মানব-বহন উপযোগী গ্লাইডার নির্মাণকারী প্রথম ব্যক্তি
১০ মার্চ ২০২৩, ০৮:২০ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৯ পিএম
আব্বাস ইবনে ফিরনাস ছিলেন বার্বার বংশদ্ভূত আন্দালুসিয় মুসলিম পলিমেথ বা বহু শাস্ত্র- বিশারদ। তাঁর আসল নাম আব্বাস আবু আল কাসীম ইবনে ফিরনাস ইবনে ইরদাস আল তাকুরিনি। তিনি ছিলেন একজন আবিষ্কারক, প্রকৌশলী, উড্ডয়ন বিশারদ, চিকিৎসক, আরবি সাহিত্যের কবি এবং আন্দালুসিয় সুরকার। তাকে বলা হয় বিমান এবং বিমানের পিতা। ইবনে ফিরনাস প্রথম মানব বহনকারী গ্লাইডার তৈরি করেছিলেন এবং দু’টি সফল উড়ানের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি আন্দালুসের ইযন-রেন্ড ওন্ডায় (বর্তমান স্পেনের রন্ডা) ৮১০ খ্রীষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। কর্ডোবা আমিরাতে তিনি বসবাস করতেন। উড্ডয়নের প্রচেষ্টার জন্য তিনি সমধিক পরিচিত। চাঁদে ‘ইবনে ফিরনাস গহ্বর’ টি ইবনে ফিরনাসের নামে নামকরণ করা হয়েছে।
ইবনে ফিরনাস আল-মাকাতা নামক জলঘড়ির নকশা তৈরী করেছিলেন। এছাড়াও তিনি স্বচ্ছ কাঁচ নির্মাণের জন্য যন্ত্রের নকশাও প্রণয়ন করেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানের জন্য তিনি প্ল্যানিস্ফিয়ার নামক যন্ত্র ও পাঠের উপযোগী লেন্স প্রস্তুত করেন। গ্রহ নক্ষত্রের ঘূর্ণন প্রদর্শনের জন্য কার্যকর মডেলও তিনি প্রস্তুত করেন। তাঁর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হল পাথরের স্ফটিককে কাটার প্রক্রিয়া। তাঁর এই আবিষ্কারের ফলে স্পেনের কোয়ার্টজ কাটার জন্য মিশরের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস পায়। ইতিপূর্বে স্পেন এই ব্যাপারে মিশরের উপর অত্যন্ত নিভরশীল ছিল। নিজের বাড়ির একটি কক্ষে নক্ষত্র, মেঘ,বজ্র, আলোকপাত এসব দেখার ব্যবস্থা করেন যা তার ভূগর্ভস্থ গবেষণাগারে যান্ত্রিক পদ্ধতির প্রয়োগের মাধ্যমে করা হয়েছিল। আরমেন ফিরমানকে আব্বাস ইবন ফিরসাসের নামের ল্যাটিনরূপ বলে ধারণা করা হয়। ফিরনাস তার কাজের দ্বারা অণুপ্রাণিত হয়েছিলেন বলে কেউ কেউ মত প্রকাশ করেন। আকাশে উড়ার প্রচেষ্টার জন্য তিনি অধিক পরিমাণে পরিচিত। বলা হয় তিনি একজোড়া পাখার মাধ্যমে আকাশে উড়েছিলেন। এই বিষয়ে একমাত্র মরোক্কান ইতিহাসবিদ আহমেদ মোহাম্মদ আলমাক্কারীর (আনুমানিক ১৫৭৮-১৬৩২) লেখায়। তিনি প্রায় সাত শতাব্দী পরে এই ঘটনা লিপিবদ্ধ করেন। আলমাক্কারীর লেখা অনুযায়ী : ‘তার অন্যান্য আগ্রহ উদ্দীপক পরীক্ষাগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, তিনি উড়ার চেষ্টা করেছিলেন। এজন্য তিনি নিজেকে পালকে আবৃত করে নেন এবং শরীরে একজোড়া পাখা যুক্ত করেন। এরপর উচুতে উঠে শুন্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যেসব নির্ভরযোগ্য লেখক এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। তাদের মতে তিনি প্রায় পাখির মতই গ্রহণীয় মাত্রার দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হন। উড্ডয়নের স্থানে অবতরণের সময় তিনি পিঠে মারাত্মকভাবে আঘাত পান। এর কারণ, পাখিরা অবতরণের সময় লেজের ব্যবহার করে যা তিনি করেননি।’বলা হয় যে আলমাক্কারী তার ইতিহাসে এমন তথ্য লিখেছেন যার প্রথম দিককার সূত্রগুলো পাওয়া যায় না।
কিন্তু ফিরনাসকে নিয়ে ৯ম শতকে লেখা কর্ডোবার আমির প্রথম মুহাম্মদের রাজকবি মুমিন ইবনে সাইদের একটি কবিতা পাওয়া যায়। এতে বলা হয়েছে : ‘তিনি ফিনিক্সের চেয়ে দ্রুত উড়েন যখন তিনি শকুনের পালকে আবৃত হন।’ তৎকালীন যুগের টিকা থেকে অন্যান্য সূত্রগুলোতে এ বিষয়ে উল্লেখ নেই। ধারণা করা হয় যে তিনি ইবনে ফিরনাসের গ্লাইডারে উড়ার চেষ্টা একাদশ শতকে ইংল্যান্ডের ইলমার অব মালমেসবুরিকে অণুপ্রাণিত করে। তবে এই বক্তব্যকে সমর্থন করার মত কোনো প্রমাণ নেই। এই মহান মুসলিম মনিষীর জীবনাবসান ঘটে ৮৮৭ খ্রীষ্টাব্দে।
বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আইপিএল নিলামে নাম না তোলার ব্যাখ্যা দিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার
‘চিকিৎসা নিতে করাচি যান, ভারতে নয়’, বাংলাদেশিদের ভিসা বাতিলের দাবি শুভেন্দুর
বৃষ্টির কবলে দ. আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্ট
ইসকন দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে - বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন
আওয়ামী নেতাদের নির্দেশে চট্রগ্রামে নৈরাজ্য সৃষ্টির ব্যর্থ চেষ্টা
সাত কলেজ অনার্স প্রথম বর্ষের কালকের পরীক্ষা স্থগিত
নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের ১২ নেতাকর্মীর পদত্যাগ কমিটি বাতিলের দাবি
মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে মহা জট, ফড়নবিশকে জরুরি তলব দিল্লিতে
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান ফখরুল ইসলামের
আইনজীবী সাইফুল হত্যাকারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বহিষ্কার
আইনজীবী হত্যার অবিলম্বে বিচার চাই -ইসলামী আন্দোলন ঢাকা জেলা দক্ষিণ
ফ্যাসিবাদের দোসর উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন’কে নিষিদ্ধ করা হোক আলহাজ হাফিজ সাব্বির আহমদ
ভারতের প্রেসক্রিপশনে ইসকন বাংলাদেশে অশান্তি করছে: হাসনাত
ডোমিনোজ পিৎজা এখন মহাখালীতে
বিএনপি জনগণের দল, 'ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন দিন' অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া
ইসকন ভারতের হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত দেশব্যাপী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু
ইসকনের মিথ্যাচার ও ভারতীয় মিডিয়ার সিন্ডিকেট নিউজ
ঋণগ্রহীতা মারা যাওয়ার পর পাওনাদার তার পাওনা মাফ করে দেওয়া প্রসঙ্গে।
সংস্কারের প্রাসঙ্গিকতা