গাজায় ইসরায়েলি হামলায় স্বেচ্ছাসেবী ৬ ভাইসহ নিহত আরও ৩৭ ফিলিস্তিনি
১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৪ এএম | আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০০ এএম

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন করে চালানো বোমাবর্ষণে একদিনেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৭ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা এক পরিবারের ছয় ভাই। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই এলাকায় প্রতিদিন যেন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকে আছেন, আর হাসপাতালগুলোও আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ ও নিন্দা সত্ত্বেও গাজার ওপর এই নির্বিচার হামলা চলছেই।
গত ১৮ মার্চ ২০২৫ থেকে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যার পেছনে কারণ হিসেবে দেখানো হয় হামাসের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার ইস্যুতে মতানৈক্য। কিন্তু বাস্তবে এই অভিযানে নিহত হচ্ছেন অসহায় সাধারণ মানুষ, যাদের সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সোমবার (১৪ এপ্রিল) আল জাজিরা জানায়, রোববার সারা দিনে গাজা জুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৭ জন, যাদের মধ্যে ছয় ভাই ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার বিতরণ করছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, গাজার আল-আহলি আরব হাসপাতালে ইসরায়েলি বোমা হামলায় এক শিশুর মৃত্যু হয়, কারণ হাসপাতালটি চিকিৎসা সেবা দিতে পারছিল না। এই হামলার ফলে আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ৯৪৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ১৫৬ জনে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টাতেই আহত হয়েছেন আরও ১১১ জন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে আছেন, যাদের কাছে পৌঁছানো এখনো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন এই অভিযানেই মারা গেছেন ১ হাজার ৫৭৪ জন, আহত হয়েছেন ৪ হাজার ১১৫ জন। উল্লেখ্য, এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করেছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। এছাড়া এই অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। একইসঙ্গে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলাও চলমান রয়েছে।
এই মুহূর্তে গাজার পরিস্থিতি শুধুই একটি আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব নয়, বরং এটি মানবতার এক ভয়াবহ পরীক্ষা। শিশু, মা, চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবী— কেউ রক্ষা পাচ্ছে না এই আগ্রাসন থেকে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের দায়িত্ব এখন নিরপেক্ষ মানবিক অবস্থান থেকে এই সহিংসতা বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখা। গাজার জনগণের পাশে দাঁড়ানো মানে শুধু একটি ভূখণ্ড রক্ষা নয়, বরং মানবতার মৌলিক ন্যায্যতা রক্ষা করা। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার ও জবাবদিহিতা এখন সময়ের দাবি। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

পাবনায় চররে জমি দখল নিয়ে সংর্ঘষে গুলবিদ্ধি ৫

আইএমএফের ঋণের কিস্তি নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ

মার্কিন উচ্চশিক্ষার চরম পতন

পরিশুদ্ধ-পরিবর্তিত বিএনপিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে হবে-সাহাদাত হোসেন সেলিম

গাজায় ইহুদী হামলায় ৬০ ফিলিস্তিনি শহীদ

জাতিসংঘের দুটি আঞ্চলিক সংস্থায় নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ

রাজনৈতিক দল গঠন এখন ছেলেখেলা!

সাভারে অজ্ঞাত নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

নর্থ সাউথে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ

কোরআনবিরোধী নারী সংস্কার প্রস্তাবনা দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ

পাকিস্তান-ভারতকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখাতে বলল জাতিসংঘ

‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

নারী কমিশনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে

তারেক রহমান ‘নিয়তির সন্তান’

অতিদারিদ্র্য বৃদ্ধির শঙ্কা

২৪ ঘন্টায় গ্রেফতার ১০৭২ আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা গ্রেফতার

পারভেজ হত্যা মামলায় প্রধান আসামি মেহেরাজ রিমান্ডে

আ.লীগের ধর্ম বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সন্তোষ কুমার রিমান্ডে

চট্টগ্রামে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ মহিলার মৃত্যু

রাজধানীর প্রধান সড়কে ব্যাটারি রিকশা বন্ধের দাবি মোটরসাইকেল চালকদের