সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনচিত্র
১৫ মার্চ ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪, ১২:০৮ এএম
শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় (১৯০১-১৯৭৬) কল্লোল যুগে’র অন্যতম প্রধান লেখক। বাংলা সাহিত্যের বেশ কয়েকটি কালজয়ী উপন্যাসের প্রণেতা শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়। কুমারডুবি কয়লাখনিতে কাজ করার সময়েই তিনি গল্প ও উপন্যাস রচনায় সিদ্ধহস্ত হন। তাঁর রচনায় কয়লাখনির শ্রমিকদের শোষিত জীবনের প্রতিচ্ছবি প্রতিবিম্বিত হয়েছে। কিছুদিন পর তিনি কলকাতায় আসেন এবং সেখানে তিনি প্রখ্যাত সাহিত্যিক-অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, প্রেমেন্দ্র মিত্র, প্রবোধকুমার স্যানাল, পবিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনেশরঞ্জন দাস প্রমুখের সাহচর্য লাভ করেন এবং ‘কালিকলম’ ও ‘কল্লোলগোষ্ঠী’র লেখক শ্রেণিভূক্ত হন। এক পর্যায়ে তিনি এ সাহিত্য আন্দোলনের সামনের সারির নেতৃত্বের অধিকারী হয়ে ওঠেন।
শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় ১৫০টির মত উপন্যাস-গল্পের অধিকাংশটিতে কয়লাশ্রমিক ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনাচারের সার্থক বর্ণনা কৌশলের গুণে বাংলা সাহিত্যে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি শ্বশুরের সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত জোড়াজোনাকি কয়লাখনিতে যাতায়াত ও কুলিমজুর সরবরাহ করতেন। এর সুবাধে কুলিমজুরদের খোঁজে সাঁওতাল পরগণার বিভিন্ন অঞ্চলের শোষিত শ্রমিক-মজুরদের খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল তাঁর। ত্রিশোত্তর বাংলা কথাসাহিত্যে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কল্লোল যুগ গ্রন্থে স্মৃতিচারণ করেছেন এভাবে : ‘একদিন দু’জনে, আমি আর প্রেমেন সকালবেলা হরিশ মুখার্জি রোড ধরে যাচ্ছি, দেখি কয়েক রশি সামনে গোকুল নাগ যাচ্ছে, সঙ্গে দু’জন ভদ্রলোক, লম্বা চুল ও হাতে লাঠি গোকুলকে চিনতে দেরি হয়না কখনো। ... কিন্তু গোকুলের সঙ্গে ওই দু’জন সুচারুদর্শন ভদ্রলোক কে ? একজন ধীরাজ ভট্টাচার্য, আরেকজন? ‘ইনি শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়।’ সানন্দ বিস্ময়ে তাকালাম ভদ্রলোকের দিকে। বাংলা সাহিত্যে ইনিই সেই কয়লাকুঠির আবিষ্কর্তা। নিঃস্ব রিক্ত বঞ্চিত জনতার প্রথম প্রতিনিধি? বাংলা সাহিত্যে যিনি প্রথম নতুন বস্তু, ভাষাভঙ্গি এনেছেন? হাতির দাঁতের মিনারচূড়া ছেড়ে যিনি প্রথম এসেছেন ধূলিম্লান মৃত্তিকার সমতলে? বিষণœ মমতায় চোখের দৃষ্টিটা কোমল।’ (অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, কল্লোল যুগ, পৃ.-১৬)।
