ফাঁস করা প্রশ্নে মেডিকেলে ভর্তি হয়ে ডাক্তার হয়েছে অনেকেই

Daily Inqilab নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ আগস্ট ২০২৩, ০২:৪১ পিএম | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৩, ০২:৪১ পিএম

ডাক্তারসহ একটি চক্র ২০০১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত। এই ১৭ বছরে ১০ বার প্রশ্ন ফাঁস করে চক্রটি। গত ৩০ জুলাই থেকে ১০ দিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁসে জড়িত ৭ চিকিৎসকসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি বলছে, প্রশ্নফাঁস করে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন এমন শতাধিক শিক্ষার্থীর নাম পেয়েছে সিআইডি। এর মধ্যে অনেকে পাশ করে ডাক্তারও হয়েছেন। হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধ উপায়ে মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি করিয়ে শত কোটি টাকা আয় করেছে চক্রটি।

রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন, ৪টি ল্যাপটপ, নগদ ২ লাখ ১১ হাজার টাকা, ১৫ হাজার এক শত বিদেশী মুদ্রা থাই বাথ, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫ টি চেক বই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, ভর্তির এডমিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

সিআইডি প্রধান বলেন, পাবলিক পরীক্ষা সামনে আসলেই একশ্রেণির চক্র বেশ সক্রিয় হয়ে উঠে প্রশ্নফাঁস করার জন্য। এই চক্রটি নানা কায়দায় প্রশ্নফাঁস যেমন করে, তেমনি গুজব ছড়িয়ে পরিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিভ্রান্তও করে। শিক্ষাখাতের ক্যানসার হিসেবে বিবেচিত এসব প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রকে নির্মূল করতে কাজ করছে।

 

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী বলেন, দেশের মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে নিয়মিত প্রশ্নফাঁসকারী বিশাল এক সিন্ডিকেটের খোঁজ পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ। ২০২০ সালে মিরপুর মডেল থানায় করা এক মামলায় সম্প্রতি চক্রের অন্তত ৮০ জন সক্রিয় সদস্য গত ১৬ বছরে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধ উপায়ে মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি করিয়ে শত কোটি টাকা আয় করেছে।

প্রশ্নফাঁস করে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন এমন শতাধিক শিক্ষার্থীর নাম পেয়েছে সিআইডি। এর মধ্যে অনেকে পাশ করে ডাক্তারও হয়েছেন বলেও জানান সিআইডি প্রধান।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, গত ৩০ জুলাই থেকে ১০ দিন ঢাকাসহ টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল জেলায় অভিযান পরিচালনা করে এ চক্রটির ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ৭ জনই ডাক্তার। তাদের সবাই বিভিন্ন মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার, নয়তো প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে প্রশ্নফাঁস করতেন।

 

তিনি আরও বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরে অন্তত ১০ বার এই চক্র মেডিকেলের প্রশ্নফাঁস করেছে। গ্রেপ্তার আসামিদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দেয়া বিপুল সংখ্যক ব্যাংকের চেক এবং এডমিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথাও জানান তিনি।

প্রশ্নফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূইয়ার কাছ থেকে একটি গোপন ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। যেখানে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা তার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের নাম রয়েছে। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

 

 


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা
যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন
ইসলামী আইনজীবী পরিষদের ১৩তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন রবিবার
‘২০ বছরের অধিক সাজাখাটা বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিন’
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মেরুদণ্ড শক্তে আত্মনির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে : ঢাবি ভিসি
আরও

আরও পড়ুন

চকরিয়ায় গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় ঘাতক স্বামী গ্রেপ্তার

চকরিয়ায় গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় ঘাতক স্বামী গ্রেপ্তার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ফের বিএসএফের হানা, রুখে দাঁড়িয়েছে হাজারো গ্রামবাসী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ফের বিএসএফের হানা, রুখে দাঁড়িয়েছে হাজারো গ্রামবাসী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ফের বিএসএফের হানা, রুখে দাঁড়িয়েছে হাজারো গ্রামবাসী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ফের বিএসএফের হানা, রুখে দাঁড়িয়েছে হাজারো গ্রামবাসী

কুষ্টিয়ায় পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে অস্ত্র-গুলিসহ আটক ২

কুষ্টিয়ায় পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে অস্ত্র-গুলিসহ আটক ২

১৯ উইকেট পতনের দিনে এগিয়ে পাকিস্তান

১৯ উইকেট পতনের দিনে এগিয়ে পাকিস্তান

আল্লাহর দয়ায় পা ভাঙেনি: শাওন

আল্লাহর দয়ায় পা ভাঙেনি: শাওন

মাইজভান্ডার দরবার শরীফ জেয়ারতে প্রধান বিচারপতি

মাইজভান্ডার দরবার শরীফ জেয়ারতে প্রধান বিচারপতি

জবিস্থ ফেনী জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নেতৃত্বে শ্রাবণ -আরিফ

জবিস্থ ফেনী জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নেতৃত্বে শ্রাবণ -আরিফ

টিউলিপের পদত্যাগ ছিল অবধারিত

টিউলিপের পদত্যাগ ছিল অবধারিত

গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা

গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় কাউন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা

সীমান্তের ঘটনা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ

সীমান্তের ঘটনা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে বলেছে বিএসএফ

মুসলিম বিশ্বে অনৈক্যের কারণেই গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল : মাহমুদুর রহমান

মুসলিম বিশ্বে অনৈক্যের কারণেই গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল : মাহমুদুর রহমান

আ’লীগ সাংবাদিকসহ প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ করেছিল: সাদিক রিয়াজ

আ’লীগ সাংবাদিকসহ প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ করেছিল: সাদিক রিয়াজ

যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন

যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন

জামায়াতকে কোন ইসলামী দল বলে মনে করি না: আমীরে হেফাজত

জামায়াতকে কোন ইসলামী দল বলে মনে করি না: আমীরে হেফাজত

রুয়েটের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

রুয়েটের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

কালীগঞ্জে ছাত্রদল সভাপতি মবিন খানের স্মরণ সভা

কালীগঞ্জে ছাত্রদল সভাপতি মবিন খানের স্মরণ সভা

একমাত্র সঞ্জয়ই দোষী, সাজা ঘোষণা সোমবার

একমাত্র সঞ্জয়ই দোষী, সাজা ঘোষণা সোমবার

চাঁদাবাজ, দখলবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবে: ডা. শফিকুর রহমান

চাঁদাবাজ, দখলবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবে: ডা. শফিকুর রহমান

শুল্ক ও কর বৃদ্ধি যেভাবে প্রভাব ফেলবে সিগারেটের বাজারে

শুল্ক ও কর বৃদ্ধি যেভাবে প্রভাব ফেলবে সিগারেটের বাজারে