প্রতাবাসন প্রক্রিয়া এগুলেই ক্যাম্পে পরিকল্পিতভাবে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঘিরে নতুন ষড়যন্ত্র

Daily Inqilab কক্সবাজার ব্যুরো

১৬ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৫ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৫ পিএম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন ষড়যন্ত্র। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সে দেশের সেনা নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দেয়। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে এই রোহিঙ্গা মুসলমানরা বসবাস করে আসছে। বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব স¤প্রদায়ের সহযোগিতায় মানবিক সহযোগিতাও দিয়ে আসছে। পাশাপাশি দ্রæত সময়ের মধ্যে তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্যও সেই থেকে বাংলাদেশ সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু দেখা গেছে প্রতাবাসন প্রক্রিয়া কিছুটা এগুলেই ক্যাম্পে পরিকল্পিতভাবে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়। এর সাথে দেশি-বিদেশি কিছু এনজিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ গোড়া থেকেই রয়েছে। তারা চায় না রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রæত সমাধান। অভিযোগ রয়েছে এ সমস্যার সমাধান হলে অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। আর রোহিঙ্গা মুসলমানরা নিজেদের দেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। তাই সেই ষড়যন্ত্রকারী মহল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রæত হোক সেটা চায় না বলেই সচেতন মহলের ধারণা।
স¤প্রতি চীন ভারতের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অনেক দূরে গিয়েছে। গত মাসে সপ্তাহব্যাপী মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা টেকনাফে অবস্থান করে রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তারা যাচাই বাছাই করেছেন তাদের কাছে দেয়া তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গারা আরাকান রাজ্যের নাগরিক কিনা সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।
প্রকৃতপক্ষে এটি ছোট আকারে অত্যাবাসনের অংশ হলেও পর্যবেক্ষক মহলের মতে এটি প্রশংসিত হয়েছে। তারা মনে করেন ছোট আকারের হলেও প্রত্যাবাসন শুরু হোক পর্যায়ক্রমে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চলতে থাকুক। ইতোমধ্যে কয়েকটি দেশের ক‚টনীতিকেরা মিয়ানমারের আরাকানে গিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ করে এসেছেন। এতে তারা কোন আপত্তি জানাননি। কিন্তু মিয়ানমার প্রতিনিধি দল ফিরে যাওয়ার পরে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হঠাৎ করে বলতে শুরু করেন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের এখনো পত্যাবাসনের সময় হয়নি। সেখানে রোহিঙ্গাদের যাওয়া কল্যাণকর হবে না। হঠাৎ করে তাদের এই বোল পাল্টানো উদ্দেশ্যমূলক এবং রহস্যজনক বলেই মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।
আর সেই থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শুরু হয়েছে অশান্ত করার পাঁয়তারা। গুম খুন গোলাগুলি অপহরণ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম। জানা গেছে সাধারণ রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যেতে উদগ্রীব। তারা আর শিবিরবন্দী হয়ে জীবন যাপন করতে চায় না। তারা যত দ্রæত সম্ভব দেশে ফিরতে চায়। আর ক্যাম্পের ভিতরে ফিরে যাওয়ার এবং প্রত্যাবাসনের পক্ষে কথা বললেই তাদেরকে গুলি করে খুন করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মহলবিশেষের উস্কানিতে কিছু সন্ত্রাসীরা এসব কর্মকাÐ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিদিন এই এরকম গুম খুন ও সন্ত্রাসী কর্মকাÐ ঘটানো হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। এতে করে সাধারণ রোহিঙ্গারা ভয়-ভীতির মধ্যে জীবন যাপন করছে। বিশ্বস্ত সূত্র মতে ২০-২৫টির মত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রæপ প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকাÐে জড়িত রয়েছে। তারা মিয়ানমারের স্বার্থ এবং সেই ষড়যন্ত্রকারী মহলের স্বার্থ রক্ষা করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প অশান্ত করে চলেছে। তারা সীমান্ত ভিত্তিক মাদকচড়া চালান নিয়ন্ত্রণ নিয়েও পরস্পর সন্ত্রাসী কর্মকাÐে জড়িয়ে পড়ছে। তবে স¤প্রতি পুলিশের শক্ত প্রতিরোধে সে সন্ত্রাসীদের অনেকেই ধরা পড়ছেন অথবা মারা পড়ছে।

 

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা-তারেকসহ সব আসামি খালাস

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা-তারেকসহ সব আসামি খালাস

টিউলিপের জায়গায় নিয়োগ পেলেন এমা রেনল্ডস

টিউলিপের জায়গায় নিয়োগ পেলেন এমা রেনল্ডস

পদত্যাগপত্রে টিউলিপ সিদ্দিক যা লিখেছেন

পদত্যাগপত্রে টিউলিপ সিদ্দিক যা লিখেছেন

টিউলিপের পদত্যাগ ইস্যুতে প্রেস উইংয়ের বিবৃতি

টিউলিপের পদত্যাগ ইস্যুতে প্রেস উইংয়ের বিবৃতি

আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে কায়রো, ঢাকার অবস্থান ৬ নম্বরে

আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে কায়রো, ঢাকার অবস্থান ৬ নম্বরে

মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে লাশ হলো "মা"!

মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে লাশ হলো "মা"!

মীরসরাইয়ে মুন্না খুনের ঘটনায়, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক বহিষ্কার

মীরসরাইয়ে মুন্না খুনের ঘটনায়, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক বহিষ্কার

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেফতার

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেফতার

আজ সারদায় ৪৮০ এসআইয়ের সমাপনী কুচকাওয়াজ

আজ সারদায় ৪৮০ এসআইয়ের সমাপনী কুচকাওয়াজ

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৩ জন ফিলিস্তিনি, মানবিক সংকট চরমে

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৩ জন ফিলিস্তিনি, মানবিক সংকট চরমে

ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেফতার

ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেফতার

সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন রিসোর্ট পুড়ে ছাই

সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন রিসোর্ট পুড়ে ছাই

শুল্ক রেলস্টেশন দিয়ে ভারত থেকে ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন চাল আমদানি

শুল্ক রেলস্টেশন দিয়ে ভারত থেকে ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন চাল আমদানি

শুল্ক–কর বৃদ্ধির ফলে দেশের তামাক খাতে কী প্রভাব পড়বে

শুল্ক–কর বৃদ্ধির ফলে দেশের তামাক খাতে কী প্রভাব পড়বে

ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য

ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য

পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ

পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ

অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ

অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ

কারাগারে এস কে সুর

কারাগারে এস কে সুর

‘গ্রিনল্যান্ডকে সামরিক এলাকা বানাতে চান ট্রাম্প’

‘গ্রিনল্যান্ডকে সামরিক এলাকা বানাতে চান ট্রাম্প’

ছাত্রলীগ নেত্রী নিশি দুই দিনের রিমান্ডে

ছাত্রলীগ নেত্রী নিশি দুই দিনের রিমান্ডে