময় দুপুর দুইটায় একটি ট্যাপিং শব্দ শনাক্ত করেছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে ক্রুরা জীবিত এবং সংকেত দিতে পারেন।
আর কতক্ষণ সাবমেরিনে অক্সিজেন মিলবে?
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে দু'দিন আগে নিখোঁজ হওয়া ডুবোজাহাজের জন্য অনুসন্ধান আরও তীব্র করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার জাহাজ এবং বিমানগুলো অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার আগে পাঁচজনসহ সাবমেরিনকে খুঁজে পেতে মরিয়া চেষ্টা করছে।
রোববার বিকেল চারটায় (কানাডার সময় ভোর ছয়টা) সাবমেরিনটি পানির নিচে যাত্রা শুরু করে। সেই সময়ে এতে ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন মজুত ছিল। যদি সব ঠিক থাকে তাহলে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটা (কানাডার সময় ভোর ছয়টা) পর্যন্ত অক্সিজেন থাকবে। এরপর সেটি বন্ধ হয়ে যাবে। এর আগে সাবমেরিনটি উদ্ধার করা না গেলে ভয়াবহ পরিণতী ঘটতে পারে পর্যটকদের।
অনুসন্ধান কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?
বোস্টনের ফার্স্ট কোস্ট গার্ড ডিস্ট্রিক্টের ক্যাপ্টেন জেমি ফ্রেডেরিক বলেন, হারিয়ে যাওয়া টাইটান সাবমার্সিবল হিসাবে পরিচিত। তিনি যোগ করেছেন যে, ডুবো রোবটসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এটির অনুসদ্ধান করা হচ্ছে। তবে সাবমেরিনটি খুঁজে পাওয়া গেলেও যদি বেশি নিচে থাকে তাহলে সেটি উদ্ধার করা সহজ হবে না বলেও মানছেন তিনি।
মার্কিন সামরিক বাহিনী থেকে তিনটি সি-১৩০ বিমান এবং তিনটি সি-১৭ পরিবহন বিমান অনুসন্ধানে সহায়তা করছে। কানাডিয়ান সামরিক বাহিনী বলেছে যে, তারা একটি টহল বিমান এবং দুটি সারফেস জাহাজ সরবরাহ করেছে।
রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার (যিনি অনুসন্ধানের সমন্বয়ে সহায়তা করছেন) বলেছেন যে, 'আমাদের কাছে এমন সরঞ্জাম নেই যা এতটা নিচে গিয়ে জরিপ করতে পারে। এখানে প্রচুর ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, তাই এটি শনাক্ত করা কঠিন হবে। এই মুহূর্তে আমরা এটি শনাক্ত করার জন্য পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছি।'
রয়্যাল নেভি রিয়ার অ্যাডমিরাল ক্রিস প্যারি আটলান্টিকের তলদেশকে 'মহাকাশের' সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, 'মহাসাগরের নিচে সম্পূর্ণ অন্ধকার এবং প্রচুর কাদা রয়েছে। সেখানে আগে থেকেই অনেক ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। অনুসন্ধানের সময় আপনি সার্চলাইট দিয়ে সর্বোচ্চ ২০ ফুট দেখতে পারেন। এছাড়া সেখানে খুব শক্তিশালী সমুদ্র স্রোত রয়েছে, যা এই কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে।'
taitan submarin search
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ জিম বেলিংহাম বলেন, ডুবোজাহাজের জন্য তিনটি সম্ভাব্য অবস্থান রয়েছে। একটি সম্ভাবনা হলো বৈদ্যুতিক ব্যর্থতা বা অন্য কোন দুর্ঘটনার পরে এটি সমুদ্রের পৃষ্ঠে ভাসতে পারে; আরেকটি হলো এটি পানির স্রোতে প্রবাহিত হচ্ছে- সাগরের মাঝামাঝি যেকোনও জায়গায়; অথবা এটি সমুদ্রের তলায় কোনো কিছুর সঙ্গে জট লেগে ডুবে আছে।
কারা ছিলেন?
প্রাথমিকভাবে ওই সাবমেরিনে থাকা পর্যটকদের সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও পরে জানা যায়, এটিতে পাইলট এবং একজন ক্রু ছাড়াও আরও তিনজন পর্যটক ছিলেন। পর্যটকদের মধ্যে আছেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং। তিনি একটি অ্যাভিয়েশন ফার্মের মালিক। এর আগে হার্ডিং মহাকাশেও পর্যটক হিসেবে ভ্রমণ করেছেন হামিশ। এই মিশনে যাওয়ার আগে রোববার নিজের ইন্সটাগ্রামে নিজেই সেই খবর দিয়েছিলেন।
এছাড়া সাবমেরিনটিতে পাকিস্তানি বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ ছিলেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তার পরিবার জানিয়েছে, তাদের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য তারা জানেন না।
সূত্র: ডেইলি মেইল, ইউএসএ টুডে ও সিএনএন
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সীমান্তে বাংলাদেশি নিহত : পতাকা বৈঠকে বিএসএফকে বিজিবির কড়া প্রতিবাদ
নিকোলাস মাদুরোর তৃতীয় শপথ, রাজনৈতিক দমন-পীড়নের আশঙ্কা
সুপার কাপ ফাইনালে বার্সা-রিয়াল মহারণ
কার সাথে সংসার করছেন জয়া?
২৪ বিপ্লবের শহীদদের মতো বিডিআরের নিহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
টানা চার ম্যাচে রোনালদোর গোল,নতুন বছর জয় দিয়ে শুরু নাসেরের
শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র দেওয়া সম্ভব নয় : উপদেষ্টা মাহফুজ
টঙ্গীবাড়ীতে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে জখম
জার্মানিতে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন
চীনে ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এনআইডি : আইন পর্যালোচনায় রোববার বৈঠকে বসছে ইসি
কুমিল্লায় জনসম্মুখে শিশুকে দুগ্ধপান
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত লড়াই
টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর কথা ভাবছেন কিয়ার স্টারমার
আগুনে পুড়ল ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ, চলছে লুটপাট
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল, প্রবল বাতাসে পরিস্থিতি ভয়াবহ
কাতারের আমিরের উদ্দেশে ফেসবুকে যা লিখলেন তারেক রহমান
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত আরও ৭০ ফিলিস্তিনি, মানবিক বিপর্যয় অব্যাহত
নারী শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুমে ভিডিও ধারণ, যুবক আটক
শেখ হাসিনার সাথে হত্যা মামলায় জড়িত পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মোজাম্মেল আটক