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের এ বক্তব্যের মাধ্যমে শৈলজানন্দ সম্পর্কে সম্যক ধারণা করা খুব একটা অসম্ভব নয়। তিনি অনেকগুলো উপন্যাস রচনা করেছেন। তাঁর উপন্যাসগুলোর মধ্যে অন্যতম বধূবরণ (১৯৩১) এবং কয়লাকুঠির দেশ (১৯৫৮)। উপন্যাসসমূহ স্থান, কাল, ভাষা পরিবেশ উপস্থাপনার গুণে দেদীপ্যমান। তবে তাঁর কয়লাকুঠির দেশ’ই সবচেয়ে বাস্তবধর্মী ও জনপ্রিয় উপন্যাস। সমকালীন সাহিত্যে ‘কয়লাকুঠির দেশ’-এর সাহিত্যিক মূল্য ঈর্ষণীয় সাফল্যে দীপ্যমান।
শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের ‘কয়লাকুঠির দেশ’ একটি আঞ্চলিক উপন্যাস। উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যেও অভিমুখকে বদলে দিয়েছিল। কয়লাকুঠির দেশ ১৯২২ সালে প্রথম বসুমতি পত্রিকায় প্রকাশের পর বাংলা সাহিত্য জগতে রাতারাতি তাঁর নাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। কয়লাকুঠির দেশে একটি আঞ্চলিক উপন্যাসের সব গুণাবলি, বৈশিষ্ট্য ও যাবতীয় উপাদান এখানে উপস্থিত। এ সব উপাদান ও বৈশিষ্ট্য কাহিনিতে গতি এনেছে। এ উপন্যাসের মাধ্যমে বাঙালি পাঠক প্রথম জেনেছিল আসানসোল, রানিগঞ্জ অঞ্চলের কয়লাখনিতে কর্মরত কুলিকামিন, সাঁওতাল, বাউড়িদের নিয়তিতাড়িত মর্মান্তিক জীবনচিত্র, যাদের কথা এর আগে বাংলা সাহিত্যে আর কেউ তুলে ধরেননি। নামহীন অন্ত্যজ ও অবজ্ঞাত এই মানুষগুলিকে নিয়ে যে কালজয়ী সাহিত্য রচনা সম্ভব তা শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় প্রমাণ করে দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে গোপিকানাথ রায়চৌধুরী বলেছেন : ‘কয়লাকুঠির গল্পগুলি বাঙালি মধ্যবিত্ত পাঠক সমাজের একঘেয়ে প্রথাবদ্ধ জীবনে এক অনাস্বাদিত মুক্তির সুখস্পর্শ বহণ করে আনল। এক সজীব সতেজ জীবনরসের অফুরন্ত স্রোত প্রবাহিত করে দিল বাংলা কথাসাহিত্যে।’ (গোপিকানাথ রায়চৌধুরী, দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তীকালীন বাঙলা কথাসাহিত্য, পৃ.-২২৫)।
কয়লাকুঠির দেশে’র কাহিনিতে দেখা যায়, সেখানকার গ্রীষ্মকাল নিদারুণ। সেখানকার মানুষেরাই কেবল তা অনুভব করে। মাথার উপর প্রচ- সূর্যের তাপ, পায়ের নিচের মাটি তেতে আগুন- এমন অবস্থায় মানুষগুলি বর্ষাকালের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। কিন্তু সেবার বর্ষার দেখা নেই। চারিদিকে তাই দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা। অসহায় মানুষেরা এই দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রেহাই পেতে যে পথ বেছে নেয় লেখক সুনিপুণভাবে তার বর্ণনা করেছেন।
বর্ষার কামনায় ব্রত উদ্যাপন সমগ্র বাংলাদেশে একটি প্রচলিত প্রথা। এ উপন্যাসে বর্ষার কামনায় নানা রকম পূজা-অর্চনা, গান গাওয়া এসব অতিমাত্রায় লক্ষ্য করা যায়। গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতা, অন্ত্যজগোষ্ঠী কিংবা উচ্চশ্রেণি সকলেই এই রুদ্ধেশ্বর ও সঙ্কটা ভৈরবীর ভক্ত। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্য এলেই সমাধানের আশায় এরা উপস্থিত হয়ছেন এই মন্দিরে। কয়লার দাম বেড়ে গিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ যখন বাঁচার আনন্দে আত্মহারা হয়েছে, তখনও তারা এই দেবতাকে ভুলতে পারেনি। উপরন্তু সাদা মার্বেল দিয়ে নতুন সাজে মন্দির সাজিয়েছে তারা। বিভিন্ন উপাচারের মাধ্যমে পুজার আয়োজন করেছে। এ উপন্যাসে দৈব নির্ভরতা কাহিনিকে বিশেষ দিক উন্মোচন করেছে। তবে নর-নারীর প্রেমই উপন্যাসের কাহিনি নিয়ন্ত্রণে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে।
