মতপ্রকাশের খেসারত, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের মুখে ফিলিস্তিনি ছাত্র মাহমুদ খলিল
১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫০ এএম | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৭ এএম

যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সাংবিধানিক অধিকার হলেও, বাস্তব চিত্র যেন দিন দিন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে ভিন্নমত পোষণকারীদের ওপর চাপ বাড়ছে। সম্প্রতি এরই এক করুণ উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল। যুক্তরাষ্ট্রের এক অভিবাসন আদালতের রায়ে তাকে দেশ থেকে তাড়ানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে দেশজুড়ে।
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে লুইজিয়ানার এক অভিবাসন আদালত মাহমুদ খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের রায় দেন। আদালতের যুক্তি, খলিলের উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে ‘গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে’। অথচ খলিল ছিলেন একজন বৈধ মার্কিন বাসিন্দা এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। মূলত গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে সক্রিয় ভূমিকার কারণেই তাকে টার্গেট করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। তার আইনজীবী জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং অভিবাসন আইনের অপব্যবহার।
মার্চের ৮ তারিখে নিউইয়র্কে তার ইউনিভার্সিটি পরিচালিত আবাসিক ভবনের লবিতে মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে পাঠানো হয় লুইজিয়ানার জেনা শহরের একটি অভিবাসন ডিটেনশন সেন্টারে। মাহমুদের স্ত্রী একজন মার্কিন নাগরিক এবং তিনি গর্ভবতী। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত প্রথম সংশোধনীতে দেওয়া মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সরাসরি লঙ্ঘন। আদালতে আইনজীবী ভ্যান ডার হাউট বলেন, “এটা ছিল ন্যায়বিচারকে তামাশায় পরিণত করার দৃশ্য।”
খলিল একজন ফিলিস্তিনি, যার পরিবার ১৯৪৮ সালে তিবেরিয়াস শহর থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ হয়ে সিরিয়ায় আশ্রয় নেয়। তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সক্রিয় শিক্ষার্থী, যিনি গাজায় হামলার প্রতিবাদে ছাত্র আন্দোলনে মুখপাত্র হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তিনি কোনো আইন ভাঙেননি বা সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়াননি। কিন্তু ইসরায়েলের সমালোচনায় সরব হওয়ায় তাকে হামাসপন্থী বলে চিহ্নিত করা হয়, যদিও কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
মাহমুদ খলিলের ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে, যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এখন আর সবার জন্য সমান নয়। বিশেষ করে যারা ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেন, তাদের জন্য এই অধিকার ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। যদিও নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সির ফেডারেল আদালত আপিল চলাকালীন খলিলকে বহিষ্কার না করার নির্দেশ দিয়েছে, তারপরও এই ঘটনা বৃহৎ পরিসরে মানবাধিকারের গুরুতর প্রশ্ন তোলে। এটি কেবল এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নয়—বরং মতপ্রকাশ, মানবতা ও ন্যায়ের ভিত্তিকে চ্যালেঞ্জ করার একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

মসজিদে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় আশুলিয়ায় সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন

২৭ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

র্যাবের মামলার আসামি পুলিশের শুভাকাঙ্খি হয়ে ধরা ছোঁয়ার বাইরে : ফজলু

মার্চ ফর ইন্ডিয়ান মুসলিম’ আয়োজনের আহ্বান ভারতে মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ বাড়ছে বাংলাদেশে
৬৪ দলের বিশ্বকাপ চান না কনকাকাফ প্রধান

ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে বর্ণিল আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন

জকিগঞ্জে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে পালালেন স্ত্রী, স্বামীর আত্মহত্যা

আনোয়ারায় ৪ বৃদ্ধকে মারধরের অভিযোগ গ্রাম-পুলিশের বিরুদ্ধে

তারেক রহমান: নতুন প্রজন্মের জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বের প্রতীক - ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. একেএম শামছুল ইসলাম, পিএসসি, জি (অব.)

বিশ্বনাথে বাক প্রতিবন্ধি কৃষকের ৪টি গরু চুরি

‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ স্বীকৃতির জন্য নতুন অনুমোদন লাগবে: ইউনেস্কো

সরবরাহ কমে যাওয়ায় হিলিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা

বাংলাদেশে মানবিক সহায়তা বাড়িয়েছে সুইডেন

নাঙ্গলকোটে পরীক্ষায় নকল সরবরাহের দায়ে এক যুবকের ৬ মাসের কারাদন্ড, ১৫ পরীক্ষার্থী বহিস্কার

আদালত অবমাননার অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে তদন্তের হুমকি বিচারকের

ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন দেখছে ইন্টার

১১ তলা থেকে পড়ে ফুটবলারের মৃত্যু

জনতা ব্যাংকের নতুন ডিএমডি মো. নজরুল ইসলাম

চাকরি হারানোর ভয় পাচ্ছেন না আনচেলত্তি

আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক চেয়ারম্যান’স অ্যাওয়ার্ড প্রদান