কয়লাকুঠির দেশ উপন্যাসের চরিত্রগুলি অত্যন্ত বাস্তবধর্মী। শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের মাতামহ বেশ কয়েকটি কয়লাখনির মালিক ছিলেন। সেই সূত্র ধরে কয়লাখনির কুলি, মজুর, শ্রমিকদের জীবনাচার নিয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকাটা লেখকের জন্য অস্বাভাবিক নয়। আর এ পরিচয় আরও গভীর হয় যখন তিনি কোলিয়ারিতে চাকরি করতে যান। কয়লাকুঠির জীবনচিত্র দেখে রবীন্দ্র্রনাথ ঠাকুর অকপটে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সেখানকার মানুষজন, তাদের ব্যথা-বেদনা, প্রেম-প্রীতি, তাদের সংস্কার-বিশ্বাসÑ এক কথায় সামগ্রিক জীবনচিত্র শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় অসাধারণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন।
কাহিনির শুরুতেই দেখা যায়, বর্ষার কামনায় গ্রামের মানুষ রুদ্ধেশ্বরের মন্দিরে নানা রকম উপাচার গ্রহণ করেছে। বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়-এ প্রবল দাবদাহ, কোনো প্রকার বৃষ্টির আভাস নেই। তাদের সকলের ধারণা ছিল আষাঢ়ের রথযাত্রার সময় সম্ভবত বৃষ্টি হবে। কিন্তু সে ধারণাও তাদের কাছে অলীক কল্পনায় পর্যবসিত হয়। ফলে দুর্ভিক্ষ অনিবার্য বিবেচনা করে চারিদিকে হাহাকার পড়ে যায়। গ্রামের মুরুব্বি মাতব্বরেরা গ্রামের জাগ্রত দেবতা রুদ্ধেশ্বরের কাছে ‘জলশান্তি’র ব্রত পালন করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সারাদিন নিরম্বু উপবাস করে সমস্ত জনগণ এই ব্রত উদ্যাপন করে এবং তারপর গ্রামের সঙ্কটা ভৈরবীর মন্দিরেও পূজা দেয়।
এভাবেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলো। শান্ত হলো গ্রাম-জনপদ। তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হলো। তাদের মধ্যে ধারণা জন্মে যে, বাবার কাছে ‘জলশান্তি’ ব্রত উদ্যাপন করায় বাবা রুদ্রেশ্বর খুশি হয়েছেন এবং শ্মশানেশ্বরী সঙ্কটা ভৈরবীও পূজা পেয়ে খুশি হয়েছেন। আর তাঁদের দু’জনের সম্মিলিত আশীর্বাদ জলধারার মধ্যদিয়ে চূড়ান্ত প্রকাশ পেল। এ কারণে একসময় কয়লার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেল। ফলে সুলতানপুর ইমারতে-অট্টালিকায়, কল-কারখানায়, যন্ত্রে ও মানুষে পূর্ণ হয়ে উঠল।
উপন্যাসে গ্রামের বর্ধিষ্ণু পরিবারের মেয়ে মালা। পরমা সুন্দরী নায়িকা মালার প্রেমাস্পদ ভদ্র, শিক্ষিত ও সুদর্শন রঞ্জন। রঞ্জনও মালাকে ভালোবাসে। কিন্তু তাদের মিলনের পথে অনেক বাধা। রূপকথার গল্পের মতো এক ইরানি মেয়েকে হাজির করিয়ে, ভাগ্য গণনা করিয়েছেন লেখক।
এরপর মালা নিজের হাতের সোনার চুড়ি খুলেও মাদুলির মূল্য দিতে চেয়েছে। মালার মানসলোকে একটি লোকবিশ্বাস দানা বেঁধে উঠেছে। লেখক মালা চরিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনের তাবিজ, কবচ, মাদুলির প্রতি মানুষের আজন্মকালের বিশ্বাস ও সংস্কারের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
কয়লাকুঠির দেশ উপন্যাসের পটভূমি গড়ে উঠেছে একটি কয়লাখনি অঞ্চলকে ঘিরে। এ অঞ্চলের মানুষের রীতি-নীতি, প্রথা-নিয়ম, বিশ্বাস-সংস্কার, প্রেম-প্রীতিÑ এই সবই এ উপন্যাসের কাহিনিতে আবর্তিত হয়েছে। উপন্যাসের অধিকাংশ চরিত্রই বাঙালি মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত শ্রেণির। বস্তুত, লেখক দেশজ সংস্কৃতির প্রতি স্বাভাবিক আকর্ষণের প্রেক্ষিতে মানুষের জীবনযাত্রার পাশাপাশি ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি দেখিয়েছেন। ঈশ্বরের আরাধনার জন্য মানুষের নানা অনুষঙ্গের অবতারণা করেছেন।
কাহিনির কেন্দ্রস্থল সুলতানপুর। ‘জলশান্তি’র প্রত্যাশায় বাবা রুদ্রেশ্বর ও শ্মশানেশ্বরী দেবী সঙ্কটা ভৈরবীর কাছে গেলে অলৌকিকভাবে বৃষ্টি হলে তাঁদের প্রতি সাধারণ মানুষের ভক্তি আরও বেড়ে যায়। কাহিনির নায়িকা মালার জীবনে চরম সংকটের দিনে রঞ্জনকে খুন করার অপরাধে বাবা সীতারামকে পুলিশ গ্রেফতার করলে পাগলপ্রায় কন্যা ও মাতা রুদ্রেশ্বরের শরণাপন্ন হয়। লেখক উপন্যাসে দৈব নির্ভরতার কথা যেমন দেখিয়েছেন, তেমনি এর প্রতি আধুনিক সমাজ যে ক্রমশ আকর্ষণ হারাচ্ছে তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। মালা ও তার মা যে ব্রত উদ্যাপন করল, তা সার্থক হয়েছে। কাহিনির মধ্যে দেখা যায় কোনো এক অলৌকিক শক্তিতে এঁদের প্রতি ভক্তি, প্রেমে আপ্লুত মানবাত্মার সমস্ত ইচ্ছের পূরণ ঘটেছে।
কয়লাকুঠির দেশ উপন্যাসের মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণি। আর এসব মধ্যবিত্তশেণির চরিত্রগুলির মধ্যে আঞ্চলিকতার ছোঁয়া লেগেছে। ছোঁয়া লেগেছে লোকবিশ্বাস ও লোকসংস্কৃতির। তবে জ্যোতিষবিদ্যার বিষয়টি লেখক তেমনভাবে বিশ্বাস করেননি। এ কারণে ইরানি যুবতী চুমকি ও পরাশরের ভ-ামির কাহিনাংশটি লেখক অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন। এ অংশটি ঈশ্বর সন্ধানী শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের পরমেশ্বরকে জানবার আগ্রহকে স্বীকার করেনি।
শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের বধূবরণ (১৯৩১) পরিপূর্ণ একটি সামাজিক উপন্যাস। উপন্যাসের কাহিনি বয়নই এখানকার মূল উপজীব্য বিষয়। উপন্যাসের সুষমার সন্তানহীনতা নিয়ে লেখক যে গল্পের অবতারণা করেছেন তা আমাদের প্রচলিত সমাজ কাঠামোরই অংশ। সন্তানহীনা ‘বাজা’ নারী সমাজের কাছে অনেক ক্ষেত্রেই উপেক্ষিত। ‘অতি বড় ঘরন্তি না পায় ঘর- প্রতিবেশির এ ধরনের উক্তিতে সুষমার জীবন বিচলিত হয়ে ওঠে। সুষমা ক্রমাগত উত্তেজিত হতে থাকে, হতাশ হয়ে পড়ে সে। জীবন থেকে সুখ, শান্তি, স্বস্তি সব হারিয়ে যায়। তার হৃদয় মাতৃত্বের জন্য হাহাকার করে ওঠে। কাহিনির গতিধারা চলতে থাকলেও পরিণতিতে আত্মহননই তার জীবনের একমাত্র অবলম্বনে পরিণত হয়। গ্রামীণ এক বৃদ্ধা নারী টেপির মা’র বিষাক্ত কথাগুলো তাকে তিলেতিলে দগ্ধ করে।
বধূবরণ উপন্যাসে শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় অত্যন্ত সাবলীলভাবে সমাজের নানাবিধ ঘটনাবলি অতি সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরেছেন। এ উন্যাসের মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, লোকবিশ্বাস যদি মানুষ বিকৃতভাবে ব্যবহার করে তাহলে সেখানে শুভ চেতনা, মানবিকতাÑ এ সব কিছুর অবজ্ঞা করা হয়। আর তখন তা সমাজের পক্ষে, জীবনের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে। তখন তা সংস্কারের পরিবর্তে কুসংস্কারের রূপ নেয়।
পরিশেষে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় নাগরিক মননসমৃদ্ধ হয়েও তাঁর রচনার মধ্যদিয়ে গ্রামীণ জীবনাশ্রয়ী হয়ে উঠেছেন। তিনিই প্রধানত গ্রামীণ জীবন তথা শিল্পাঞ্চলের সাহিত্যের প্রথম সার্থক রূপকার। বিশেষষত এ অঞ্চলের নারীনির্যাতনের মর্মন্তুদ কাহিনী প্রাধ্যন্য লাভ করেছে। অসহায় নারীর বিড়ম্বিত জীবনের কথা ফুটিয়ে তুলেছেন। মূলত, দেশজ সংস্কৃতির গভীরতা অন্বেষণ তাঁর রচনার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হয়ে উঠেছে।
বিভাগ : সাহিত্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রামগতি কমলনগরে ১২ যাত্রীবাহী বাস আটকে দিল স্থানীয়রা!
দুবাইতে নির্মাণ হচ্ছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টাওয়ার বুর্জ আজিজি
আজও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন রিকশাচালকরা
প্রথম আলোর চট্টগ্রাম কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা
বুবলির জন্মদিনে অপুর টয়লেটীয় শুভেচ্ছা,সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষের ছড়াছড়ি
কচুয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে লুন্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
পঞ্চগড়ে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
ভারত বাংলাদেশকে কলোনী বানিয়েছিল: আহমেদ আযম খান
বিশ্বের দীর্ঘতম চালকবিহীন মেট্রোর যাত্রা শুরু করছে রিয়াদ মেট্রো
রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্যালিন জর্জেস্কুর অপ্রত্যাশিত সাফল্য
সাবেক আইজিপি মামুন ফের ৩ দিনের রিমান্ডে
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন
ফারাক্কার অভিশাপ : কমে যাচ্ছে নদীর পানি, ভবিষ্যৎ কী?
শরীরের সবচেয়ে নোংরা অংশ কোনটি, জানলে অবাক হবেন
বিশ্ব আসরে ফিরতে চলেছে একসময়ের জনপ্রিয় ব্যান্ড লিনকিন পার্ক
উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ইয়ামান্দু অর্সি
‘শেখ হাসিনা একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত মহিলা’
আমিরাতে ইহুদি ধর্মগুরু খুন, তিন সন্দেহভাজন গ্রেফতার
সিটি করপোরেশনকে জিম্মি করেছিলেন ফ্যাসিস্ট তাপস
কৃষি ব্যাংক ‘নবান্ন উৎসব’এ বরিশালে ৬৫ কোটি টাকার কৃষি ঋণ আদায় ও ৮৭ কোটি টাকা বিতরন করেছে